![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে সাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠক ভাবি। পড়িই বেশী। মাঝে মাঝে লেখার ব্যর্থ চেষ্টা করি।
সময়টা ১৯৯৫ সালের দিকে, আমি তখন খুলনা জেলার এক গ্রামে থাকি। স্কুলে পড়ি। ক্লাস ফাইভ কি সিক্সে। আমাদের পাশের বাড়ির দারোগা কাকুর মেয়ে শিল্পী আপার প্রেমের খবর তখন বড়দের মুখে হাসির খোরাক জুগিয়েছে। হ্যাঁ শিল্পী আপা প্রেমে পড়েছে। সালমান শাহ নামক এক নায়কের প্রেমে পড়েছে। এবং শিল্পী আপা সেই প্রেমের খবর গোপন করতেন না। সবাইকে বলে বেড়াতেন। তিনি বিয়ে করলেই নায়ক সালমান শাহকেই করবেন। সবাই বলতো তুমি হিন্দু সালমান শাহ তো মুসলমান বিয়ে করবে কিভাবে? তার মা তাকে ধমকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতো।
১৯৯৩ সালে বাংলার আকাশে এক মহা নায়কের আবির্ভাব ঘটে। আমাদের সময়ে দেখা সেই চিত্রনায়ককে আমি বাংলাদেশের মহানায়ক বলতে চাই। তিনি এসেছিলেন, জয় করেছেন এবং চলে গেছেন। অনেক চিত্রনায়কই সাফল্যের চূঁড়ায় আরোহন করেছেন কিন্তু তার মত ভাস্বর হতে পারেনি। আমার এক বন্ধু বলেন ছাত্ররা কোন কারনে মারা গেলে পত্রিকার শিরোনাম হয় মেধাবী ছাত্র। ঠিক একই ভাবে এই নায়ক মারা যাওয়ার পরে মেধাবী নায়ক হয়ে গেছেন এমনটি নয়। মাত্র চার বছর অভিনয় জীবনে তিনি রেখেছেন মেধার নিদর্শন।
১৯৭১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সিলেটের দরিয়াপাড়ায় নানার বাড়িতে জন্ম হয় শাহরিয়ার চৌধুরী ইমনের পরবর্তীতে চলচ্চিত্র জগতে যিনি পা রাখেন সালমান শাহ নামে। তার বিনোদন জগতের হাতে খড়ি হয় বিজ্ঞাপণ চিত্রে অভিনয় করার মাধ্যেমে। তিনি ভালো গান জানতেন। ১৯৮৬ সালে তিনি ছায়ানট থেকে পল্লীগীতিতে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯১ সালে সুদর্শন এই নায়ক মায়ের বান্ধবীর মেয়ে সামিরাকে বিয়ে করেন। ১৯৯৩ সালে হিন্দী ছবি কেয়ামত সে কেয়ামত তক এর বাংলা রিমেক কেয়ামত থেকে কেয়ামত সেই সময়ের জনপ্রিয় ফটো সুন্দরী মৌসুমীর সাথে জুটি বেঁধে অভিষেক ঘটে বাংলা চলচ্চিত্রে যখন বাংলা চলচ্চিত্রের বড়ই দুর্দিন চলছে।
এরপর একে একে চমৎকার কিছু চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি সর্বমোট ২৭ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন।
সালমান শাহ অভিনীত চলচ্চিত্রঃ
কেয়ামত থেকে কেয়ামত
তুমি আমার
অন্তরে অন্তরে
সুজন সখী
বিক্ষোভ
স্নেহ
প্রেম
যুদ্ধ
কন্যদান
দেনমোহর
স্বপ্নের ঠিকানা
আঞ্জুমান
মহামিলন
আশা ভালোবাসা
বিচার হবে
এই ঘর এই সংসার
প্রিয়জন
তোমাকে চাই
স্বপ্নের মৃত্যু নেই
জীবন সংসার
মায়ের অধিকার
চাওয়া থেকে পাওয়া
প্রেম পিয়াসী
স্বপ্নের নায়ক
শুধু তুমি
আনন্দ অশ্রু
বুকের ভেতর আগুন
সালমান শাহের সাথে মৌসুমীর জুটি জনপ্রিয়তা পেলে পরবর্তীতে সালমান শাহ- শাবনুর জুটি জনপ্রিয়তা পায়। এখন যেমন বলিউডের আমির খান মানে নিশ্চিত সাফল্য তখন বাংলার সালমান শাহ মানে ছিলো চলচ্চিত্রের নিশ্চিত বাণিজ্যিক সাফল্য।
সালমান শাহের সহ অভিনেত্রী গণঃ
মৌসুমী
শাবনুর
শাবনাজ
শাহনাজ
লিমা
শিল্পী
শ্যামা
সোনিয়া
বৃষ্টি
সাবরিনা
কাঞ্চি।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহ’র আকস্মিক মৃত্যুর খবরে বাংলার মানুষ মুষড়ে পড়ে। অনেকে বলেন এটা আত্মহত্যা ছিলো, কেউ বলেন হত্যাকান্ড। এবার সালমান শাহের ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। দেড় যুগ সময় কেটে গেলো তবুও বাংলার উঠতি প্রজন্ম এখনো সালমান শাহকে মনে রেখেছে। এটাই তার মহানায়কের সার্টিফিকেট। তিনি হারিয়ে যাননি। হারিয়ে যাওয়ার মত কেউ নন। তিনি ছিলেন, তিনি আছেন, তিনি থাকবেন। অনেকে থাকে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর দর্শকের নায়ক। কারো ছবিতে রিকশাওওয়ালারা হলে ভিড় জমায় কারো ছবিতে শিক্ষিত তরুনেরা। কিন্তু সালমান শাহের সকল শ্রেণীর দর্শক টানার ক্ষমতা ছিলো।
সালমান শাহের মৃত্যুর পর শিল্পী আপার পাগলামী কিছুটা বেড়ে গেলো। তিনি বলে বেড়াতে লাগলেন সালমান শাহ কবর থেকে উঠে এসে তাকে বিয়ে করবেন। শেষে বলতেন সালমান শাহ তার জন্য পূনর্জন্ম গ্রহন করবেন। বড়রা বলতো তখন তো সালমান শাহ তোমার থেকে বয়সে ছোট হয়ে যাবে, বিয়ে হবে টা কিভাবে?
শিল্পী আপার সাথে বহু বছর যোগাযোগ নেই। বিয়ে হয়েছে ভারতের কোন ডাক্তারের সাথে। এখন হয়তো সালমান শাহকে নিয়ে তার সেই পাগলামী নেই। তার কথা মনে করেন কিনা জানিনা। কিন্তু সালমান শাহ, তোমার সেদিনের এক ছোট্ট ভক্ত আজ তোমাকে স্মরণ করছে। সেদিন সে জানতো না ভক্ত জিনিসটা কি। শুধু জানতো ভালো লাগে। ভালো লাগতো তোমার গান, নাচ, ঢিসুম ঢিসুম মারপিট, নায়িকাদের সাথে অভিনয়। তোমার কাছে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। হওয়ার কথা না। কিন্তু ২০১২ সালে সিলেট ভ্রমণে গিয়ে হযরত শাহজালাল (রঃ) এর দরগায় গিয়ে তোমার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দরুদ পড়ার সুযোগ আমার হয়েছিলো। যেখানেই থাকো সালমান শাহ ভালো থেকো।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৮
এফ রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৫
জনাব মাহাবুব বলেছেন:
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমি তাকে মহানায়ক বলিনা ।তবে মহানায়ক তিনি হতে পারতেন।
আত্নহননের পথ তার বেছে নিতে হয়েছিল । এত সুন্দর মানুষ নম যশ থাকা সত্ত্বেও কেন এমনটা হলো ।
সম্ভাবনার সমাপ্তি হলো নিদারুন ভাবে ।
৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৮
আবদুল মান্নান রাসেল বলেছেন: বেঁচে থাকলে সালমান শাহ্ হয়তো হতেন আন্তহর্জাতিক নায়ক। ঢালিউড হতো বলিউডের পর্যায়ের, এক সালমান শাহের মধ্যেই পেতাম বলিউডের নামকরা হার্টধ্রুব সব নায়ককে। বর্তমানে সালমান শাহের তুলনায় বাংলাদেশের কোন নায়ককে নায়কই মনে হয়না।
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:২৭
এফ রহমান বলেছেন: চমৎকার বলেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৪
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: বাহ!!