| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফাহমিদুল হক
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াই। ফিকশন ও নন-ফিকশন দুই ধরনের লেখাই লিখি। গল্প লিখি, প্রবন্ধ লিখি, অনুবাদ করি। 'যোগাযোগ' নামের একটি একাডেমিক পত্রিকা সম্পাদনা করি। আপাতত চলচ্চিত্র-অধ্যয়ন এলাকায় উচ্চতর গবেষণা করছি।
জাপানি অ্যানিমেশন সিরিজ ডোরেমনের প্রতি শিশুদের আসক্তি নিয়ে বাংলাদেশের অভিভাবককুল, বুদ্ধিজীবী-চিন্তকেরা উদ্বেগাকুল হয়ে পড়েছেন। চিন্তার বিষয় মোটা দাগে এক্ষেত্রে দুটি — এক, ভারতীয় ডিজনি চ্যানেলে এটি হিন্দি ভাষায় ডাব করে প্রচার করা হয়। ফলে বাচ্চারা বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি নয়, হিন্দি শিখে ফেলছে, হিন্দিতে কথা বলছে; দুই, প্রধান চরিত্র নবিতা নবির মতোই বাচ্চারা পড়াশুনায় ফাঁকি দেয়া শিখছে।
ডোরেমন প্রথমত ছিল ফুজিকো ফুজিও সৃষ্ট একটি কমিক চরিত্র (জাপানি প্রেক্ষাপটে কমিক সিরিজকে বলে মাঙ্গা), যা ১৯৬৯ সালে প্রথম চালু হয় এবং ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি চালু থাকে। এরপর এটি ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো, ১৯৭৯ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত দ্বিতীয়বারের মতো এবং ২০০৫ থেকে তৃতীয়বারের মতো টেলিভিশনে অ্যানিমেশন সিরিজ শুরু হয়, যা এখন পর্যন্ত চালু রয়েছে। ডোরেমন হলো কানবিহীন একটি রোবট বেড়াল, যা এক স্কুল বালক নবিতা নবিকে সাহায্য করার জন্য দ্বাবিংশ শতাব্দি থেকে অতীতে এসেছে (যা মূলত আমাদের বর্তমান) টাইম মেশিনে চড়ে। ডোরেমনকে পাঠিয়েছে আরেক বালক সেবাশি নবি তার প্রপিতামহ নবিতার অবস্থার সার্বিক উন্নতি ঘটাতে, যাতে তার উত্তর পুরুষেরা একটা উন্নত জীবন লাভ করে। নবিতা আসলে এমন একজন বালক যার জীবনের পদে পদে আছে বিপদ ও দুর্ভাগ্য—সে হোমওয়ার্কে ফাঁকি দেয়, দেরি করে স্কুলে যায়, তাই পরীক্ষায় খুবই কম নম্বর পায়। এসব থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে সে প্রায়ই মিথ্যা কথা বলে। নবিতা মা ও শিক্ষকের কাছ থেকে বকুনি খায়। বন্ধুবত্ শত্রু, স্থূলাকায় জিয়ান ও তার সাঙাত্ সুনিও তাকে নানাভাবে হেনস্থা করে। অবশ্য বান্ধবী শিজুকার রয়েছে তার প্রতি মমত্ববোধ। নবিতার নানান বিপর্যয়ে সাহায্য করে রোবট ডোরেমন। ডোরেমনের কাছে আছে নানান ধরনের গেজেট, যেগুলোর সাহায্যেই সে নবিতাকে নানান বিপদ থেকে উদ্ধার করে। পড়াশুনায় ফাঁকি দিলেও কিন্তু নবিতার আছে নিজস্ব এক চিন্তার জগত্। কল্পনার সেই জগতে পরিভ্রমণেও নবিতাকে সাহায্য করে ডোরেমন। ফলে টাইম মেশিনের সাহায্যে নবিতাকে ডোরেমন অতীতের ডাইনোসরের দুনিয়া থেকেও ঘুরিয়ে নিয়ে আসে। মহাকাশের নানান গ্রহে পরিভ্রমণ কিংবা নিজ গ্রহে ভিন গ্রহের এলিয়েনের সঙ্গে দেখার সুযোগ নবিতা পায় ডোরেমনের সুবাদেই।
গল্পের এই মূল কাঠামো শিশুদের আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট হয়েছে। স্টিভেন স্পিলবার্গের চলচ্চিত্র ই.টি.র মতোই এর গল্পকাঠামো। ই.টি.তে ভিন গ্রহের এলিয়েনের পৃথিবীর শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় এবং এলিয়েন তার ক্ষমতাবলে শিশুদের নানাভাবে সাহায্য করে, কিংবা শিশুদের ক্ষমতাবান বানিয়ে দেয়। রাকেশ রোশনের হিন্দি ছবি কোই মিল গায়াতেও একইরকম ঘটনা রয়েছে। আর ডোরেমন সিরিজে ভবিষ্যতের রোবট শিশুদের সাহায্য করেছ তার ক্ষমতাবলে। ডোরেমন তাই কেবল এশিয়ায় নয়, টেলিভিশন সিরিজ হিসেবে আমেরিকাতেও জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তার মাত্রা আরও বেড়ে গেছে সিরিজটিতে অন্যতম উপাদান কমেডি। জিয়ান চরিত্রটি যেমন নবিতার প্রতি শত্রুভাবাপন্ন, আকারে বড়-সড়ো; কিন্তু মাথামোটা প্রকৃতির। ফলে সে প্রায়ই নানান বিনোদনের জন্ম দেয়। খোদ ডোরেমনের কান খেয়ে ফেলেছিল এক ইঁদুর। তাই রোবট-বিড়াল হবার পরও সে ইঁদুর এবং অন্যান্য প্রাণীকে ভয় পায়।
এখন টেলিভিশনে শিশুদের অনুষ্ঠান নিয়ে প্রায় সবারই কিছু বলার আছে— এদের মধ্যে আছেন অভিভাবক, শিক্ষক, সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, ধার্মিকসহ অনেকেই। নতুন প্রযুক্তি ও মিডিয়া আসলে সবাই নতুন মিডিয়াটির প্রভাব শিশুদের ওপর কীরকম পড়বে, তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কারণ বড়রা মনে করেন শিশুরা খুব ‘ভালনারেবল’, তাদের সুরক্ষা দেয়া দরকার। পৃথিবীর নানান দেশের গবেষকরা এক্ষেত্রে যে কয়েকটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে গবেষণাকর্ম করেন সেগুলো হলো— শিশুদের জন্য অনিরাপদ বিষয়, নীতি-নৈতিকতা, শিক্ষা, বাণিজ্য ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদি। ফলে কার্টুন সিরিজটি জনপ্রিয় হয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে শিশুরা হিন্দি শিখছে বা নবিতার মতো পড়াশুনায় ফাঁকি দেয়া শিখছে— এই রব উঠতে বেশি সময় লাগেনি।
এখন ডোরেমন যদি ইংরেজিতে প্রচারিত হতো, তবে পত্র-পত্রিকা বা সমপ্রচার মাধ্যমে এইসব আলোচনা উঠতোই না। বরং ডোরেমনের কারণে যদি বাচ্চারা কিছু ইংরেজি শিখতোই, তবে পরে চাকরি-বাকরিতে সুবিধে হতো। তাই ইংরেজিকে ‘হ্যাঁ’ এবং হিন্দিকে ‘না’ বলার এই উত্তেজনা অবস্থান হিসেবে খুব পোক্ত না, বরং তা ভাষা-বর্ণবাদের পরিচায়ক। আরেকটি বিষয়, বিশ্বায়নের পরে নব্বই দশক থেকেই বিশ্বায়িত মিডিয়া দেখছি আমরা। বিশ্বায়নের একটি আঞ্চলিক রূপও আছে। তাই আমেরিকান আইডলের আদলে কিংবা কোটিপতি হবার রিয়েলিটি শোর আদলে দক্ষিণ এশিয়ার টেলিভিশনগুলোতে একইরকম নানান অনুষ্ঠান দেখা যায়। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়েছে সর্বজনবোধ্য একটি আঞ্চলিক ভাষার। হিন্দিই হলো শতকোটি ভোক্তার বা মানুষের সেই আঞ্চলিক ভাষা। বাজারের শক্তিই এই নির্বাচনটি করেছে। এখন এর আধিপত্যে কি অন্য ভাষারা হুমকির মুখে? উত্তর হ্যাঁ এবং না। স্পেনের উপনিবেশের কারণে পুরো লাতিন আমেরিকায় স্থানীয় ভাষার বিলোপ ঘটেছে। লাতিন আমেরিকানরা এখন স্প্যানিশ ভাষাকেই নিজেদের ভাষা মনে করে। কিন্তু ভারতে ইংরেজির কারণে অন্য ভাষা বিলুপ্ত হয়নি। এর বিবিধ কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণ এই যে, বাংলা ভাষার নিজস্ব একটি শক্তি রয়েছে, যা অনুপ্রবেশকারী ভাষার বিপরীতে নিজেকে টিকিয়ে রাখে। নব্বই দশকের শুরুর দিকে স্যাটেলাইট-কেবল টিভি আসার পর সবাই ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল—ভাষা ও সংস্কৃতি উভয়ই বুঝি রসাতলে গেল! কিন্তু স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি কেবল টিভির সঙ্গে অভিযোজন ঘটিয়েছে। নিজেরাই বাংলা ভাষায় বহু চ্যানেল চালু করেছে। সেই সময় বহুলশ্রুত ‘অপসংস্কৃতি’ প্রত্যয়টির কথা আজকাল আর তেমন শোনা যায় না। ডোরেমন যদি সত্যিই বাংলা ভাষাকে বিপদে ফেলে দিয়ে থাকে, তবে এর সহজ সমাধান হলো সিরিজটির ফ্র্যাঞ্চাইজি কিনে বাংলায় ডাব করে প্রচার করা। বহু জনপ্রিয় এই সিরিজটি বাংলায় চালু হলে নিশ্চয় স্পন্সরও পাওয়া যাবে। এটা যে কোনো বেসরকারি টিভি চ্যানেল করতে পারে। আবার সরকারও বিটিভির জন্য এই উদ্যোগটা নিতে পারে।
দ্বিতীয় অভিযোগটিও অসার একটি অভিযোগ। যে কোনো জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের কেবল একটি বিষয়ের কারণে জনপ্রিয় হয় না। ফলে নবিতার কাছ থেকে বাচ্চারা পড়াশুনায় ফাঁকি দেয়া শিখছে, এটা কেবলই একটা অনুমান। ঠাকুরমার ঝুলি কিংবা দেশি-বিদেশি বহু রূপকথায় ‘বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর’ নানান উপাদান রয়েছে। বিশেষত এগুলো সাংঘাতিকভাবে জেন্ডার অসংবেদনশীল, যেখানে রূপবতী রাজকন্যা বন্দী বা আক্রান্ত থাকে এবং রাজপুত্র এসে তাকে উদ্ধার করে নিজের করে নেয়। রূপকথায় নারী অক্রিয়, সৌন্দর্যসামগ্রী আর পুরুষ বীরযোদ্ধা। এখন এই অসংবেদনশীলতার কারণে কি রূপকথা বলা বা শোনা বন্ধ হয়ে যাবে? এর বাইরে গল্পগুলোর আখ্যানে রয়েছে অসাধারণ নান্দনিকতা, কল্পনাশক্তির চমত্কার প্রয়োগ। আর বাচ্চারা যে বিচার-বুদ্ধি দিয়ে কাহিনীর নিজস্ব ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারে না, এটাও ভুল ধারণা। শিশুদের জন্য তৈরি আধেয়তে নৈতিকতার শিক্ষা দেবার বাধ্যবাধকতাও এক ধরনের জবরদস্তি। ছোটবেলায় স্কুল-পরিবার-নীতিকথা থেকে বাচ্চারা যা শেখে, বড় হয়ে দেখা যায় তার অনেকগুলোই ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। শৈশবের ‘লার্নিং’কে ‘ডিলার্নিং’ করেই একজনের বাকি জীবনটা কাটে।
আমার সাত বছরের ছেলে একদিন আমাকে বলে যে, যে গল্পে ‘মোরাল’ থাকে, সেই গল্প তার ভালো লাগে না। সে-ই আবিষ্কার করেছে যে, ঈশপের সব গল্পের শেষে মূল চরিত্রটি মারা যায়। এই মৃত্যু বা ভায়োলেন্স তার মন খারাপ করে দেয়। গল্পশেষের নীতিকথাটি তাই তার কাছে গুরুত্ব পায় না। আর পড়াশুনায় বা অন্য ভালো কাজে ফাঁকি দেয়া বা মিথ্যা বলা শিশুর দিক থেকে ন্যায্য দুই কাজ, ডোরেমন না থাকলেও এটা সে করতো। আজকে শিশুর স্কুলে পড়ার যে বিভীষিকাময় চাপ, তা সামলে তাকে গাইয়ে-নাচিয়ে-আঁকিয়ে হতে হবে। শিশুসত্তা এই সকল শেখাশেখিতে ওষ্ঠাগত। এখানে কিছুমাত্রায় ফাঁকি না দিলে সে হয়ে পড়বে জীবন্মৃত। ফলে ‘কারিকুলার’ বা ‘এক্সট্রা কারিকুলা’র চাপাচাপির মধ্যে ফাঁকি দেয়া একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ, আর কে না জানে যে, ফাঁকিবাজির অন্যতম অবলম্বন হলো টুকটাক মিথ্যা বলা। মিথ্যা বলা এখানে তার ‘সারভাইভাল স্ট্র্যাটেজি’।
আধুনিক সময়ে পারিবারিক কাঠামোটাও লক্ষ্য করার মতো। বাসার অভ্যন্তরের কাঠামোটা কীরূপ হবে, তা অনেকখানি টেলিভিশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। টেলিভিশনকে কেন্দ্র করেই জন্ম হয়েছে ‘লিভিং রুম’ বা বসার ঘর। এখন সেই লিভিং রুমের কর্তৃত্ব কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে চলে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। বাবার স্পোর্টস, মার সোপ আর শিশুর কার্টুন প্রায়ই সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে পড়ে। ইয়ান অ্যাং (১৯৯৬) একে বলেছেন ‘বসার ঘরের সংঘাত’ (লিভিং রুম ওয়ার)। অতিসমপ্রতি কেবল টেলিভিশনের পাশাপাশি আরও নানান ধরনের স্ক্রিনের আবির্ভাব হয়ে পড়ায় সেই যুদ্ধাবস্থায় এসেছে খানিক পরিবর্তন। টেলিভিশনের সামনে একজন, অন্য ঘরে কম্পিউটারের সামনে আরেকজন, আরেক ঘরে মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে ব্যস্ত অন্য কেউ। পারিবারিক এই পরিস্থিতিকে সোনিয়া লিভিংস্টোন (২০০৭) বর্ণনা করেছেন ‘একসঙ্গে পৃথক থাকা’ (লিভিং টুগেদার সেপারেটলি)। এই ‘পৃথক’ পরিস্থিতিতে শিশুদের ওপর পিতা-মাতার নজরদারি কমে গেছে এমন মনে করার কারণ নেই। কারণ স্কুলপড়ুয়া শিশুরা এক সময় হেঁটে একাই স্কুলে যেত, সকাল-বিকেলে স্কুলের বা পাড়ার মাঠে খেলাধুলা করতো, স্কুলের আগে-পরে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিত। বলা যায় একটা উল্লেখযোগ্য সময়ই সে বাবা-মার নজরদারির বাইরে থাকতো। এখন সে স্কুলে যায় বাবা-মার সঙ্গে, স্কুল থেকে ফিরে বাড়িতেই কোনো এক স্ক্রিনের সামনে বসে। পিতা-মাতার নজরদারির আওতায় তারা বেশিরভাগ সময় থাকছে। শিশুদের অত্যধিক ডোরেমনপ্রীতি কি প্রকারন্তরে সেই বসার ঘরের সংঘাতকেই ফিরিয়ে আনছে, বড়দের সংবাদ বা সিরিয়ালের সময়ে ভাগ বসাতে চাইছে ডোরেমন? আর সে কারণেই, সম্ভবত, বড়রা ডোরেমনের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন? কারণ হিসেবে এটাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না।
প্রথম প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল, ২০১২, ইত্তেফাক।
২|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৩:১৭
বলশেভিক বলেছেন: still we can't support our future generation be submerged in a lowly and stupid language like hindi.is this why our ancestors died in 1952?india is on a all out cultural imperialistic mission.must take drastic measures ...or we go down.
৩|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:১৯
ব্যতীপাত বলেছেন: সুলিখিত,চিন্তাউদ্রেককারি ,ইনফরমেটিভ-খুব ভালো
০৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৪০
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:৩৪
অন্যআমি বলেছেন: বাবা-মায়ের সাথে টিভি দেখতে হলে এখনো পর্যন্ত সংঘাতে জড়াতে হয়। তাই হাল ছেড়ে দিয়েছি, টিভি-ঘরের পথ আর মাড়াই না।
ছোট ভাইবোনদের কাছে ডোরেমনের এত্ত প্রখ্যাতি শুনে দুয়েকটা পর্ব দেখেছিলাম। আমার ছোটবেলার কার্টুনগুলো কিন্তু এমন ছিলনা। ক্যাপ্টেন প্লানেট, উডি উডপেকার, গডজিলা, ব্যাক টু দ্য ফিউচার, জাঙ্গল বুক, গোস্টবাস্টারস বা টম এন্ড জেরির চাইতে ডোরেমনের ভিন্নতা দেখলাম একজায়গায়, নবিতার সাধারণত্ব। সে কোন সুপার হিরো নয়, নয় কোন বাধ্য ছেলে। সেজন্যই বুঝি বেশিরভাগ বাচ্চা মনে করে ডোরেমনকে পাওয়ার সুযোগ তাদেরও হয়তো আছে, আর তাদের নিয়েও তৈরি হতে পারে কোন গল্প।
আমার কাছে যেটা বিরক্তিকর ঠেকেছে তা হল একই কার্টুনের এত বেশিবার সম্প্রচার। সপ্তাহে দুদিন বা তিনদিন অথবা প্রতিদিন একবেলা হলেও চলত। কিন্তু আজকাল ডিজনি চ্যানেল আর ডোরেমন সমার্থক হয়ে যাচ্ছে। এই একটাই জিনিস সারাদিন সারাবেলা দেখা, এমনকি অন্য কার্টুনের প্রতিও অনীহা সৃষ্টির ব্যাপারটা ভয়াবহ। কল্পনা যদি শুধু ডোরেমনের গন্ডিতেই ঘুরপাক খায়, তবে কি ভাল?
অবশ্য কী ভাল আর কী খারাপ তা কি আমরা বড়রা বুঝতে পারি? পারলেও কি সেইমত চলি?
সকল শিশুর জন্য শুভকামনা। আপনার ছেলেটির সাথে আমারও মিল আছে। যা কিছুতে নীতিকথা তাতে আমার চরম অরুচি।
ভালো থাকবেন।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৪০
ফাহমিদুল হক বলেছেন: আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
৫|
১১ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:১৫
সাজিল বলেছেন: আপনার লিখা সবসময়ই ভালো লাগে। কেমন আছেন স্যার??
চলচ্চিত্র বিষয়ক লিখা পাচ্ছি না অনেক দিন হল।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:১৩
ফাহমিদুল হক বলেছেন: কিছুদিন আগেই আমার বন্ধু রাশেদ নিয়ে লিখলাম। এখানেই আছে।
৬|
০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১:৩৩
লেখাজোকা শামীম বলেছেন:
হিন্দি ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার বেশ খানিকটা মিল আছে, যেটা ইংরেজির সঙ্গে নেই। তাই হিন্দি আমাদের কাছে সহজ লাগে। ফলে টিভি চ্যানেলে কেবল শুনে শুনেই হিন্দি শেখা হয়ে গেছে আমাদের সবার।
আমার মনে হয় না, হিন্দি শেখার কারণে বাচ্চারা বাংলা ভুলে যাবে। আমরা সবাই হিন্দি শিখেছি সেই টিভি চ্যানেল দেখে দেখেই। আমিও তো হিন্দি বেশ ভালো জানি, অনেকেই জানে, তাই বলে কি আমরা বাংলা ভুলে গেছি ? এটা একটা ভুল ধারণা।
একটা ভাষা শেখা কি ভালো না খারাপ ? আমার তো মনে হয় যে কোন বিদেশী ভাষা শেখাই ভালো।
ইউরোপীয়রা তো কেবল ইংরেজি জানে না, তারা অনেক অনেক ভাষা শেখে, তাতে করে কি তারা মাতৃভাষা ভুলে যায় ?
আমি মনে করি, হিন্দির বিরুদ্ধে লাগাটা অনেকটা আমাদের ভারতীয়দের প্রতি বিদ্বেষ থেকে সৃষ্ট - যেটা রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচরণগত কারণে আমাদের মনে বাসা বেঁধেছে।
৭|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:০৯
ছায়াপাখির অরণ্য বলেছেন: ডোরেমন একটা ভয়াবহ সমস্যা। হিন্দি সিরিয়ালের চেয়েও ভয়ংকর।
আমাদের বাসায় হিন্দি কোন চ্যানেল চলে না, কিন্তু চার বছর বয়েসী ভাগ্নে পাশের বাসায় খেলতে ডোরেমন শিক্ষা পাচ্ছে। কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ১২:১৭
ফাহমিদুল হক বলেছেন: ডোরেমন একটি জাপানি সিরিয়ালের চরিত্র। সে আমাদের বাংলা ভুলিয়ে হিন্দি শেখাচ্ছে, ভাবতেই কেমন লাগে! একে বাংলা করে দেশি চ্যানেলে চালু করলেই ল্যাঠা চুকে যায়।
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:৫৯
গুল্ম বলেছেন: ভালো বলেছেন। ঠিক এইভাবে কখনো ভেবে দেখিনি।