নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফ এর দৃষ্টিভঙ্গি

ফ এর দৃষ্টিভঙ্গি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেনো মুজিবকে জয়বাংলা করতে ১৫ই আগস্ট তারিখকেই বেছে নিয়েছিলেন কর্নেল ফারুক?

১৬ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৩

অ্যান্থনী মাসকারেনহাসঃ মুজিবের বাসায় কি ঘটনা হলো? কেন তাকে সপরিবারে হত্যা করা হলো?


কর্নেল ফারুকঃ শেখকে বলা হয়েছিলো আত্মসমর্পণ করার জন্যে এবং নিচে নেমে আসার জন্য। এরপর হলো কি, তিনি ঘরের মধ্যে চলে গেলেন এবং আর্মি হেডকোয়ার্টারে ফোন করলেন। তার সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য তিনি জেনারেল শফিউল্লাহ ও মিলিটারি সেক্রেটারি কর্নেল জামিলকে বললেন। রক্ষীবাহিনীর হেডকোয়ার্টারেও ফোন করলেন। সবাই তাকে জানালো যে তারা শীঘ্রই হাজির হবে। মনে হয় এতে তিনি সাহস পেলেন এবং ছেলেদের বললেন প্রতিহত করার জন্য।


অ্যান্থনীঃ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে সাহায্য আসছে ও আপনাদের প্রতিহত করতে শুরু করলেন?


ফারুকঃ হ্যা, ওরাই গোলাগুলি শুরু করে। প্রথমে গুলি আরম্ভ করে। সৈন্যদের একজন ঘটনাস্থলেই মারা গেলো। আর বুলেটে আহত হলো ৪ জন। ঘটনা যখন ঘটেই গেলো, আর সময় নষ্ট করা সম্ভব না। আমরা তাকে আসতে বললাম। তারা গুলি করলো আর আমরা ঘরের মধ্যে গ্রেনেড নিক্ষেপ করলাম। কারণ সবাই মিলে এই ঘর থেকেই গুলি করছিলো। কামরা বন্ধ ছিলো আর সবাই এখানেই ছিলো। মহিলা ও শিশুও ছিলো। তাই অ্যাকশনে এরাও নিহত হয়েছে। এটা দুঃখজনক, কিন্তু যেহেতু সৈন্য মারা গেছে, তাই সুযোগ দেইনি আর অপেক্ষা করিনি।


অ্যান্থনীঃ আপনি কি আশা করেছিলেন, মুজিব বেরিয়ে আসবে ও আত্মসমর্পণ করবেন?


ফারুকঃ যদি তিনি তা করতেন, তাহলে এ ধরণের ঘটনা ঘটতো না। সম্ভবত তার পরিবারের সদস্যরা বেঁচে যেতেন।

শেখ মুজিব, শেখ মনি এবং আব্দুর রব সেরনিয়াবাত - এই ৩ জনকে নিজ নিজ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বিপ্লবীদের কাছে আত্মসমর্পণের অনুরোধ জানানো হয়েছিলো। কিন্তু আত্মসমর্পণের পরিবর্তে এরা গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এতে বেশ ক'জন সৈনিক ও অফিসার আহত হন এবং ক'জন মৃত্যুবরণ করেন। বিপ্লবীরা আত্মরক্ষার প্রয়োজনে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ও স্বয়ংক্রিয় রাইফেলের গুলিবর্ষণ করে দুর্গগুলো বিধ্বস্ত করতে বাধ্য হন। অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, এবং এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেকেই ঘরের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন। তবে এটাও সত্য যে শেখ মুজিব, শেখ মনি এবং আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ব্যাপারে বিপ্লবীদের সিদ্ধান্ত ছিলো যে দেশ ও জাতির সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে বিচারের মাধ্যমে ফায়ারিং স্কোয়াডে তাদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে। শেখ মুজিব ও তার সহযোগীরা যে পদ্ধতি চালু করেছিলো, সেই পদ্ধতিতে জাতীয় বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে তাদেরকে গণআদালতে বিচার করারও কোনো পথ খোলা ছিলো না। তাদেরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে বাংলাদেশের জনগণকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কবল থেকে মুক্ত করা সম্ভব হতো না।

অ্যান্থনি মাসকারেনহাস : মুজিবকে হ*ত্যার জন্য কেনো আপনি ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্ট দিনটিকে বেছে নিলেন?

লে.ক.ফারুক রহমান : প্রথমত ১৪/১৫ আগস্ট এর রাত হচ্ছে রাত্রিকালীন ট্রেনিংয়ের পূর্ব নির্ধারিত একটি তারিখ। দ্বিতীয়ত বর্ষাকালীন। বর্ষাকালে বাংলাদেশ আক্রমণ করা খুবই দুরূহ। এ সত্ত্বেও যদি ভারত তা করে, তাহলে কমপক্ষে ভারতের ৬-৮ ডিভিশন সৈন্যর এতে জড়াতে হবে।

অ্যান্থনি : তাহলে আপনি এভাবে চিন্তা করেছেন যে ভরা বর্ষায় ১৫ই আগস্টে মুজিবকে সরিয়ে ফেললে ভারত প্রয়োজনীয় ত্বরিত প্রক্রিয়া দেখাতে পারবে না।

ফারুক : হ্যা।

অ্যান্থনি : ভারতের কথা আপনার মাথায়।এসেছিলো কেনো? আপনি কি ভারতের কাছ থেকে কোনোরুপ আক্রমণ আশংকা করেছিলেন?

ফারুক : হ্যা। কেননা শেখ মুজিব ভারতের সাথে চুক্তি দস্তখত করেছিলেন, তার একটিতে এই মর্মে শর্ত রয়েছে যে দেশে কোনো গণ্ডগোল হলে উনি "ভারতীয় সৈন্য" ডেকে পাঠাতে সক্ষম।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.