| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডাকসু ইলেকশন নিয়ে আমার একান্ত কিছু কথা। আমার অবশ্য কোনো এক্সাইটমেন্ট নেই এসব নিয়ে। কারণ আমি সবসময়ই বলি, জামাতের মধ্যে ইসলামটা বাদে আর সবকিছুই আছে। এই দলটাকে তেমন একটা পছন্দ না করলেও স্বীকার করি যে এরকম একটা রেজাল্ট আসলে প্রয়োজন ছিলো। আর আমার মতামত আপনাদের সাথে মিলে গেলে বরং আমি অবাকই হবো।
⬛ প্রথমেই সাদিক, ফরহাদসহ বাকি বিজয়ীদের অভিনন্দন। জুলকারনাইন সায়ের যেদিন সাদিক কায়িমকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো মাস্টারমাইন্ড হিসেবে, আমি সেটাকেই টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরি। সেদিনই বুঝতে পেরেছিলাম, এই ছেলে যদি ভবিষ্যতে ডাকসু ইলেকশন করে, তার জয় সুনিশ্চিত।
⬛ সাদিকের পপুলারিটি শিবির প্যানেলের অন্যদের ক্ষেত্রেও ফ্যাক্টরের কাজ করেছে, তা ২৮টির মধ্যে ২৩টিতে জয়ের মাধ্যমেই দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। এর পাশাপাশি যোগ করুন, সেই যে উপরে বলেছিলাম, জামাতের মধ্যে ইসলাম বাদে সবই আছে - এই ব্যাপারটা। ছাত্রীদের সাথে সাদিকের সেলফি, প্যানেলে নারীর অন্তর্ভূক্তি, সুফিয়া কামাল হলে ভূমিধস বিজয় এই ব্যাপারগুলো একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। মেয়েরা অন্তত এটা নিশ্চিত হতে পেরেছে যে শিবিরের মাঝে আর যা ই থাকুক, ইসলাম নাই। তারা যখন যেভাবে ইচ্ছা, ক্যাম্পাসে চলতে পারবে যেহেতু, তাহলে শিবিরই সই!
⬛ শিবিরের এই জয়ে প্রমাণ হলো আরেকটা ব্যাপার যে, মানুষ এখন আর এসব কথিত "মুক্তিযুদ্ধ" (!), রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, আল বদর টাইপ সস্তা ট্যাগিং চার আনা দিয়েও মুছে না। রাজাকার গালি দিয়ে হাসিনার যে করুণ পরিণতি হয়েছিলো, তা এখনও সবার স্মৃতিতে টাটকা। "তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার" শ্লোগানে সেই সস্তা ট্যাগিং আর রাজাকার ন্যারেটিভ পায়ের তলায় পিষে ছাত্রসমাজ কবর দিয়েছে৷। এরই ধারাবাহিকতায় শিবিরের এই জয়। এই ভোটের রেজাল্ট চিরতরে মুক্তিযুদ্ধ ব্যবসাকে ঢাবি থেকে লাথি মে রে দূর করবে, এই প্রত্যাশাই করি। চেতনা যাদের ব্যবসার প্রোডাক্ট ছিলো, তাদের ঠিকানা এখন ভারত, ভবিষ্যতে কেউ যদি আবার এই ট্যগিং ব্যবসা শুরু করে, তাদেরও উচিত পরিণতি ভেবে দেখা। চুষীলদের আখড়া হিসেবে পরিচিত ঢাবিতে যদি চেতনা ব্যবসার এরকম কবর হয়, তাহলে অন্য জায়গায় কি হবে, এ নিয়ে ভাবনার খোরাক রয়েছে।
⬛ ভিসি জামাত ব্যাকগ্রাউন্ডের, তাই শিবির জিতেছে - এই ন্যারেটিভ হাস্যকর! উপরে যে ফ্যাক্টর উল্লেখ করেছি, শিবিরের জয়ে সেগুলোই অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
⬛ আবেদুলকে নিয়ে ট্রল করাটা থার্ডক্লাস পোলাপাইনদের মতো কাজ হচ্ছে। তার "কেউ কাউরে ছেড়ে যাইয়েন না" এই কথাটা ইতিহাসের অংশ। যে ভালো, তাকে ভালো বলতেই হবে। ছাত্রদলের প্যানেলের ডাকসুতে এই ভরাডুবির পেছনে রাজাকার ট্যাগিংকেই দায়ী করবো। উপরেই বলেছি, মানুষ এখন এসব খায় না।
⬛ আবেদুল আর হামীমের ফেসবুক পোস্ট দেখলাম। এদেরকেই বলে নেতা! এরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। মন থেকে দুয়া রইলো, তারা রাজনীতিতে শাইন করুক, অনেকদূর যাক। তাদের মতো কাউকেই বাংলাদেশের আজ খুব প্রয়োজন।
⬛ খুব ভালো লাগছে যে বাগডাসের আব্দুল কাদের, বাকের, উলালা আর রেডটেরর মেঘমলদ্বার পশু - এরা ডাকসুতে থাকছে না। বাকের নামক কুলাঙ্গারও কিন্তু রাজাকার ট্যাগিং শুরু করেছিলো। আর উলালার ফাইজলামিগুলো তো আছেই। এই দাঁতাল হচ্ছে আরেক থার্ডক্লাস।
⬛ ঢাবির বুকে একখণ্ড দিল্লী বা ইস্কন হেডকোয়ার্টার হিসেবে পরিচিত জগন্নাথ হলের রেজাল্টটা আমাদের জন্য অ্যালার্মিং। কই যেনো দেখলাম, জিএস পদে মেঘমলদ্বার পশুর ভোট যেখানে ১১০৫, সেখানে ফরহাদের মাত্র ৫! সময় থাকতে এদের চিনে রাখা জরুরী। এরা যাতে বেশি বাড় বাড়তে না পারে, শিবিরের উচিত সেদিকে লক্ষ্য রাখা।
জয়ী ছাত্রনেতাদের উচিত আবরার ফাহাদের কবরটা জিয়ারত করা। শিবির সন্দেহে যাকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো! তার আত্মত্যাগ অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করুক সাদিক-ফরহাদদের মাঝে, এই প্রত্যাশাই করি।
©somewhere in net ltd.