নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছুই বলার নেই...

এবং সাইদি

স্বপ্ন দেখতে ভালো লাগে, দেখাতেও!

এবং সাইদি › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘কি অন্যায় করেছিলাম আমি’..এ দেশে স্বাধীনতা এনে\'

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১১



সাম্প্রতিক কালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, তা দেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সেই ভাষণের একটা লাইন মনে পড়লো, আর ভাবলাম তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো আভাবেই আফসোস করতেন, ‘কি অন্যায় করেছিলাম আমি’......এ দেশে স্বাধীনতা এনে ! পুলিশের আচরণে পাকিস্তানি বাহিনীর কথা স্মরণে আসে। আমারা তো সবাই বাংলাদেশি, এখন তো দ্বিখণ্ডিত দেশ নাই। তবে কথায় কথায় কাদের বুকে গুলি?

পুলিশকে বলা হয়ে থাকে জনগণের বন্ধু; কিন্তু এ দেশে এটি কেবল কথার কথাই হয়ে আছে। পুলিশের কর্মকাণ্ড বরং জাতিকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।তারা ঘটিয়ে চলেছে একের পর এক ঘটনা। যদিও পুলিশের আচরণ নিয়ে এখন আলোচনা-সমালোচনা বেশ তুঙ্গে।তবে উদ্বেগের বিষয় হল, এগুলো মোটেও বিছিন্ন বা নতুন ঘটনা নয়। আমরা সাম্প্রতিক কালের কিছু ঘটনা দেখলেই তা বুঝবো।

গত ১৮ই সেপ্টেম্বরে টাঙ্গাইলে ছেলের সামনে মাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হয়! ঘটনা যদি সত্যি হয়, তাহলে প্রত্যেকটা নাগরিকের জন্য এটা লজ্জার, তেমনি লজ্জার সরকারের। সূত্র মতে, ঘটনার পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতা ও তার ছেলেকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। তবে শুধুমাত্র বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে, ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করে কালিহাতি থানা পুলিশ।আসামীপক্ষের প্রতি পুলিশের সহানুভুতি জনমনে ক্ষোভ তৈরি করে।

ক্ষোভ বরাবরই ভয়াবহ ঘটনার জন্ম দেয়, এবারও তার ব্যতিক্রম হয় নি। শুক্রবার বিকালে ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবীতে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ বের করে থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করে। জনতা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে থানা অভিমুখে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে। জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করা হয়। এতে পুলিশের গুলিতে ৩ জন নিহত, ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় আরও অর্ধশত। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করে।

এখন সেখানে র্যা ব, অতিরিক্ত পুলিশ ও আর্মড পুলিশ গিয়ে এক ধরনের যুদ্ধাবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। ঘটনা যদি বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যাবে, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা একেবারেই অমূলক নয়। উল্টো পুলিশ যে লাঠিচার্জ আর গুলিবর্ষণ করেছে, তাতে জনতার ক্ষোভের আগুণে ঘি ঢালা হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে । ঘটনার একদিন পর, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান আজ শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ঘটনায় সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশের সব সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতাহার আর তদন্ত কমিটি গঠন- প্রচলিত ধারা থেকে বের হয়ে এই নাগরিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত পুলিশদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।

আজ ( ১৯/০৯/১৫) প্রথম আলোতে দেখলাম, ১১ মাসের শিশুর ১৯ ঘণ্টা হাজতবাস করিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার।বুধবার রাতে তার বাবাকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশ। না পেয়ে ধরে নিয়ে আসে তার মাকে, সঙ্গে তাকেও। এরপর মা ও শিশুপুত্রকে ১৯ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় থানাহাজতে।রয়েলের বাবা রাজু আহম্মদের অভিযোগ, স্ত্রী-সন্তানকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে ৪২ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে পুলিশকে।

এ মাসে ভ্যাট পপ্রত্যাহার আন্দলনে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানো হয়।এতে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়।

এ বছরের মে মাসে নারী লাঞ্ছনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো লাঞ্ছনার শিকার হন আন্দোলনরত ছাত্রীরা। ধাওয়া খেয়ে গাছের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ছাত্রীটিকেও চুলের মুঠি ধরে টেনে বের করে পিটিয়েছে পুলিশ।-দৈনিক প্রথম আলো (১১/৫/১৫)


কিন্তু প্রশ্ন জাগে, পুলিশ কী করে এতটা অসংযমী হলো এবং বর্বর আচরণে বেপরোয়া হয়ে উঠলো? এ জন্য কি শুধু একা পুলিশই দায়ী, নাকি অন্য কারণ আছে?

অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক চাপ তথা সরকারি দলের নেতাকর্মীদের কারণে তারা তা করতে পারছেন না। ফলে পুলিশের দায়িত্ববোধ ও পেশাদারিত্ব মনোভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এছাড়া পুলিশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ এখন একটি বিশেষ রাজনৈতিক সমর্থক গোষ্ঠীর হাতে। বদলি, পদোন্নতি, শান্তি মিশনে যাওয়া সবকিছুই তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এই বিষয়টিও পুলিশের মধ্যে প্রভাব ফেলছে। এছাড়া অতিরিক্ত ডিউটি, সুযোগ-সুবিধার অভাব, পদোন্নতি ও বদলির সমস্যায়ও ক্ষুব্ধ হয়ে আছে অনেক পুলিশ। এসব কারণে পুলিশের পেশাদারিত্ব ও নৈতিক মানে দেখা দিয়েছে অবক্ষয়।


এই ঘটনাগুলো আমাদের গোটা জাতিকে হেয় করে বিশ্ববাসীর কাছে। আমরা চাই অবিলম্বে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। যেন ভবিষ্যতে এমন হীন ঘটনার পুণরাবৃত্তি না ঘটে। অন্যথা আমাদের সমাজের মূল্যবোধের আরো অধঃপতন ঘটবে। এতে ভেঙ্গে পড়বে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থা। এ ঘটনায় জড়িতরা চিহ্নিত না হলে, উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে গোটা জাতিসহ বিশ্ববাসীর কাছে এক খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এর সুদূর প্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আমাদের গোটা সমাজ ব্যবস্থার উপর। আর প্রধানমন্ত্রী কাছে আক্ষেপ করে প্রশ্ন রাখি, আপনার বাবার ওই ঝাঁজাল কণ্ঠ কি আপনার কানে বাজে না?

পুলিশের আচরণে পরিবর্তন আনতে হলে এ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, জবাবদিহিতা, প্রশিক্ষণ ইত্যাদিতে বিশেষ নজর দিতে হবে। স্বচ্ছতা আনতে হবে প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মকাণ্ডে। বন্ধ করতে হবে রাজনীতিকরণ। সে দায়িত্ব সরকারের। পুলিশ সদস্যদের যে কথায় কথায় মারমুখী হওয়া চলে না, প্রশিক্ষণের সময়ই এটা তাদের হৃদয়ঙ্গম করাতে হবে। তারপরও শৃংখলা ভঙ্গের ঘটনা ঘটলে তাদের আনতে হবে কঠোর শাস্তির আওতায়।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে পুলিশ প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। বস্তুত সব পুলিশ সদস্যই সমালোচনার যোগ্য নয়। কতিপয় সদস্যের কারণেই গোটা পুলিশ বাহিনী আস্থা সংকটে ভুগে থাকে। সেক্ষেত্রে ওইসব সদস্যকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় যা প্রয়োজন তা হল, জনগণের প্রতি সেবামূলক মনোবৃত্তি নিয়ে দায়িত্ব পালন করা। পুলিশের জনবলসহ যেসব সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা দূর করাও কম জরুরি নয়। জনবহুল এ দেশে অপরাধের ধরন, মাত্রা ও পরিমাণ অনুযায়ী পুলিশকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আমরা চাই পুলিশ সত্যিকার অর্থেই জনগণের বন্ধু হিসেবে বিবেচিত হোক।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৫

জায়েদ উল ইছলাম বলেছেন: দুক্ষজনক ........ভাব্লে অবাক লাগে কোথায় আছি আমরা ..

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.