নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাংলাদেশের প্রান্ত হতে আপনাকে হাজার সালাম! ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক

ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাংলাদেশের প্রান্ত হতে আপনাকে হাজার সালাম! ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পিতা মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক

শাফিউর রহমান ফারাবী

মুক্তির ১ পথ খিলাফত খিলাফত খিলাফতের দাবিতে নামতে হবে রাজপথে খলিফা বারবার সৈন্য প্রেরন করবেন। আমার Facebook User Name:- shafiur2012

শাফিউর রহমান ফারাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ওহুদ যুদ্ধ চলাকালীন কিছু ঈমানদিপ্ত কাহিনী

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৪৫

ওহুদ যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে এক জটিল ঘটনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনে সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তের মাঝে এই ওহুদ যুদ্ধ একটি। সীরাতে ইবনে হিশাম থেকে শুরু করে সকল প্রাচীন সীরাত ও হাদীসের গ্রন্থগুলিতে ওহুদ যুদ্ধের কাহিনী খুব গুরুত্ব সহকারে বর্ণিত আছে। আমি এখানে সীরাতে ইবনে হিসাম ও আল্লামা ইদ্রীস কান্ধলভী রহ এর লেখা সীরাতুল মোস্তফা সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ওহুদ যুদ্ধের কিছু ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করব।



ওহুদ যুদ্ধের প্রথমে মুসলমানদের জয় হয়েছিল। কিন্তু তীরন্দাজরা যখন ভাবেন যে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে তাই তাদের নির্ধারিত জায়গা ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধের ময়দান পরিত্যাগ করা শুরু করলেন তখন কাফেররা পাল্টা আক্রমন করে। এমনকি কাফেররা রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছ পর্যন্ত পৌছে যায়। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সরাসরি তলোয়ার হাতে নিয়ে যুদ্ধ করার অনুমতি ছিল না। ওহী দ্বারা উনাকে অনেক আগেই এটা নিষেধ করা ছিল। এবং কোন জিহাদেও রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তলোয়ার হাতে নেননি। কারন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন শুধু রহমতের প্রতীক। যাই হোক তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন কে আছ যে কাফেরদেরকে আমার কাছ থেকে সরিয়ে দিবে এবং জান্নাতে আমার বন্ধু হবে ? তখন ৭ জন আনসার সাহাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এলেন। একে একে তাঁদের ৭ জনই শহীদ হয়ে যান। সাহাবী সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাঃ এর কাফের ভাই উতবা ইবনে আবু ওয়াক্কাস সুযোগ বুঝে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিচের দাতের পাটি পড়ে যায় এবং ঠোট থেকে রক্ত পড়া শুরু করে। তখন সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাঃ বলেন তখন আমি আমার আপন ভাইকে হত্যা করার জন্য যতটা আগ্রহী ও উৎসাহ হয়ে পড়ি জীবনে আর কখন কাঊকে হত্যা করার জন্য এতটা আগ্রহী বা উৎসাহিত হয় নি।



কুরায়েশদের পাথরের আঘাতে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখমন্ডল থেকে রক্ত পড়তে থাকে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছিলেন হে আল্লাহ আমার কওমকে ক্ষমা কর কেননা তারা জানে না। সাহাবী মালিক ইবনে সিনান রাঃ নিজের মুখ দিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সমস্ত রক্ত চুষে উনার মুখমন্ডল পরিস্কার করে দেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেন তোমাকে জাহান্নামের আগুন কখনই স্পর্শ করবে না।



কুরাইয়েশদের বিখ্যাত পালোয়ান ইবনে কুমাইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে এত জোরে আঘাত করে যে বর্মের ২ টি লৌহ খন্ড উনার মাথার ভিতর ঢুকে যায়। হযরত আবু উবাইদা ইবনে জাররাহ রাঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখ থেকে লৌহ দন্ড গুলি বের করতে যেয়ে উনার নিজের দাঁত দিয়ে ধরে কামড়ে টান দেন এতে ঐ সাহাবীর ২ টা দাঁত ভেঙ্গে যায়। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেন কিয়ামতের দিন আল্লাহ তোমাকে হাস্যজ্জোল দাঁত দিয়ে পুনরুত্থিত করবেন। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পাহাড়ের উপর উঠতে মনস্থ করলেন কিন্তু নিজের শারীরিক দূর্বলতার জন্য পাহাড়ের উপর উঠতে পারছিলেন না তখন তালহা রাঃ বসে পড়েন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিঠে পা রেখে আরোহন করেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন তালহা নিজের জন্য জান্নাত ওয়াজীব করে নিয়েছে। কাফেরদের আক্রমন প্রতিহত করার সময় তালহা রাঃ হাতের সব আঙ্গুল গুলি কেটে যায় তখন তিনি অবলীলায় বলে উঠেন হাসান বা উত্তম হয়েছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তালহা কে বলেন তুমি যদি তখন হাসান না বলে বিসমিল্লাহ বলতে তাহলে ফেরেশতারা তোমাকে উঠিয়ে নিয়ে যেত এবং কাফেররা তোমার দিকে তাকিয়ে থাকত। এমনকি ফেরেশতারা তোমাকে নিয়ে আসমানে প্রবেশ করত। কায়স ইবনে হাযম রাঃ বলেন আমি তালহার ঐ হাত দেখেছি যা দিয়ে সে ওহুদ যুদ্ধে কাফেরদের আক্রমন প্রতিহত করেছে, তা ছিল সম্পূর্ণ পক্ষাঘাত গ্রস্থ। হযরত আবু বকর রাঃ বলেন ওহুদ যুদ্ধের দিন তালহার শরীরে ৭০ টির বেশি আমরা জঘম পেয়েছি। ঐ দিনের পুরাটাই ছিল তালহার জন্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওহুদ যুদ্ধের প্রসঙ্গ উঠলেই বলতেন যে ব্যক্তি শহীদকে জীবিত অবস্থায় পৃথিবীতে চলাফেরা করতে দেখতে চায় সে যেন তালহাকে দেখে। কাফেররা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি বৃষ্টির মত তীর ছোড়া শুরু করে তখন সাহাবী আবু দুজানা রাঃ মানব বর্ম হিসাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু এই চরম মূহুর্তেও ঐ সাহাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি বেয়াদবী হবে ভেবে উনার পিঠ রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মুখের সামনে না এনে উনার মুখ রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সামনে রাখেন আর উনার পিঠ কাফেরদের সামনে দিয়ে কাফেরদের তীর ও বর্শার আঘাত সহ্য করে যাচ্ছিলেন।



সুবহানাল্লাহ দেখুন সাহাবীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মানের প্রতি কিরকম লক্ষ্য রাখতেন। কাফেরদের তীর ও বর্শার আঘাতে সাহাবী আবু দুজানার পিঠ চালুনির মত হয়ে যায়। উনি ঐখানেই শহীদ হয়ে যান। ঠিক এরকম ভাবে সাহাবী কাতাদা ইবনে নুমান রাঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে রক্ষা করতে যেয়ে তার চোখে কাফেরদের তীর পড়ে উনার চোখের মনি বের হয়ে আসে। ঐ চোখের মনি সাহাবী কাতাদা রাঃ নিজ হাতে ধরে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চোখের মনিটিকে চোখের যথাস্থানে রেখে দিলেন। তৎক্ষনাৎ কাতাদা রাঃ এর চোখ আগের চেয়েও সম্পুর্ণ সুস্থ ও জ্যোতির্ময় হয়ে উঠে। হযরত সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাঃ ছিলেন দক্ষ তীরন্দাজ। উহুদের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক এক টি তীর সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস রাঃ এর হাতে তুলে দিতে থাকেন আর বলেন তোমার প্রতি আমার পিতা মাতা উৎসর্গ হোক। হযরত আলী রাঃ বলেন সাদ ইবনে আবু ওয়াক্কাস ছাড়া আর কারো জন্য আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে তার পিতামাতাকে উৎস র্গ করতে শুনেনি।







[ তথ্যসূত্রঃ সীরাতে ইবনে হিসাম, সীরাতুল মোস্তফা সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আর রাহিকুল মাখতিম, মেশকাত শরীফের ওহুদ যুদ্ধ অধায় ]



.

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৫৯

রাফাত নুর বলেছেন: আমরা কতোটা সৌভাগ্যবান যে আমরা হযরত মুহাম্মদ (স:) এর উম্মত। আমি এটা সবাইকে বলতাম যে নবিজী নিজে তরবারি হাতে যুদ্ধ করে নাই। অনেকে বিশ্বাস করতো , অনেকে করতো না।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ১:২৮

কামরুল হাসান রাজিব বলেছেন: রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নিজ হাতে তরবারি তুলে নিয়ে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি,
এই তথ্যটি আমি আজ এ প্রথম জাতে পারলাম।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ৮:৩৩

গাজী সালাহউদ্দিন বলেছেন:
রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে নিজ হাতে তরবারি তুলে নিয়ে কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেননি,
এই তথ্যটি আমি আজ এ প্রথম জানতে পারলাম।

তবে কেমন জানি লাগত যুদ্ধের কাহিনী গুলো পড়লে -- কেননা মহানবীর কাউকে আঘাত করার কথা কোথাও পাইনি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.