![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকাল "কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা" নিয়ে খুব হই চৈ হচ্ছে ।বলা হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যেই নাকি রোবট মানুষের জায়গা নিয়ে নেবে ।এ যে খোদা উপর খোদগারী ।শুনতে বিশ্বাস না হলেও এটা কিন্তু এখন অতি বাস্তব ।যারা এই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেন তারা জানেন ২০৫০ সাল এর আগেই এটা সম্ভব হবার বেশি সম্ভাবনা ।
এখন কথা হলো ভাষার সাথে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার কি সম্পর্ক ?
অবশ্যই আছে ।একটা গভীর সম্পর্ক আছে যা আমাদের এই মানব জাতির ঐক্য কে আমাদের সামনে যেন নতুন ভাবে তুলে ধরে ,আর তার ইতিহাসটাও কম রোমাঞ্চকর নয় ।
কে এই পানিনি ?
খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৫০০ বছর আগে প্রাচীন ভারতে এই ভদ্রলোক জন্ম গ্রহণ করেন।তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি পৃথিবীর প্রথম ব্যাকরণ লেখেন এবং অবশ্যই তিনি লিখেছিলেন সংস্কৃত ভাষার জন্য ।এবং ভাষা তত্বের ইতিহাস ঘটলে দেখা যায় পাণিনির "লজিকাল এনালাইসিস" এতটাই আধুনিক ছিল যে গত শতাব্দী পর্যন্ত সেটাই ছিল মানদন্ড ।পৃথিবীর অন্য সব ভাষার ভাষাবিদরা পাণিনির কাছ থেকে কিছু না কিছু তো নিয়েছেন ।ভাবুন যখন মানুষ থেওরি অফ রিলেটিভিটি নিয়ে চিন্তা করছে তখনও পাণিনির ভাষাতত্ব ছিল সবার সেরা ।
এলজেব্রা ,শল্য চিকিত্সা, মেটালার্জি ইত্যাদি বহু জ্ঞান এর মতো এই ভাষা তত্ব ও ভারত থেকে আরব দেশ গুলি হয়ে ইউরোপে পৌছায় ।কিন্তু নবজাগরণের সময় ইউরোপ এই ভাষা তত্ব নিয়ে বেশি মাথা ঘামায় নি ।হয়ত এর গুরত্ব টাই বুঝতে পারে নি ।পরবর্তী কালে যখন তারা মাথা ঘামানো শুরু করলেন তখন একটা জিনিস পরিস্কার হয়ে গেল সংস্কৃত ভাষার গঠন সবচেয়ে সেরা ।বিশেষত প্রথম প্রথম জার্মান চিন্তাবিদ রা সংস্কৃত নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলেন ।ভাষাতত্ব এর নতুন নতুন দিক উদ্ভাসিত হতে থাকলো ।কিন্তু পাণিনির চেয়ে ভালো "লজিকাল এনালাইসিস" তারা করতে পড়লেন না ।যতদিন না এই ফিল্ডে নামলেন আরো এক চিন্তা শীল ব্যক্তি কিংবদন্তি নওয়াম চমস্কী।
(এখানে একটা অফ টপিক -ইউরোপীয় রা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন মানব জাতির জ্ঞান তাত্বিক অবদানে ভারতীয়রা তাদের থেকে অনেক এগিয়ে আছে ।সদ্য নবজাগরণ ঘটে যাওয়া ইউরোপীয়রা এটা কিছুতেই মানতে পারছিলেন না ।হার্বার্ট স্পেন্সার বাদ দিয়ে প্রায় সমস্ত জার্মান দার্শনিকরা সেই সময় স্বীকার করে নিয়েছিলেন যে তারা বেদান্ত থেকে অনুপ্রানিত ।ফলে বিখ্যাত দার্শনিক ম্যাক্স মুলার দাবি করে বসলেন এ আর যাই হোক ইউরোপীয় ছাড়া লেখা সম্ভব না ।অতএব জন্ম নিল এক নতুন তত্ব ।ভারতীয়রা যে নিজেদের আর্য বলে দাবি করে ,তাহা সঠিক কিন্তু এই আর্যরা আসলে ইউরোপ থেকে ভারতে এসেছিল ।এবং ভাবলেও অবাক লাগে এই হাস্যকর তত্বটা মাত্র ৫ বছর আগেও টিকে ছিল ।এই নিয়ে আরো এক দিন লেখা যাবে )
নওয়াম চমস্কী যেটা করলেন পৃথিবীর সমস্ত ভাষার (যে ভাষা আছে ,যে ভাষা বিলুপ্ত হয়ে গেছে ,আর যে ভাষা আসবে ) ব্যাকরণ কে মাত্র চারটি ভাগে ভাগ করে দিলেন ।
সেই চারটি ভাগ হলো -
Type ০ ---- Type ০ ভাষার কোনো নিয়ম নেই ,মানে কোন ব্যাকরণ নেই ।
Type ১ ---- Type ১ ভাষা যে ব্যাকরণ মানে তার নাম কনটেক্সট সেনসিটিভ গ্রামার ।
Type ২ ---- Type ২ ভাষা যে ব্যাকরণ মানে তার নাম কনটেক্সট ফ্রি গ্রামার ।
Type ৩---- Type ৩ ভাষা যে ব্যাকরণ মানে তার নাম রেগুলার গ্রামার ।
এখন দেখা যাক কোন ধরণের ভাষা কি ধরণের নিয়ম মানে -
প্রথমে দেখি ল্যাটিন উদ্ভুত ভাষা যেমন ইংরাজি কি ধরনের নিয়ম মানে ।ধরা যাক কোনো ইংরাজি বাক্য কে আমি দুই ভাগে ভাগ করলাম একটি হলো Verb phrase(VP) আরো একটি হলো noun phrase(NP)।noun phrase(NP) কে আবার দুই ভাগে ভাগ করলাম noun(N) এবং article(A)।আবার Verb phrase(VP) কে দুই ভাবে ভাগ করলাম Verb(V) আর noun phrase(NP) ।
তাহলে "THE MAN ATE THE FRUIT." বাক্য টির গঠন কেমন হবে তা নিচের ছবি টি থেকেই বোঝা যাচ্ছে ।
এবার একটা সংস্কৃত থেকে উত্পন্ন হওয়া ভাষা নেওয়া যাক ।যেমন বাংলা ।উদাহরণ হিসাবে একটা বাক্য নেওয়া যাক -"লোকটি ফল খেয়েছিল "
এখন আরো একটি বাক্য নেওয়া যাক "আমি ফল খেয়েছিলাম " ।এখন লোকটির জন্য ছিল খেয়েছিল ।আবার "আমি" এই noun টার জন্য "খেয়েছিল" Verb টা বদলে হয়ে গেল "খেয়েছিলাম"।কিন্তু "THE MAN ATE THE FRUIT." এবং "I ATE THE FRUIT." এই দুটি বাক্য তে "I" এবং " MAN" এই দুটি noun এর জন্য "ATE" Verb এর কোনো পরিবর্তন হয় না ।
অর্থাৎ বাংলায় "লোকটি " কিম্বা "আমি" এই দুটি আলাদা আলাদা কনটেক্সট এর জন্য "খাওয়া " Verb টির পরিবর্তন হয় ।সুতরাং এটি কনটেক্সট সেনসিটিভ গ্রামার ।
আবার ইংরাজি তে "I" কিম্বা " MAN" এই দুটি আলাদা আলাদা কনটেক্সট এর জন্য "ATE" Verb এর কোনো পরিবর্তন হয় না ।সুতরাং এটি কনটেক্সট ফ্রি গ্রামার ।
ফলে বাংলা ,হিন্দি, গুজরাটি মায় তামিল পর্যন্ত সমস্ত ভাষাই কনটেক্সট সেনসিটিভ বা Type ১।
আর ল্যাটিন থেকে উত্পন্ন হওয়া জার্মান ইংরাজি সমস্ত ভাষাই কনটেক্সট ফ্রি বা Type ২।
এতো গেল ভাষা ..এর সাথে "কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা" এর কি সম্পর্ক ?
আসলে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভাষাও যে একই লজিক ব্যবহার করে ।যেমন আগেকার কম্পিউটার LANGUAGE গুলি কনটেক্সট ফ্রি বা Type ২ ব্যবহার করত ।আর আবার যেমন "C " LANGUAGE Type ২ এবং Type ১ এর মিশ্রিত ব্যাকরণ ব্যবহার করে ।এই সমুর সফটওয়্যার টি যে ভাষাতে লেখা হয়েছে তাও কিন্তু এই চারটি ব্যাকরণের মধ্যেই পড়বে ।এর বাইরে গিয়ে নতুন কিছু এখনো সফল ভাবে ইমপ্লেমেন্ট করা যায় নি । আর করা গেলেই জন্ম নেবে প্রকৃত "কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা"।
আমরা যদি মিল দেখতে চাই তাহলে অসীম আমাদের সীমা ,আর আমরা যদি ভাগ করতে চাই তাহলেও অসীমই আমাদের সীমা ।বিজ্ঞান চায় মিল করতে ।
আলবার্ট আইনস্টাইন এর একটি কথা মনে পরছে ।কথাটা অনেকটা এই রকম ছিল "আমি যখন অতীতের দিকে তাকায় তখন অবাক হয়ে যাই ,যখন ভাবি যে মানুষ টি আগুন আবিস্কার করেছিল ,যে চাষ করবার পদ্ধতি আবিস্কার করেছিল ,যিনি চাকার ব্যবহার প্রথম শিখিয়েছিলেন ,সেইসব অজ্ঞাত নিস্বার্থ মানুষ দের প্রচেষ্টা আজ আমাদের সভ্যতা ।আর আমি যত এই সব ভাবি ততই নিজেকে তুচ্ছ মনে হয় আর মনে হয় আমি কি করলাম "
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৪
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: না এইখানেই শেষ নয়, এর পরে ব্রাম্হী ভাষা আর ফার্সি ভাষার সাথে সংস্কৃত কে নিয়ে লিখব ।
উত্সাহ দেবার জন্য ধন্যবাদ ।
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৬
সাদরিল বলেছেন: অনেক কিছুই জানা ছিলো না, পোস্ট ফেভারিটে রাখলাম
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: থেঙ্কু
৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৫
যুদ্ধবাজ বলেছেন: +++
২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩
সিদ্ধার্থ. বলেছেন:
৪| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:২২
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: তার মানে কি বলা যায় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই কি এ ধারার সর্বোচ্চ রুপ?
তাহলে খোদা যদি সত্যি থেকে থাকেন তাহলে সেটা কি ধরনের বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পড়বে? আর যদি খোদায়ী কনসেপ্ট ভুল প্রমানিত হয় তাহলে তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিড়ি আরো ওপরে যাবার কথা?
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১২
সিদ্ধার্থ. বলেছেন:
আপনার প্রশ্নটা একটা প্রাচীন দার্শনিক প্রশ্ন ।
খোদার দুরকম দর্শন আছে ।আপনি যদি "আব্রাহামিক" দর্শনের কথা বলেন তবে এর উত্তর দেওয়া চাপের ।তাও আমি শেষে চেষ্টা করছি ।
এখন দেখা যাক "ধার্মিক" দর্শন কি বলে ?
আপনি একটা লাইন কল্পনা করুন যেটা যেটার বৃস্তিতি পসিটিভ এবং নেগেটিভ উভয় দিকেই অসীম পর্যন্ত । সেটার নাম দিন চেতনার রেখা ।নিচের ছবিটির মতন ।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৫
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: এখন মানুষের চেতনা এর সামান্য অংশ ।কিন্তু আমরা জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে তা বাড়াতে পারি ।যে আলো দেখা যায় না ,তা অনুভব করতে পারি কিম্বা যে শব্দ শোনা যায় না তা শুনতে পারি ।
এখন একটা পিপড়ের চেতনা কিন্তু মানুষের থেকে অনেক কম
আবার একটা বিড়ালের বা ডলফিনের চেতনা পিপড়ের থেকে বেশি ।এখন চেতনা যেহেতু ধাত্রের উপর নির্ভর করে ,তাই নিচের ছবিটি চেতনার বিবর্তন বোঝায় ।
এখন ওই অসীম বৃস্তিত চেতনার রেখাকেই যদি খোদা মনে করি ,তবে খোদার উপর খোদগিরি করা অসম্ভব কিছু নয় ।বেদান্ত মতে মানুষ তিন উপায়ে তা করতে পারে ,তার একটি হল জ্ঞানচর্চা ।
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: সুতরাং ,
তার মানে কি বলা যায় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাই কি এ ধারার সর্বোচ্চ রুপ?
-না ।চেতনার বৃস্তিতি সীমাবদ্ধ নয় এবং তা ধাত্রের উপর নির্ভর করে ।সীমাবদ্ধ নয় এমন ধাত্র অসীম চেতনাকে আশ্রয় দিতে পারে ।
তাহলে খোদা যদি সত্যি থেকে থাকেন তাহলে সেটা কি ধরনের বুদ্ধিমত্তার মধ্যে পড়বে?
-নিচের ছবিটি তার উত্তর দেবে
আর যদি খোদায়ী কনসেপ্ট ভুল প্রমানিত হয় তাহলে তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সিড়ি আরো ওপরে যাবার কথা?
- আমি এখানে বেদান্তিক কনসেপ্ট কথা বলছি ।এখানে খোদা কোনো আলাদা সত্বা নন ,বরং আমাদেরই সামগ্রিক চেতনার বাহ্যিক প্রকাশ মাত্র ।তাই বুদ্ধিমত্তার সিড়ি আরো উপরে যাবে ।
এখন আপনি বলতে পারেন আমি বেদান্তকে কেন টেনে আনলাম ।কারণ এই ধরণের প্রশ্নের জবাব এখনো পর্যন্ত শুধুমাত্র বেদান্ত দর্শন দিয়েই দেওয়া যায় ।এখন সয়ং মহাবিজ্ঞানী হাইসেনবার্গ এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বেদান্তের আশ্রয় নিতেন ,আমি তো কোন ছার্ ।তবে ভাবিষ্যতে আরো ভালো অন্য কোনো দর্শন আসলে এই প্রশ্নের উত্তর হয়ত আরো ভালোভাবে দেওয়া যাবে ।
এখন আব্রাহামিক দর্শনে বিশেষত খ্রিস্ট ধর্মে স্যালভেশন বলে একটা কথা আছে সেটাও হয়ত সুপার কনশিয়াস স্টেট এর কথাই বলে ।
৫| ২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:২৪
কালীদাস বলেছেন: মেশিন লার্নিং নিয়ে হালকা পাতলা পড়াশোনা করতে হয়েছিল এককালে, আপনার লেখাটা ইন্টারেস্টিং লাগল পানিনির নাম আগে শুনিনি। হে হে, পানিনি লেখে গুগলে ইমেজ সার্চ দেন, মজা পাবেন
২৭ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩
সিদ্ধার্থ. বলেছেন: হা হা ..... পানিনি নামে যে স্যান্ডউইচ আছে সেটা তো জানতাম না ।
তবে আমি এই পানিনি এর কথা বলছিলাম ।পড়ে দেখেতে পারেন ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৪
হতাস৮৮ বলেছেন: ভাই আপনি কী এইটার আরো লিখবেন না... এইখানেই শেষ।