নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হয়তো আমি কোন কিছু সম্পর্কে নিশ্চিত নই

অনিশ্চিত

শুয়েছে ভোরের রোদ ধানের উপরে মাথা পেতে অলস গেঁয়োর মতো এইখানে কার্তিকের ক্ষেতে; মাঠের ঘাসের গন্ধ বুকে তার,-চোখে তার শিশিরের ঘ্রাণ, তাহার আস্বাদ পেয়ে অবসাদে পেকে ওঠে ধান। - জীবনানন্দ দাশ

অনিশ্চিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

অদ্য হইতে সকলি লিখিব সাধু ভাষায়

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:১০

এই দেশ কিংবা এই ভাষা হইতে সাধুরীতি পুরোপুরি পরিত্যজ্য হইয়াছে কিনা তাহা বুঝিতে পারিতেছি না; কিন্তু নানান মাধ্যমে বাংলা ভাষার অন্যতম এই রীতিটির অনুপস্থিতি মাঝেমধ্যে বেশ পীড়াদায়ক বলিয়া মনে হয়। কিছুকাল পূর্ব পর্যন্ত দেশের দুইটি নামকরা সংবাদপত্র তাহাদের সম্পাদকীয় ভাষায় সাধু ভাষারীতি প্রয়োগ করিত, কিন্তু তাহারাও সেইটি পরিত্যাগ করিয়াছে। তাহাদের এই আনুষ্ঠানিক পরিত্যাগের মাধ্যমে বাংলা ভাষা হইতে সাধু ভাষার ব্যবহার একেবােরেই বিলুপ্ত হইয়া গেল কিনা, তাহাই এখন প্রশ্নের বিষয়, উদ্বেগের বিষয়।



কোনোই সন্দেহ নাই যে, সাধু ভাষা মানুষের মুখের ভাষা নহে। কিংবা কাব্য-কবিতায় সাধু ভাষা মাঝেমধ্যেই বেমানান লাগে। আবার ইহাও সন্দেহ নাই যে, সাধু ভাষা অনেক ক্ষেত্রেই নিজ গুণে উদ্ভাসিত। আমরা কি বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায় এক শক্তিশালী সাধু ভাষার সন্ধান পাই নাই? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হস্তের লেখনীতে কি সাধু ভাষার রূপ আমরা দেখিতে পাই নাই? বক্তব্য প্রকাশে দৃঢ়তায় সাধু ভাষাকে অনেক পণ্ডিত বেশ শক্তিশালী বলিয়া মনে করিতেন। কিন্তু যেই ভাষারীতির সহিত দৈনন্দিন জীবনের সম্পর্ক ক্ষীণ, সেই ভাষারীতি আস্তে আস্তে দুর্বল হইয়া পড়ে। আমাদের সাধু ভাষারীতির ক্ষেত্রেও তাহাই ঘটিয়াছে বলিয়া মনে হয়।



কিন্তু ভাষার বৈচিত্র্যে বিশ্বাসী বলিয়া এবং ব্যক্তিগতভাবে সাধু ভাষার একজন অনুরাগী হওয়াতে এই রীতিটিকে কিছুতেই ভুলিতে পারি না। কিয়ৎকাল পূর্বে যখন মাঝেমধ্যে ‘আমার ব্লগ’ নামক ব্লগ সাইটখানাটিতে লিখিতাম, তখন সেইখানে ঘোষণা দিয়াছিলাম যে, সেইখানে শুধু সাধু ভাষারীতিতেই লিখিব। কিন্তু নানান কাজের চাপে, মূল নিকে সক্রিয়া হওয়াতে এবং ব্লগটি পছন্দ না হওয়াতে সেইখানে লেখালেখি আর চালাইয়া যাইতে পারি নাই। সামহোয়্যারে আমি লিখিতেছি অনেক দিন ধরিয়া এবং আমার ব্লগ লেখালেখির শুরুও এইখান হইতেই। সেই হেতু সিদ্ধান্ত লইয়াছি যে, এখন থেকে সামহোয়্যার ব্লগে যাহা লিখিব, তাহার সবই হবে সাধু ভাষারীতিতে লেখা। এমনকি এখন হইতে মন্তব্যও করিব সাধু ভাষায়।



এই ব্লগে আমার কিছু সুহৃদ রয়েছেন, রয়েছেন বিদগ্ধ পাঠক-পাঠিকাও; যাহাদের নিকট হইতে আমার একটি প্রত্যাশা রহিয়াছে। প্রত্যাশাটা এই- সাধু ভাষায় লিখিতে গিয়া ভাষারীতিতে কোথাও যদি ভুল করিয়া থাকি, তাহলে তাঁহারা যেন ভুলগুলো ধরাইয়া দেন। আমরা দৈনন্দিন জীবনে লেখালেখিতে নানান ভুল করিয়া থাকি, সাধু ভাষায় চর্চা না থাকায় এইখানে ভুলের মাত্রা আরেকটু বেশি হইবে- তাহাই স্বাভাবিক। আপনাদের সহযোগিতা এই ভুল শুধরাইতে সহায়তা করিবে। আরেকটি বিষয় এইখানে বলিয়া রাখা ভালো- আমি কেবল ক্রিয়াপদে সাধু রীতি প্রয়োগ করিতে ইচ্ছুক নহি, বরং ভাষার সবক্ষেত্রেই সাধুরীতি প্রয়োগ করিতে চাহি। ‘ঝড় উঠিয়াছে’ না বলিয়া ‘ঝটিকা উঠিয়াছে’ বলিতেই এখানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করিব। সেইহেতু ক্রিয়াপদ ছাড়াও অন্য কোথাও যদি সাধুরীতির অন্যথা ঘটিতেছে বলিয়া আপনাদের কাছে মনে হয়, তাহা হইলে তাহা জানাইলে সেইরূপে শুধরাইয়া লইব। এই লেখাখানি পড়িবার জন্য এবং ভবিষ্যতে সহায়তা করিবার আপনাদের সকলকে আগাম ধন্যবাদ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:২৭

মেঘমালাকম বলেছেন: সাধু ভাষা দেখিয়া মনে বড়ই শান্তি পেলুম।জয় হউক সাধু ভাষার।
আপনার এ প্রচেষ্টার ফলে এই দেশের ঘরে ঘরে একদিন সাধুভাষার
বিস্তার হইবে।ভাল লাগিল আপনার প্রচেষ্টা।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৯

অনিশ্চিত বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যেই ভাষার সহিত মানুষের মুখের সংযোগ অতিমাত্রায় ক্ষীণ, সেই ভাষা দেশের ঘরে ঘরে বিস্তার লাভ করিবে না- ইহা জানা কথা। সেই চেষ্টা করিবার উদ্যোগ বাতুলতা মাত্র।

২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪৬

কীির্তমান বলেছেন: প্রিয় ভ্রাতা, আপনার এহেন প্রচেষ্টা অবলোকন পূর্বক আমার নিকট ইহাই প্রতীয়মান হইতেছে যে, সাধু ভাষা উহার ভাব-গাম্ভীর্য এবং ভাব প্রকাশের ক্ষমতা লইয়া আপন গরিমায় ধীরে ধীরে পূণরুদ্ভাসিত হইতে থাকিবে এবং আমার মতন আরও কতিপয় পাঠকের মনেও এই প্রতীতি নিশ্চয় জন্মাইবে যাহাতে সাধু ভাষা আমাদের সকলের মানসলোকে কিঞ্চিত পরিমান ইহার আলোক বিকিরণ করিতে পারে।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৭

অনিশ্চিত বলেছেন: আপনার মন্তব্য দেখিয়া আমি বিস্মিত হইয়া বসিয়া আছি। আপনার এই প্রেতিভা এতোদিন কোথায় লুকানো ছিল? জাতি কেন আপনার এই প্রেতিভার কথা এতোদিন জানিতে পারিল না? আমি আশা করিব, আপনিও সাধু ভাষায় লিখিয়া জাতিকে আলোকিত করুন। আমিন।

৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪৭

নিভৃত নয়ন বলেছেন: আপনার এমন চেষ্টা দেখিয়া আমার খুব ভাল লাগিতেছে

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৪

অনিশ্চিত বলেছেন: আপনার ভালো লাগিয়াছে শুনিয়া আমারও খুব ভালো লাগিতেছে।

৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪৮

কালপুরুষ বলেছেন: ".......সেই হেতু সিদ্ধান্ত লইয়াছি যে, এখন থেকে সামহোয়্যার ব্লগে যাহা লিখিব, তাহার সবই হবে সাধু ভাষারীতিতে লেখা। এমনকি এখন হইতে মন্তব্যও করিব সাধু ভাষায়।......"


এই লেখার শুরু হইতে শেষ অব্দি চক্ষু বুলাইয়া যৎসামান্য ত্রুটি দৃষ্টিগোচর হইলো বলিয়া তাহা উল্লেখ করিলাম এবং সংশোধন করতঃ পূনঃ মূদ্রণ করিলাম----

"সেই হেতু সিদ্ধান্ত লইয়াছি যে, অদ্য হইতে সামহোয়্যার ব্লগে যাহাই লিখিব, তাহার সবই হইবে সাধু ভাষারীতিতে লেখা। এমনকি এখন হইতে মন্তব্যও করিব সাধু ভাষায়"।



২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৪০

অনিশ্চিত বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাইতেছি। আপনি যাহা বলিয়াছেন তাহা ঠিক। তবে সংশোধন করিলাম না। ভুলটা থাকিয়া যাউক, কারণ তাহা হইলে পরবর্তী সময়ে নিজের ভুলগুলো ধরিতে পারিব। কতোটুকু উন্নতি করিলাম, তাও জানা যাইবে।

তবে 'যাহা' শব্দটা কিন্তু সাধু রীতিতে ভুল নহে। আপনি ইহার শেষে 'ই' অক্ষরটি জোড়া লাগাইয়াছেন। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে তাহা লাগাই নি।

আপনার মতো সহৃদয় পাঠক থাকিলে উত্তরোত্তর এই ভাষায় যে উন্নতি করিব তাহা লইয়া আমার কোনোরূপ সন্দেহ নাই।

৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৫৪

হা...হা...হা... বলেছেন: নানাবিধ ভ্রান্ত বানান চক্ষুগোচর হইতেছে।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:২৯

অনিশ্চিত বলেছেন: দয়া করিয়া ভ্রান্ত বানানগুলো উল্লেখ করিবেন কি? তাহা হইলে সেইগুলো শুধরাইয়া লইতে পারিতাম।

৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৪৭

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: মহান এই উদ্যোগে খুবই প্রীত হইলাম।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৪

অনিশ্চিত বলেছেন: আপনি প্রীত হইয়াছেন শুনিয়া আমি বেশ আনন্দিত বোধ করিতেছি। :)

৭| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৫২

কৌশিক বলেছেন: আমিও বিয়াফুক মাত্রায় আপ্লাতিত হইলাম। সদ্য হইতে সাধুতেই কহিবো।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩১

অনিশ্চিত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ জানিবেন। কিন্তু 'বিয়াফুক মাত্রাটা' যে কী তাহা বুঝিতে পারিলাম না। 'বেকুফ মাত্রা' বলিলে বোধহয় তাহা ঠিক হইত। :)

আপনি সাধু হইবেন শুনিয়া বেশ ভালো লাগিল। :)

৮| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:১৫

কীির্তমান বলেছেন: সাধু রীতিতে লিখিত অতিশয় মামুলী কথাবার্তাও কী এক অপরূপ সুষমা লইয়া হাজির হয়! যাহা পাঠ করিয়া চিত্তের যার পর নাই আরামও হয় বটে! সুতরাং সাধু রীতির প্রয়োগ করিবার বিন্দুমাত্র সুযোগ অপচয় করাও আমি সমীচিন বোধ করিনা।

২১ শে নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৮

অনিশ্চিত বলেছেন: আশা করি ইহার পর হইতে আপনি সাধু রীতি ছাড়া অন্য কোনো রীতিতে লিখিবেন না। :)

৯| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:১৩

গিগাবাইট বলেছেন: সাধু সাধু B-) B-)

২২ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৫৩

অনিশ্চিত বলেছেন: আসেন, আমরা সবাই সাধু হইয়া যাই। :)

১০| ২১ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:২৯

বিদ্রোহী-৪৬২ বলেছেন: কৌশিক বলেছেন: আমিও বিয়াফুক মাত্রায় আপ্লাতিত হইলাম। সদ্য হইতে সাধুতেই কহিবো।

লেখক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ জানিবেন। কিন্তু 'বিয়াফুক মাত্রাটা' যে কী তাহা বুঝিতে পারিলাম না। 'বেকুফ মাত্রা' বলিলে বোধহয় তাহা ঠিক হইত।

আপনি সাধু হইবেন শুনিয়া বেশ ভালো লাগিল।


আপন চিত্তে এই কথাটি বারংবার ঝংকারিয়া উঠিতেছে যে, "বেকুফ" স্থলে ব্যাপক হইবার কথা।

২২ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৫৫

অনিশ্চিত বলেছেন: হে হে হে, ইহা তো বুঝিলাম; কিন্তু কৌশিকের সহিত একটু রঙ্গরস করিলাম মাত্র। :)

১১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৫৯

কৌশিক বলেছেন: পঠিত হইয়া জলাধারে কিঞ্চিত হিন্দোলিত। আমাদের সাধু কথন হইতে হইবেক মর্ডানায়িত..নইলে উহার রূপরস পোতায়িতো হইয়া যাইবে।

২২ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:২৯

অনিশ্চিত বলেছেন: দুই-একখানা উদাহরণ দিতে পারিবেন কি? নতুন ভাষারীতি পাইলে জাতি বড়ই উপকৃত হইবে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.