নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বর্তমানে প্রচলিত কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নই। সুতারং কেহ পক্ষ বা বিপক্ষ ভেবে আমাকে ভুল বুঝবেন না।

এম.এইচ.সজিব

আমি বর্তমানে প্রচলিত কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নই। সুতারং কেহ পক্ষ বা বিপক্ষ ভেবে আমাকে ভুল বুঝবেন না।

এম.এইচ.সজিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের ফেলানী, বিচারের বাণী এখনো নিভৃতে কাঁধে..........

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২


২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় ফেলানীকে। ১৫ বছরের শিশু ফেলানী তার বাবার সাথে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় জড়িয়ে পা ফসকে ঝুলে পড়েছিল সে। তখন সাহায্যের জন্য ফেলানী চিৎকার করে আবেদন করছিল। কিন্তু বিএসএফ-এর রক্ত পিপাসু ঘাতকরা সে আবেদনের সাড়া না দিয়ে তাকে গুলী করে হত্যা করে তেমনি ঝুলন্ত অবস্থায়ই। ঐ নরঘাতকরা তাকে হত্যা করে তার লাশ নামিয়ে নিয়ে যায়নি। বরং পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টা ফেলানীর লাশ ঝুলেছিল কাঁটাতারের বেড়ার ওপরই। যেন বিএসএফ বাংলাদেশী মানুষদের জানান দিতে চেয়েছিল যে, সীমান্তের কাছাকাছি এলে এভাবেই বাংলাদেশীদের হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হবে।
ফেলানী হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনে বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। কারণ বিশ্বজুড়ে এটা আজ প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বিএসএফ এর নাম দিয়েছে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ বাহিনী, কানাডার ভাষায় ‘anti-human, violent unit that is engaged with systematic attacks on civilian’ (অর্থাৎ, অমানুষদের এক জঙ্গলে বাহিনী যারা পদ্ধতিগতভাবে সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা করে বেড়ায়)। কানাডিয়ান হাইকমিশনার বিএসএফ নামক এই বর্বর বাহিনীর এক জওয়ানের ইমিগ্রেশন আবেদন বাতিলও করে দিয়েছিল ওই অভিযোগে। ফেলানী হত্যার আগে এই বাহিনী এর আগেও নারী ও শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ২০১০ সালের মে মাসে ঠাকুরগাঁওয়ের রত্নাই সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে এসে পারুল নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে হত্যা করেছিল। এ সময় খালেদা খাতুন নামে আরো একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো দূরে থাক বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমেও এসব খবর আসেনি। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ছাড়া এ দেশের অন্য মানবাধিকারজীবীরা সীমান্তে বিচারবহির্ভূত এসব হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চুপ। বিএসএফ বর্বরতার কথা বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে কখনোই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেনি, বরং আমরা দেখছি বিডিআর বিদ্রোহের পর সীমান্তের নাগরিকদের জীবন আরো অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। গার্ডিয়ান লিখেছে, সুন্দর বেড়া কী সুপ্রতিবেশী বানায়? বাংলাদেশের সীমান্তে ভারত ২ হাজার কিলোমিটার বেড়া নির্মাণ করেছে। একসময় যে জনগণ বৃহত্তর বাংলার অংশ ছিল আজ ভারত অবৈধ অভিবাসন, চোরাচালানি ও সরকারবিরোধী জঙ্গী অনুপ্রবেশের কথা বলে তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যেভাবে নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের হত্যার জন্য গুলী করার নীতি বাস্তবায়ন করছে, এমন নজির বিশ্বের কোথায়ও নেই। ফলে সীমান্ত এলাকা এশিয়ান বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য নিরস্ত্র ও নিরুপায় স্থানীয় মানুষের ওপর ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড চালানোর স্পষ্ট প্রমাণ করা সত্ত্বেও কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।
ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পরে ছাপা হয় বাংলাদেশের দু' একটি পত্রিকাতেও। সে মর্মান্তিক দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতার একটি প্রতীক হয়ে দাড়ায় ফেলানী।
দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় আদালতে কালক্ষেপণ ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কায় আশা-নিরাশার দোলায় দিন কাটছে ফেলানীর পরিবারের। নানা অজুহাতে একাধিকবার বিচার কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় মেয়ে হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে হতাশ হলেও হাল ছাড়েনি ফেলানীর পরিবার। ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন " বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ আমার চোখের সামনে কাঁটাতারে আমার মেয়েকে গুলি করে হত্যা করেছে। দুই দফা ভারতে বিএসএফের আদালতে অমিয় ঘোষকে শনাক্ত করে সাক্ষ্য দেওয়ার পরেও নানা টালবাহানায় হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার এখনো হয়নি।’ আজ ফালানীর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেলানীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করার সাথে সাথে আমরা সবাই শপথ নেই আর কোন ফালানীর মৃত্যু মেনে নেওয়া হবেনা। কড়া প্রতিবাদের সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ইটের জবাব দেওয়া হবে পাটেকেলে। ভালো থেকো ফালানী যেখানেই থাকো। আমরা আছি তোমার হেয়ে বাংলাদেশী সীমান্তসহ বিশ্বের সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রতিরোধ প্রতিবাদ জানাতে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২২

জনম দাসী বলেছেন: বিচার !!! দয়ালের চেয়ে বড় বিচারক আর কে হতে পারে??? বিচার একদিন হবেই হবে...

কে ঝুলে আছে কাটা তাঁরে
কার নাড়ি ধোয়া ধন !!!
সে আর কেউ নয়, আমাদেরি সন্তান;;;
ফেলানি, ফেলানি তার নাম।

অনেক ভাল লাগা নয়, অনেক অব্যক্ত জমানো অশ্রু ফেলে গেলাম, আর বিচার টা দয়ালের কাছেই ছেড়ে দিলাম। নিশ্চয়ই তিনি মহা বিচারক এবং সূক্ষ্মদর্শী...

ভাল থাকুন কবি সব সময়।

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৮

কামরুল হাসান বলেছেন: ভাই,
মেরুদন্ড যখন হারিয়ে ফেলেছি, শক্ত হয়ে দাড়ানো ইচ্ছা শুধু বাতুলতা। ফেলানীকে হারিয়েছি,শুধু গত বছর ১৪৩ জনকে হারিয়েছি।
ব্লগে লিখে কি হবে।

৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৩

মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: 'ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পরে ছাপা হয় বাংলাদেশের দু' একটি পত্রিকাতেও। সে মর্মান্তিক দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতার একটি প্রতীক হয়ে দাড়ায় ফেলানী।'

কি লাভ? দুদিন পরে সবাই ভুলে গেসে। এখন লেখালেখি করে আর কি হবে? এটা অনেক আগের কথা। এত পুরান কথা টানবে কেউ?

৪| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: সরকার এটা নিয়ে কখনোই কড়া প্রতিবাদ করবে বলে মনে হয় না৷ বিচার মহান সৃষ্টিকর্তার উপরই ছেড়ে দিলাম৷

৫| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৪

রুদ্র জাহেদ বলেছেন:

আজ ফালানীর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেলানীর আত্মার মাগফেরাত কামনা
করার সাথে সাথে আমরা সবাই শপথ নেই আর কোন ফালানীর মৃত্যু মেনে নেওয়া
হবেনা। কড়া প্রতিবাদের সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ইটের জবাব দেওয়া
হবে পাটেকেলে। ভালো থেকো ফালানী যেখানেই থাকো। আমরা আছি তোমার
হেয়ে বাংলাদেশী সীমান্তসহ বিশ্বের সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রতিরোধ
প্রতিবাদ জানাতে।
বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে আর কী-বা বলার আছে!

৬| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪৮

প্রবাসী একজন বলেছেন: আরে ভাই এ সব আজাইরা পোষ্ট দিয়া কোন লাভ নাই, সাহস থাকে তো ইন্ডিয়ান টিভি, পন্য বর্জন করে প্রতিবাদ করেন। সেটা তো কেউ পারবেন না। আগামী ১০ বছর এ সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ থাকবে না ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হয়ে যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.