![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বলছিলাম জামেউল উলুমের প্রিন্সিপাল মুফতি আবার বাশার নোমানি সাহেবের কথা।
তাঁর ছাত্রজীবন আরও বর্ণাঢ্য। বাংলাদেশে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর মাদরাসায় লেখাপড়া শুরু। তারপর কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ শ্রেণী তাকমিলে পাকিস্তান মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে দ্বিতীয়। বিশ্বখ্যাত ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় ইউসুফ বিন্নৌরি টাউনে কৃতিত্বের সঙ্গে ইফতা কোর্স সম্পন্ন করে মুফতি ডিগ্রি লাভ। তারপর শিক্ষকদের স্নেহধন্য হয়ে সেখানেই শিক্ষকতার সূচনা।
যে কোনো বিষয়ের পাঠ্য বইয়ের অলিগলির সকল তথ্যই যেন তার নখদর্পনে। বাংলা কিংবা আরবি আর উর্দু কিংবা ফার্সি যে প্রসঙ্গেই আলোচনা করুন, তাতে কবিতা যেন প্রস্তুতই হয়ে থাকে তাঁর ঠোঁট পেরিয়ে আসতে। খতিব হিসেবে তাঁর বাগ্মিতা, প্রত্যুত্পন্নমতিত্ত, শব্দের লালিত্য কিংবা দেশ ও জাতির প্রতি নিখাদ ভালোবাসায় মুগ্ধ-বিমোহিত নন এমন মুসল্লি মেলা ভার। সপ্তাহে বরাদ্দ দুদিনে বাসায় যাবার সময় স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের ত্রস্ততাও চোখ এড়ায় না সমঝদার যে কোনো ছাত্রের। সব মিলিয়ে তিনি যেন এক 'নায়েবে নবীর' 'এক্সক্লুসিভ প্যাকেজ'।
প্রায় দু'বছর হয় পিতার মতো প্রিয়তম এই শিক্ষকের পুণ্যানন দেখি না। তাঁর সামনে মাঝেমধ্যে হাজিরা দিতে পারি না বলে সবসময়ই নিজেকে অপরাধী ভেবে এসেছি। গত পরশু যখন জানলাম এই মহান শিক্ষাগুরুর মতো একজন আদর্শ নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে, ভাবলাম অচিরে প্রশাসন তাঁর সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানার পর তাঁকে ছেড়ে দেবে। কিন্তু গতকাল যখন জানলাম জামিন নয়, তাঁকে দেওয়া হয়েছে রিমান্ড, তখন থেকে আমি থেকে কিছু বলা বা লেখার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। যদি বড় কোনো মামা-খালু থাকত, তবে জলদি তার শরণাপন্ন হতাম। আর আইনজীবী হলে নিজেই নেমে যেতাম কালো পোশাক পরে সাদা মনের এ মানুষটিকে বাঁচাতে। কিন্তু অক্ষম আমি আর কী করতে পারি দু'ফোটা অশ্রু বিসর্জন ছাড়া? তাই মাতৃভাষার পর আমার দ্বিতীয় ভাষা এখন চোখের পানি। আজকাল আল্লাহ ছাড়া এ ভাষার কথা কেউ বোঝে না। অতএব মাবুদ, তোমার সঙ্গেই হবে এ ভাষায় কথা। দয়াময়, আমরা তোমারই করুণার ভিখারি। তুমিই আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষক আর তোমার এই প্রিয় বান্দার সাহায্যকারী হয়ে যাও। Ali HasanTaib
©somewhere in net ltd.