নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নই ভাল বা মন্দ তবে একটু আলাদা

ইমরুল আকতার চৌধুরী

সত্য পথের পথিক

ইমরুল আকতার চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা ক্ষমা চাই, কিভাবে পাব?( ক্ষমার আয়াতসমুহের পর্যালোচনা )

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২

আমাদের মধ্যে সম্ভবত এমন কেও নেই যিনি এটা বলতে বা ভাবতে পারেন যে আমাদের কোন অপরাধ বা গুনাহ নেই! তা হোক ব্যক্তিগত ঈমান আমলের সংকটে নিজের প্রতি জুলুম বা অন্নের অধিকারের প্রতি। ক্ষমা আমাদের সবার চাওয়া ইহকাল ও পরকালে। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল। আল কোরআনে আল্লাহ বারবার তাঁর বান্দাদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ক্ষমার পুরস্কার রেখেছেন এবং তাঁর জন্য করনীয় আমাদের অবহিত করেছেন। সেই আয়াতগুলোর পর্যালোচনা নিয়েই এই পোস্ট।



আল্লাহ বলছেন-



তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়; (Al-Burooj: 14)



এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। (An-Nisaa: 106)



এগুলো তাঁর পক্ষ থেকে পদমর্যাদা, ক্ষমা ও করুণা; আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (An-Nisaa: 96)



এখানে আল্লাহ বান্দার প্রতি উদারভাবে নিজের অবস্থানকে ক্ষমাশীল ঘোষণা করেছেন, যারা তাঁর কাছে ক্ষমা চায় তিনি তাঁদের প্রতি ক্ষমাশীল।



এখন আল্লাহ কিভাবে তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন? সেই জন্নেও আল্লাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন কোরআনে ক্ষমা লাভের প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি, নিচের আয়াতগুলো খুব খেয়াল করে দেখি-



তিনি বললেন, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। (Al-Qasas: 16)



-অর্থাৎ ব্যক্তি নিজ অপরাধ স্বীকার করে আল্লাহ'র কাছে ক্ষমা চাইবে।



তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী। (An-Nasr: 3)



- পবিত্রতা বর্ণনা তথা নামাজের মাধ্যমে ক্ষমা চাইবে।



কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান। (An-Noor: 5)



-অর্থাৎ যারা ভুলকে ত্যাগ করার জন্য দৃঢ় হবে, অন্নায় পুনরায় না করার শপথ নেবে তাঁদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা রেখেছেন।



কিন্তু কিভাবে একজন ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ'র কাছে এমন তাওবাকারি হিসেবে পেশ করবে? সেটাও আল্লাহ বলে দিচ্ছেন-



তবে যারা ধৈর্য্যধারণ করেছে এবং সৎকার্য করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট প্রতিদান রয়েছে। (Hud: 11)



আল্লাহ আরও বলছেন- তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী। (Aali Imraan: 17)



এক্ষেত্রে আল্লাহ গুরুত্ত দিয়েছেন সেই মহা গুনটির উপর- "ধৈর্য"। যারা ধৈর্যের সাথে ক্ষমা চাইবে এবং সৎপথে থাকবে আল্লাহ তাঁদের ক্ষমা করবেন।



তাই ভাইবোনেরা হতাশ না হয়ে আল্লাহ'র কাছেই ফিরে আসি, ব্যর্থ হলেও বারবার চেষ্টা করি, ধৈর্য রাখি, আল্লাহ নিশ্চয় ক্ষমা করবেন।



বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (Az-Zumar: 53)



আল্লাহ আরও বলছেন- তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? তারা নিজের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তাই করতে থাকে না। (Aali Imraan: 135)]



তাই আমাদের ফিরে আসতে হবে। আর এই পথে আল্লাহ যখন পরীক্ষা করবেন তখন ও আমাদের জন্য রয়েছে ক্ষমার সান্ত্বনা-



তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন। (Ash-Shura: 30)



তাই আল্লাহ থেকে আমরা কোনভাবেই বিমুখ না হই-



আর হে আমার কওম! তোমাদের পালন কর্তার কাছে তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর, অতঃপর তাঁরই প্রতি মনোনিবেশ কর; তিনি আসমান থেকে তোমাদের উপর বৃষ্টি ধারা প্রেরণ করবেন এবং তোমাদের শক্তির উপর শক্তি বৃদ্ধি করবেন, তোমরা কিন্তু অপরাধীদের মত বিমুখ হয়ো না। (Hud: 52)



হই যেন এমন যা আমাদের জন্য "মান" হিসেবে দেয়া হয়েছে-



নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ, সত্যবাদী নারী, ধৈর্য্যশীল পুরুষ, ধৈর্য্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ, বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ, দানশীল নারী, রোযা পালণকারী পুরুষ, রোযা পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী পুরুষ, , যৌনাঙ্গ হেফাযতকারী নারী, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। (Al-Ahzaab: 35)

======================================



এই তো গেল ক্ষমা সমগ্র। এর সাথে আল্লাহ সতর্ক করেছেন তাঁদেরকেও যারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতা রাখেনা-



নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। (An-Nisaa: 116)



-আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক ছাড়া সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করেন! উল্লেখ্য যে কাফির বা অবিশ্বাসী ব্যক্তিকেও আল্লাহ ক্ষমার হিসাবের বাইরে রাখেন নি যদি সে তাওবা করে এবং ফিরে আসে।



আর তাঁরা ক্ষমার আওতার বাইরে যারা সারা জীবনের অপকর্ম সময় থাকতে ক্ষমা করাতে ব্যর্থ হয়েছে, এরাই সীমালঙ্ঘনকারি।



আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (An-Nisaa: 18)



তো ভাইবোনেরা আমাদের তো সময় আছে, এবং এখন এই রামাদান ই সেরা সময় ফিরে আসার সরল পথে। আল্লাহ যেন আমাদের ক্ষমা লাভের সেই কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছে দেন। আর সেই সাথে সমাজের, রাষ্ট্রের বিভিন্ন রেষারেষিতে যেন আমরা ক্ষমার চর্চা করি। এটাই তা যা আল্লাহ ভালবাসেন।



তোমরা যদি কল্যাণ কর প্রকাশ্যভাবে কিংবা গোপনে অথবা যদি তোমরা আপরাধ ক্ষমা করে দাও, তবে জেনো, আল্লাহ নিজেও ক্ষমাকারী, মহাশক্তিশালী। (An-Nisaa: 149)



আল্লাহ তাগিদ দিয়েছেন প্রকাশে অথবা গোপনে নিজেদের মধ্যে ক্ষমার চর্চা করার, তাহলে আল্লাহ ও আমাদের ক্ষমা করবেন।





** পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, বার্তাটা শেয়ার করে সবাইকে ক্ষমার মিছিলে শামিল করে নেই। আল্লাহু গাফুরুর রাহিম।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯

নূর আদনান বলেছেন: আল্লাহ্ আমদের সবাইকে ক্ষমা করুন, আমিন ।

২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০৮

ইমরুল আকতার চৌধুরী বলেছেন: আমিন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.