নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গালীব পাশা (কবি ও ছড়াকার) লেখক নাম, মূল নামঃ মামুনুর রশীদ।

গালীব পাশা

মা কে ভাল বাসুন,মা'ই জান্নাত।

গালীব পাশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

valobasar fun Golpo

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৮

রসিক মামার প্রেমের বয়ান (প্রেমের একাল-সেকাল)


আমাদের রসিক মামা বয়স পঞ্চান্ন ছুঁই ছুঁই করছে,কিন্তু দেখলে বুঝার উপায় নেই তাহার এত বয়স।রসিক মামা যে শুধু নামেই রসিক তাহা নয় কাজেও তার চেয়ে বেশী রসিক।চাল চলনে রাজকীয় ভাব।সে ছোট বেলা হতে সবার মুখে শুনে আসছি রসিক মামা,রসিক মামা।আজ বড় হয়ে আমরাও তাকে মামা বলেই ডাকছি।ছেলেরও মামা,বাবারও মামা,নাতিরও মামা -মানে এজমালি মামা।রসিক মামা কেন যে সবার এজমালি মামা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তা অনেক গবেষনা করেও রহেস্যের শেষ কিনারায় আসতে পারিনি,তবে এইটুকু জেনেছি যে রসিক মামা ছোট বেলা হতেই বড় ছোট ভেদা-ভেদ না করে সবাইকে ভাগিনা বলে ডাকত।তাকেও সবাই তামাশার ছলে মামা বলে ডাকত।এমনি করেই সে মামা খেতাব লাভ করে। আজ ও ছোট বড় সবার কাছে মামা হয়েই রয়েছেন।তবে এলাকায় মামার সব চেয়ে বড় পরিচয়, মামা একজন ব্যর্থ প্রেমিক।কিন্তু মামার নিজের ভাষায় সম্পুর্ন ব্যর্থ নয়,সার্থকের কাছাকাছি পর্যন্ত পৌঁছালে যা বলে তাই।নিন্দুকেরাই হিংসে করে খামখা তাকে সম্পুর্ন ব্যর্থ বলে।
প্রেম নামক বিষয়টি মামার কাছে পৃথিবীর সব চেয়ে প্রিয় বিষয়। এই বিষয়টি কোন প্রকারে মামার কাছে উপস্থাপন করতে পারলে মামার চোখ দু’টি কালো বিড়ালের মত জ্বল জ্বল করে ওঠে।ছলে বলে,কৌশলে মামা বুঝাতে চান যে, উনি লাইলী-মজনু,শিরী-ফরহাদ,রোমিও-জুলিয়েট এসব বিশ্ববরেণ্য প্রেমিক-প্রেমিকাদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়,বরং ওদের সবার থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি বেশীই হবেন।
কেউ যদি বল্ল; মামা,তুমি প্রেমের জন্য কি করতে পারবে।মামা হেসে বলবে মলত্যাগ তো অবশ্যই।সে সাথে পৃথিবী,এর সাথে যদি মঙ্গল গ্রহও চাওয়া হয় তা হলেও দিতে আমার আপত্তি নেই।বলার ধরণ দেখে মনে হবে পুরো মঙ্গল গ্রহটাই যেন মামার বাপ দাদার সম্পত্তি।অবশ্য রসিক মামাও কম নয়,অবস্থাশালী পিতার একমাত্র সন্তান ছিলেন।মা বাবা আদর করে রসিক নাম রাখলো।আর মামাও বড় হয়ে রসিকি করে প্রেমে পড়ল।তার পর ছ্যাকা-বেকা খেয়ে একাই থাকবো পণ করে ঘর না বেঁধে একাই থাকলো এবং মজনু সাহেবের দ্বিতীয় সংস্করন হয়ে প্রেমের গুনকীর্তন করতে করতে সে থেকে এই অবধি এসে পৌঁছলো।
মামার মত প্রেম বিশেষজ্ঞ পৃথিবীতে বর্তমানে দ্বিতীয় জন আছে কিনা তা একশ আনার মধ্যে দুইশ আনা সন্দেহ।তাকে আমরা নব্য প্রেমিকেরা অনেক আগেই এ বিষয়ে পি,এইচ,ডি ডিগ্রী ফরমাইয়াছি।প্রেম কত প্রকার ও কি? কি?এর গতি বেগ,অক্ষরেখা সহ কি কি ভাবে টক্কর লাগে, সবই মামার নখ দর্পনে।যদি বলি মামা ঐ যে কবি বলেছেন, আমারে দেখতে যাইও কিন্তু ঊজান তলির গাঁও।এ লাইনটি বুঝলাম না।সামথিং রং বলে মনে হয়।মামা বিজ্ঞের মত বলবে,বুঝলিনা ভাগিনা কবি গুলো আস্ত একটা.........।প্রেম পিরিতিতে মহা উস্তাদ।কবিতার চরণ দিয়ে এরা মেয়ে পটাতে মহা উস্তাদ।বুঝলিনা, কবি সাহেবের কোথায় ছিল আর কি।হয়ত দুঃখিনী কথা রাখতে পারে নাই।বাধ্য হয়ে অন্যত্র বিবাহ বসতে হয়েছে,কিন্তু কবি সাহেবকে উজান তলির পথ চিনিয়ে দিতে মোটেও ভূল করেন নি।তোদের কি সব বলে দিতে হবে?কিছু কিছু জিনিস বুঝে নিতে হয়।এই কবি গুলো নিজ কথা সরাসরি বলেনা।কবিতার মাধ্যমে বলে।মনে করে কেউ বুঝবেনা,আরে আমাকে ফাঁকি দেয়া কি এত সোজা?
মামার কথা শুনে আমরা তাজ্জবের সাথে সাথে বেয়াক্কেল ও হয়ে যাই।সকল ছ্যাঁকা খাওয়া ব্যর্থ প্রেমিকেরাই মামার আসল সাগরেদ। ব্যর্থ প্রেমিকরা অনেক সময় মামার কাছে এসে তাদের ছ্যাঁকার কথা বলতে গিয়ে নিজেদের অজান্তেই চোখের জল ফেলে।মামা তখন হায়! হায়! করস কি? করস কি? বলতে বলতে ওদের চোখের জল নিজ হাতে মুছে দিতে দিতে বলবে, দুঃখ করিস না ভাগিনা।তোদের যুগে প্রেমের অপর নাম বদনা,তাই এটাই ভাগ্যের লিখন বলে মেনে নে।কেউ যদি বলে মামা বদনা নয়,বেদনা।মামা তখন রেগে বলবে বেদনা হলে তো ভালই ছিল কিন্তু তোদের অনেকের তো এখন বদনাই জানের প্রাণ হয়ে গেল।প্রসংগত মামা সেকালের (মামার কালের)প্রেমকে পবিত্র জ্ঞানে ধ্যান করে কিন্তু একালের প্রেমকে মনে করে পবিত্র প্রেমকে কলঙ্কিত করার ছেলে মেয়েদের এক লরে লক্কা চ্ছক্কা খেলা মাত্র।যদি বলি মামা তোমাদের সেকালের প্রেম তাহলে তোমাকে ছ্যাঁকা দিয়ে ব্যাঁকা করলো কেন?মামা তখন অতি করুন ভাবে বলবে, বেচারির দোষ নেইরে!আমার পোড়া কপাল,অবস্থা বেগতিক দেখে বেচারী যেদিন থেকে তাকে ভাগিয়ে নিয়ে যাবার কথা বল্ল সেদিন থেকে অজানা এক ভয়ে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত আমার পাতলা পায়খানা বিষম বেগে নিম্ন মুখে ধাবিত হতে লাগল,আমারত তখন যায় যায় অবস্থা।এই ফাঁকে তার মা বাবা তাকে জোর করে নিকাহ দিয়ে দিল।এ কাহিনী শুনে আর কারো কিছু বলার থাকেনা।
আমার সাথে মামার খুব ভাব।আমাকে দেখেই বলে ওঠবে;কি ভাগিনা, কত নাম্বারে পাঁ দিয়েছিস?আমি বলি দূর... মামা!আমার কি তোমার মত সৌভাগ্য আছে?মামা তখন রেগে বলবে তুই তো আর এক......।বক্কর-চক্কর কি যেন লিখিস তাতেই সারাদিন মোবাইলে পুটুর পুটুর চলে।নানান জায়গা থেকে অনেক চিঠি পত্র ও আসে শুনি।আমি বলি; মামা,যদি কিছু হয় তা তো তোমার সোহবতেই...।রসিক মামা তখন বিজয়ী ভঙ্গিমায় বলে বসে দেখতে হবেনা আমি কে?আমি রসিক মামার মুখের উপর তখন বলে বসি ব্যর্থ প্রেমিক?রসিক মামা তখন রেগে যায়।
তো সেদিন রসিক মামাকে দেখলাম বেশ মুডে আছে।আমি আস্তে আস্তে গিয়ে মামার পাশে বসলাম।বল্লো চা খাবি?তেল মেরে বললাম মামা খাওয়ালে খাবোনা এ তুমি কি করে ভাবলে?মামা কিছু না বলে চা নিয়ে এলো।হরেক রকম কথা বার্তার পর বললাম ;মামা, তোমাদের কালের প্রেম আর একালের প্রেমের মধ্যে তোমার কাছে তফাৎ বলে কি কিছু চোখে পড়ে?অর্থাৎ এ দুকালের প্রেমের মধ্যে কি কোন পরিবর্তন হয়েছে বলে তোমার মনে হয়?রসিক মামা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো ; ভাগিনা, এ যুগে তোরা যে প্রেম করিস তা কি প্রেম হলো? থু......।আমি বল্লাম,মামা তুমি কিন্তু প্রেমকে অপমান করছো?মামা বললেন গোষ্টি মারি তোদের এমন প্রেমকে?এখন যদি দেখি আম্বিয়ার সাথে তখন দেখি সখিনার সাথে পুটুস পুটুস করিস।দেখলাম মামা খুব রেগে গেছেন।আমি বল্লাম রাগ করছো কেন মামা?খুলে বল কি হয়েছে?মামা প্রসন্ন হলেন,বল্লেন আমাদের যুগে প্রেম ছিলরে...যাকে বলে প্রেম।আহ কই গেল সেদিন,সে প্রেম!মামা এমন ভাবে নিঃশ্বাস ছাড়লেন মনে হল মামা একালের প্রেমে মোটেও সন্তুষ্ট নন।এরপর মামা বলতে লাগলেন,আমরা সেকালে প্রেম করেছি সম্পুর্ণ বিনা শ্বার্থে।তা যদি লাইলি মজনুও দেখতো তাহলে আক্কেল-গুড়ুম যেতো।এ প্রেমের জন্য আমাদের কত উপাস,কাপাস আর নাভিশ্বাস উঠত তা আর কি বলবো।আমাদের প্রেমিকারাও মাশাল্লাহ আমাদের পানে চেয়ে থেকে হা করে বোয়াল মাছের মত গিলে খেতে চাইতো।অন্য দিকে ফিরেও চাইতনা।আর তোদের একালে? কি সব ছাইপাস দেখছি।একালে প্রেমিক প্রেমিকা দুজন হয়তো দাঁড়িয়ে কথা বলছে এর মাঝেই একজন অপর জনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ট্যারা চোখে অন্য প্রেমিক-প্রেমিকার দিকে ইশারা দেয়।আমি বললাম তাহলে তুমি এত সুক্ষ ব্যাপারও লক্ষ্য কর?রসিক মামা হেসে বললো পুরোনো প্রেমিক তো,তাই সব কিছু চোখে পড়ে যায়।তোরা তো প্রেম করিসনা করিস বাটপারি।শুধু শ্বার্থ আর শ্বার্থ।ছেলেরা চাস কোন মেয়ের বাপের টাকার পরিমান কত।মেয়েরাও চায় ছেলের পকেটে মালের পরিমানের সুচক কত।রহিমুদ্দিকে সকালে তাহেরার সাথে দেখা গেলে বিকেলে দেখা যায় তহুরার সাথে।নন্দিনীকে দেখা যায় নতুন ফন্দিতে।এগুলা কোন প্রেম হলো?আমি বল্লাম মামা; আধুনিক প্রেমে এমন তর সায় সামান্য আগ-পাছ হয়েই থাকে।মামা চিৎকারের মত করে বল্ল; রাখ তোর আধুনিক-পাধুনিক।প্রেম প্রেমই।জানিস এই প্রেমের জন্য মোরতা মুড়ায় কত মশার কামড় খেয়েছি।তোরা হলে ডেঙ্গু মশার এক কামড় খেয়েই প্রেমের গোষ্টি মেরে চলে আসতি।তোদের তো আবার শরম-ভরম ও নেই,পথে-ঘাটে পিটিস পিটিস কথা বার্তা শুরু করে দিস।আমাদের সময় শরম আমাদের মরমে আঘাত করতো।তাই লুকিয়ে ছুকিয়ে দু,চার কথা বলতাম।
মামা হঠাৎ আমাকে জিজ্ঞেস করলো,মশার রক্ত চিনিস?আমি বললাম চিনবো না কেন?অবশ্য চিনি।মামা তাচ্ছিল্যের ভাব প্রকাশ করে বল্লো তাহলে অভ্যাস আছে, না? আমি মামার কথা বুঝতে না পেরে মামার দিকে হা করে তাকিয়ে থাকলাম! মামা বল্ল আমার দিকে চেয়ে দেখছিস কি? তোরা নাকি মশা মেরে সে মশার রক্ত দিয়ে কোন রকমে, “আই লাভ ইউ” লিখে বলিস আমার বুকের রক্ত দিয়ে তোমাকে এই চিঠি লিখেছি।ছিঃ ছিঃ তোরা এত বড় বাটপার।তোদের জন্য কচু গাছ ও নেই নাকি?কচু গাছে ফাঁসি-টাসিও দিতে পারিস না।আমাদের কালে এসব বাটপারি-পাটপারি ছিলনা।আমরা সত্যি সত্যিই নিজ রক্ত দিয়ে লিখতাম।কেউ কেউ অবশ্য তখন ও বাটপার ছিল। তবে নিরীহ মশা নয়,মোরগ-টোরগ জবাই করে সে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখতো।তবে এ সংখ্যা ছিল নেহায়েত দু-একজন।
সেদিন রসিক মামার কাছে প্রেমের সেকাল-একালের বিশ্লেষক বয়ান শুনে আমি ক্ষনিক সময় বেয়াক্কেল হয়ে রইলাম এবং মামার ভাব ভাল নয় দেখে বললাম মামা আজ তাহলে যাই, পরে সময় করে আবার অন্যদিন এসে তোমার প্রেমের সেকাল-একাল বিষয়ে আরো ব্যাখ্যা বিশ্লেষন শুনবো।রসিক মামা বল্লেন, আচ্ছা আসিস। সবেত মাত্র শুরু করলাম।মামার কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে আর পেছন দিকে না চেয়ে দ্রুত সামনে পা বাড়ালাম ।01712936396----(কবি,ছড়াকার) (সমাপ্ত).

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫০

চাঁদগাজী বলেছেন:


ভালো লাগেনি

২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫১

গালীব পাশা বলেছেন: Ong Santi.

৩| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:০৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


সময় নস্ট

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.