নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং তৈলাক্ত বাঁশ!

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৬

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে।আমার আনন্দ রাখার জায়গা নাই। কারন আমার কলেজ থেকে আমার সহপাঠী যে ক’জন ফার্ষ্ট ডিভিশন পেয়েছে তারা কেউ কোন সাব্জেক্টে লেটার পায়নি। আমিই শুধু এক সাব্জেক্টে লেটার পেয়েছি। সেটা আবার আমার প্রিয় সাব্জেক্ট ফিজিক্সে। যার সাথেই দেখা হচ্ছে বলছি- ‘আমি ফিজিক্সে লেটার পাইছি!’ বলার সাথে সাথে মনে একটা ‘আইন্সটাইনীয়’ গর্ব অনুভূত হচ্ছে। আমি বলবিদ্যা বুঝি, চুম্বক বুঝি, আলোর প্রতিসরাঙ্ক বুঝি, সুর শলাকার কম্পাং বুঝি, অনুনাদ বুঝি।সে কারণেই ত পদার্থ বিদ্যায় লেটার পাওয়া। না বুঝে এমনে এমনে ত আর কেউ ফিজিক্সে লেটার পায় না!



এই রকম ভাবনার কারন আছে। কারন আমাদের মফঃস্বল শহরে সেই সময়ে পড়ার উৎস হিসেবে একমাত্র আদি অকৃত্রিম ‘ইসহাক-নুরুন্নবী’র ঢাউস বই। কলেজের বাইরে প্রাইভেট স্যারের কাছে পড়ার কারন যতটা না বিদ্যাশিক্ষা তারচেয়ে বেশি সুন্দরী সহপাঠিনীদের সান্নিধ্য। কাজেই আমাদের লেটার পাবার জন্য বই পড়ে বিষয়বস্তু বুঝতে হত।



গত ক’দিন ধরেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা’র ফিজিক্স প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে চারদিকে তুমুল আলোচনা। আমি বুঝিনা এটা নিয়ে এত কথা বলার কি আছে? এই প্রশ্ন ফাঁসের সাথে যারা জড়িত তারা কি মাগনা প্রশ্ন ফাঁস করছে নাকি? প্রশ্ন ফাঁসের বিনিময়ে টাকা ত নিশ্চয় পাইছে! ত টাকা পেলে আমরা কি না করি? টাকার বিনিময়ে ‘মানুষ মারার বিল্ডিং বা ফ্লাই ওভারে’র নকশায় সাইন করে দিতে আমাদের হাত কাঁপেনা। সেই তুলনায় পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস ত কিছুই না। আর ফিজিক্স শেখার দরকার ই বা কি? ফিজিক্স বইয়ের কোথাও কি লিখা আছে নাকি কিভাবে দুই নম্বুরি করে টাকা কামাতে হয়? যত সব ফালতু।



যাক, অকাজের কথায় ফিরে আসি!জীবনে চলার পথে আমি আজীবন তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উঠা বানর কে আদর্শ জ্ঞান করেছি। কি অসাধারণ ফিলসফি- জীবনের বাঁশ বেয়ে দুই ফুট উঠার পর এক ফুট নামবা। যাতে করে সহসা বাঁশের চুড়ায় পৌছে গিয়ে জীবন সংগ্রামের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হতে না হয়! আমি ব্যক্তিগতভাবে আরো একধাপ এগিয়ে গিয়ে ফিলসফিতে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি।আমার ফিলসফি হচ্ছে -জীবনের বাঁশ বেয়ে দুই ফুট উঠার পর আড়াই ফুট নামব! এবং এই ফিলসফি অনুযায়ী চললে জীবন সংগ্রাম থেকে বঞ্চিত হবার তিলমাত্র সম্ভাবনাও থাকেনা!



কিন্তু এই রকম জীবন চলার পথে মাঝে মাঝে খুব কঠিন কিছু মুহুর্ত আসে। একেকটা মুহুর্ত কে মনে হয় হাবিয়া দোজখের একেক টা বছর। এই মুহুর্তগুলো পার করার জন্য আমি চোখ বন্ধ করে অনেক অনেক বছর আগে ফেলে আসা সেই মুহুর্তগুলো স্মরন করি- আমি মফস্বল শহরের সদ্য পাতলা গোঁফ গজানো আঠারোয় পা দেয়া একটা ছেলে। আমার মনে গভীর আনন্দ আজ। কারন আমি ফিজিক্সে লেটার পেয়েছি। এই লেটার হচ্ছে আমার দুই নম্বুরি বিহীন খাঁটি পড়াশুনার পুরস্কার।



ফাঁস প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে কেউ একশ তে একশ পেলেও সে কখনো এই অকৃত্রিম আনন্দ পাবেনা। এই ধরনের অকৃত্রিম আনন্দ থেকে যারা বঞ্চিত তাদের জন্য জীবন নামক তৈলাক্ত বাঁশ পাড়ি দেয়া অসম্ভব ব্যাপার।

অবশ্য প্রশ্ন ফাঁসের মত দুই নম্বুরি কোন পদ্ধতি তে তাদেরকে এক ধাক্কায় কেউ বাঁশের মাথায় বসিয়ে দিতে পারলে সেটা আলাদা কথা!

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: প্রশ্ন ফাস একন ওপেন সিক্রেট

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: পরিণাম ভয়াবহ!

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ডিজিটাইজেশন অব এক্সামিনেশন!

জয় বাংলার উপহার
প্রশ্ন ফাস লাগাতার ;)

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৯

ফা হিম বলেছেন: একারণেই পড়াশুনার আগের মত মূল্যায়ন নেই। কেউ এ-প্লাস পেয়েছে শুনে লোকে সম্ভ্রমের সাথে তাকায় না। পুরো জিনিসটাই হাসি ঠাট্টায় রূপ নিচ্ছে দিন দিন।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩০

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: কিন্তু লাভ কি এতে? ফাঁস প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে এ প্লাস পেয়ে আত্ন বিশ্বাস সঞ্চয় করা ত সম্ভব না। আর আত্ন বিশ্বাস হীন একজন মানুষ দেশকে সমাজ কে অসুস্থতা ছাড়া আর কি দেবে? আমাদের স্কুল গুলোতে পড়াশুনায় আনন্দ নেই। নৈতিক শিক্ষা ত নেই ই। তাই যদি থাকত এরকম পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরাই প্রশ্ন ফাঁসের সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবী করে ইতিবাচক আন্দোলনে নামত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.