নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গালীব পাশা (কবি ও ছড়াকার) লেখক নাম, মূল নামঃ মামুনুর রশীদ।

গালীব পাশা

মা কে ভাল বাসুন,মা'ই জান্নাত।

গালীব পাশা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শোন সিনথিয়া কেমন আছি ঃ গাড়ী কথন,যে লাউ সে কদু

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৮




সিনথিয়া আজ তোকে শোনাবো আমাদের দেশের পরিবহন কাহিনি।সিনথিয়া যদি জানতে চাস কেমন আছি,তবে আমার কথা বলবো খুব ভালো আছি।যে দেশে বহু মানুষ না খেয়ে রাতে ঘুমাতে যায় সে দেশে আমি কোন কাজ কর্ম না করে তিন বেলা ভালোমন্ধ দিয়ে উদরপুর্তি করে খেয়ে নাক ডেকে ঘুমাই সে হিসেবে যদি বলি ভালো নেই তাহলে উপরআলা হয়ত রাগ করবেন তাই বলছি ভালো আছি।আমার মা বাবা আমার জন্য যা রেখে গিয়েছেন তা দিয়ে আমি ভালোমতই চলি।যদি কিছু রেখে না যেতেন তাহলে যে আমি কি করে খেতাম তা ভেবে অনেক সময় আমার শরীরে কাপুনি এসে যায়।এদেশে কবিত্ব এবং কবিতা দিয়ে পেট ভরেনা।আমার কবি কবি ভাব আমার পেটের ভাত যোগাতে পারতো না।তাই আমার মাটিতে মিশে যাওয়া মা বাবার জন্য আমি পারলে প্রতি মুর্তে ক্ষমা প্রার্থনা করি,তাদের পরকালের পরাবাস্তব জীবনের শুভ কামনা করে।এখন কথা হল একজন বিবেকবান মানুষ হিসেবে আমার এই একা ভালোথাকার নামই কি ভালোথাকা ?মনে হয় তা নয়,তাই পরকে নিয়েও যে ভাবতে হয়।এই সমাজ,সংসার,রাষ্ট্র সব কিছু ভালো থাকার নামেই তো ভালো থাকা তাইনা ? আমরা তো সে হিসেবে ভালো নেই।আজ সে ধরনের কিছু লেখা নিয়েই আজকে তোকে আমার এ লেখা।আজ আমি তোকে আমাদের চলমান পরিবহন সংকট নিয়েই কিছু লিখবো।যদিও আমার এ লেখা যদি কোন পরিবহন মালিকের চোখে পরে তাহলে সে আমাকে তার ক্রোধের আগুনে জালিয়ে পুড়িয়ে মারতে চাইবে।কিন্তু কি করবো বিবেকের ধ্বংশন তো আরো বড় শাস্তি তাই কিছু না লিখে পারছিনা।তাহলে শোন বলি ; কিছু বুর্জয়া শ্রেণীর কাছে আমাদের এই বাংলাদেশ নামক রাষ্টটি জিম্মি হয়ে আছে।ওদের স্বভাব শুধু নিজে খাই । অন্যে খেলো কি খেলোনা তাতে তাদের কিচ্ছু যায় আসেনা।তারা খেলেই হলো।তথা কথিত এ শেণীর কাছে আমাদের দেশ চালকেরাও পরাজিত।বলছি আমাদের বর্তমান পরিবহন অরাজগতার কথা।সিনথিয়া,আমেরিকায় স্থায়ী হয়ে ভালই করেছিস।তোদের এসব দেখতেও হয়না,শুনতেও হয়না বা ভাবতেও হয়না।এসব সমস্যা যে আমাদের দেশের মানুষের জন্য কত ভয়াবহ তা তোরা ভাবতেও পারবিনা।অন্য অনেক সেক্টরের মতো আমাদের পরিবহন মালিকেরাও আমাদের দেশটাকে তদের বাপ-দাদার জমিদারি মনে করে।কোন রকমে লরে লক্কা ঠরে ধাক্কা মার্কা কোন রকম এক খানা গাড়ি যদি ঢাকার রাজপথে নামিয়ে দিতে পারে তা হলে তাদের আর পায় কে।শুরু হয়ে যায় তাদের রাম রাজত্ব।তাদের নিজের আদালত তারা নিজেই সৃষ্টি করে সেখানে তারা নিজেই রায় দিয়ে ভাড়া নির্ধারন করে এই গরীব দেশের মানুষের চাল-বাকল ছিলে নেয়।ভাবটা তাদের এমন,গরীব যখন হয়েছিস তখন আমরা যা করি তাই মেনে নে।তেল-মবিলের পোড়া গন্ধময় ২০ বছরের আগের গাড়িকেও তারা রং টং মেখে (যাত্রী বের হবার দরজা আবার শক্ত করে বানায়,যেন যাত্রিরা দরজা ভেঙ্গে বের হতে না পারে)রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে বলে এ হল আমাদের সিটিং সার্ভিস ,গুনে মানে উন্নত।আপনাদের সেবায়(যা এখন ঢাকায় আসলেই চিটিং সার্ভিস নামে পরিচিত)বের করে দিলাম ভাড়া এত টাকা।শুরু হয়ে গেল তাদের কসাইকারবার।১০/১৫ টাকার ভাড়া স্থলে তারা নিবে ৫০/৬০ টাকা ভাড়া।আসলেই কি এগুলো সিটিং সার্ভিস?টাকার রাস্তায় যারা চলাচল করে শুধু তারাই জানে এসব গাড়ি আসলে কি?আর কিভাবে এরা দিনের পর দিন মাসের পর মাস নিরীহ মানুষদের ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু সিনথিয়া এসব আজদাহা অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মত কেউ নেই।কে করবে এদের সাথে প্রতিবাদ ?একটু প্রতিবাদ করতে গেলেই গলা ধাক্কা খেতে হয়।গরিবের ইজ্জত যা সামান্য আছে তাই বিলিয়ে দিতে হয় রাজপথের পিছঢালা কালো রাস্তায় অসংখ্য মানুষের সামনে,এমনো কখনো হয় যাত্রীর উপর তারা গাড়ি চালিয়ে দেয়।গরিব হলেও সবারই প্রাণের মায়া আছে,তাই আর কেউ প্রতিবাদ করেনা।মালিকদের ইচ্ছাপুরণে নিরবে বহন করে চলে রক্তঝরা উপার্জনের রক্তিম টাকা।কিন্তু হাজারো রকম লাঞ্ছনা থেকেই যায়।বিশেষ করে মহিলাদের লাঞ্ছনা,অপমান ও কষ্ট সে এক বিশ্রী ব্যাপার সে আর নাই বললাম।সিনথিয়া এখন আসি মুল কথায়;হাজারোবার পত্র-পত্রিকায় লেখা-লেখি,সাংবাদিক,কবি-সাহিত্যিক,ব্লগারদের চুল ছেরা লাখো ফরিয়াদে সরকার ঘোষনা দিলেন এসব চিটিংবাজি বন্ধ হবে,এত তারিখ হতে আর এসব চলবেনা।সিটিং-ফীটিং আর থাকবেনা,ঢাকার হাওয়া বইবে সমতালে,মানে নিরীহ জনগন এখন থেকে এসব থেকে মুক্তি পাবে,সবই লোকাল হবে,সরকার নির্ধারির ভাড়াই বাস চলাচল করতে হবে।সিনথিয়া বলতে শরম নেই,আমরা আশায় বুক বাধলাম।মনে মনে,গোপনে করতালে সরকারকে সাধুবাদ দিলাম,এবার বুঝি একটু গতি হল বলে।ওমা,ওং শান্তি বলেও শান্তি এলনা।যে লাউ সে কদুর মতই হল;রায় কার্জকরের দিন থেকে অধিকাংশ মালিকেরা পুরো বাস গুলাকেই রাজপথ থেকে উদাও করে দিল,অর্থাত তারা তাদের নির্ধারিত ভাড়া ছাড়া রাস্তায় গাড়ী বের করবেনা।সরকারকেও তারা বুড়া আঙ্গুল তো দেখালোই তার সাথে ছোট্টটাও দেখালো।মানে সরকারকেও তারা ডেম কেয়ার।এদিকে জনগনের অবস্থা হল “ছেড়ে দে মা কেঁদে বাছি’র মতো।এতদিন তো তারা ত্রি ডবল ভাড়া দিয়ে (ঠেলা,ধাক্কা,হ্যন্ডটার্চ,পাচাটার্চ খেয়ে)কোন রকমে যাতায়াত করতে পারতো এখন তাও পারছেনা,ঘন্টার পর ঘন্টা রোদের মধ্যে গাড়ীর জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে,কিন্তু গাড়ী তো চিচিংফাকের দেশে চলে গেছে ,প্রথমে বুজতে না পারলেও পরে যখন বুঝতে পারলো তখন তাদের আক্কেল গুড়ুম তো হলোই বুকের ভেতরো ধুড়ুম করে উঠলো।কারো চাকুরি,কারো ব্যবসা ইত্যাদি নানা সমস্যা যাতায়াতের জন্য কি অবস্থায় পৌঁছবে তা ভেবে চক্ষু চড়ক গাছ হল।সরকারি টহল দল টহল দিতে গিয়ে দেখলো যা ক’খানা গাড়ী চলছে তা আগের মতই চলছে,ভাড়া আগের মতই কাটছে,কথা বললেই মারছে।ফাঁক দিয়ে দুঃখে কষ্টে জনগনের অবস্থাই নাপাকের মতো হয়ে গেল।সিনথিয়া এবার শোন,আমাদের মন্ত্রি মশায় কি বললেন সে কথা;মন্ত্রি মশায় বললেন,এরা নাকি প্রভাবশালী এদের নিয়ন্ত্রন করা কঠিন।মন্ত্রিমশায়ের কথা শুনে জনগনের অবস্থা শুধু আক্কেল গুড়ুমই হলনা তার সাথে বুদ্ধি-বিচার-বিবেচনা সবই গুড়ুম হয়ে গেল।মন্ত্রিই যদি বলেন ওরা প্রভাবশালী,ওদের নিয়ন্ত্রন করা........................।যে লাউ সে কি কদু হলনা,তাহলে বুঝে নিস আমরা কেমন আছি।
রচনাকাল,ঢাকা
১৮/০৪/২০১৭ ইং
NB:খুবই তরুন অবস্থায় সমসায়িক বিষয় নিয়ে ভোরের কাগজ পত্রিকায় “শোন সিনথিয়া কেমন আছি”লিখতে শুরু করি।কয়েক পরব লেখার পর আর লেখা হয়নি।অনেক দিনপর আবার কিছু লিখলাম।কেমন হল জানিনা।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৩৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ফাঁক দিয়ে দুঃখে কষ্টে জনগনের অবস্থাই নাপাকের মতো হয়ে গেল।সিনথিয়া এবার শোন,আমাদের মন্ত্রি মশায় কি বললেন সে কথা;মন্ত্রি মশায় বললেন,এরা নাকি প্রভাবশালী এদের নিয়ন্ত্রন করা কঠিন।মন্ত্রিমশায়ের কথা শুনে জনগনের অবস্থা শুধু আক্কেল গুড়ুমই হলনা তার সাথে বুদ্ধি-বিচার-বিবেচনা সবই গুড়ুম হয়ে গেল।মন্ত্রিই যদি বলেন ওরা প্রভাবশালী,ওদের নিয়ন্ত্রন করা........................।যে লাউ সে কি কদু হলনা,তাহলে বুঝে নিস আমরা কেমন আছি।

++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.