![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অতি সাধারন একটা ছেলে। গ্রামে থাকি। স্বপ্ন দেখি একদিন বড় সাংবাদিক হবো। সে প্রচেষ্টায় থাকি প্রতিটা মুহুর্ত। আপাতত একটি অনলাইন মিডিয়ায় সম্পৃক্ত।
মাধ্যমিকে যখন ভর্তি হই, তখনও আমি হাফ প্যান্ট পড়ি । এক কিলোমিটার দুরের স্কুলে পায়ে হেঁটে যাই। বেশ কয়েকদিন যাওয়ার পরই ক্লাসে নতুন মেয়ের আগমন। ওড়না ছাড়া ফ্রক ও হাফ প্যান্ট পড়ুয়া মেয়েটি আমার ক্লাসেই নতুন ভর্তি হল। আমরা সহপাঠি হলাম।
ক্লাসের ফার্স্টবয় ছিলাম। গ্রামের সাধারণ স্কুল। মেধাবী ছিলাম। ক্লাসে প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল না, তাই আমিই রাজা। সারাবছর না পড়েও প্রথম হতাম। এই প্রথম হওয়াতে আমি গর্বিত ছিলাম না। অনেকটা ভেড়ার দলের সরদার মনে হতো নিজেকে। পড়াশোনায় খুব বেশি মনোযোগী না হলেও সারাদিন আড্ডা আর দুরন্তপনায়ই মেতে থাকতাম। ছেলে বন্ধুর তুলনায় সবসময় মেয়ে বন্ধুর সংখ্যা আমার বেশি ছিল। নিজেকে মনে করতাম কন্যা রাশির জনক! ক্লাসের অন্য মেয়েদের সঙ্গে আমার অত্যন্ত সখ্যতা থাকলেও আমি চাইতাম অন্য একজনকে। সেই ফ্রক পড়া মেয়েটির বন্ধুত্ব পেতে সারাদিন পিছু পিছু করতাম। যেচে যেচে ঝগড়া বাধাতাম। বুদ্ধির জোরে সরি বলে নিজের ব্যক্তিত্ব দেখাতাম। ইমপ্রেস করার চেষ্টা করতাম। পড়াশোনায় সে আমার পরেই অবস্থান করতো সবসময়। ওর ছিল বিশাল এক ফলোয়ার। আর আমি তো স্বঘোষিত রাজা! বন্ধু-বান্ধবীর অভাব ছিল না। আমি খুব সাধারণ থাকলেও পড়াশোনায় ভালো থাকায় সবাই একটু এক্সটা খাতির করতো। ভাব জমাতো। আর এভাবেই হাসি ঠাট্টা-ছোট ছোট ঝগড়া, ক্লাসে পড়া পারা না পারা নিয়ে বানানুবাদ, গ্রুপিং করতে করতেই আমরা বড় হতে থাকলাম।
হাফ প্যান্ট ছাড়লাম সবাই। ফ্রক ছেড়ে সে সালোয়ার কামিজ ও দোপাট্টা ধরলো। আমি তাকে খুব গভীর ভাবে দেখতাম সবসময়। ওর টানাটানা দুচোখের চাহনী আমাকে পাগল করতো। ওর মিষ্টি হাসিতে আমি হারিয়ে যেতাম স্বপ্ন সাগরে। গোলগাল চেহারার অসাধারণ সুন্দরী লাস্যময়ী সেই মেয়েটিকে আমি নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেললাম। ক্লাসজুড়ে একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে থাকা, টিফিনের ফাঁকে কমনরুমের জানলা বরাবর তাকিয়ে থাকা, সারাক্ষণ ওর খোঁজ খবর নেয়া, ছুটির দিনে ওকে দেখতে না পারার ব্যাকুলতা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতো। বারবার প্রশ্ন করতাম নিজের কাছে। অন্তঃআত্মা থেকে উত্তর আসতো তুই ওকে ভালোবেসে ফেলেছিসরে পাগলা..!
সেই থেকে ভালোবাসা শুরু। আমি তাকে ভালোবাসতে থাকি। জৈবিক কিংবা দৈহিক চাহিদা বুঝতাম না। ভালোবাসার পরিণতি কি তাও ভাবতাম না। তবে ভালোবাসতাম তাকে মনপ্রাণ দিয়ে। উজাড় করে। স্কুল জীবনে প্রপ্রোজ ডে চলে গিয়েছে বেশ ক'বার। প্রপ্রোজ করার সাহস আমার ছিল না। তবে ও বুঝতে পারতো আমি ওকে ভালোবাসি। এভাবেই বুঝাতে বুঝাতে আর সে বুঝতে বুঝতেই আমরা মাধ্যমিক পাশ করলাম। এর মাঝে আমিও বুঝতে পেরেছিলাম, সেও আমাকে ভালোবাসে। এবং মন থেকেই। তবে সে চায়না রিস্ক নিতে। গ্রামের রক্ষণশীল পরিবার। জানলেই সোজা বিয়ে দিয়ে দিবে।
শত বাধাবিপত্তি পেরিয়ে আমরা কলেজে পা দিলাম। কলেজ জীবনের শেষের বছরের শুরু থেকে মাঝ পর্যন্ত আমরা দুজন খুব বেশি ভালো ছিলাম। সুখে ছিলাম। তবে যতোটা সুখে ছিলাম, ঠিক উল্টো ততোটাই বরং তারচেয়ে বহুগুণ বেশি পাহাড়সম দুঃখ দিয়ে শেষ হয়েছে আমার কলেজ জীবন, আমার কিশোর বয়সের প্রেমের জীবন। শৈশবে শুরু করে কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের প্রারম্ভে এসেই আমার প্রেমময় জীবন ইতি টেনেছে, স্থবির হয়ে গেছে আমার উড়ু উড়ু মন। ভালোবাসার সেই ফ্রক পড়া ঘুড়িটি ভালো আছে অন্যাকাশে। আমিও ভালো আছি তার ভালোবাসার স্মৃতি নিয়ে... ।
সংযুক্তি: নিজ হাতে আঁকা তার পোট্রেট
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:১৯
মুহাম্মদ ফজলুল হক বলেছেন: আমি কবি কিংবা সাহিত্যিক নই। মনের কথাগুলো গুছিয়ে লেখার মতো শব্দজ্ঞানও নেই। তবুও লিখেছি। তাই লেখায় ভূল থাকা স্বাভাবিক। আর হ্যা, ক্লাসে ছাত্র একজন ছিল না। প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রী ছিল। আমি লিখেছি, আমি ফার্স্ট হলেও গর্ববোধ করতাম না। কারণ যে এলাকায় স্কুলটি ছিল, সে এলাকার ম্যাক্সিমাম মানুষ শিক্ষিত ছিল। অপেক্ষাকৃত ধনী ছিল। তাই ঐ গ্রামের ভালো এবং মোটামুটি ভালো স্টুডেন্টগুলোও উপজেলায় ভালো স্কুলে পড়াশোনা করতো। আর আমি অন্যগ্রামের ছেলে। অর্থাভাবে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ হয়নি। তাই ওখানে গিয়ে মরেছি। ক্লাসে শতাধিক ছাত্রছাত্রী থাকলেও মেধাবী ছাত্রছাত্রী'র বড় অভাব ছিল।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভ কামনা।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৭
একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
আপনি তো দারুন আকেন
আর তাই
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৩
মুহাম্মদ ফজলুল হক বলেছেন: ছবিটি আমার আঁকা নয়। এই ছবিটার আর্টিস্ট আমার সেই বান্ধবী। সে পেন্সিল দিয়ে নিজের পোট্রেট আকার চেষ্টা করতো। অনেকদিন চেষ্টার ফসল এই ছবিটি। এই ছবিটির চোখ, নাক, মুখের গোলাকৃতি তার সঙ্গে অনেকটাই মিলে যায়। এই ছবিটি সে আমার খাতায় ২০১২ সালে, আমার থেকে চলে যাওয়ার ঠিক পনেরো দিন আগে একেঁছিল।
ধন্যবাদ আপনার গুলাবের জন্য। ভালো থাকবেন।
৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:৩১
১১স্টার বলেছেন: ভালোবাসার সেই ফ্রক পড়া ঘুড়িটি ভালো আছে অন্যাকাশে। আমিও ভালো আছি তার ভালোবাসার স্মৃতি নিয়ে...
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৩
মুহাম্মদ ফজলুল হক বলেছেন: হ্যা। আমিও ভালো আছি।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৪
পাঠক১৯৭১ বলেছেন:
আপনি লিখেছেন, "টিফিনের ফাঁকে কমনরুমের জানলা বরাবর তাকিয়ে থাকা, সারাক্ষণ ওর খোঁজ খবর নেয়া, ছুটির দিনে ওকে দেখতে না পারার ব্যাকুলতা আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতো। "
না দেখার ব্যাকুলতা আপনাকে "প্রশ্নবিদ্ধ" করতো?
ফাস্ট হয়েছিলেন, কারণে ক্লাশে ছাত্র ছিল ১ জন!