![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এতো ঠুনকো খোলস তুমি পড়েছো পাগল, এতো পলকা দেয়ালে তুমি ঘিরেছো নিজেকে, চাইলেই সেই দেয়াল ভেঙে দেয় কোন আদুরে নরোম হাত।
পিচ্চিটা যখন তার বাবার সাথে হাঁটতে বের হয়, তখন বাবার তর্জনীটা ধরলেই পিচ্চির মুঠিটা ভরে যায়। পিচ্চির কাছে নিজেকে চাচা চৌধুরী আর বাবাকে সাবু মনে হয়। আসে পাশে সব রাকার মতো বিশাল বিশাল লোক, পিচ্চি চোখ বড়ো বড়ো করে দেখে।
মানুষের ভিড়ের মধ্যে বাবা আস্তে আস্তে পা ফেলে হাঁটেন, জোরে হাঁটলে পিচ্চি হাঁপিয়ে যাবে, তখন কোলে উঠতে চাইবে, বাবা চান সে নিজেই হেঁটে অভ্যস্ত হোক।
বাবার সেই "আস্তে হাঁটার" সাথে তাল মেলাতেই পিচ্চিকে বাবার পাশে প্রায় দৌড়াতে হয়। অচেনা মস্ত মস্ত মানুষদের ভিড় বাড়তে থাকে, তারা কেমন করে যেনো পিচ্চির দিকে তাকায়। পিচ্চি ভয় পায় না, বাবার আঙুল আরো শক্ত করে মুঠি করে ধরে, জানে বাবা আছেন, ঠিকই এই মানুষের জঙ্গলের ভেতর থেকে পিচ্চিকে বের করে নিয়ে যাবেন। পিচ্চির মনে হয় বাবা তার সুপারম্যান, শুধু জামাকাপড়ে আরো ভদ্র।
হয়ও সেটাই, বাবা কেমন করে যেনো পিচ্চি কে প্রায় উড়িয়ে নিয়ে ভিড়ের ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসেন। পিচ্চির মুখ ভরে যায় অমায়িক হাসিতে। সেই হাসির ভেতর লেখা থাকে - "আমি জানতাম বাবা, তুমি পারবে।"
অনেক বছর পরে, পিচ্চি একদিন ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যায়। এক মুহূর্তের জন্য তার হাত ভয় পেয়ে আপনা থেকেই মুঠি হয়ে আসে, কিন্তু সেই মুঠির ভেতর সে এবার আর খুঁজে পায় না বাবা বাবা ঘ্রাণের আঙুলটা।
পিচ্চি ভিড়ের মধ্যে দিশেহারা বোধ করে। এই ভিড় ঠেলে কিভাবে বের হতে হয় সেটা তো তার জানা নেই, সেটা তো শুধু বাবাই জানতেন। আশে পাশের মানুষ গুলো পাশ কাটানোর সময় অদ্ভুত ভঙ্গীতে পিচ্চির দিকে তাকায়, পিচ্চি ভয়ে কুকড়ে যায়, আরেকবার মুঠির মধ্যে বাবার আঙুলটার শুন্যতা তাকে কষ্ট দেয়।
তখন কানের কাছে বাবা ফিসফিস করে বলে ওঠেন, - " শোন পিচ্চি, সত্যি বলতে কি, সেদিন আমিও তোকে নিয়ে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেছিলাম, কি করে বের হতে হবে এই ভিড় ঠেলে আমিও বুঝে পাই নি। কিন্তু তুই যে আমার আঙুল শক্ত করে চেপে ধরতি, সেইটা আমাকে সাহস দিতো। মনে হতো পিচ্চি আমার উপরে ভরসা করে আছে, আমাকে যে করেই হোক ভিড় ঠেলে বের হতেই হবে। তুইও সেরকম করে ভাব, দেখবি কোন অচেনা ভিড়ে তোর পথ করে নিতে মুশকিল হবে না। "
পিচ্চি চমকে পিছনে তাকায়, কেউ নেই পিছনে !
এই প্রথম সে বুঝতে পারে, তার পিচ্চি হয়ে থাকার দিন আসলে শেষ। এখন বাবার মতই তাকেও তার পথ নিজেকেই করে নিতে হবে, হয়তো বাবার মতোই একদিন ভরসা হতে হবে তার নিজের পিচ্চিদের কাছেও, আর সেই পথ চলার শুরু আজকেই, এই ভিড়ের ভেতর পথ করে নেয়া থেকেই।
সে জানে, বাবা না থেকেও আছেন, কোথাও না কোথাও থেকে তো বাবা দেখছেনই পিচ্চিকে। বাবা পিচ্চিকে কখনোই পুরোপুরি ছেড়ে যেতে পারেন না, কারণ পিচ্চি তো বাবারই একটা অংশ।
সে কাঁধ ঝাকিয়ে দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলার একটা ভঙ্গি করে। তার পর বড়ো করে একটা দম নিয়ে ভিড় ঠেলে ঠেলে এগিয়ে যায়।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: মাতবর
তোর ছবি আগের টাই বেশি ভালো ছিলো, এটা ভাল্লাগছে না
২| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০১
হাসান মাহবুব বলেছেন: এই নির্ভরতাগুলোই বেঁচে থাকার শক্তি। ভালো লাগলো লেখা।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ধন্যবাদ হামা ভাই।
৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০১
নির্ভীক আহসান বলেছেন: আপনার লেখা গল্পগুলো ভাল লাগে (এখন মনে হয় একথা লিখতে বাঁধা নেই)। কিন্তু অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়। একটু তাড়াতাড়ি লিখতে পারেন না।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: লেখক বলেছেন: আসলে ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য গল্প লেখায় ওভাবে সময় দিতে পারি না। তবে কবিতা লেখা হয়।
আশা করি সামনে খুব শিঘ্রই ব্যস্ততা কাটিয়ে উঠতে পারবো, তখন প্রত্যাশা পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে।
শুভকামনা রইলো।
৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০৪
আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন:
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০৫
টেস্টিং সল্ট বলেছেন:
৫| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪
সমুদ্র কন্যা বলেছেন: এভাবেই পিচ্চিরা বড় হয়ে ওঠে, তাদের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যত প্রজন্ম।
খুব ভাল লাগল লেখাটা।
২১ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ধন্যবাদ সমুদ্র কন্যা।
৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:১৫
মুহাম্মদ যিয়ান ইলাহী বলেছেন: @নাজিম-উদ-দৌলা
আজকের ঐ পিচ্চিই তো আগামিদিনের বাবা।
- পিচ্চিটা মেয়ে হৈলেও?
২১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৭
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: এই তো ধরে ফেলেছেন।। হাহাহাহাহা
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫২
নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: আজকের ঐ পিচ্চিই তো আগামিদিনের বাবা। সংসারের কর্তার দায়িত্ব পরিবারের নিরাপত্তা প্রদানে যা যা সম্ভব সব করা। যুগে যুগে পুরুষদের এই দায়িত্ব পালন করতে হয়। বাবা করেছেন, আমি করব, আমার ছেলেরা বড় হয়ে করবে। এই দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। যে এড়িয়ে যায় সে পুরুষ না, কাপুরুশ।
ডায়লগ মেরে দিলাম।
অতি চমৎকার লিখেছিস!