![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!
‘স্বাধীনতার চেতনা কি?’
আমি আমার মন কে প্রশ্ন করলাম। মনে হল আমার মন ঘুরে এল হাজার বছরের পথ। হাজার বছরের পথ পরিক্রমা শেষে আমার মন বলল, পৃথিবীতে দূটো যাত্রা ছিল,আছে,থাকবে। একটা হচ্ছে অগ্রযাত্রা। আরেকটা হচ্ছে পশ্চাৎ যাত্রা। এবং পৃথিবী’র এই দুই ‘যাত্রা’র সাপেক্ষে পৃথিবী’তে তিন ধরনের মানুষ ছিল, আছে, থাকবে।
আমি বললাম, যাত্রা দু’ধরনের। মানুষ তিন ধরনের!
মন মুচকি হেসে বলল, পৃথিবী’র অগ্রযাত্রার দূত, পশ্চাৎযাত্রার দূত এবং ‘অগ্রযাত্রার ছদ্ধবেশে পশ্চাৎযাত্রার দূত’!
আমি বললাম, এসবের সাথে স্বাধীনতার চেতনা’র কি সম্পর্ক?
মন বলল, স্বাধীনতার চেতনা শুধু তাদেরই থাকে যারা অগ্রযাত্রার দূত। যারা পশ্চাৎযাত্রার দূত তাদের থাকে চাকরের একমাত্রিক চেতনা।
চাকরের এক মাত্রিক চেতনা জিনিষটা কি?
চাকর প্রভুর তৈরি করা একমাত্রিক নিয়ম অনুযায়ী তার জীবন কে পরিচালিত করবে। প্রভু নিজেও একজন মানুষ। চাকর প্রভুর ইচ্ছেকেই তার জীবনের ইচ্ছে ভাববে। এটাই ‘ চাকরের একমাত্রিক চেতনা’।
আর যারা ‘অগ্রযাত্রার ছদ্ধবেশে পশ্চাৎযাত্রার দূত’ তাদের চেতনা কি?
তাদের চেতনা হচ্ছে সঙ্কীর্ন চেতনা। আমার জন্মের আগে এই পৃথিবীতে কি ছিল বা আমার মৃত্যুর পরে এই পৃথিবীতে কি হবে সেটা নিয়ে তারা ভাবে না। তারা ভাবে যতদিন বেঁচে আছি যেকোন মুল্যে জীবনটাকে অশ্লীল ভাবে উপভোগ করব!
‘অশ্লীল জীবন উপভোগ’ বিষয় টা কি?
ধর তোমার খাবার ক্ষমতা আছে এক প্লেট। তুমি খামাকাই এক কড়াই ভাত দখল করে অন্যকে উপোষ রাখছ। অথচ তুমি একপ্লেটের বেশি কিছুতেই খেতে পারছ না! এটাই অশ্লীল জীবন উপভোগ।
স্বাধীনতার চেতনার অধিকারী কারা সেটা বললেন। কিন্তু জিনিষ টা কি একটু বিস্তারিত বললেন না!
মানুষের মন হচ্ছে অসীম ক্ষমতা সম্পন্ন। এই ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের পরিবেশ তৈরি হওয়ার উপর পৃথিবী’র এগিয়ে যাওয়া নির্ভরশীল। এই ক্ষমতা একমাত্র স্বাধীন মানুষই ব্যবহার করতে পারে। কারন মানুষ পরাধীন হলে সে ‘মানুষ প্রভু’র চাপিয়ে দেয়া প্রোগ্রাম অনুসরণ করতে গিয়ে যন্ত্রের মতই একমাত্রিক হয়ে যায়। মানুষ ‘মানুষের তৈরি যন্ত্রে’র বিকল্প হবার জন্য পৃথিবী’তে আসে নাই। মানুষ কে আরো বড় কাজের জন্য এত নিঃখুত ভাবে গড়া হয়েছে।সব মানুষের স্বাধীনতা কে অক্ষুন্ন রেখে জীবন কে ধারণ,যাপন এবং উন্নতকরণ প্রক্রিয়ায় প্রত্যেকের অবদানের ভিত্তিতে যার যার প্রাপ্য তার তার হাতে পৌঁছে দেবার সংস্কৃতি তৈরি করার চেতনা হচ্ছে স্বাধীনতার চেতনা।
কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখি, ঘর বলেন, অফিস বলেন, রাষ্ট্র বলেন এমন কি পাবলিক প্লেস, সবখানেই কেউ প্রভুর যায়গা নেয়, কেউ ভৃত্যের যায়গা নেয়!
যতদিন উন্নত সংস্কৃতি তৈরি হবেনা ততদিন এমন ই হবে।সত্যিকারের স্বাধীনতার চেতনাই কেবল এই ‘প্রভু-ভৃত্য’ পরিস্থিতি কে পাল্টাতে পারে।পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যতটুকু পাল্টেছে তাও ওই চেতনার জন্যই।
আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কিছু বলুন!
দেশ ত ভয়াবহ সঙ্কট সীমায় বাস করছে এখন।
কি রকম?
আমরা পরাধীন ছিলাম। অগ্রযাত্রার দূত যারা ছিল তারা বুঝেছিল মুক্তিযুদ্ধে নামতে হবে। তাদের সম্পদ ছিল স্বাধীনতার চেতনা। কিন্তু পেছন থেকে সাঁড়াশি দিয়ে তাদের পা চেপে ধরল পশ্চাৎযাত্রার দূত স্বাধীনতাবিরোধীরা। তাদের সম্পদ ছিল চাকরের একমাত্রিক চেতনা।
আমরা মুক্তিযুদ্ধে জিতলাম।
হ্যাঁ জিতলাম কারন বহুমাত্রিক স্বাধীনতার চেতনা একমাত্রিক চাকরতার চেতনার চেয়ে বহুগুন শক্তিশালী।
স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে কিছু বলুন।
তারা যূগে যূগে প্রিথিবী’র এবং দেশের পশ্চাতযাত্রার দূত। বেঁচে থাকার জন্য ধর্মকে আত্নরক্ষার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।
স্বাধীনতা বিরোধীরা ছাড়া বাকী সবাই কি অগ্রযাত্রার দূত?
না। এই মুহুর্তে তাদের মতই ভয়াবহ হচ্ছে যারা নিজেদের পাপ ঢাকার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী’দের কেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে!
কি ভাবে?
তাদের বক্তব্য এই রকম। একমাত্র স্বাধীনতাবিরোধীরাই হচ্ছে পশ্চাৎ যাত্রার দূত। এছাড়া বাকী সবাই অগ্রযাত্রার দূত।
একটু বুঝিয়ে বলুন।
এরা বলতে চায়, তুমি খুন কর, ধর্ষন কর, ঘুস খাও, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস কর, নিজের সন্তান কে ফাঁস প্রশ্নপত্র কিনে এনে দাও এবং অতঃপর মুখে বল তুমি স্বাধীনতাবিরোধীদের ঘৃনা কর! তাইলেই তুমি দেশ এবং পৃথিবীর অগ্রযাত্রার দূত হয়ে গেলে।
তারাই কি ‘অগ্রযাত্রার ছদ্ধবেশে পশ্চাৎযাত্রার দূত’?
হ্যাঁ তারাই ‘অগ্রযাত্রার ছদ্ধবেশে পশ্চাৎযাত্রার দূত’ এবং তাদের দেশের প্রতি কোন ভালোবাসা নেই যদিও তারা মুখ দিয়ে অজস্র ভালোবাসা এবং ঘৃণা’র বানী উচ্চারন করে।
শেষ পর্যন্ত তাইলে কি হবে?
শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতার চেতনাই জিতবে। পশ্চাত যাত্রার দূত এবং ‘অগ্রযাত্রার ছদ্ধবেশে পশ্চাৎযাত্রার দূত’ রা কখনোই অগ্রযাত্রার দূতদের নিভিয়ে দিতে পারবে না। আলো যতক্ষন না নিভবে অন্ধকারের কীট কে ততক্ষন অবশ্যই মানুষ চিনতে পারবে। এক সময় কীটের পক্ষে আর বংশবিস্তার করা সম্ভব হবে না!
কীট কি আলোতে বংশবিস্তার করতে পারে না?
না পারেনা। পূর্ণবয়স্ক কীট অনেক সময় কূটকৌশলে আলোতে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু বংশবিস্তার করতে পারে না!
আমার মনের সাথে আরো কিছুক্ষন কথা বলার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই মন বলল- বাইরের আকাশে ঝকঝকে রোদ্দুর দেখছি। আমার একটু ঘুরে আসা দরকার! এই কথা বলে মন দিল উড়াল।
২| ০১ লা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৯
হিমচরি বলেছেন: ভালই লিখেছ বন্ধু --- তুমি যে সামুতে লিখ তা আজ জানতে পারলাম। হবে দেখা পথে---
৩| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ৮:০৭
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পারভেজ ভাই। আপনি যে আপনি সেইটা আর্কিটেকচার বিল্ডিং দেখে বুঝছি!
৪| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ৮:১০
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: হিমচরি কে অনেক আগেই চিনেছি। একটু সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম। তোমার লেখাও পড়েছি। সারপ্রাইজ অক্ষুণ্ণ রাখার চিন্তা করে মন্তব্য করি নাই। আমি নতুন লেখক। তবে খুব ঘন ঘন লিখছি! পাঠক রা বিরক্ত হচ্ছে নাকি অনুরক্ত হচ্ছে বুঝতে পারছি না!
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০১৪ সকাল ৮:২৫
পারভেজ বলেছেন: বহুদিন পরে লগিন করলাম তোমার নাম দেখে।