![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত কাটে নিঘু\'ম তাই নিশ্চুপ ভেবে যাই, ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি তোমায়...
১.
সালটা ছিলো ২০০৮, একটা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরি জীবন শুরু করি। ঢাকার গ্রীন রোডের জাহানারা গার্ডেনে ভাইয়ার বাসায় থাকি। একটা ডেস্কটপের সাথে ল্যান্ড লাইন ছিলো। ছিলো ব্যস্ততা। অবসর সময়ের অনেকটাই কাটাতাম ইয়াহু আর ইস্কাইপি ম্যাসেঞ্জারে। প্রচুর ফরেইনার কানেকটেড ছিলো, টারগেট ইংলিশ প্রাকটিস করা। এরই মাঝে কিছু স্বদেশিও ছিলো বটে। কিভাবে যেন একটা কানেকশন হলো, ঠিক মনে নেই – নাম বুশরা আভা। ওই সময়টাতেই বোধহয় এক নেতা তার নিজের ভাগ্নীকে পাশবিকভাবে মেরে ফেলেছিলো। মেয়েটির নাম ছিলো বুশরা..!
২.
বুশরাও নতুন চাকুরি জীবন শুরু করেছিলো তখন একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানিতে। নাম বলেছিলো, ভুলে গেছি। আমি তাকে ডাকতাম আভা বলে, ইংলিশ স্পেলিং এ আভা শব্দটা প্রায়শই ভুল হতো আর ও শুধরে দিতো। বুশরার ছিলো অসম্ভব কন্টোল ইংলিশে। তার চোস্ত ইংলিশের কারনে প্রচুর টেক্সটিং হতো। মাঝে মাঝে ওর ইংলিশ ওয়ার্ড কয়েনিং, এক্সপ্রেশন আর হিউমার সেন্স আমাকে নাড়িয়ে দিতো। চমৎকৃত হতাম। ব্যাপক স্মার্ট, উউউউও।
খুবই সল্প সময়ে, সম্ভবত চার কি পাচ দিনের মাথায় সে আমাকে আমার ফোন নাম্বার চাইলো। আমি মনে মনে হেসে ফেললাম।
বললামঃ কেন?
ঊত্তরঃ কথা বলবো।
কি বলব ভাবতে না ভাবতেই সে টেক্সট করলো, কি ভয় পেয়েছেন? আমি উত্তরে একটা শুকনা হাসি দিলাম। খুবই এগ্রোসিভলি সে রিপ্লাই করলো, কি সাহসে(পুনশ্চঃ১) কুলাচ্ছে না? এবার আমি ভয়ই পেলাম। লে বাবা কি এডভান্স রে। প্রতিউত্তরে হাসি দেওয়া ছাড়া আর কিইবা করার আছে। চুপচাপ কিছু দেতো হাসি দিলাম। যতদুর মনে পড়ে ও তার সেল নম্বরটি সম্ভবত ড্রপ করেছিলো।
৩.
বুশরা মাঝে মাঝেই অনলাইনে আসতো আর হুটোপুটি করে চলে যেত। বছরখানের গ্যাপের পর একদিন এসে বুশরা একটা নিউজ জানালো, সি গট ম্যারিড। বৃত্তান্ত জানাতে শুরু করলো। জানলুম, প্রফেশনে বেশ প্রগ্রেস হচ্ছে তার।
অনলাইনে আমি বসি কম, বুঝতে পারলাম চ্যাটিং থেকে নতুন শব্দ শেখার সম্ভাবনা নেই। সবই রিপিটেশন। ইয়াহু মেইল ইউজ করি বিধায় শুধু মাঝে মাঝে অনলাইনে বসি। এমনই একদিন বুশরার আগমন, জানালো তার একটা ছেলে হয়েছে। সে ছবিও আমাকে পাঠিয়েছিলো। ভালো, কিউট।
৪.
সেদিন অবরোধের ভিতরে অফিস করছিলাম। অফিসে বেশ কিছু কাজের দরুন সন্ধ্যা হয়ে গেলো। সম্পুর্ন অফিসে একা, নিজের ডেস্কে বসে কাজ শেষ করে মেইল পাঠাতে বসেছি। হঠাৎ একটা টেক্সটঃ
-কেন্ট রিমেম্বার, হু আর ইউ?
উত্তরে একটা হাসি পাঠালাম। বললাম- হেল্লো আভা।
-তুমি হচ্ছো সেই যার ফোন নম্বর আমি চেয়েছিলাম, আই রিমেম্বার।তুমি কক্ষনোই তোমার সম্পর্কে আমাকে কিছু বলো নি।
-হেসে বললাম আমি, আচ্ছা, কি জানতে চাচ্ছো তুমি? বলো আমি জানাচ্ছি। Do you wanna know my particulars?
– না, না, দরকার নেই, ইউ আর এ মিস্টেরিয়াস ম্যান। বলেই সে অনেক যুক্তি-তর্ক শুরু করলো। হাসি মুখে শুনছিলাম তার কথা। বাসায় চলে আসতে হবে বলে আমার তাড়া, ও বুঝে ফেললো। বাই বলার আগে ও বললো,
-তোমাকে তো আমি সবসময় আমার নিউ নিউজটা জানাই তাই না?
কথাটা বুঝতে না পেরে হাসি দিলাম।
-তোমাকে আমি আমার বিয়ের নিউজ দিয়েছি, বাচ্চা হবার নিউজ দিয়েছি। তোমাকে আজ আরেকটা নতুন নিউজ দিবো।
এবার বিষয়টা বুঝে বেশ জোরে হেসে বললাম নিশ্চয়ই। নিউ নিউজ শুনতে কার না ভালো লাগে। বলো বলো।
বুশরা একটু সময় নিচ্ছে দেখে আমি কাগজপত্তর গোছাতে শুরু করেছি। যেতে হবে।
স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি বুশরার টেক্সট, গত মাসে আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে। প্রথমে বুঝতে পারলাম না বিষয়টা কি। আর কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখলাম বুশরা সময় না দিয়ে বাই বলে তার নতুন নিউজটা দিয়ে চলে গেলো। স্তব্ধ হয়ে গেলাম। জীবন…! আধাঘন্টা ধরে রিভলবিং চেয়ারে দোল খেতে খেতে শুধু এতটুকু ভাষা খুজে পেলাম, ফিলিং সরি, আভা…!
৫.
জীবন ধারার সাথে সাথে আমাদের সম্পর্ক, পরিবার আর সমাজেও অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। মাঝে মাঝে খুবই অবাক হই আর ভাবি, পরিবর্তন গুলো কেন এমন হচ্ছে? আমি আমার আশেপাশের অনেক সদ্য গড়া জুটির বিচ্ছেদ দেখতে পাই। একদা তারা পরস্পরকে ভালোবেসে চলার পথের সৃষ্টি করেছিলো। কেনো এই পথ থমকে যাচ্ছে? তাকিয়ে দেখি, বোঝার চেষ্টা করি।
সল্পতম পরিচয়ে সৃষ্টি হয় কৌতুহল, ভালোবাসা না। এগুলো কি সেই কৌতুহল মিটে যাবার পরিনতি? নাটক থেকে কেনো জীবন গড়ছে, জীবন থেকেই তো নাটক হবার কথা…!
পুনশ্চঃ ১ সাহস সন্মন্ধীয় এই ডায়ালগটা শুনতে শুনতে আমার মুখস্ত হয়ে গেলো । সাহসের পরিচয় যে এর মধ্যেই নিহিত এটা কেউই বুঝলো না।
সরল যুক্তিঃ এই মিউজিকটা ভালো, কারন তাহসানের প্রায় সবকিছুই ভালো।
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৭
উইন্ডো বলেছেন: লেখক বলেছেন: সত্যি ভালো লেগেছে? নাকি, ব্লগিয় সৌজন্যতা করলেন
(হা হা Kidding. অনেক ধন্যবাদ।)
২| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৯
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
নিজের মনে কথাকে অক্ষরে প্রকাশই একটা গুণ। সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের দৈর্ঘ হ্রস্ব হচ্ছে। আকর্ষণ মোহের পর্যায় থেকে ইউ টার্ণ নেয় অথবা অসহিষ্ণু সব কিছু দ্রুত হারিয়ে যেতে থাকে। শেষে এসে লেখকের তার সব কিছ ুব্যাখ্যা না করলেও চলে। পাঠককে অনুধাবণ করতে দিন। কি বলতে চান সেটা গল্প থেেকই উঠে আসুক।
বানানে আরেকটু যত্নশীল হতে পারেন। ফর্ম্যাটেও।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯
উইন্ডো বলেছেন: Thank you very much for your valuable comment.
However, can you please drop some exemplary spellings that need to be corrected and the formats as well?
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:১৫
মাশহুদা বলেছেন: জীবন ধারার সাথে সাথে আমাদের সম্পর্ক, পরিবার আর সমাজেও অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। মাঝে মাঝে খুবই অবাক হই আর ভাবি, পরিবর্তন গুলো কেন এমন হচ্ছে?নাটক থেকে কেনো জীবন গড়ছে, জীবন থেকেই তো নাটক হবার কথা…!
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০২
উইন্ডো বলেছেন: রিপিট করা মানে সহমত জ্ঞাপন করা। সহমতের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কিন্তু আপনি তো 'সেরাম' ব্লগার, আমি ভেবেছিলাম আমিই শুধু সেরাম যে সাড়ে তিন বছর ধরে সামুতে কিন্তু কোন পোস্ট দেয় নি।
আপনি চার বছরেরও বেশি সময় ধরে আছেন। কোন পোস্ট নেই। বিষয়টা কি? শুধুই পাঠক টাইপ নাকি অন্য কিছু?
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:৩৫
বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আবেগ সবাই সংবরণ করতে পারে না। যারা পারে তারা বাস্তববাদী। আপনাকে বেশ বাস্তববাদী মনে হল। আপনি জীবনকে যেভাবে উপলব্ধি করছেন, আভা সেভাবে করে নাই। তাই বলে আভাকে আমরা দোষ দিতে পারি না। কারণ জীবন উপভোগের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ নিজের। বাস্তববাদী হয়েও অনেকে জীবনের হিসাব মেলাতে পারে না। অংকে ভুল হয়ে যেতে পারে। আভাও জীবনের অংকে ভুল করেছে।
নাটক সিনেমার শুরুটা জীবনের নানা কাহিনী অবলম্বন করেই প্রথম যাত্রা করে। কিন্তু এখন ব্যাপারটা অনেকটা উভমুখী হয়ে গেছে। আভার মতো পরিণতি সবার বেলায় নাও হতে পারে।
কোন ক্যাটাগরি নাই। তাই এটাকে স্মৃতিচারণ বলেই মনে হল।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২০
উইন্ডো বলেছেন: দোদুল্যমান সিদ্ধান্ত দিয়ে সুন্দর একটা মন্তব্য করেছেন।
মানুষ তার পঞ্চ ইন্দ্রিয় শেখার কাজে ব্যবহার করে যার মধ্যে চোখ দিয়ে বা 'দেখে' শেখে ৮৫% । তাই ' এখন উভমুখী' বলতে আপনি যা বুঝাতে চেয়েছেন তার উল্টো সাইডটার মানে সিনেমা/অন্যের দেখানো জিনিস থেকে শেখার র্যাপিডিটিটা অনেক বেশি।
তাই কি দেখানো উচিত, বা কি দেখা উচিত তা নির্নয়ের মাধ্যমে জীবন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।
জীবন উপভোগের ব্যাপারটা একান্ত হলেও তার সাথে অন্য ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ জড়িত থাকে। এগুলো অস্বীকার করে জীবন উপভোগ করা বিষয়টা প্রথা বিরোধীতা যার ফলাফল বেশিভাগ ক্ষেত্রেই নেতিবাচক।
বাই দ্যা ওয়ে, অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যটির জন্য।
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০৮
মহান অতন্দ্র বলেছেন: চমৎকার লেখা। ভাল লাগলো। ভাল থাকবেন। শুভ কামনা জানবেন।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮
উইন্ডো বলেছেন: অতন্দ্র-এর সাথে মহান। একেবারেই নতুন কিছু। এটার কি পারিপার্শ্বিক কোন অর্থ আছে?
বাই দ্যা ওয়ে, লিখাটা আর কি গানটা কিন্তু দারুন
৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
এনামুল রেজা বলেছেন: সল্পতম পরিচয়ে সৃষ্টি হয় কৌতুহল, ভালোবাসা না। এগুলো কি সেই কৌতুহল মিটে যাবার পরিনতি?
ইদানিং ব্যাপারটা হয়তো এমনি দাঁড়িয়ে গেছে।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
উইন্ডো বলেছেন: কৌতুহলের অমোঘ আকর্ষন এনামুল। পরিনতি বিষয়টা আপেক্ষিক। আমাদের সমাজে ওটা খুবই অগ্রহনযোগ্য কিন্তু পাশ্চাত্য সমাজে ওটা খুবই স্বাভাবিক।
আর তাই এক্স-বিএফ/জিএফ/স্পাউস এর একটা লম্বা লিস্ট হয় সবার। কৌতুহল, পরিচয়, পরিনয়, একত্র, বিচ্ছেদ। এটা একটা জীবন উপভোগের লুপ।
ব্যাপার না। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি।
৭| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: কথা সত্য । সমাজটা দিনদিন কেমনজানি ধূসর হয় যাচ্ছে ।
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩১
উইন্ডো বলেছেন: আমার তাই ই মনে হতো। কিন্তু দেশের বাইরে এসে মনে হচ্ছে আমাদের সমাজটা পরিবর্তিত হয়ে এই দেশ গুলোর মতো হতে চাচ্ছে। কিন্তু বিদ্যা-বুদ্ধি সহ গভীরতার অভাবের কারনে মিসক্যারেজ হচ্ছে।
আমার ইদানিং আরো অনেককিছুই মনে হয়। অগুলো বললে আমাকে সবাই সমাজচুত্য করে দিতে পারে হা হা হা
মন খারাপ করবেন না, শুধু তখনই করবেন যখন সত্যি কলমের কালি শেষ হয়ে যাবে। কেননা, এটা (মতপ্রকাশ) ছাড়া অন্য কিছু সবই আপেক্ষিক।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
আহেমদ ইউসুফ বলেছেন: চমৎকার অনুগল্প। ভালো লাগল। ধন্যবাদ