নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফাহিমা দিলশাদ

আমি খারাপে তোমার কাছে হেরে যাবো এ আমার অপারগতা কিন্তু তুমি ভালোতে আমার কাছে হেরে যাবে এ তোমার ব্যর্থতা

ফাহিমা দিলশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলেবেলার একাল সেকাল

১২ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:০৭

আমার বাবা আর মামনির মুখে সবসময় ওদের ছেলেবেলার কথা শুনি। বাবা গ্রামের ছেলে তাই তার আনন্দ অন্যরকম কিন্তু মামনি ঢাকার মেয়ে হয়েও যে আনন্দ করেছে তা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারি না। মামনির মুখে শোনা তার ছেলেবেলা –



আমাদের ছেলেবেলা কেটেছে সিদ্ধেশ্বরীতে। সকাল হলেই কিছু খেয়ে তোমার মামার সাথে খেলতে বের হয়ে যেতাম। তোমার নানা অফিসে যাওয়ার আগে সবাইকে পয়সা দিয়ে যেত তাই দিয়ে সারাদিন কিছু না কিছু কিনে খেতাম। তোমার মামার সাথে আমিও প্যান্ট সার্ট পরতাম আর পকেটে একটা ছোট ছুরি নিয়ে নিতাম যাতে গাছে উঠে আম পেড়ে কেটে খেতে পারি। বর্ষার সময় একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যেত তাই স্কুল বন্ধ থাকত। তখন সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজতাম আর সবাই মিলে স্কুলের মাঠে ফুটবল খেলতাম। কখনো দুপুরে খাওয়ার জন্য বাসায় যেতাম কখনো খেলতে খেলতে খাওয়ার কথা ভুলে যেতাম। বিকেলবেলা যখন কাদায় মাখামাখি হয়ে বাসায় যেতাম তখন তোমার নানু রাগ করতে চাইত কিন্তু আমার দাদী মানে তোমার বড়মার কারনে বকা দিতে পারত না। বৃষ্টির দিনে আমাদের বাড়ীর উঠানেও পানি জমে যেত। তখন সবাই মিলে মাছ ধরতাম। আমার অনেকগুলো ছোট ছোট বৈয়ম ছিল। রঙ বেরঙের মাছ ধরে ওই বৈয়মে রাখতাম। আমাদের সবার স্কুলের বই খাতা নেয়ার জন্য ছোট ছোট টিনের সুটকেস ছিল। সেটার ভিতর কখনো ফড়িঙ আর কখনো প্রজাপতি আটকে রাখতাম। অনেক সময় জোনাকি ধরেও বৈয়মে রাখতাম। মাঝে মাঝে ফড়িঙের লেজের সাথে সুতা বেঁধে আমাদের পড়ার টেবিলের পায়ের সাথে বেঁধে রাখতাম।



মামনির ছেলেবেলার গল্প শুনলে আমার কেন যেন হিংসে হয়।

আমিঃ আচ্ছা মামনি তুমি কেন আমাকে বাইরে থেকে কিছু কিনে খেতে দিতে না?

মামনিঃ তোমাদের সময় তো সবকিছুতেই ভেজাল তাই মানা করতাম।

আমিঃ তুমি কেন আমাকে কখনো বৃষ্টিতে ভিজতে দাওনি?

মামনিঃ আমাদের সময় তো আর টিচার ছিল না তাই জ্বর এলেও কোন সমস্যা ছিল না কিন্তু তোমার তো টিচার আসত আর তোমার জ্বর হলে টিচার মিস হয়ে যেত তাই ভিজতে দিতাম না।



আসলেই তো তাই। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে একটু কিছু খেয়েই তো আমি স্কুলে চলে যেতাম। স্কুল থেকে এসে দুপুরের খাওয়া খেতেই টিচার চলে আসত। তারপর যেতাম গানের স্কুলে। সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা। তারপর হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে আবার আগামী দিনের পড়া তৈরি করা। স্কুলে টিফিনের সময় ছাড়া আমার তো খেলার সময়ই ছিল না। মামনির মত আমার গাছে ওঠার কোন স্মৃতি নাই, মাছ ধরার স্মৃতি নাই, বৃষ্টিতে ভিজারও কোন স্মৃতি নাই। আমার মার মত আমি কখনো আমার মেয়েকে আমার ছেলেবেলার মজার মজার স্মৃতির কথা বলতে পারব না। যে ছেলেবেলা আমি বা আমার মত অনেকই কাটিয়েছে সেটাকে আসলে ছেলেবেলা বলা যায় কিনা কে জানে? যদি ছেলেবেলা বলা না যায় তাহলে যেখানে আমারই কোন ছেলেবেলা ছিল না সেখানে আমি কি আমার সন্তানকে একটা সুন্দর ছেলেবেলা দিতে পারব?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:০৬

অচেনা নীড় বলেছেন: ami gramer chale, amer mone hoy j grame thake nai ter jiboner ordak anondo e mati

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:৩১

ফাহিমা দিলশাদ বলেছেন: হয়ত ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.