![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বছরের ছয় মাস রাইটিং ব্লকে ভোগা গড়পড়তা বাঙালী ।
আজ আমাদের জেলার বিজ্ঞান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান ছিলো । আমি গত পাঁচ বছরে টানা অংশগ্রহন করলেও এবার ছিলাম একজন বিজ্ঞানমনষ্ক দর্শক । তবে এবার বেশ কিছু মজাদার অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রায় ৪৩ টা স্টলের অর্ধেকই ফাঁকা ছিলো যদিও । তবুও বলব মেলাটা আগের চেয়ে উন্নত ।
মেলায় অনেক স্কুল কলেজই অংশ নিয়েছে । সবাই ভাল কিছু আনবে সেটা এই মফস্বলে আশা করা অনুচিত । আমি বরাবরই একজন উৎসাহদাতা । মেলায় কাউকে খারাপ মন্তব্য করি নি । যা বুঝাইছে বুঝে গেছি । এবার আসল কথায় আসি ।
নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দেবেন্দ্র কলেজ । স্টলে ঢুকেই অবাক হওয়ার পালা । ছেলেদের কাউকেই চিনি না । অবশ্য ওরাও আমাকে চিনে না । ওদের মেইন প্রজেক্ট ছিলো, বিদ্যুত উৎপাদন । ও হ্যাঁ, শিরোনামটার কারনও এইটা । এইটি পার্সেন্ট প্রোজেক্টেরই লক্ষ্য ছিলো বিদ্যুত উৎপাদন । সেকেন্ডারী প্রজেক্টটা ছিলো কার্বনডাইঅক্সাইড ব্যাবহার করে কিভাবে পেট্রোল বোমা প্রতিরোধ করা যায় । ওরা আমাদের কে অত ডিটেল বুঝাইতে পারে নি । একটা মহাআঁতেল এসে আক্রমন করল ভুলভাল ধরার জন্য । আমি বিরক্ত হয়ে চলে আসলাম ।
পরবর্তি স্টল মহিলা কলেজের । ওখানে ঢোকা মোটামুটি অসম্ভব । সাদা পোশাকে ১৮+ বড় ভাইরা আলাদা উত্তেজনা অনুভব করে । তারা সিনিয়রিটির ক্রমে আগে । তাই তারাই সমযোজি বন্ধন সৃষ্টি করতে ওইখানে ঘোরাফেরা করছে । যাক কেমিস্ট্রি বাদ । ওরা বোধহয় কোনো মডেল এনেছে ।
এবার একটু ভাবসাব নিলাম । কারন এবার হাইস্কুলের ওইদিকে যাবো । সিনিয়র পারসন আমি বা আমরা । অনেকগুলা প্রজেক্ট আনছে । এবং সেগুলো বিদ্যুত দ্বারা বিদ্যুতায়িত এবং ভূমিকম্পে কম্পিত । এবং আবারো আংকেল হইলাম । দাড়ি থাকলেই কি আংকেল হয়?
এবার গার্লস স্কুল । স্বাভাবিক ভাবেই স্টল লোকে লোকারণ্য । ছোট ভাই ব্রাদাররা লাইন মারার চেষ্টা করতেছে । কিন্তু প্রচেষ্টা বার বার ব্যার্থ হলেও তারা নতুন উদ্যমে সেখানে যায় । আমি জিজ্ঞেস করলাম কাহিনী শোনাও । শুরু করল । এবং আমি অতিমনোযোগ দিয়ে শুনলাম । কিন্তু তিন তিনটি প্রজেক্টের কাহিনীই সফল ভাবে বুঝতে অক্ষম হইলাম । অতপর কমেন্টিং এর পালা । আমি কমেন্ট করলাম । চলে আসছিলাম ।
হঠাৎ ডাক, “ভাইইয়া নামটা?”
আমি কোনো প্রজেক্টেই নিজের নামে সাইন করি নাই । যথাযত ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে ঠান্ডা গলায় বললাম,”নাম দিয়ে কি হবে! নামে কি আসে যায়?”
ওপাশ থেকে উত্তর,”প্লিজ ভাইয়া”
অতপর তাহার চোখে চোখ রাখিয়া অটোগ্রাফ মাইরা দিলাম ।
স্টল থেকে বের হয়ে বুকের কোনে হালকা ব্যাথা অনুভূত হল । ইশশশ যদি সত্যিইই আমার অটোগ্রাফ দেয়ার ক্ষমতা থাকতো!
.
হঠাৎ মায়ের আগমন,”দেখছছ? মাইনষের মেয়ারা কি বানাইছে? মেধা মেধা! এগুলারে কয় জুয়েল । দেখ দেখ ভাল ছাত্র ছাত্রী দের গা দিয়া কেমন বাত্তি জ্বলে ।“
আমি বললাম,”মা আমিওতো দুইবার তিনবার ফাস্ট হইলাম । তখন কি ভাল ছাত্ররা এগুলা করত না! “
.
মেলা ছেড়ে অনেকদূরে চলে আসলাম । পেছনে ফেলে আসলাম অনেকগুলো ক্রিয়েটিভ ব্রেণ । যাদের কেউ সার্টিফিকেটের খোঁজে, কেউবা সিলেবাসের যাঁতাকলে নিজেদের স্বত্তাকে হারাবে । তবে আজ কেনো যেন অন্য একটা অনুভূতি পেলাম । গতবারও এই মেলাতে ধূলোয় লুটোপুটি খেতাম । আর আজ……
সত্যিই বড় হয়ে যাচ্ছি বোধহয় ।
২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৬
সায়ানাইড সাকিব বলেছেন: জ্বী ভাইয়া নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি । কাজগুলো ১০০% আমাদেরই করতে হয় । স্যাররা শুধু শো । কিছু কিছু স্যার তো ঠিকমত খরচও দিতে চায় না ।
কাল থেকে ডিজিটাল মেলা । তার ছবি দেবো । এইবার ভুলে গেছি ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৫
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা যোগ্য বিজ্ঞান শিক্ষক এর অভাবে প্রতিনিয়ত বিজ্ঞান বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ঘুষ নিয়ে যে ছেলে বা মেয়েটিকে বিজ্ঞান শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন তার কানের কাছে মুখ নিয়ে যদি জিজ্ঞাসা করেন ভাই পানির রাসায়নিক সংকেত কি সেটাও পারবে না ১০০ জনের ৮০ জন বলেই মনে করি। তবে এই রকম বিজ্ঞান মেলা প্রতিবছর আয়োজন করলে অল্প কিছু ছেলে-মেয়ে নিজের যোগ্যতায় বিজ্ঞান মনষ্ক হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি।
আমি মেলায় গেলে চেষ্টা করি ভালো করে শুনতে তারা কি করেছে। এর পরে আসার সময় উৎসাহ দিয়ে আসি সে যে কাজই করুক না কেন।
মেলার কিছু ছবি যোগ করলে আইডিয়া পাওয়া যেতো কেমন মেলা হলো।