![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মানুষ একজন মুসলমান একজন বাঙ্গালী
দৃশ্যপট ১ = সিলেট রেল স্টেশন। বিকাল ৫.২৫। রাত নয়টার চট্টগ্রাম অভিমুখী ট্রেনের টিকেট নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ালাম। মোটামুটি লম্বা লাইন পেরিয়ে টিকেট কাউন্টারে সিরিয়াল পেলাম। ঐ দিনের রাতের চট্টগ্রামগামী ট্রেনের টিকেট চাইতেই বলল সিট নাই। নিজেকে দূর্ভাগা মনে করে বের হয়ে আসলাম। তখনি একজন বলল "ভাই,টিকেট পান নাই? মাথা নেড়ে না সূচক জবাব দিলাম। তখন লোকটি বলল, ভাই,কিছু টাকা বাড়িয়ে দিলেই তো সিট সহ টিকেট পেয়ে যেতেন। আমি বললাম ভাই, সিট খালি নাই তো কোথা থেকে সিট দেবে? তখন লোকটি বলল ভাই, টাকা দিলে বাংলাদেশে সবই মিলে। কথা শুনে ভাবলাম, তবে কি প্রকাশ্যেই দূর্নীতি চলে। তাই সিটের আশায় আবারো লাইনে দাঁড়ালাম। আমার সিরিয়াল আসতেই বাড়তি টাকা দিয়ে সিট সহ টিকেট চাইতেই বলল ভাই, কিছুক্ষণ পরে আসেন। আমি ব্যবস্থা করছি।
দৃশ্যপট ২= মনে মনে ধরেই নিয়েছিলাম টিকেটের ব্যবস্থা হয়ে গেছে।শুধু কাউন্টারে যাব আর টিকেট পেয়ে যাবো। এমন চিন্তা করে প্রায় সন্ধ্যা ৭.০০ টার দিকে কাউন্টারে গেলাম। টিকেটের কথা বললাম। কাউন্টারের লোক বলল ভাই, আরেকটু আগে আসলেই টিকেট পেয়ে যেতেন। একটু আগেই কয়েকজনকে দিলাম। এখন সত্যিই আর সিট নাই। নিজেকে এবার সত্যিই দূর্ভাগা মনে হল। বিষন্ন মনে জিজ্ঞেস করলাম আর কোন ভাবে ব্যবস্থা করা যায় না। বলল, এখন নিলে স্ট্যান্ডিং টিকেট নিতে পারবেন। আর বসে যেতে চাইলে ট্রেন ছাড়ার সময় আসবেন। ৭/৮ ঘন্টা দাঁড়িয়ে যেতে হবে এই ভেবে আর স্ট্যান্ডিং টিকেট নিলাম না। বসে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
দৃশ্যপট ৩= রাত প্রায় পৌনে নয়টা। ট্রেন প্লাটফর্মে উপস্থিত। তাই টিকেট কাউন্টারের লোকটির সাথে দেখা করতে আসলাম। কিন্তু কাউন্টার লোকে প্রায় ভর্তি। সবাই স্ট্যান্ডিং টিকেট কিনছে। কিন্তু ৫/৭ মিনিট পরেই কাউন্টারে টিকেট বিক্রি বন্ধ। ট্রেন ছাড়ার মূহুর্তে টিকেট বিক্রি হয় না। অথচ অনেক লোক তখনো দাঁড়িয়ে। কাউন্টারের লোকটি বেরিয়ে আসতেই আমি সিটের কথা বললাম। লোকটি বলল, ট্রেনের কাছে গিয়ে "অমুক" ভাইকে বললেই সিটের ব্যবস্থা করে দেবে। যাই হোক তাড়াতাড়ি করে ট্রেনের কাছে "অমুক" ভাইকে খুজতে লাগলাম। ট্রেনের এক কর্মচারী "অমুক" ভাইকে দেখিয়ে দিলেন। "অমুক" ভাই ২৫০ টাকার বিনিময়ে ট্রেনের দরজার কাছাকাছি একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসিয়ে দিলেন।
দৃশ্যপট ৪= ট্রেন ছাড়ার পর খেয়াল করলাম আমাকে যে লোক সিটে বসাল সে লোকটি ট্রেনে যারা দাঁড়িয়ে যাচ্ছে তাদের টিকেট চেক করছে। যারা টিকেট ছাড়া ট্রেনে উঠেছে তাদের কাছ থেকে ৫০/১০০/১৫০ টাকা করে যার কাছ থেকে যেভাবে পারছে আদায় করছে। ভাল করে খেয়াল করতেই বুঝলাম, হায় হায়, এ যে স্বয়ং টিটি। বুঝলাম ট্রেনের ড্রাইভার থেকে নিয়ে টিটি এমনকি গার্ড পর্যন্ত টুপাইস কামাতে অভ্যস্থ। যাই হোক ট্রেন চট্টগ্রামের কাছাকাছি ফেনী স্টেশন আসতেই কোথা থেকে যেন ট্রেনের এক কর্মচারী আমার হাতে একটি টিকেট ধরিয়ে দিল। সিলেট টু চট্টগ্রামের টিকেট। আশ্চার্যান্বিত হয়ে বললাম ভাই, চট্টগ্রাম যেতে তো এখনো ঘন্টাখানেক লাগবে। আপনি এ টিকেট কিভাবে আনলেন। কে আপনাকে টিকেট দিয়ে দিল। কর্মচারীটি বলল, এগুলা আমরা ম্যানেজ করতে পারি।
পরিশেষে মূল কথা হল, ট্রেনের এই দূর্নীতি বাজ কর্মকর্তারা প্রতি ট্রিপেই অনেক টাকা সরকারের অজান্তেই হাতিয়ে নিচ্ছে। এদের কারণে দেশের এই হাল।
২৩ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:১৯
হাফিজ হুসাইন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। আমার মনে হয় আরো অনেক ক্ষেত্রেও এরুপ প্রকাশ্য দূর্নীতি হয়। কিন্তু আমাদের মত সাধারণ পাবলিকের কিছুই করার থাকে না
২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:১০
এম আর তালুকদার বলেছেন: দূনীতি ! এটাই এখন দেশের নীতি।
২৩ শে জুলাই, ২০১৭ ভোর ৫:২০
হাফিজ হুসাইন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৫৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: দারুন সব দুর্ণিতির চিত্র তুলে ধরেছেন ।
সংস্লিষ্ট লোকদের নজরে আসলে অনেক উপকার হবে ।
অনুসরণ করার জন্য ধন্যবাদ ।