![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে প্রচলিত কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নই। সুতারং কেহ পক্ষ বা বিপক্ষ ভেবে আমাকে ভুল বুঝবেন না।
বেশকিছুদিন যাবৎ প্লান করছি আমরা কয়েকজন খইয়াছড়া ঝর্ণায় যাব। কিন্তু প্লান করেও কাজ হচ্ছিল না। দুইজন ফাইনাল করে তো চারজন সমস্যা দেখায়!
টিম লিডারের নির্দেশ এ যাত্রা শুরু!
অবশেষে সিদ্ধান্ত হল আমি, ওহিদ ভাই, খান ভাই তিন জনই যাব। আর দেরী করব ন। এবারের ১৫ই আগষ্টের সরকারী ছুটিতে। আমরা মোট তিন জন ফাইনাল করলাম। শেষে এসে আতাউল্লাহ ভাই আর সজিব ভাই যোগ দিলেন। মোট পাঁচ জনে মিলে যাত্রা শুরু করলাম।
চলছি আমরা ক'জন।
নির্ধারিত রাতে হানিফ পরিবহন কাউন্টারে সবাই একসাথে হইলাম। বাস ছাড়ল প্রায় রাত একটায়। ড্রাইভার উল্টপাল্টা গতিতে সবাই ভয়ে অস্তির! এক সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। কুমিল্লায় হোটেলে বাস থামলে ঘুম শেষ। ওহিদ ভাই অজু করে বাসে উঠেছিলেন। তিনি সময় মতো ফজর সালাত আদায় করলেন।
যাওয়ার পথের সৌন্দর্যের কথা আর কিতা কইতাম!
ভোর সাড়ে পাঁচটায় নামলাম বড়তাকিয়া বাজরের কাছাকাছি। সামান্য উত্তরে হেটে এসে আমাদের নির্ধারিত গাইড ফখরুল সাহেব এর বাসার উদ্দেশ্যে চললাম।কিছুদূর যাওয়ার পর সিএনজি আর চলে না! রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ খারাপ! অগত্য নেমে পুরা ভাড়া দিয়ে দিলাম হাঁটা।
পাহাড়ি এই রাস্তায় একখান বাড়ি কত্তাম চাই!
ফখরুল ভাইয়ের ঘরোয়া টাইপ হোটেলে ব্যাগ রেখে পাশেই ছড়ার ওপারে পাহাড়রের উপর গেলাম ছোট একটা মসজিদে ফজর সালাত আদায় করতে। সালাত আদায় করে এসে সকালের নাস্তা সেরে আমরা দেরী না করে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে রওয়ানা করলাম খইয়ছড়া ঝর্ণার উদ্দেশ্যে। সাথে গাইড হিসেবে দিলেন ফখরুল ভাইয়ের ভাগিনা তারেককে।সবার হাতে একটি করে লাঠি।
পাহাড়ি রাস্তায় চলতে বিশ্রাম প্রয়োজন।
পরে বুঝতে পেরেছিলাম খইয়াছড়া যেতে লাঠি কতোটা কাজে দেয়! পাহাড়ী ভয়ংকর উচুনিচু রাস্তায় তারেক যেভাবে চলতে লাগল, সেটা দেখে খান ভাই ওর নাম দিলেন শাখা মৃগ! ছেলেটিকে আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে। সে গাইড হিসেবে পারফেক্ট। পাহাড়ি পাথুরে-পাখিডাকা ছায়াসুনিবিড় রাস্তা দিয়ে চলার সময় মন হারিয়ে যাবে কোথয় খুঁজে পাবেন না!
মাঝে মাঝে গাইড(তারেক নামক) ছেলেটি হারিয়ে যায়!
সুবহান আল্লাহ! সুবহান আল্লাহ! চলছি আর দেখছি! দেখছি আর চলছি! মহান আল্লাহ তা'আলা প্রকৃতিকে কতো সুন্দর করে সাজিয়েছেন। সেই অদেখা সৌন্দর্য দেখে আমি বিমোহিত হয়ে যাই! অভিভূত হয়ে যাই! মন চায় এখানে ফিরে আসি বার বার। বিশাল বিশাল সবুজবৃক্ষে ঢাকা পাহাড়গুলো যেন সেই আমন্ত্রণ জানায় তার অপরূপসৌন্দর্যে ঢাকা শরীর দিয়ে। চলছি কখনও উচু পাহাড়ের উপর দিয়ে কখন পাহাড়ের নিচের রাস্তা দিয়ে কখনও ঢালু সমতলে কখনওবা পাহাড়ী ছড়া(ঝর্ণা) ধরে।
একা চলায় ভয় আছে!
কিছু কিছু রাস্তা পাড়ি দিতে হয়েছে ভয়ংকর। গাছের শিকড় ধরে লাঠিতে ভর দিয়ে। পিচ্ছিল খাড়া-ঢালু রাস্তাগুলো বৃষ্টিতে মারাত্বক হয়ে আছে! কিন্তু আমাদের গাইড তারেক লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে সবার আগে আগে। তার কাছে এসব যেন কোন ব্যাপারই না! তবে আমাদের কষ্ট হলেও যা উপভোগ করছি সেই অবারিত সৌন্দর্য ঘরে বসে থেকে আমরা কোথায় পাব!
প্রকৃতির দুহাতে ঢেলে দেয়া অপার সৌন্দর্য এভাবে গিলতে গিলতে একসময় আরো বিশাল এক সৌন্দর্যের দেখা পেলাম! ভাবলাম এটাই বোধ হয় শেষ! পরে আর কিছু নাই! কিন্তু আমাদের গাইড বলল, এখনও শুরুই হয়নি ঝর্ণা! এটা মাত্র আগের দেখা ওই ছড়া গুলোর উপরের দিক! মূল ঝর্ণায় যেতে আরো কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে!
এরা সাক্ষী দেয় তাওহীদের।
ওদের কাছে সামান্য এই সৌন্দর্যে আমি বেকুব হয়ে ঝিরি ধরে চলতে চলতে এক সময় উপরে উঠলাম। কানে এল উপর থেকে পানি পড়ার মনোমুগ্ধকর সংগীত। গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে যখন সাদা ফেনার মতো জলরাশির কিছু অংশ পড়া দেখলাম, মনে হচ্ছিল পুরা দেখলে, আমি সেই সৌন্দর্যে জ্ঞান হারাব! মরেই যাব!! বাঁচাতে পারবে না কেউ!!!
বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ অনুভূতি নিয়ে যখন তার সামনে গিয়ে দাড়ালাম মনে হচ্ছিল এই সৌন্দর্য এতদিন আমরই জন্য অপেক্ষায় ছিল! আমকে পেয়ে সে যেন আরো উজাড় করে মেলে ধরল তার লুকায়িত রূপযৌবন। আমি অপেক্ষা না করে ঝাপিয়ে পড়লাম তার কোলে!
দীর্ঘ সময় তার সাথে জলকেলি করে উঠে আসলাম। এবার আরো উপরে উঠব পরের ঝর্ণাগুলো দেখার জন্য। উপরে নাকি আরো আটটি ঝর্ণা আছে ধাপে ধাপে। কিন্তু খাড়া পাহাড় ধরে চিকন একটা দড়ি বেয়ে কিছুদূর উঠে সহপাঠিরা সাহস হারিয়ে ফেলল! তারা হয়তো ভাবলো জীবনে আরো অনেক দেখতে হবে। এই বয়সে আর প্রা্ণটা খোয়াতে চাইনা। বাকীদের সৌন্দর্য আর উপভোগ করা হলো নাগো সখী! উঠার চেয়ে নাম যেন আরো বেশি কঠিন হয়ে গেল!
নিচে নেমে একটু বিশ্রাম নিয়ে চকলেট-ওয়েফার কিছু খেয়ে। আমার সহপাঠি শুরু করল ঝর্ণার পানিতে-আশপাশে পর্যটকদের ফেলা ময়লা কুড়ানো। কুড়িয়ে সব এক জায়গায় করল। অনেক হল। তারপরও সব শেষ করতে পারল না! আপনারা ঘুরতে যান ভাল কথা, কিন্তু আপনারে পরেও আরো অনেকেই যাবে, অন্তত তাদের জন্য পারিবেশটা সুন্দর রেখে আসুন।
চলতে পথে একটা থামিলাম।
এক সময় ফেরার তাগিদ অনুভব করলাম। কিন্তু আমি আমার একজন সহপাঠিকে সাথে করে উপরে উঠার উদ্দ্যেশে ঝুঁকি নিয়ে উপরে উঠার সিন্ধান্ত নিলাম, এবং মহান আল্লাহর কৃপায় ১ঘন্টা সময় নিয়ে পাহাড়ী আঁকাবাকা পথ বেয়ে ভয়ে ভয়ে পাহাড়ের সর্বোচ্চ চুড়ায় উঠে গেলাম তবে সরাসরি বানরের ডাক শুনতে পেলাম, উপরে উঠার সময় আছে ঝোঁকের ভয়, আমার পায়ে ৩টা ধরেছিল, কিন্তু সাহসের সাথে তা হাত দিয়ে ধরে ছুড়ে ফেলে দিলাম।
আমাদের জন্য জন্য অন্যরা কিছু সময় অপেক্ষা করে ফিরতি পথ ধরলো। তখন অলরেডি সকাল নয়টা বেজে গেছে! ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে আমাদের যে আবার নাপিত্তাছড়ার পথ ধরতে হবে। সময় বড় কম! তাই তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে চলে এলাম ফখরুল ভাইয়ের ঘরোয়া হোটেলে। ঠিক দুপুর দশটায় লাঞ্চ সেরে আমরা রওয়ানা করলাম নাপিত্তাছড়ার উদ্দেশ্যে।
Live Like a Traveler in Dunya.
লেখা সংগ্রহ : ব্লগার আব্দুল মাজেদ এবং ছবি ব্লগার অহিদুল ইসলাম।
২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:০৮
আব্দুল মােজদ বলেছেন: ভাই এটা যে আমার লেখার কপি সেটা উল্লেখ করে দিন। তাছাড়া আমাকে বা আপনাকে লোকজন ভুল বুঝতে পারে। ইনশা আল্লাহ আমরা আবার যাব এ্ইখানে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩২
প্রামানিক বলেছেন: দারুণ লাগল ছবি এবং বর্ননা।