নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

তরুন জ্যোতির্বিদের টেলিস্কোপে তারা দেখা!

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

আমার জ্যোতির্বিজ্ঞানে বরাবরই আগ্রহ ছিল। বিগ ব্যাং বলতে যে বড়সড় একটা ব্যাঙ বুঝায় না সেইটা আমি বিশ্ব বিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময়ই জানতাম! সত্যি বলতে কি, বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজাল্ট খারাপ করে শনি গ্রহের কবলে পড়ার আগ পর্যন্ত জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে আমি খুব উচ্ছসিত ছিলাম।দ্বিতীয় বর্ষে তাপগতিবিদ্যায় ফেল করার পর জ্যোতির্বিজ্ঞানী হবার আগ্রহে ভাটা পড়ে যায়।



প্রথম বর্ষে থাকতে একবার আমার নারায়নগঞ্জের ফ্রেন্ড সার্কেল বাসার ছাদ থেকে টেলিস্কোপে তারা দেখার আমন্ত্রন জানাল। নতুন একটা তারা নাকি কদিন ধরেই আকাশের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় দেখা যাচ্ছে। পাড়ার তরুণ জ্যোতির্বিদ দের সেটা দেখায় খুব আগ্রহ!



এক বৃহস্পতিবার বিকেলে করতোয়া বাসে সাত টাকা ভাড়া দিয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে গেলাম।বন্ধুদের একজনের নাম মিসকা সুমন। মিসকা সুমন দের চারতলা বিল্ডিং এর ছাদে তারা দেখার ব্যবস্থা। মোট সাত আট জন তরুন জ্যোতির্বিদ এসে জড়ো হয়েছে। লো ভোল্টেজ চাঁদ এবং তারার হাল্কা আলোয় দেখলাম টেলিস্কোপ ছাড়াও সেখানে ম্যাচ সহ বাংলা ফাইভের প্যাকেট আছে। চানাচুরের প্যাকেট আছে। কোকের বোতল আছে।ছ’সাত টা গ্লাস আছে। এছাড়াও চারকোনা গাঢ় খয়েরি রঙয়ের আরেকটা বোতল আছে!



জ্যোতির্বিদ দের মধ্যে যে সবচেয়ে বিশেষজ্ঞ সে বলল তারা দেখার আগেই চানাচুর খেতে। চানাচুর খেলে নাকি তারাকে একদম হাতের কাছে মনে হয়! তারার গায়ের গন্ধ পর্যন্ত নাকি শুঁকতে পাওয়া যায়।



আমি ফট করে জিজ্ঞেস করলাম, চানাচুর খেলে এত কিছু কেম্নে হয়?



মিসকা সুমন বলল, তুই কথা বুঝস নাই! শুধু চানাচুর খাইলে ত অয় না! চানাচুরের সাথে একটু কোক খাইতে অয়! একটু পানি খাইতে অয়!



আমি আবার বললাম, কোক ত দেখতেছি। পানি কই?



বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্বিদ হেসে বলল, অই যে চাইর কোণা বতল ডা দেখতাছস, অইডাতে পানি আছে! এক বতল পানির দাম সাড়ে সাতশ টাকা!



একজন নিচে নেমে গিয়ে আরো দুটা গ্লাস, প্লেট এবং একটা পাটি নিয়ে আসল। পাটির কেন্দ্রে পানি(!)র বোতল রাখা হল। চানাচুরের প্যাকেট খুলে চানাচুর প্লেটে ঢালা হল। চারদিক গোল হয়ে ঘুরে বসা তরুন জ্যোতির্বিদ দের সবার হাতে একটা করে গ্লাস। মিসকা সুমন হোস্ট। সে চারকোনা বোতল খুলতেই ঝাঁঝালো একটা সৌরভ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল। তারপর যথা সম্ভব সমান পরিমানে বাড়িয়ে ধরা প্রত্যেক গ্লাসে ঢেলে দিল। ঝাঁঝালো পানিতে কোক মেশানোর পর সাত জন তরুন জ্যোতির্বিদ পরস্পর গ্লাস ঠোকাঠুকি করে বলল- চিয়ার্স!!



চ্যাপ্টা বোতল খালি হবার কিছুক্ষন পর ছাদ টা যখন একটু বাঁকা বাঁকা লাগছে(!) তখন বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্বিদ টেলিস্কোপ তাক করল। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সে টেলিস্কোপ আকাশের দিকে তাক না করে ছাদের সমান্তরালে তাক করেছে এবং টেলিস্কোপের নল বরাবর তাকালে প্রায় দুইশ ফুট দুরের একটা ফ্ল্যাটের খোলা জানালা দেখা যায়!



মনে হল, চ্যাপ্টা বোতলের পানি বেশি খাবার কারনে বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্বিদ এর মাথা উল্টা পাল্টা হয়েছে। তাকে বললাম, কি রে তারা কি আসমান থেইকা নাইমা আইসা মানুষের ঘরের ভিত্তে ঢুইকা পরছে?



সে পাঁই করে আমার দিকে ঘুরল! তারপর আমার হাত ধরে জোরে টান দিয়ে আমাকে টেলিস্কোপের কাছে নিয়ে গেল। তারপর মাথার পেছনে ধাক্কা দিয়ে টেলিস্কোপের আই পিসে আমার চোখ ঠেসে ধরতে ধরতে বলল- ভাল করে তাকায়া দেখ! আসমানের তারা সত্য সত্যই আসমান থেইকা নাইমা আইসা মাইনষের ঘরের ভিত্তে ঢুইকা পরছে!



আমি ভাল করে তাকিয়ে দেখলাম।সত্যিই! মাথা উল্টাপাল্টা করে দেয়ার মত অদ্ভুদ সুন্দর উজ্জ্বল একটা তারা।



তারাটি ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিল!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮

অদৃশ্য বলেছেন:






লিখাটি যথেষ্ট আনন্দদন করতে পেরেছে... মজা নিলাম আর হাসলাম... চমৎকার ভাবেই লিখছেন...


শুভকামনা...

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২২

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ অদৃশ্য। আপনার মন্তব্য পড়ে উৎসাহিত হলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.