নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনেক বড় হতে চাই। একজন ভালো মানুষ হতে চাই। এর বেশী কিছু না।

হাফিজ হুসাইন

একজন মানুষ একজন মুসলমান একজন বাঙ্গালী

হাফিজ হুসাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"সিনেমার গল্পও হার মানে যে গল্পের কাছে,ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইতালিতে যাওয়া এক বাংলাদেশির গল্প"

০৩ রা আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫২

( যেসব প্রবাসী বাংলাদেশীরা সামাহীন পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন তাদেরকে অজস্র সালাম )

৫ই মে রাত। লিবিয়ার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেবার জন্য একটি ছোট ট্রলারে উঠেছিলেন প্রায় ৯০০ যাত্রী। তিল ধারণের জায়গা ছিলনা সে ট্রলারে। গাদাগাদি করে বসে থাকা ট্রলারের যাত্রীদের দম বন্ধ হয়ে আসার মতো অবস্থা। তাদের মধ্যে ছিলেন নোয়াখালীর বাকের হোসাইন।

ট্রলারের সব যাত্রীর মতো বাকেরের লক্ষ্য ছিল ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে ঢুকবেন। আর্থিক সচ্ছলতার আশায় স্বপ্নের ইউরোপে পৌঁছতে যে কোনো পরিণতির জন্য তৈরি ছিলেন বাকের হোসাইন। তার সামনে নিয়তির দু’টো দরজা খোলা ছিল। হয়তো সাগরে ডুবে মৃত্যু নয়তো ইতালিতে পৌঁছানো।
শুধু বাকের হোসাইন নয়, তার মতো আরো প্রায় ২৫০জন বাংলাদেশি ছিলেন সে ট্রলারে। সবাই আর্থিক সচ্ছলতার আশায় দেশ ছেড়েছিলেন।বাকের বলেন, জীবনে কিছু করতে পারতেছি না। অনেক কষ্ট ছিল বুকে। চিন্তা করলাম একটা ঝুঁকি নিয়ে দেখি। বাঁচলে তো বাঁচলাম, আর মারা গেলে তো কিছু করার নাই।
ট্রলারটি লিবিয়া উপকূল ছেড়ে আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই উত্তাল সমুদ্রের রূপ দেখে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। জীবনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন যাত্রীরা। ভয়ঙ্কর সে যাত্রার কথা আমৃত্যু মনে থাকবে বাকের হোসাইনের।
তিনি বলেন, অনেকে অজ্ঞান হয়ে গেছে। বমি করতেছে। সাগর দেখে অনেকে ভয় পাইছে। মনে হয় নতুন জন্ম নিয়ে আসছি এখানে।
লিবিয়া উপকুল থেকে ট্রলারে যাত্রা শুরুর পাঁচ ঘণ্টা পরে সেটি ইতালির সমুদ্রসীমায় ঢোকে। কিন্তু সেখানে ইতালির উপকূলরক্ষীদের জাহাজের সামনে পড়ে নৌকাটি। প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ইতালির উপকূলরক্ষীরা সে ট্রলারের যাত্রীদের বড় জাহাজে তুলে আনা শুরু করে।
প্রায় ৫০০ যাত্রীকে বড় জাহাজে তোলার পর সে কাজ বন্ধ করে দেয় ইতালির উপকূলরক্ষীরা। ১০ ঘণ্টা সমুদ্রে ভাসমান থাকার পর ইতালির সময় রাত তিনটার দিকে একটি বড় জাহাজে তোলা হয় বাকি যাত্রীদের। বর্তমানে ইতালির একটি আশ্রয় শিবিরে আছেন বাকের হোসাইন। বাকের হোসাইন বাংলাদেশ থেকে প্রথমে শ্রীলংকা এবং তারপর কাতার পৌঁছান। কাতার থেকে তুরস্ক হয়ে তিনি লিবিয়ায় পৌঁছেছিলেন।
এ পুরো যাত্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ করে তিনি শেষ পর্যন্ত ইতালিতে পৌঁছেছেন। লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানোর এ পথ কিভাবে চিনলেন বাকের হোসাইন? তিনি বলেন, অনেক নিউজে দেখছি যে লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাওয়া যায়। তখন আমাদের এলাকার এক দালালের সাথে চুক্তি করলাম।
বাকেরের মতো শত-শত বাংলাদেশি গত কয়েক বছরে এভাবেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি গিয়েছেন। আবার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অনেকেরই সলিল সমাধি হয়েছে।

দুঃসাহসী এসব বাংলাদেশী ভাইয়েরা নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করুন এই কামনা করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.