নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাইকেল চালানো স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। ইহা ক্ষুধা উদ্রেক করে!

হঠাৎ ধুমকেতু

আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!

হঠাৎ ধুমকেতু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিষ্ঠা মরফসিস(বিষ্ঠা খেয়ে খেয়ে একটা জাতি’র গণ্ডারে রূপান্তরিত হবার গল্প)

৩০ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:১০

গভীর রাত। আমি আমার ছোট্ট স্টাডি রুমের খোলা জানালা দিয়ে দেখছি বাইরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বিদ্যুৎ চমকের আলোয় দেখতে পাচ্ছি প্রবল ঝোড়ো বাতাসের ঝাপ্টায় উঁচু উঁচু নারকেল গাছের ডাল গুলো সশব্দে নুয়ে পড়ছে। প্রচণ্ড বজ্রপাতে আশপাশ টা একবার থর থর করে কেঁপে উঠল। তারপরই শুরু হল প্রবল বৃষ্টি। আমি অবাক হয়ে লক্ষ করলাম বৃষ্টি মাথায় করে একজন আগন্তক আমার স্টাডি রুমের দিকে এগিয়ে আসছে।আগন্তকের চেহারা ফ্যাকাসে। চোখের দৃষ্টিতে গভীর হতাশা। আগন্তক আমার দিকে তাকিয়ে বিড় বিড় করে উচ্চারণ করল-



গণ্ডারকে চৌদ্দ দিন আগে কাতুকুতো দেয়া হয়েছে। এখনো হাসির কোন নামগন্ধ নাই!



আমি বিস্মিত হলাম। গণ্ডার কে কাতুকুতো দেয়া হলে সাধারণত দু’দিনের মাথায় হাসে। এ কোন আজব গণ্ডার রে বাবা! চৌদ্দ দিনেও হাসির নামগন্ধ নাই! আমি একটু গলা চড়িয়ে বললাম-



শুধু কাতুকুতো দিয়েছ? খোঁচা দিয়ে দেখ নি?



খোঁচা ও দেয়া হয়েছে স্যার! কিন্তু গণ্ডার নির্বিকার। একমনে বিষ্ঠা খেয়েই যাচ্ছে!



বিষ্ঠা খেয়ে যাচ্ছে মানে? গণ্ডার আবার বিষ্ঠা খায় নাকি?



এই আজব গণ্ডার টা বিষ্ঠাই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে স্যার!



আমি এবার সত্যিকার অর্থেই কৌতূহলী হলাম। আমার বর্ষাতি টা গায়ে চাপিয়ে আগন্তুকের সাথে বের হলাম। গণ্ডার টাকে একবার সচক্ষে দেখা দরকার।



চিড়িয়া খানার গেট দিয়ে ঢুকে গণ্ডারের খাঁচা পর্যন্ত যেতে যেতে আমি আর আগন্তক দু’জনেই কাদায় মাখামাখি হলাম। বিষ্ঠার গন্ধে গণ্ডারের খাঁচার কাছে যাওয়াই যায় না। আগন্তক বলল,



বাতাস উত্তর দিক থেকে বইছে। নিঃশ্বাস নেবার সময় নাক টা দক্ষিণ দিক করে রাখুন। তাইলে গন্ধ কম লাগবে!



আগন্তকের পরামর্শ মেনে পরিস্থিতি কিছুটা সহনীয় হল কিন্তু ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে যে দৃশ্যটার মুখোমুখি হলাম সেটা অসহনীয় পর্যায়ের। চোখের সামনে এ কি দেখছি আমি!



সারা শরীর প্লাস্টিকের শক্ত আবরণ দিয়ে ঢাকা। শিং টা নিজের শরীরের দিকে তাক করা এক বিদঘুটে চেহারার গণ্ডার এক ধ্যানে বিষ্ঠা খেয়ে চলেছে। আমি নিশ্চিত হলাম, আগন্তুক মিথ্যে কথা বলছে। এই গণ্ডারের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়। একে কেও আসলে কাতুকুতো বা খোঁচা দেয় নি!

আমার মুখের ভাব দেখে আগন্তক সম্ভবত আমার মনের কথা বুঝতে পারল। এক ছুটে গিয়ে কোত্থেকে যেন একটা লম্বা তীক্ষ্ণ বর্ষা নিয়ে আসল। আমার হাতে দিল। বলল খোঁচা দিন! তারপর দেখুন!



আমি আমার গায়ের সর্বশক্তি একত্র করে তীক্ষ্ণ বর্শা দিয়ে গণ্ডারের গায়ে খোঁচা দিলাম। গণ্ডারের কোন ভাবান্তর নাই! অসম্ভব দুর্গন্ধ উপেক্ষা করে সেখানে ঠাঁই বসে রইলাম একমাস। গণ্ডার একমাস ধরেই বিষ্ঠা খেয়েই গেল। কিন্তু বর্শার খোঁচার কোন প্রতিক্রিয়া নাই।



প্রবল গন্ধের মধ্যে দীর্ঘ সময় বাস করার কারনে সম্ভবত আমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তাই আমি গণ্ডারের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বললাম, তুমি কে??





আমাকে বিস্মিত করে দিয়ে গণ্ডার মানুষের ভাষায় জবাব দিল, আমাকে চিনতে পারছ না! কি আশ্চর্য!আমি ত এই বাংলাদেশের বাঙালি!



সেক্ষেত্রে ত তুমি মানুষ হবার কথা। কিন্তু চোখের সামনে ত দেখছি একটা প্লাস্টিক কোটেড গণ্ডার। যে ক্রমাগত বিষ্ঠা খেয়ে যায় আর বর্শার খোঁচা খেয়েও নির্বিকার থাকে!



আমি মানুষই ছিলাম। ‘দূর্নীতি’ নামক ‘বিষ্ঠা’ বছরের পর বছর খেয়ে খেয়ে ধীরে ধীরে গণ্ডারে পরিণত হয়েছি।



কিন্তু তোমার গায়ে প্লাস্টিক কোটিং কিভাবে তৈরি হল?



প্লাস্টিক কোটিং তৈরি হবার আগে কেউ কাতুকুতো বা খোঁচা দিলে সাতদিন পরে হলেও হাসতাম বা হুঙ্কার দিতাম!



প্লাস্টিক কোটিং কিভাবে তৈরি হল সেটা জানতে চাচ্ছি!



গণ্ডারে পরিণত হবার পরও পূনরায় মানুষ হবার কোন চেষ্টা আমার মধ্যে দেখা গেল না। আমি বিষ্ঠা খেয়েই গেলাম। দূর্নিতি’র বিষ্ঠা খেতে খেতে একসময় দেহের উপর ওই শক্ত আবরণটা তৈরি হল। একসময় সেটা এতই শক্ত হয়ে গেল যে ওটাতে আর শক্ত বর্শা’র খোঁচা লাগলেও কিছু হয় না!



তুমি কি বিষ্ঠা খেয়ে মজা পাও?



অন্য খাবার না খেতে খেতে এখন বিষ্ঠা খেয়েই মজা পাই! এই ত কদিন আগে একটা ‘ভয়ঙ্কর দুর্গন্ধময় বিষ্ঠা’ খেলাম। কি মজা! কি মজা!!



সেই বিষ্ঠার নাম কি?



সেই বিষ্ঠার নাম হচ্ছে ‘ দেশের সরকার কর্তৃক প্রশ্নপত্র ফাঁস অস্বীকার করণ বিষ্ঠা!’ খুবই মিঠা লাগছে খেতে! ওইটা দিয়ে লাঞ্চ করার পর মনে হল প্লাস্টিকের এক্সট্রা চামড়াটা একেবারে পার্মানেন্ট লি সেট হয়ে গেছে শরীরের উপর। নিজের চোখেই ত দেখলেন! আমি এই বিষ্ঠা খাবার পর দেশের অত্যন্ত উঁচু মাপের একজন মানুষ বর্ষা দিয়ে আমার পেটে অনেক খোঁচা দিলেন। আমাকে বমি করাতে চাইলেন।



কিন্তু কই? আমি ত পুরাই নির্বিকার। দিব্যি বিষ্ঠা হজম করে চলেছি!!



(পৃথিবী’র তাবৎ গণ্ডারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পূর্বক!)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০৫

মুদ্‌দাকির বলেছেন: আসলেই ওনারা সবাই গন্ডার হয়ে যাচ্ছে!!!!!!!!!!

৩০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:২৬

হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: আমরা বহু আগেই গণ্ডার হইছি। এখন চামড়ার উপরের প্লাস্টিক টা বিকৃতির রোদে পুড়ে দিন দিন শক্ত হচ্ছে। আপনাকে ধন্যবাদ মুদদাকির। পাব্লিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। মিডিয়া,পত্র পত্রিকায় ফলো আপ পর্যন্ত নাই! ওই আর নাথিং বাট প্লাস্টিক কোটেড রাইনোসেরাস!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.