![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন আগে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে সরকারী অফিসের । গ্যাস অফিসে গিয়েছিলাম । বকেয়া বিলগুলু ঠিক করতে সাথে অনেক গুলু বিল তাদের মোটা মোটা লেজার খাতায় কেন উঠে নাই সেই ব্যাপারটা পরিষ্কার করতে । ( বিল গুলু কি ভুতরে দিসিলাম ? )
সকাল ১১.৩০ টায় গ্যাস অফিসের চার তলায় উঠে মধ্যবয়স্ক একজন অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি অপরাধীর মতো । অফিসার কিছুক্ষন পর পর আমার দিকে তাকায় , কথা বলার কোন লক্ষন দেখা যাই না । ইনিয়ে বিনিয়ে আমার সমস্যার কথা বলার পর আমাকে অপেক্ষা করতে বলে কোথায় চলে গেলো কে জানে ? যখন ভেবে নিলাম অফিসার মানুষ এই নাদান এর কথা ভুলে গিয়ে মনে হয় কোথাও গল্প করতে বসে গেছে । গিয়ে একবার চেহারাটা দেখানো দরকার আবার , তখনি হাতে রঙ চা নিয়ে তিনি উপস্থিত । " দেখি কি সমস্যা " । উলটে পালটে আমার সমস্যা দেখে , এইটা তো আমার কাছে না । পাশের রুমে যান । অইখানে সমাধান পাবেন । এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার খেসারত পেলাম ।
এইবার আর ভুল করি নাই । ঠিকমতো খোঁজ নিয়ে রুমে ঢুকলাম । বসে আছেন একজন আপু । যাক , মেয়ে মানুষ বেশিক্ষন গাইগুই করবে না আমার সাথে । কথা বলার আগেই থামিয়ে দিলো , " লাঞ্চ টাইম । পরে আসেন । ২ টার পর আসেন । "
--- ২ টা পর্যন্ত কি করবো । আমার কাজ টা বেশি না ।
--- আপনি বুঝবেন কাজ বেশি কি কম । এখন করতে পারবো না । ২ টার পরে আসলে করেন নইলে কালকে সকালে আসেন ।
আমার গায়ের রঙ টা কালো । আরও কালো করে , দুপুরের রোদ মাথায় নিয়ে তার লাঞ্চ টাইম কাটাইলাম পথে পথে ।
লাঞ্চ টাইমের পর , যখন ঢুকলাম তখন চারিদিকে খালি মানুষের চাপাচাপি । কি আশ্চর্য এরা আগে থেকে সব জানতো নাকি ! তাদের ঠেলা ঠেলিতে আমার সমস্যা আমাকেই বেশ কয়েকবার গিলে খেতে হয়েছে । এর মধ্য কয়েকবার আপু আর ম্যডাম এর পার্ট শেষ করে ফেলছি । রোদে মাথা নষ্ট ছিল , নইলে আনটি কেন ডাকতে যাবো আর কেনই বা সবার উপরে থাকা আমার বিল বই সবার নিচে ধুম করে চলে যাবে । বহুত কষ্টে বিল এর কাজ শেষ যখন করেছি তখন দুপুর ২.৫০ । আনটি তখন অনেক গম্ভীর । " পাশে জাহাঙ্গীর সাহেবের কাছে যান । উনার একটা সাইন লাগবে । "
এক দোযখ থেকে বের হয়ে আরেক দোযখে ঢুকার জন্য এত কঠোর নির্দেশ এর আগে কখনো পাই নি । জাহাঙ্গীর নামের মানুষটি হাঁসি খুসি । পান খাচ্ছেন । আর তাকে ঘিরে থাকা মানুশগুলুর সাথে খোশ গল্প করছেন । মাঝে মাঝে সামনে পরে থাকা ফাইল গুলুর থেকে কিছু ফাইল উলটে পালটে সাইন করে দিচ্ছে । আমার বিলটা ওই ফাইলগুলুর তলায় তখন ক্রন্দনরত । মাঝে মাঝে ইশারায় কেউ কেউ কিছু কিছু কথা বলার চেষ্টা করছে । জাহাঙ্গীর সাহেব তখন তার একান্ত মোবাইল নাম্বার দিয়ে হাসিমুখে , " রাত্রে ৮ টার পর একটা কল দিয়েন "
কখনো মনে হই নি আমাকে সরকারী চাকরি করতে হবে । আজকে থেকে সরকারী চাকরীতে ঢুকার প্রিপেরাশন নেওয়া শুরু করলাম । বিশেষ করে গ্যাস অফিসে ঢুকবো । লবিং টবিং যা লাগে লাগুক । জাহাঙ্গীর এর মতো সমানে কার্ড বিলি করবে । ইশারায় কথা বলব আমিও । রাত ৮ টার পর অমুক ফোন দিবে , " স্যার গ্যাসের লাইনটা দরকার । "
আমি বলবো , আরে আপনে আমার ভাই মানুষ । আমার টা একটু খেয়াল রাখবেন আর কি ।
মিউ মিউ করে ওপাশ থেকে অমুক তমুক খেয়াল রাখার ব্যাপার নিয়ে কথা বলবে আমার সাথে ।
আমি তখন বিছানায় হেলান দিয়ে পা নাড়তে নাড়তে পিকদানিতে পিচিৎ করে পানের পিক ফেলবো । আহা সরকারী চাকরী। পিচিৎ পিচিৎ
২১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:২২
শরফুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন: দাদা মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ।
আমার লেখাটি পড়ে দেখলে বুঝতে পারবে আমি ওদের কার্যক্রমে হতবাক , আর আশ্চর্য হয়েছি অনেক বেশি । সরকারী অফিসে কখনোই এর আগে তেমন যাওয়া হয়নি । এই প্রথম গিয়ে শিক্ষা পেয়ে গেলাম ।
ওরা যদি সার্ভিস দিত তাহলে কথা ছিলো । কিন্তু ওরা তো তা করিনি ।
আমিও জানি পরিবর্তন হবে । তবে তাদের দ্বারা সম্ভব না । অইখানে আমাদের তরুন রক্ত দরকার ।
সরকারের কাছে ব্যক্তিত্তের কোন দাম নাই দাদা ।
২| ২১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:১২
মাসুদ চৌধুরী বলেছেন: টিপসবাংলা
৩| ২১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭
সানফ্লাওয়ার বলেছেন: চমৎকার করে সরকারী কর্মচারীদের সার্ভিস দেয়ার ঘটনা বর্ণনা করেছেন। থু দেই এদের মুখে।
২১ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪
শরফুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন: সরকারী চাকরি যারা করে তারা আসলে পরিবেশের সাথে সাথে এমন হয়ে যাই । তাই বলে একদম ভালো নাই তা না । তবে তা একেবারে অপ্রতুল খারাপের তুলনায় ।
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ।
৪| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:০৪
গোবর গণেশ বলেছেন: এই পাঠাদের আবার চাকুরীর মেয়াদ বাড়ায় সরকার। হারামজাদাদের সবগুলারে লাত্থি মাইরা নিচে ফালায়া নতুন নতুন বেকার পোলাপাইন গুলারে চাকরী দিলে সব ঠিক হইয়া যাইত। একটা লাইন পড়তে গেল দাঁত খুইল্যা পড়বার চায়। এইগুলানরে বসায়া বসায়া পোষতাছে। মেজাজ দেখলে পশম খাড়ায়া যায়। খবিশের বাচ্চাদের ব্যবহার আমার জানা আছে। সরকারী হাসপাতাল, বিদ্যুৎ অফিস, সোনালী ব্যাংক এই জায়গা গুলার সাথে আমি ভালো ভাবে পরিচিত।
২২ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:১০
শরফুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন: ভয়াবহ সব ব্যাপার হয় সরকারী অফিসে ।
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ
৫| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৮:৫১
নাহিদ সৈকত বলেছেন: সব সরকারী অফিসই একই রকম। কাম কাইজের ধার ধারে না, হুদাই বিশাল একখান ভাব লইয়া বসিয়া থাকিবে। বাম হস্তের কার্জ সম্পাদন হইলেই তাহারা ........ আশা করি বলা লাগবে না।
২২ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:১১
শরফুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন: সব সরকারী অফিসই একই রকম। কাম কাইজের ধার ধারে না, হুদাই বিশাল একখান ভাব লইয়া বসিয়া থাকিবে।
একদম সহমত আপনার সাথে ।
৬| ২১ শে মে, ২০১৩ রাত ৯:৫৬
জিয়ান আহমেদ বলেছেন: বোর্ড অফিস এ গেছিলাম, একই অবস্থা, কথাই বলতে চায় না। যেই কাগজ কে তাদের শ্রদ্ধা করা উচিৎ, তারা অফিস এর ভেতর openly এই কাগজ পুরাচ্ছিলেন (তামাক সহ)..
২২ শে মে, ২০১৩ সকাল ১১:১৩
শরফুদ্দিন মাহমুদ বলেছেন: বোর্ড অফিস তো ভাই আরও মারাত্মক জাইগা । আপ্নের মাথা এখনো ঠিক আছে এইটাই বেশি ।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৫:১০
চায়াবিথী বলেছেন: দাদা, তুমি যেভাবে বললা, আমার তু লজ্জা লাগতাছে,
আরও বেশী খারাপ লাগল তোমার মন মানসিকতা দেখে,
আজ ২ বৎসর ধইরা ফাইট করাতাছি, change আসবেই।
তবে স্টাফদের কে দেখে দাদা তুমি যদি এভাবে ব্লেম কর..
"একজন অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি অপরাধীর মতো"--এটা কোন ধরনের কথা ? নাকি অন্যায় কিছু আবদার করছেন,
সে বসে আছে আপনাকে service দেওয়ার জন্য আর আপনি একজন অপরাধী!!!
ব্যাক্তিত্ব দেখান দেখবেন কাজ হয়ে যাবে, নিজেকে ছোট ভাব্বেন্না/করবেন্না
আর নিজের কাছে হারবেন্না, নাহলে সবাই আপনাকে অপরাধীর বানাবে !
ভাল থাকবেন !!