![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান এবং মায়ানমার সহ গোটা হিন্দুস্তান বা ভারত উপমহাদেশে সংঘটিত হবে এক মহাযুদ্ধ। ইসলামী পরিভাষায় যার নাম,“গাযওয়াতুল হিন্দ”।
এই যুদ্ধের এক পক্ষ হচ্ছে, মুসলিম উম্মাহ, আরেক পক্ষ হচ্ছে,মুশরিক বা হিন্দু সম্প্রদায় এ যুদ্ধে ব্যাপক রক্তারক্তি হবে, বিশেষ করে মুসলিমদের রক্ত এত অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হবে যে,রক্ত যেন মুষলধারে বৃষ্টি পর নালায় প্রবাহিত পানির শ্রোত! তবে সুখের কথা হলো,আল্লাহর রহমতে এই যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় হবে মুসলিমদের। মুসলিম মুজাহিদগণ মুশরিক শাসকদের গলায় শিকল-বেড়ি পরিয়ে সিংহাসন থেকে টেনে হিঁচড়ে নামাবে ইনশাআল্লাহুল আযীয!
বর্তমানে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন এতোটা প্রকট আকার ধারণ করেছে যে,আগামীকালই যেন উপস্থিত হতে হবে মুখোমুখি ময়দানে, অথচ আমরা আজও কত গাফিল, কত উদাসীন! হায় আফসোস!
ওরা নিজেদের সন্তানদের মনে একেবারে ছোট থেকেই ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ গেঁথে দিচ্ছে। যুবকদেরকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিয়ে মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করছে। মন্দিরে মন্দিরে ত্রিশূল ফলা সহ সব রকমের যুদ্ধাস্ত্র মজুদ করে রাখছে। ওদের যেকোনো সভা-সমাবেশে জনতাকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছে। ইতিহাসের বিকৃতি সাধন করে সাধারণ হিন্দুদের কাছে মুসলিম জাতিকে বহিরাগত সন্ত্রাসী ও ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করছে। ওদের সবরকমের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছে।এই হিন্দুত্ববাদী পশুরা প্রথমেই টার্গেট করেছে মুসলিম নারীদের, আমাদের বোনদের ও আমাদের মা'য়েদের। তাই "গাযওয়াতুল হিন্দ" প্রেক্ষাপটে প্রস্তুতি হিসেবে বর্তমানে মুসলিম নারীদের করনীয় সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু কথা তুলে ধরছি...
প্রথম কথাঃ নিজেকে হিফাজত করুন, ইসলামী বিধান অনুযায়ী পরিপূর্ণ পর্দা মেনে চলুন।
ননমাহরামের সাথে অবৈধ সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বর্জন করুন। এটা হারাম। যেখানে কোন ননমাহরাম মুসলিম পুরুষের সাথে বিয়েপূর্ব 'সম্পর্কে' জড়ানো হারাম, সেখানে আপনি কোনোভাবেই কোনো হিন্দুর সাথে 'সম্পর্ক' তো দূর, কোনো প্রকার কথোপকথনও করতে পারেন না! কখনোই না,না অফলাইনে, আর না অনলাইনে।আপনি ওদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে হয়তো অবগত নন;ওরা মুসলিম নারীদের গর্ভ নাপাক করার মিশনে নেমেছে,ওরা হিন্দুর বাচ্চা প্রবেশ করতে চায় মুসলিম নারীদের পেটে! আহ্ !
অনলাইনে ছড়ানো ছিটানো "ভাগওয়া লাভ ট্র্যাপ" নামক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের বিস্তৃতি ও সফলতা আর এদিকে মুসলিম নারীদের নির্বুদ্ধিতা ও ফেঁসে যাওয়ার খবরগুলো কলিজায় আগুন ধরিয়ে দেয়, চোখের কোণে তপ্তাশ্রুর ফোঁটা জমা করে দেয় , আমার তো আফসোস ও পরিতাপে নিজের হাত চিবিয়ে কেটে ফেলতে ইচ্ছে হয়! আপনি তো মহীয়সী পবিত্র নারী। আপনার গর্ভে তো জন্ম নেবে বীর মুজাহিদ। আপনার কোলে লালিত পালিত হবে গাযওয়াতুল হিন্দের অসীম সাহসী সৈনিক। অতএব আপনি শুধু আপনার নন, বরং পুরো মুসলিম উম্মাহর 'আমানত'! তাই হে প্রিয় মুসলিম বোন!হে মুসলিম উম্মাহর প্রিয় মা! এই যুদ্ধ-যামানা ও নাযুক পরিস্থিতিতে আপনার করনীয় প্রথম কাজটি হলো,নিজেকে হিফাজত করা।অন্তরের সবটুকু আকুতি নিবেদন করে আমি বলছি, "নিজেকে হিফাজত করুন!"
__
জ্ঞান ও অবগতি, আর অজ্ঞতা ও গাফলতি কখনো সমান হতে পারে না। আপনি যদি জ্ঞান অর্জন করেন এবং অবগতি লাভ করেন,তাহলে প্রথমত নিজ ব্যক্তিত্ব থেকে অজ্ঞতা ও গাফলতি দূর হয়ে যাবে। ফের দুর্বল চিত্ত শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যেকোনো কথা-কাজের বাতিল হতে হক'টা, মিথ্যা হতে সত্যটা এবং ভুল হতে সঠিকটা আপনার কাছে খুব সহজেই নির্ণিত হয়ে যাবে। বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা ও পরিমাপ,পারদর্শিতা অর্জিত হবে আপনার ব্যক্তিত্বে। পরিস্থিতির জটিলতায়, অটলতা ধরে রাখতে পারবেন,বিশ্বস্ততা ও আস্থাশীলতা নিশ্চিত হবে এবং নিজের ও অন্যের অশান্ত হৃদয় প্রশান্ত করতে সক্ষম হবেন ইনশাআল্লাহ। অতএব, বর্তমান মুসলিম উম্মাহর যে কঠিন পরিস্থিতি ও ভয়ঙ্কর কলটা চলছে, এখন তো "জ্ঞান অর্জন ও অবগতি লাভ" হতে বিমুখ থাকার কোন অবকাশ নেই,না, এতটুকুও অবকাশ নেই।
কথা বলছিলাম,আসন্ন গাযওয়াতুল হিন্দের প্রেক্ষাপটে মুসলিম নারীদের করনীয় প্রসঙ্গে। প্রস্তুতি হিসেবে এবং আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদী ঐ পশুদের কবল থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে আবশ্যিকভাবেই মা-বোনদের কী কী করতে হবে,তা নিয়ে বলা কথাগুলোর প্রথম কথা ছিলঃ "নিজেকে হিফাজত করুন" দ্বিতীয় কথা হলোঃ "জ্ঞান অর্জন করুন ও অবগতি লাভ করুন!"
জ্ঞানার্জন বলতে, আপনাকে জানতে হবেঃ
১. শুদ্ধভাবে কুরআনুল কারীম কারীম তিলাওয়াত।
২. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে পড়ার জন্য কুরআনুল কারীমের যতটুকু হিফয বা মুখস্থ আছে,অন্তত ততটুকুর অর্থ ও মর্ম আয়ত্ব করে নেওয়া। এবং সালাতে পাঠ করার দুআ ও তাসবীহগুলোর অর্থ ও মর্ম ভালভাবে বুঝে নেওয়া।
৩. আবশ্যিক পর্যায়ের ইসলামী আকিদা ও বিশ্বাস এবং মাসআলা ও বিধিবিধান।
৪. এজন্য নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত একাধিক আলিমের শরণাপন্ন হতে পারেন।এখানে দুটি কিতাবের নাম বলছি:-১. ইসলামী আকিদা ও ভ্রান্ত মতবাদ।২. ফিকহুন নিসা। লিখেছেন, বিদগ্ধ আলিমে দ্বীন মাওলানা মুহাম্মাদ হেমায়েত উদ্দিন।কিতাব দুটি অবশ্যই সংগ্রহে এবং নিয়মিত অধ্যায়নে রাখা চাই।
৫. নিয়মিত নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস শরীফ__প্রতিদিন একটি হলেও__অধ্যায়ন করা; এর জন্য "রিয়াযুস সালিহীন' এবং 'মাআরিফুল হাদীস" এই দুটি কিতাব বেশ ভালো হবে ইনশাআল্লাহ!
আর অবগতি লাভ বলতে, আপনাকে বুঝতে হবে:
বর্তমান যামানার হাকিকত ও বাস্তবতা এবং বর্তমান বিশ্বের পরিবেশ ও পরিস্থিতি। আপনি যে শেষ যামানায় উপনীত,তা আপনার উপলদ্ধি করতে হবে গভীরভাবে ; এর জন্য আখেরি যামানা নিয়ে রচিত বিজ্ঞ আলিমের কিতাবাদি পড়া চাই। সাথে অনলাইনে যারা মুসলিম উম্মাহর দরদ-ব্যথা ও মায়া-মমতা নিয়ে লেখালেখি করেন বা বক্তব্য প্রদান করেন, নিয়মিত তাঁদের লেখাগুলো পড়তে পারেন, বক্তব্যগুলো শুনতে পারেন। এঁদের মধ্যে আছেন, 'উম্মাহ নেটওয়ার্কে'র সম্মানিত আলোচক শাইখ তামিম আল আদনানী,
মাওলানা ইফতেখার সিফাত ও আসিফ আদনান সহ আরও অনেকেই।(প্রিয় রব্ব তাঁদের কল্যাণ করুন!)
হে প্রিয় মুসলিম বোন! মুসলিম উম্মাহর প্রিয় মা!
প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে এক প্রলয়ঙ্করী তুফান।
সে তুফান লণ্ডভণ্ড করে দিবে এ গোটা হিন্দুস্তান।
আপনি আমাদের ইজ্জত, আপনি আমাদের সম্মান।
ঐ পশুদের কাছে কেন হবে আপনার সম্ভ্রম কুরবান?!
মুসলিম তরুণদের বিক্ষত কলিজার সুকরুণ আহ্বান,
সুরক্ষিত থাকুন; আপনার জন্য তো ইলমের ময়দান!
__
চিন্তার গতি অনুযায়ী কথা, কাজ ও আচরণ প্রকাশিত হয়ে থাকে।আর আমাদের ভেতরের ইচ্ছাশক্তি চিন্তার গতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আর সত্তাগতভাবেই প্রতিটি ঈমানদার, মুমিন ও মুসলিমের চিন্তার গতি সঠিক, সৎ ও সুন্দর পথে পরিচালিত হতে থাকে,
বিপরীতটা হয় বেঈমান, কাফির ও মুশরিকদের ক্ষেত্রে __তাদের চিন্তার গতিতে ভ্রষ্টতা বিদ্যমান রয়েছে। এখন কোন মুমিন যদি নফসের প্ররোচনায় ও শয়তানের প্রতারণায় ধোঁকাগ্রস্ত হয়ে নিজের ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে কোন অন্যায়,অপরাধ বা পাপকাজ সম্পাদন করে ফেলে, তাহলে তার চিন্তার গতিতেও ভ্রষ্টতা অনুপ্রবেশ করতে থাকবে; অতঃপর নিজের ভুল শুধরে সেই মুমিন যদি তৎক্ষণাৎ তাওবা না করে, ফিরে না আসে তাহলে ধীরে ধীরে তার চিন্তার গতি পরিবর্তিত হতে হতে একটা সময় তার কথা, কাজ ও আচরণেও ভ্রষ্টচিন্তার ভ্রষ্টপ্রভাব প্রতিফলিত হবে।সে তখন অনেকটা নিশ্চিন্তে অন্যায়, অপরাধ ও পাপকাজ সম্পাদন করতে থাকবে।
"গাযওয়াতুল হিন্দে মুসলিম নারীর করনীয়" প্রসঙ্গে। ইতিপূর্বে দুটি কথা বলেছি,তা ছিল:-
১. নিজেকে হিফাজত করুন।
২. জ্ঞান অর্জন করুন এবং অবগতি লাভ করুন। এখন বলছি তৃতীয় কথা,তা হচ্ছে:- "অন্যায়, অপরাধ ও পাপকাজ বন্ধ করুন, ছেড়ে দিন এবং তাওবা করুন" আমাদের দ্বারা সংঘটিত যে- কোনো অন্যায়, অপরাধ ও পাপকাজে অসন্তুষ্ট হন স্বয়ং আল্লাহ রব্বুল আলামীন। তাঁকে অসন্তুষ্ট করে আমরা কোনভাবেই সফল হতে পারব না জীবনে, না দুনিয়াতে, আর না আখিরাতে; তাই আবশ্যিকভাবেই আমাদেরকে এসব থেকে যথার্থ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।আমাদের প্রিয় রবকে খুশী রাখতে হবে।এজন্য ইলম অর্জন করে সুস্পষ্ট বুঝে নিতে হবে,কী কী কাজ অন্যায়, অপরাধ ও পাপের অন্তর্ভুক্ত!পাপের বিশাল ব্যাপ্ত সীমানা হতে একটা দিকে বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তা হলো:-
"চোখের খিয়ানত"। খুব জোর দিয়েই বলব, আপনি চোখের খিয়ানত নয়, বরং হিফাজত করুন।অফলাইনে আপনি কোন ননমাহরামের দিকে দৃষ্টিভরে তাকাতে পারেন না। এটা গুনাহে কবীরা। অনলাইনেও না।হারাম দৃষ্টিপাতের পরেই সাধারণত শুরু হয় নানান জল্পনা কল্পনা। অতঃপর অবৈধ প্রেম পরকীয়া।এরই একটা অংশ হিন্দুত্ববাদী পশুদের প্রেমের ফাঁদে পা দেওয়া।
অনলাইনে আরো কিছু ব্যাপার আছে। সংক্ষেপে বলছি,
১. মুভি দেখা। বিশেষ করে হিন্দি মুভি দেখতে অভ্যস্ত এই বাংলা ভূখণ্ডের নতুন মুসলিম প্রজন্ম। ইংলিশ মুভি তো অশ্লীলতার সাথে তাদের কুফুরী জীবন , চিন্তা ও রাজনৈতিক দিক তুলে ধরতেই নির্মিত,তা স্পষ্ট। হিন্দি মুভিগুলোতে বর্তমান লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এসবে ইতিহাসের চরম বিকৃতি করে মুসলিমদের উগ্রবাদ, স্বৈরাচার ও সন্ত্রাস হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এবং ভিলেনের চরিত্রে রাখা হয়।আর মুভির দর্শক হিসেবে ব্যক্তির অন্তরে ইসলাম ও মুসলিম-বিদ্বষের জন্ম হয়। তাছাড়া শিরকের প্রধান উপকরণ মূর্তি-ভক্তিও জন্ম হয়।আল-ইয়াযু বিল্লাহ! কতটা মারাত্মক!
২. হিন্দি গান। অশ্লীলতার দরিয়া। হারাম হারাম হারাম!
৩. হিন্দি/বাংলা সিরিয়াল। সাংসারিক যত নষ্টের মূল।
৪. বাংলা মুভি, গান, নাটক, সহ এধরনের যত প্রোগ্রাম হয় সব ইসলামে হারাম।
৫.টিকটক জাতীয় হাস্যরসের ভিডিও। এতে কেবল সময় ও জীবনের অপচয় হয়।
৬. রঙঢং ও মিউজিকওয়ালা ইসলামী গজল। এগুলো যতই মুগ্ধকর ও চেতনাদীপ্ত মনে হোক, এসব হারাম।
৭.মডারেট দ্বায়ী,
যারা ভোগবাদিতা অটুট রেখে ইসলামের কথা বলে এবং ইলমহীন অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তিদের আলোচনা। এগুলো আপনার চিন্তার গতিকে বর্তমান দুনিয়ার যথা- বাস্তবতা থেকে ফিরিয়ে রাখবে। তাই আপনাকে এসব পরিত্যাগ করতে হবে। এবং বিকল্প খুঁজে নিতে হবে।
হে প্রিয় মুসলিম বোন! মুসলিম উম্মাহর প্রিয় মা!
আপনি আমাদের শক্তি, আপনি আমাদের চেতনা!
শিরা-রক্ত বিনিময়েও আপনায় লাঞ্ছিত হতে দেব না!
ঐ পশুরা চায় আপনার সম্ভ্রম ও জীবন করতে নষ্ট! ওঁদের জালে পা না দিয়ে চিন্তার গতি রাখুন সুসমৃদ্ধ!
নিজেকে হিফাজত করুন!জ্ঞানার্জন করুন ও অবগতি লাভ করুন! এবং অন্যায়, অপরাধ ও পাপকাজ বন্ধ করুন, ছেড়ে দিন এবং তাওবা করুন।
©somewhere in net ltd.