নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদই হলো সবচেয়ে বড় জিহাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই, হতে হবে।

ঢাকা থেকে

অন্যায় সহ্য করা খুব কঠিন।। কিন্তু বাস্তব বড়ই নির্মম।

ঢাকা থেকে › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাওয়ালের সুন্নত রোজা এবং নফল রোজা একসাথে ??? আসল মাসয়ালা কি???

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:০১

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা রাখার পর শাওওয়ালের ছয়টি রোযা রাখলো সে যেন সারা বৎসরই রোযা রাখলো। সুবহানাল্লাহ!

শাওওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখা খাছ সুন্নত এবং অশেষ ফযীলতের কারণ।

শাওওয়ালের ছয় রোযা এবং রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এক সাথে এক নিয়তে আদায় করলে শুধুমাত্র রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা আদায় হবে শাওওয়ালের সুন্নত রোযা আদায় হবে না।

এটাই ছহীহ এবং ফতওয়াগ্রাহ্য মত। এর বিপরীত ফতওয়া দানকারীরা এবং মত পোষণকারীরা বিভ্রান্ত ও গুমরাহ।

মহান আল্লাহ পাক তিনি হাদীছ-এ কুদসী শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “বান্দা-বান্দীরা নফল বা সুন্নত পালনের মাধ্যমে আমার নৈকট্য লাভ করে থাকে।” পবিত্র শাওওয়াল মাসে ৬টি রোযা রাখা খাছ সুন্নত-এর অন্তর্ভুক্ত এবং বহু ফযীলতের কারণ। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা রাখার পর শাওওয়ালের ছয়টি রোযা রাখলো সে যেন সারা বৎসরই রোযা রাখলো।” সুবহানাল্লাহ!

কেউ কেউ অজ্ঞতা বা জিহালতীর কারণে বলে থাকে যে, রমাদ্বান শরীফ-এর ছুটে যাওয়া বা ক্বাযা রোযা এবং শাওওয়ালের রোযা এক সাথে এক নিয়তে আদায় করলে উভয়টিই আদায় হয়ে যায়। নাঊযুবিল্লাহ!



মূলত তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল, দলীলবিহীন ও মনগড়া। ছহীহ, গ্রহণযোগ্য ও দলীলসম্মত ফতওয়া হলো- রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা ও শাওওয়ালের রোযা এক সাথে আদায় করলে ক্বাযা আদায় হবে শাওওয়ালের রোযা আদায় হবে না।



রমাদ্বান শরীফ মাসে মহিলাদের ছুটে যাওয়া রোযা অথবা অসুস্থতা বা সফরে থাকার কারণে রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা আদায় করতে না পারলে রমাদ্বান শরীফ ব্যতীত অন্য মাসে তা ক্বাযা আদায় করা ফরয। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেছেন, “অতঃপর যে ব্যক্তি অসুস্থ অথবা সফরে থাকবে সে ব্যক্তি অন্য সময় ক্বাযা আদায় করবে।” (সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ-১৮৫)। আর শাওওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখা সুন্নত। যা রাখলে অধিক ফযীলত হাছিল হয়। যেমন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা রাখার পরে শাওওয়ালের ছয় রোযা রাখবে সে যেন সারা বছরই রোযা রাখল।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, শরহে নববী, ফতহুল মুলহিম)



রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় করা ফরয, যা কুরআন শরীফ দ্বারা ছাবেত বা প্রমাণিত। আর শাওয়ালের ছয় রোযা আদায় করা সুন্নত বা মুস্তাহাব যা হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। উল্লেখ্য, রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এবং শাওওয়ালের সুন্নত বা মুস্তাহাব রোযা একত্রে নিয়ত করে একই দিনে রাখলে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে কিন্তু শাওওয়ালের সুন্নত বা মুস্তাহাব রোযা আদায় হবে না।



এ প্রসঙ্গে “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খন্ডের ১৯৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “যদি একই রোযার মধ্যে রমাদ্বান শরীফ-এর কোন ক্বাযা রোযা এবং শাওওয়াল মাসের বা অন্যান্য মাসের নফল রোযার নিয়ত একত্রে করে একই দিনে রাখে তাহলে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে (নফল আদায় হবে না)।”



রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযার সঙ্গে শাওওয়ালের নফল রোযা আদায় হওয়া তো দূরের কথা এমনকি রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযার সঙ্গে যদি মান্নতের রোযার নিয়ত করা হয় তাহলে সেক্ষেত্রেও রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে। মান্নতের রোযা আদায় হবে না। যেমন, “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খন্ডের ১৯৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে, “যদি কেউ একই রোযার মধ্যে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এবং মান্নতের রোযার নিয়ত করে তবে ইস্তেহসান হিসেবে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে।” এমনিভাবে যদি কেউ রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযার সঙ্গে জিহারের কাফফারার রোযার নিয়ত করে এক্ষেত্রেও রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে, জিহারের কাফফারার রোযা আদায় হবে না।



“ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খন্ডের ১৯৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “যদি কেউ একই রোযার মধ্যে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এবং জিহারের কাফফারার রোযার নিয়ত একই সঙ্গে করে তাহলে এক্ষেত্রে ইস্তেহসান হিসেবে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে।”



দু’টি সমান মর্যাদার রোযার নিয়ত একই দিনে করলে কোনটিই আদায় হবে না বরং রোযা নফল হয়ে যাবে। যেমন, রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা এবং হত্যার কাফফারার রোযার নিয়ত অথবা জেহারের কাফফারার রোযা এবং হত্যার কাফফারার রোযার নিয়ত একই দিনে করা হলে রোযা কোনটিই আদায় হবে না। রোযা নফল হয়ে যাবে। যেমন, “ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ২য় খন্ডের ৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “আর যদি কেউ একটি রোযার মধ্যে জেহারের কাফফারার রোযা এবং হত্যার কাফফারার রোযার নিয়ত করে অথবা রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এবং হত্যার কাফফারার রোযার নিয়ত করে তাহলে সকলের ঐক্যমতে রোযা নফল হয়ে যাবে।”



যদি দু’টি রোযার মধ্যে গুরুত্ব ও মর্যাদা হিসেবে একটি বড় হয় তবে বড়টিই আদায় হবে অন্যটি আদায় হবে না। যেমন রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এবং শাওওয়াল মাসের বা অন্যান্য মাসের নফল রোযা অথবা নির্দিষ্ট মান্নতের রোযা ও অন্যান্য নফল রোযার নিয়ত একত্রে একই দিনে করলে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা অথবা নির্দিষ্ট মান্নতের রোযা আদায় হবে। কিন্তু নফল রোযা আদায় হবে না। এ প্রসঙ্গে “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খন্ডের ১৯৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে, “যখন একই রোযার মধ্যে দু’টি সমমর্যাদা সম্পন্ন ভিন্ন ভিন্ন রোযার নিয়ত করা হয় যা ফরয ও তাকিদ সম্পন্ন তখন উক্ত রোযা দু’টি যদি একটি অপরটির উপর গুরুত্ব ও মর্যাদা হিসেবে প্রাধান্য না পায় বরং দু’টিই গুরুত্ব ও মর্যাদা হিসেবে সমান মর্যাদার হয় তাহলে দু’টি রোযাই বাতিল বলে গণ্য হবে। আর যখন দু’টি ভিন্ন ভিন্ন রোযা একটি অপরটির ওপর গুরুত্ব ও মর্যাদা হিসেবে প্রাধ্যন্য পাবে তখন যেটি প্রাধান্য পাবে সেটি আদায় হয়ে যাবে।”



মূলকথা হলো- শাওওয়ালের ছয় রোযা এবং রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা এক সাথে এক নিয়তে আদায় করলে রমাদ্বান শরীফ-এর ক্বাযা রোযা আদায় হবে, শাওওয়ালের সুন্নত রোযা আদায় হবে না। এটাই ছহীহ এবং ফতওয়াগ্রাহ্য মত। এর বিপরীত ফতওয়া দানকারী এবং মত পোষণকারীরা বিভ্রান্ত ও গুমরাহ এবং চরম স্তরের কাজ্জাব বা মিথ্যাবাদী। আর মিথ্যাবাদীর ওপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.