![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মকুন্দঃ কি রে চান মিয়া, দৌড়াস কেন? কি হইসে?
চান মিয়াঃ আরে দাদা, সুখবর। রেডিওর খবর শুনেন নাই?
মকুন্দ মাথা নাড়ে। না, তো। কি হইসে খুইল্যা বলো।
চান মিয়া হাপাতে হাপাতে বলতে শুরু করে। এই মাত্র আকাশ বাণীর খবরে কইলো, গুজরাটের সাম্প্রদায়িক দাঙায় যার হাত রন্জিত, যে কারনে আমেরিকা যারে বিগত কয়েক বছর ভিসা দেয়া নাই, সেই দলের নেতা ও তার দল ক্ষমতা পেলে ভারত একটা জঙ্গী রাষ্ট্রে পরিনত হতে পারে, সেই জন্য গনতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতকে রক্ষা করতে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি জোট ও তার নেতা মোদীকে বাদ দিয়েই নির্বাচন করে ফেলবে। নির্বাচনে কে এলো কে গেলো সেটা তাদের দেখার বিষয় না।
এক নিঃশ্বাষে কথাগুলো বলে চান মিয়া থামলো।
চান মিয়ার কথাগুলো শুনে মকুন্দরতো টাসকি লাগার অবস্হা। তাড়াতাড়ি রেডিও অন করলো। ঘোষক বার বার একই কথা প্রচার করছে। আগামী ৫ই জানুয়ারী নির্বাচন হবে। তবে সে নির্বাচন কংগ্রেস ও তার ছোট খাট মিত্ররাই করবে। বিজেপি ও মিত্রদের নির্বাচনে আসতে দেয়া হবে না। কারন তারা বাবরি মসজিদ ভাঙা, গুজরাটে দাঙ্গা ইত্যাদি সহিংসতার জন্য দায়ি।
দেখতে দেখতে নির্বাচন এসে গেল। বিজেপির একই কথা, দুর্নীতিবাজ কংগ্রেসের অধীনে কোন নির্বাচন করবে না। তাদের দাবী মনমোহন সিংকে নির্বাচনের আগেই পদত্যাগ করতে হবে। দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর কংগ্রেস সেটা কখনই মানবে না।
অবশেষে কংগ্রেসের ইচ্ছেই পূরন হলো। ভারতের মাটিতে জঙ্গীবাদকে কবর দিতে, সন্ত্রাস, ধর্মীয় মৌলবাদকে কবর দিতে, কিছুদিনের জন্য 'গনতন্ত্র'কে গোরস্হানে পাঠানো হলো। বলা হলো, গনতন্ত্রের চেয়ে দেশকে জঙ্গীবাদ মুক্ত করা বেশী জরুরী।
এক তরফা ভোটার বিহীন নির্বাচন করে, কেন্দ্র দখল করে কংগ্রেস ও তার মিত্ররা বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃতীয় বারের মত ভারতের সরকার গঠন করলো। রাহুল গান্ধী জিন্দাবাদ, জয় হিন্দ, বন্দে মাতরম নানান ধরনের শ্লোগানে মুকুন্দর কান গরম হতে লাগলো। নিজেও বাসা থেকে বের হয়ে শ্লোগান ধরলো জয় হিন্দদদদদদ! ধপাস করে খাট থেকে নীচে পড়ে গেল মুকন্দ। বুঝতে পারলো এতক্ষণ তিনি ঘুমিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখছিলো, ঘেমে নেয়ে উঠেছে। নিজেকেই বিশ্বাষ হচ্ছিল না। যাহ তাই কি হয়! ভারতের মত ঐতিহ্যবাহী গনতন্ত্রের সুতিকাগারে কোন ভুয়া অজুহাতেইতো একতরফা নির্বাচন হতে পারে না। জনগন যাকেই ভোট দেয় তারা সেটাই অবনত মস্তকে মেনে নেয়। জনগন যদি কোন সাম্প্রদায়িক দলকেই বেছে নেয় সেক্ষেত্রে কংগ্রেস বা সিপিএমেরতো করার কিছু নেই। গনতন্ত্র মানলেতো জনগনের রায়কেও মানতে হবে। কোন কারনেই এর ব্যতয়তো কখনো হয় নাই।
তারপরও মকুন্দ নিজের গা'য়ে একটা জোরে চিমটি মেরে দেখলো সে আসলেই জেগে উঠেছে কিনা। নিজের চিমটিতে নিজেই চিৎকার দিয়ে উঠলো। বুঝলো, না এতক্ষণ সে একটা দুঃস্বপ্নই দেখছিলো।
আসলে ভোট হয়েছে প্রায় একমাস হলো। আজ রেজাল্ট ঘোষনা করার কথা। তাই বোধ হয় একটু টেনশন ছিলো মনের মধ্যে। অসময়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। এবার সে সত্যি সত্যিই রেডিওটা অন করলো। চারদিক থেকে শুধু বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর জয়ের খবর আসছে। মকুন্দ জানতো এটাই হবে, যদিও মনের মধ্যে একটা ক্ষীণ আশা ছিল কংগ্রেস হয়তো এবারও জিতে যাবে, রাহুল সরকার গঠন করেবে, প্রধানমন্ত্রী হবে। হাজার হোক ইন্দিরাজীর নাতি। নাহ তা আর হলো না। তবুও সে স্বস্হি অনুভব করলো। আর যাই হোক, নির্বাচন কমিশন মোদীর অনেক হুংকার অগ্রাহ্য করে কঠোর হাতে নির্বাচনটা পরিচালনা করতে পেরেছে। জনগন ঠিকমত ভোট দিতে পেরেছে। তারা এবার হয়তো দুর্ণীতিবাজদেরকে ঠেকাতে ধর্মীয় উগ্রবাদীদেরকে বেছে নিয়েছে। কি আর করা। এটাইতো জন রায়। তারা যদি এটাই চায়, কার কি করা! ভাল লাগছে যে, রাতের দুঃস্বপ্নের মত কোন কিছু ঘটে নাই।
নাহ, কংগ্রেস বিজেপিকে ঠেকাতে এহেন অপকর্মের ধারে কাছেও যায় নাই।
২| ১৯ শে মে, ২০১৪ দুপুর ২:৩৪
হাসান বিন নজরুল বলেছেন: ওদের কাছ থেকে সানি লিওন মার্কা নাংটামি না শিখে গণতন্ত্রটা ভালো করে শেখা উচিত...তবুও আমরা ভুলটাই শিখছি
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫০
মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: সব সিরাজুদ্দৌল্লাই নবাব হয় না !!!!!