নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখার মত কিছু পেলে লিখি, নিয়মিত ব্লগার না।

সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, কথাটা প্রাচীন প্রবাদ। কিন্তু কাউকে সুখে থাকতে দেখলেও ইদানীং অনেকে ভুতের কিল খায়, কেন খায় জানি না।

doha057

মতের অমিল হওয়াটা কখনই খারাপ কিছু নয়। মতের অমিল রয়েছে বলেই আলোচনা-সমালোচনার আবির্ভাব ঘটেছে। পৃথিবীর সবাই যদি একই রকম ভাবতো তাহলে পৃথিবীও ঘূর্ণন বন্ধ করে দিত। তবে মতের অমিল যুক্তি দিয়ে খণ্ডানো উচিৎ আর যুক্তি খণ্ডানো সম্ভব না হলে উদারচিত্তে কারো মন্তব্য মেনে নেয়া উচিৎ।

doha057 › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্ষণ নিয়ে কিছু কথা

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১০

সাইবার স্পেসে ভার্চুয়াল আড্ডাবাজি করতাম একটা ভয়েস চ্যাট সাইটে, সেখানে কিছু ভাল বন্ধুও পেয়েছিলাম। এর মধ্যে একজন একবার ধর্ষণের সংজ্ঞা দিয়েছিল অনেকটা এরকম, "কর্তার ইচ্ছায় কর্ত্রীর অনিচ্ছায় ঘর্ষণের ফলে যে বর্ষণ হয় তাকে ধর্ষণ বলা হয়"। যাই হোক, সংজ্ঞাটা হাস্যরসাত্মক হলেও এক্ষেত্রে একটা জিনিষ পরিষ্কার, কর্তার ইচ্ছায়। ধর্ষক লিঙ্গ হিসেবেও পুংলিঙ্গ, আর ধর্ষিতা সবসময়ই স্ত্রীলিঙ্গ। ঠিক যেভাবে কাপুরুষ আজীবনই পুংলিঙ্গ। কারন মেয়ে মানুষের ক্ষেত্রে কাপুরুষ শব্দটি ব্যবহার করা নিরর্থক। এই পার্থক্য দুটি বৈষম্য নয়, বরং সৃষ্টির শুরু থেকে প্রকৃতিগত ভাবেই চলে আসছে।



ধর্ষণের বিরুদ্ধে বর্তমানেই যে সবাই সবসময় সোচ্চার ছিল তা নয়, এটা সবসময়ই ছিল, এখন শুধু প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় সবার কাছে খবর পৌঁছে যায় খুব সহজেই ও দ্রুত। কিন্তু দেখা গেছে ক্ষমতার অপব্যবহারে ধর্মীয় রীতিকে নিজের ইচ্ছে মত ব্যবহার করে একতরফা বিচার করা হয়। জীবনে কখনো শুনিনি দুর্বলের স্বপক্ষে বিচারের রায় হয়েছে। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সবলের পক্ষে গেছে অথবা খুবই বিরল ক্ষেত্রে সঠিক বিচার করা হয়েছে। এখানে ধর্মকে দোষারোপ করা হচ্ছে এরকম, যে আপনি ধূমপানের ক্ষতিকে চিকিৎসাশাস্ত্রের দোষ দেখছেন। এক্ষেত্রে বরং স্বেচ্ছাচারিতা আর অপব্যবহারকে দোষ দেয়া উচিৎ।



এবার আসুন ধর্ষণের কিছু কারন নিয়ে বলি। আমরা ছোটবেলা থেকেই কম বেশী গালিগালাজের সাথে পরিচিত। একটি সচরাচর গালি নিয়েই যদি বলি, "কুত্তার বাচ্চা" এই গালিটি কেন দেয়া হয়? কুকুর হচ্ছে পশুদের মধ্যে সবচাইতে প্রভুভক্ত, সে হিসেবে কারো ভক্তিতে খুশি হয়ে উপরোক্ত গালিটি ব্যবহার করা উচিৎ ছিল। কিন্তু আমরা গালিটি এই কারনে ব্যবহার করি কারন কুকুর একটি নোংরা ও অসভ্য প্রাণী, সবার সামনে সংগমে লিপ্ত হয় আর সঙ্গি নির্বাচনে কোন বাছ বিচার করে না। তাই কোন মানুষ তার মনুষ্যত্ব হারালে তাকে "কুত্তার বাচ্চা" বা অন্য গালি দেয়া হয়। আবার বাঘের বাচ্চা বা সিংহের বাচ্চা কিন্তু প্রশংসা বোঝায়, শুধুমাত্র বাঘ আর সিংহের রাজকীয়তার কারনে। যাই হোক এই কথাগুলো বলার কারন একটাই, মানুষকে পশুর সাথে তুলনা করা হয় যখন মানুষ তার মনুষ্যত্ব হারায়। আর কি সেই Distinctive Feature বা পার্থক্যকারী?? খুবই সাধারণ একটি বিষয়, সেটি হচ্ছে আমরা "না" করতে পারি। একটি ক্ষুধার্থ পশুর সামনে খাদ্য থাকলে সে খাবেই, কিন্তু মানুষ পারে, "না" করতে। আমরা পরম শত্রুকেও সম্মান দেখাতে পারি, হাসি মুখে আপ্যায়ন করতে পারি। ছোটবেলায় ভাব সম্প্রসারণ পড়েছিলাম, প্রান থাকলেই প্রাণী হওয়া যায়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হওয়া যায় না। তখন শুধু মুখস্ত করলেও এখন এর অর্থ বুঝি। যৌন উত্তেজনা সুস্থ শরীরে থাকবেই। কিন্তু যদি মানসিকতা অসুস্থ হয় তখনই মাথায় অসুস্থ যৌন কামনা আসে। যেহেতু প্রাকৃতিক ভাবেই ছেলেরা মেয়েদের থেকে শক্তিশালী, আর যেহেতু পুরুষের বিশেষ অঙ্গের ব্যবহার তাৎপর্যপূর্ণ, তাই শুধু মাত্র ছেলেদেরই ধর্ষণ করার ক্ষমতা থাকে। এর বিপরীত হওয়াটা অস্বাভাবিক, তাই সেটা উদাহরণ হতে পারে না। এখন বৈজ্ঞানিকদের যদি বলা হয় ধর্ষণের বিরুদ্ধে কি করা যায়, তারা চিন্তা করবে যৌনতা বাদ দিয়ে বংশরক্ষা করা যায় কিনা, আবার Pharmacist কে বলা হলে সে পরামর্শ দিবে নিয়মিত Anti-Viagra খেতে। এরকম বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ বিভিন্ন রকম আইডিয়া দিবে।



গত কয়েকদিনে ফেবুতে কয়েকটি পেজে একটি পোস্ট দেখেছি এরকম, যে মেয়েরা বলছে আমরা কি ধরনের কাপড় পড়ব টা না শিখিয়ে আপনারা ছেলেদেরকে শিক্ষা দিন যাতে আমাদেরকে ধর্ষণ না করে। আবার এর উত্তর হিসেবে কেউ বলছেন, ব্যাপারটা এমন দাঁড়ালো যে আমি যেখানে খুশি সেখানে সাঁতার কাটবো, আপনি কুমীরগুলোকে বলুন না কামড়াতে।



আসলে এখানে কার দোষ, তা খুঁজে বের করার পূর্বে দোষের উৎস খুঁজে বের করা উচিৎ। আমাদের শৈশব শুরু হয় বৈষম্য শিক্ষার মধ্য দিয়ে, আমাদেরকে শিখানো হয় মেয়েরা দুর্বল, সিনেমাগুলোতে নাচ-গানের পাশাপাশি ধর্ষণের দৃশ্য না থাকলে হয় না। কিছু কিছু বিষয়ে শিক্ষা মানুষকে হাতে ধরে দেয়া যায় না, আমার মনে আছে ছোট বেলায় স্কুলে যাওয়ার পথে টাকা চাওয়ার বায়না ধরায় আমার মা আমাকে খুন্তি গরম করে লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর থেকে কোন কিছুতে স্রেফ না করলেই করতাম না। এরপরও অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। কিন্তু এই জিনিষটা মনের মধ্যে গেঁথে গেছে, এই পৃথিবীর সবকিছু আমার নয় এবং যেটা অর্জন করা আমার জন্য অসাধ্য তা হাসিল করার চিন্তাও অনুচিত বরং সবার সবকিছুকে সম্মানের চোখে দেখা উচিৎ। ভেবে দেখুন এই একটি প্রবৃত্তি থেকেই সকল অপকর্মের শুরু, মানুষ ঘুষ খায় যে কারনে, মানুষ দুর্নীতিও করে একই কারনে, চুরি করে, ডাকাতি করে, ধর্ষণও করে একই কারনে। আমাদের উচিৎ মানুষকে শ্রদ্ধা করা, সম্মান করা এবং বৈষম্য না করা। ধর্ষণ করার সময় যদি কোন পুরুষ একবার চিন্তা করত সেও একজন নারীর গর্ভে জন্ম নিয়েছে, তাহলে কখনই ধর্ষণ করতে পারতো বলে মনে হয় না। তাই প্রাথমিক ভাবে সবাইকে সুস্থ চিন্তা করতে শিখাতে হবে। যেটা ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। বাবা মা থেকে শুরু করে প্রাথমিক স্কুলের ও এই দায়িত্ব নিতে হবে। মানুষকে মানুষ রূপে দেখতে শিখাতে হবে। মানুষকে সম্মান করতে শিখাতে হবে। অপসংস্কৃতি থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। তাহলেই একটি সুস্থ মানসিকতার সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। আর যারা ইতিমধ্যেই অসুস্থ ও অপ্রকৃতস্থ যৌন মানসিকতা নিয়ে সামাজিক মূল্যবোধের ব্যাপারে উদাসীন হয়ে এধরনের কাজে লিপ্ত, এদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে উদাহরণ স্থাপন করা উচিৎ। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড চাই, সে যেই হোক। একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধশীল সমাজ ও দেশের আশায় বসে আছি, কবে হবে জানি না, তবে একদিন হবে এটা জানি, সে আশায় বেঁচে থাকতে চাই।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৬

চেনা মুখ বলেছেন: হম +++++++++

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

যাযাবরমন বলেছেন: আরেকটা সংজ্ঞা আছে, " ইজ্জতের উপর ইজ্জত রাখিয়া বেইজ্জতি করের নামই ধর্ষণ"।
এখানে কোন লিঙ্গ উল্লেখ করা নাই।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

doha057 বলেছেন: এটা তো বিবাহের সংজ্ঞা বললেন ;)

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

খায়ালামু বলেছেন:

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৫

আহসান২০২০ বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১১

doha057 বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১০

খারাপ ছাত্র কিন্তু মানুষ ভালো বলেছেন: ভালো লিখেছেন। প্লাস

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২৮

doha057 বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.