নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, উইকিপিডিয়ান, শখের পরিব্রাজক আর সৌখিন লেখক এই মোর পরিচয়।

এফ রহমান

নিজেকে সাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠক ভাবি। পড়িই বেশী। মাঝে মাঝে লেখার ব্যর্থ চেষ্টা করি।

এফ রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে এলাম

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

অন্যান্য দিনের মত দীর্ঘ জ্যামের পরে ফেরীতে বাস উঠলো। সাড়ে নটায় ঘাটে পৌঁছায় বাস, ফেরী ছাড়ে দুইটায়। আমি ল্যাপটপ থেকে মোবাইলে চার্জ দিয়ে নিচ্ছি। হালকা বাতাস হচ্ছে। এরই মধ্যে নিচ থেকে কেউ একজন চেঁচিয়ে উঠলো, কেউ ফেরীর পাশে যাবেন না, বাসে বসে আল্লাহ আল্লাহ করেন। আমি কিছুটা বিরক্ত হলাম। আল্লাহর নাম করা ভালো কাজ হলেও এই মুহূর্তে এরকম পরামর্শ মনের উপর চাপ দেয়। কিন্তু পরমূহূর্তে ফেরী খানা প্রচন্ড রূপে দুলে উঠলো। সেকি দুলুনি। বাসের হেলপার ছেলেগুলো দ্রুত তৎপরতায় বাসের ছাদের রডের সাথে দড়ি বেঁধে একটার সাথে আরেকটা শৃংখলিত করে ফেললো। সব বাসের আলো নিভিয়ে দিলো। যাতে কেউ কারো ভীতিকর মুখ দেখতে না পায়। ব্যাখ্যাটা আমি নিজে দাঁড় করিয়ে নিলাম। পুরো বাস স্তব্ধ। কেউ কেউ অনুচ্চ স্বরে দ্বরুদ পড়ছে। ফেরীর সার্চ লাইটের আলোয় একবার দেখলাম কি উঁচু উঁচু ঢেউ। ঢেউ গুলো বাসের ছাদের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। এই সময়ে নানী ফোন দিলেন, কতদূর পৌঁছাইছো। বুকের মধ্যে মোচড়াচ্ছিলো। গলা শান্ত রেখে বললাম, এই তো নদী পার হচ্ছি, কিছুক্ষণের মধ্যেই পার হয়ে যাবো। ফেরীর লোকজন সব একযোগে চেঁচিয়ে উঠলো, ফিরে চলো। কিন্তু আধুনিক যুগে মান্ধ্রাতা আমলের প্রযুক্তিতে চলা ফেরী মাঝ নদীতে দিক হারিয়ে খাবি খেতে লাগলো। ভোর পাঁচটার দিকে মাওয়া ঘাটে ফেরী ফিরে এলো। জীবনের আড়াই ঘন্টার এক রুদ্ধশ্বাস মুহূর্ত কাটালাম। মৃত্যু খুব কাছ থেকে চলে গেলো। আলো ফোঁটার পরে অন্য একটি বড় ফেরীতে করে আমাদের বাসগুলো পার করে দেয়া হলো। বাড়িতে পৌঁছালাম বেলা এগারোটায়। খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম থেকে উঠে দেখি ফেসবুক মেসেঞ্জারে আমার এক ছোট ভাই মেসেজ দিয়েছে, ভাই সাবধানে বাড়ী পৌছাইছেন এই জন্য আল্লাহকে শুকরিয়া জানাই। আজ দুপুরে মাওয়ায় লঞ্চ ডুবেছে। আমি তড়িৎ প্রথম আলোর অনলাইনের সংস্করনে ঢুকলাম। এখনও পর্যন্ত কয়েকজনের প্রাণহানীর খবর ছেপেছে। লোকগুলোর জন্য মায়া হচ্ছে। পথযাত্রী লোকগুলো গন্তব্যের জন্য পথে বেরিয়েছিলো। এভাবে নেই হয়ে যাওয়ার দেশে যাওয়ার কথা কে ভেবেছিলো! আমিও কি গতরাতে ভাবতে পারছিলাম। সারা শরীর গুলোচ্ছিলো। তবুও ভরসা রেখেছিলাম, আল্লাহ বাঁচাবেন। আবুল হোসেনেরা যদি শাস্তি পেত তবে আমরা আরো একটু আগে হলে পদ্মা সেতুর দেখা পেতাম। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের নিম্নচাপচলাকালীন সময় একদিন মাওয়ার একরম একটি লঞ্চে করে নদী পার করা উচিত।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১

লেখোয়াড় বলেছেন:
সাবধানে চলাচল করবেন।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫১

এফ রহমান বলেছেন: সাবধানে কিভাবে চলে! খুলনা ঢাকা পথ পাড়ি দিতেই হবে। সেহেতু পদ্মা না পেরিয়ে গত্যন্তর নাই বন্ধু।

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আবুল হোসেনেরা যদি শাস্তি পেত তবে আমরা আরো একটু আগে হলে পদ্মা সেতুর দেখা পেতাম। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের নিম্নচাপচলাকালীন সময় একদিন মাওয়ার একরম একটি লঞ্চে করে নদী পার করা উচিত।

সবগুলারে এক লঞ্চে উঠায়া.. সাথে চামচাগুলা দিয়া ওভারলোড করাইয়া.. তারপর ছাইড়া দিলে কাম হইত...

সারাদিনেও উদ্ধাকারী লঞ্চ পৌছতেই পারে নাই!!!!!!!

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৪

এফ রহমান বলেছেন: উদ্ধারকারী লঞ্চ ভাওতাবাজি বলে মনে হয় আমার কাছে। সকল ক্ষেত্রে দ্বায়িত্বহীনতা।

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:০০

সুমন কর বলেছেন: বেঁচে গেছেন, বলে খুশি হলাম।

কিন্তু এর সমাধান কি???? X(

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৬

এফ রহমান বলেছেন: সমাধান আরো একটা লঞ্চ ডুবি। সমাধান শব্দটা বাঙালী আইনপ্রনেতাদের বাংলা ডিকশানারীতে নাই।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৩২

মুহাই বলেছেন: লঞ্চ ডুবির ভিডিওটা দেখে গা শিউরে উঠলো।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:০২

এফ রহমান বলেছেন: আমি দেখবো না। বিভৎস

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৪

জিরো ডাইমেনশন বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে সবসময় বিপদ থেকে রহ্মা করুন।শুভ কামনা রইল

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:১২

এফ রহমান বলেছেন: আমিন

৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪৭

জিরো ডাইমেনশন বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে সবসময় বিপদ থেকে রহ্মা করুন।শুভ কামনা রইল

৭| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এখনও মনে হয় লাশ উদ্ধারই শুরু হয়নাই।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৩

এফ রহমান বলেছেন: ভ্রাতঃ দেশটার নাম যে বঙ্গদেশ, রঙ্গ না দেখে কিছু করা হয় না! আফসোস।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.