![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বছরের ছয় মাস রাইটিং ব্লকে ভোগা গড়পড়তা বাঙালী ।
১।
টানা তিনদিন অসহ্য গরমের পর আজ একটু বৃষ্টি হয়েছে । তাতে গরম একে বারে কমে নি । সহ্যসীমার মধ্যে নেমেছে । কনফেশনারীর দোকানটা খোলা । উপুর্যুপরি হরতালের কারণে এখন দোকান বন্ধ কম থাকে । বলা যায় না কবে কি হয় তাতে আবার হরতাল । দোকানে ঢুকলেন নুরুল হুদা সাহেব । একটি বেসরকারী কলেজের লেকচারার ।
-আরে প্রপেছর সাব! কি লাগব!?
-ব্যাটাদের সমস্যা এটা । কলেজে চাকরী করলেই কি প্রফেসর হয়ে গেলাম? ডেমনস্ট্রেটর আছে লেকচারার এসিসট্যান্ট প্রফেসর তারপর অ্যাসোসিয়েট তারপর তো প্রফেসর । চিন্তা থামিয়ে বললেন নুরুল হুদা সাহেব ,"একটা ওয়াটার ফিল্টার দাও বড় গুলা ।" পোলাপান যা বেতন দেয় তা থেকে কেনা লাগল । কারণ কলেজের বেতনে আর যাই হোক এই দুর্মুল্যের বাজারে সংসার চলে না ।
২।
বাসায় ঢুকলেন বিশাল এক বাক্স নিয়ে । তার এক ছেলে আর এক মেয়ে । তাদের দাদী আর মা । মোট পাচজনের সংসার । সাপ্লাইয়ের পানি খাওয়া আর ডোবার পানি খাওয়া এক । ওদের অফিসের গায়ে লেখা থাকে যদিও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ । আসলে যে ওই পানি কতটা বিশুদ্ধ, তা ওরাও জানে না । তার ওপর গ্যাসের যা অবস্থা তাতে পেটের অসুখ বেড়ে যাবে তাই এটা কিনলেন নুরুল হুদা সাহেব ।
ফিল্টার দেখে তার বাড়ির সবাই খুশি । পাঁচ বছরের মেয়েটার মুখ দেখলে মনটা ভরে যায় । সেভেন পড়ুয়া ছেলেটা নিজ হাতে ফিল্টার সেট করে কি খুশি । রাত বাড়ল । ফিল্টার চুইয়ে পানি পড়ছে টপ টপ টপ । বাসার কারোরই ঘুম হচ্ছিলো না । তবে নুরুল হুদা শব্দটা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন । কি সুন্দর ছন্দে ছন্দে ভরছে পানির পাত্রটা । একসময় থেমে যাবে । আর পড়বে না । একদম মানুষের জীবণের মত । টিকটিকিটা টিক টিক করে উঠে ।
৩।
-আচ্ছা বাবা এটা ভরে গেলে কি হবে?
-ভরে গেলে আমরা পানি গুলো জগে ভরে রাখব ।
-বাহ ভারী মজার জিনিসতো ।
কৌশিক । নুরুল হুদার ছেলে । আজ জগ ভরার দায়িত্ব নিয়েছে । বাঙালীতো । হুজুগটা জাতিগত ভাবে পেয়েছে ।
হৃদি । পাশের বাসার মেয়ে । কলির খুব ভাল বন্ধু । কলি ওকে নিয়ে এসেছে ফিল্টার দেখাতে ।
- দেখ হৃদি আমাদের ওয়াটার ফিটার ।
-হা হা হা
-হাস কেন?
-এটা কি নতুন কিছু? আমাদেরটা আরো দামী । আরো বড় । ইলেক্ট্রিক । আর হ্যা ফিটার না । ফিল্টার ।
হৃদির বাবা সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক । আর সিমি পড়ে ইংলিশ মিডিয়ামে । ওর সামনে প্রাইমারী স্কুলের কলিতো কিছুই না ।
বিদ্যুৎ নেই । মানসূরা বাতাস করছে । হারিকেনের আলোয় পড়ছে কৌশিক । পান চিবুচ্ছে ওদের দাদী ।
হৃদি এসে নুরুল হুদার বুকে মাথা রাখল ।
-বাবা এখন তো কারেন্ট নেই ।
-হ্যা মা ।
-তারমানে হৃদিদের ফিল্টারটা এখন চলছে না ।
-হ্যা মা ।
-তাহলে তো আমাদেরটাই ভাল ।
-অবশ্যই মা ।
কলি জড়িয়ে ধরল হুদা কে । হারিকেনের আলোয় চোখ চিক চিক করছে মেয়েটার । পাশের রুম থেকে ভেসে আসছে টিপ টিপ পানি পড়ার শব্দ ।
#CNOS
০৪ ঠা মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৪
সায়ানাইড সাকিব বলেছেন: হ্যা । চেষ্টা করেছি অল্পের মধ্যে ব্যাপারটা ফুটিয়ে তোলার জন্য । পড়ার জন্য ধণ্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা মে, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০
টি এম মাজাহর বলেছেন: ছোট অথচ সুন্দর অনুভুতি। অসাধারণ।