| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৮ শতকে ব্যাংকের মাধ্যমে ইউরোপকে নিজেদের কব্জায় আনতে থাকে ই"হুদিরা। দেশ গুলোকে মোটা অঙ্কের ঋণ দিয়ে তারা এমন ভাবে জব্দ করে, যেন তাদের সব দাবি দাওয়া পূরণ করতে বাধ্য থাকে। আর এই সুদীর্ঘ পরিকল্পনার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড একটি ই"হুদি পরিবার- রথ"চাইল্ড বংশ (Roths"child)। সেসময় যত বড় ঘটনা ঘটেছে, প্রায় সব কিছুই তাদের সম্পৃক্ততায় ঘটেছে। (বর্তমানেও তারা গ্লোবাল মার্কেট ও মিডিয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক)
ইউরোপে ই"হুদিদের আধিপত্য গড়ার অন্যতম কারণ ছিল তাদের সাহায্যে নিজেদের জন্য আলাদা একটি রাষ্ট্র গঠন করা। ১৮৯৬ সালে ডঃ থিওডোর হারজেল (Theodor Herzl) সর্বপ্রথম তার বইতে এই দাবি তোলে এবং পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ই"হুদি রাষ্ট্র গঠনের নীলনকশাও দিয়ে দেয়। এটিই পরবর্তীতে যায়ো"নিস্ট আন্দোলন (Zio"nism) এর মূল ভিত্তি হয়। এদিকে রথ"চাইল্ড বংশেরও অনেক দিন থেকে ফি"লিস্তিনে ই"হুদিদের বসতি গড়ার ইচ্ছা ছিল, কারণ তাদের কাঙ্ক্ষিত 'প্রতিশ্রুত' ভূমি তো সেখানেই। অতঃপর যায়ো"নিস্টদের নিয়ে তারা নানান ফন্দি আঁটতে থাকে।
ফি"লিস্তিনে ই"হুদি রাষ্ট্র গঠনে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল উসমানী খিলাফত। কারণ ফি"লিস্তিন ছিল তাদের অধীন, আর সেখানে ই"হুদিদের উপর দেয়া উমার (রা
এর নিষেধাজ্ঞা তখনও জারি ছিল। তাই ই"হুদিরা প্রথমে ঘুষের মাধ্যমে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়, কিন্তু ব্যর্থ হয়। তারা বুঝে খিলাফতের পতনই হলো হলো একমাত্র উপায়, যার জন্য তৎকালীন তিন মোড়ল ব্রিটেন-ফ্রান্স-রাশিয়া অনেক আগে থেকেই ষড়যন্ত্র করছিল।
হঠাৎ একদিন তুরস্ক ইউরোপে যুদ্ধাস্ত্রের উপাদান গ্লিসারিনের রপ্তানি বন্ধ করে দিলে ব্রিটিশরা বিপাকে পড়ে এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে। এই সুযোগে এক মোক্ষম চাল চালে বিখ্যাত যায়ো"নিস্ট বিজ্ঞানী ড. কাইম ওয়াইজম্যান। সে গ্লিসারিন এর বিকল্প এসিটোন আবিস্কার করে এর ফর্মুলা ব্রিটিশদের দিয়ে দেয়। এর বিনিময়ে সে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইহুদীদের জন্য আলাদা আবাসভূমির দাবি জানায়।
এরপর ১৯১৪ সালে শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। কারণ অস্ট্রিয়ার যুবরাজ এক সার্বের গুলিতে নিহত হন, যেকারনে অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এ সুযোগে বড় রাষ্ট্রগুলোও যোগ দেয়- ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ নানা উদ্দেশ্যে। একপক্ষকে বলা হতো কেন্দ্রীয় শক্তি; অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির সাথে উসমানীয় সাম্রাজ্য ও জার্মানি ছিল এই দলে। অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়াসহ রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; যাদের বলা হতো মিত্রশক্তি।
১৯১৬ সালে যুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায়ই তিন মোড়ল রাষ্ট্র উসমানী সাম্রাজ্য ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়, যাকে সাইকস-পিকো চুক্তি (Sykes–Picot Agreement) বলে। অন্যান্য দেশ তিন ভাগে ভাগ হলেও সকলেরই নজর ফি"লিস্তিনের উপর থাকায় সেটাকে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে রাখার কথা বলে ব্রিটেন। কিন্তু সবার অগোচরে তারা ই"হুদিদের সাথে এই বিষয়ে আতাত করে। কারণ ই"হুদিদের মধ্যস্থতায় তারা আমেরিকাকে নিজেদের দলে ভেড়াতে চাচ্ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলে প্রায় ৪ বছর। যুদ্ধে পরাজয়ের কারণে পতন হয় জার্মান সাম্রাজ্যের, উসমানীয় সাম্রাজ্যেরও অধিকাংশ আরব এলাকা ব্রিটিশ ও ফরাসিদের অধীনে আসে। সেই সাথে মুসলিম শাসকদের অদূরদর্শিতা এবং ব্রিটিশদের ষড়যন্ত্রের কারণে তুরস্কে মুসলিম খিলাফত ভেঙ্গে যায়। ফি"লিস্তিন আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে থাকার কথা থাকলেও ব্রিটিশরা নানা কৌশলে পরে তা দখল করে নেয়।
এদিকে যায়ো"নিস্ট সংঘের তৎপরতা বেড়ে যায় বহু গুণে। ১৯১৭ সালে তৎকালীন রথচাইল্ড প্রধান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বালফোরের কাছে সাহায্য চান ফি"লিস্তিনকে ই"হুদিদের রাষ্ট্র করার জন্য। উত্তরে বালফোর ৬৭ শব্দের একটি চিঠি লিখে। এতে উল্লেখ ছিল যে ব্রিটিশ সরকার ফি"লিস্তিন দখলে তাদের সর্বাত্মক সহায়তা করবে। আর এই অভিশপ্ত চিঠিটিই বিখ্যাত বালফোর ঘোষণা (Balfour declaration) নামে পরিচিত।
ইতিমধ্যে যায়ো"নিস্ট এজেন্টরা নানা উপায়ে ফি"লিস্তিনে জমি কিনে বসতি গড়ার কাজ করছে পুরোদমে। ব্রিটিশদের সহযোগিতায় ১৯১৮ সালে সেখানে ই"হুদিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২০ হাজার হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৩৯-১৯৪৫) নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে আরো অনেকে সেখানে জড়ো হয়, ফলে ই"হুদি জনসংখ্যা বেড়ে হয় লক্ষাধিক।
বেচারা ফি"লিস্তিনের মুসলিমরা অনুমানও করতে পারেনা কি বিপদ তাদের দিকে ধেয়ে আসছে। একসময় হুশ হয় এবং তারা প্রতিরোধেরও চেষ্টা করে, কিন্তু ততক্ষণে যে অনেক দেরি হয়ে গেছে!
চলবে...
©somewhere in net ltd.