নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিফু গোয়েন্দা

শিফু গোয়েন্দা › বিস্তারিত পোস্টঃ

টাইটানিক ট্যানিক

০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬

টাইটানিকের অজানা
নতুন রহস্য ফাঁস
নিউজ ডেস্ক : ১৯১২ সালের ১৪
এপ্রিল, ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১১
টা ৪৫ মিনিটের ঘরে। টাইটানিক
তখন মাত্র উত্তর আটলান্টিক সমুদ্রে
পৌঁছেছে। টাইটানিক জাহাজটি
যেই পথ দিয়ে যাচ্ছিল সেই পথে
পানির নিচে চুপটি করে ঘাপটি
মেরে বসেছিল আইসবার্গ। এই
আইসবার্গের সাথে ধাক্কা
লেগে ধীরে ধীরে আটলান্টিক
সমুদ্রের নীল জলে তলিয়ে যায় এই
জাহাজটি। একই সাথে মৃত্যু ঘটে
১,৫১৩ জন যাত্রীর। ভাগ্যবান ৬৮৭
জন যাত্রীর জীবন বাঁচলেও
পরবর্তী জীবনে তাদের বয়ে
বেড়াতে হয়েছে এই দু:স্বপ্ন।
টাইটানিক জাহাজটির
ডিজাইনার ‘থমাস এন্ডু’র দাবি
ছিল টাইটানিক কোনো দিন
ডুবানো সম্ভব হবে না। আসলে
তিনি গায়ের জোরে সে কথা
বলেননি। টাইটানিক জাহাজটির
ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে
যা সকল প্রকার ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের
মধ্যেও সমুদ্রে বুক চিতিয়ে চলতে
পারবে। কিন্তু যেদিন টাইটানিক
ডুবে যায় সেদিন তার বয়স
হয়েছিল মাত্র ৪ দিন। যেই
জাহাজ জীবনেও ডোবানো সম্ভব
নয়, সেই জাহাজ কিনা মাত্র ৪
দিনেই ডুবে গেল। আপাতদৃষ্টিতে
আইসবার্গের সাথে ধাক্কায়
টাইটানিক ডুবির কারণ বলা হলেও
এর কোনো সঠিক যুক্তি কোনো
গবেষকই দিতে পারেন নি। একেক
জন একেক ধরনের কারণ উদঘাটন
করেছেন। এর ফলে এই জাহাজ
ডুবির ঘটনা রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে।
নামকরণ ও নির্মাণকালীন তথ্য
‘টাইটান’ ছিল গ্রীক পুরানের
সৃষ্টির শক্তিশালী দেবতা। এই
দেবতার কাজই ছিল শুধু সৃষ্টি করা।
তার নামানুসারে এই জাহাজের
নাম রাখা হয়েছিল ‘টাইটানিক’।
এটি আসলে জাহাজটির সংক্ষিপ্ত
নাম। এর পুরো নাম ছিল ‘আর এম এস
টাইটানিক’। ‘আর এম এস’ এর অর্থ
হচ্ছে ‘রয়্যাল মেল স্টিমার’। অর্থাৎ
পুরো জাহাজটির নাম ছিল ‘রয়্যাল
মেল স্টিমার টাইটানিক’।
টাইটানিকের ক্যাপ্টেন (বায়ে),
রোজ (মাঝে), জ্যাক (ডানে)
টাইটানিক জাহাজটির
নির্মাণকাজ শুরু করা হয় ১৯০৭
সালে। পাঁচ বছর একটানা কাজ
করে ১৯১২ সালে জাহাজটির
কাজ শেষ হয়। হল্যান্ডের ‘হোয়াইট
স্টার লাইন’ এই জাহাজটি নির্মাণ
করেন। ৬০ হাজার টন ওজন এবং ২৭৫
মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট জাহাজটি
নির্মাণ করতে সে সময় খরচ
হয়েছিল ৭৫ লাখ ডলার। এত বড়
আকারের জাহাজ নির্মাণ করা
সেসময় মানুষ স্বপ্নও দেখতে
পারতেন না।
যাত্রা শুরু
১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল
সাউদাম্পদন থেকে নিউেইয়র্কের
উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে
টাইটানিক। সে সময় টাইটানিকে
মোট যাত্রী ছিল ২২০০ জন এবং
কয়েকশ কর্মী। বৃটেন থেকে
আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি
দিয়ে আমেরিকায় যাওয়া খুবই
বিপদজনক ছিল। ছোটখাটো
জাহাজের পক্ষে বলা চলে জীবন
বাজি রেখে যাত্রা করা।
কেননা হঠাৎ সামুদ্রিক ঝড়-
জলোচ্ছ্বাসে পড়ার আশংকা
সবসময়ই ছিল। তারপরও এত সংখ্যক
যাত্রী সমুদ্রের রোমাঞ্চকর এই
ভ্রমণ উপভোগ করার জন্য
টাইটানিকের যাত্রী হয়েছিল।
টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির
ভাড়া ছিল ৩১০০ ডলার। আর তৃতীয়
শ্রেণির ভাড়া ছিল ৩২ ডলার।
এখানে শুধুমাত্র গন্তব্যস্থলে
পৌঁছানো এবং টাকা পয়সার
কোনো বিষয় ছিল না। সে সময়
টাইটানিককে নিয়ে পুরো
বিশ্বেই হইচই পড়ে গিয়েছিলো।
তাই সবাই চেয়েছিল
টাইটানিকের এই ঐতিহাসিক
যাত্রায় নিজেকে সাক্ষী করে
রাখতে। টাইটানিক জাহাজটি
যখন বন্দর থেকে ছেড়ে যায় তখন
বন্দরে বিশাল জনসমাগম হয়েছিল
যা অনেক রাজনৈতিক
সমাবেশেও হয় না। অবশেষে এলো
সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সাইরেন
বাজিয়ে ধীরে ধীরে
আটলান্টিকের দিকে এগিয়ে
যেতে থাকলো টাইটানিক।
জাহাজের যাত্রীরা পৃথিবীর
চিন্তা ভুলে পার্থিব ভোগ
বিলাসে মত্ত হয়ে অনিশ্চিত
গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে
থাকলো। নির্ধারিত ৬ দিনের
যাত্রাকে সামনে রেখে সবাই
চলছিল নিয়মমতো আনন্দ মুখরিত
পরিবেশে। এক দিন, দুই দিন, তিন
দিন ভালোই কাটলো জাহাজের
যাত্রীদের।
দুর্ঘটনার দিন দুপুরের ঘটনা:
১৪ই এপ্রিল দুপুর দুইটার দিকে
‘Amerika’ নামের একটি জাহাজ
থেকে রেডিওর মাধ্যমে
টাইটানিক জাহাজকে জানায়
তাদের যাত্রাপথে সামনে বড়
একটি আইসবার্গ রয়েছে। শুধু তাই নয়
পরবর্তীতে ‘Mesaba’ নামের আরও
একটি জাহাজ থেকে এই একই
ধরনের সতর্কবার্তা পাঠানো হয়
টাইটানিকে। এ সময় টাইটানিকের
রেডিও যোগাযোগের দায়িত্বে
ছিলেন জ্যাক পিলিপস ও হ্যারল্ড
ব্রীজ। দু’বারই তাদের দুজনের
কাছে এই সতর্কবার্তাকে
অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। তাই তারা
এই সতর্কবার্তা টাইটানিকের মূল
নিয়ন্ত্রণকেন্দ্রে পাঠান নি।
টাইটানিক দুর্ঘটনার মাত্র ৪০
মিনিট আগে Californian সিপের
রেডিও অপারেটর টাইটানিকের
সাথে যোগাযোগ করে
আইসবার্গটি সম্পর্কে বলতে
চেয়েছিল কিন্তু টাইটানিকের
রেডিও অপারেটর ক্লান্ত জ্যাক
পিলিপস্ রাগান্বিত ভাবে
বলে ‍‍”আমি কেইপ রেসের সাথে
কাজে ব্যস্থ এবং লাইন কেটে
দেয়।” ফলে Californian সিপের
রেডিও অপারেটর তার ওয়ার্লেস
বন্ধ করে ঘুমাতে চলে যায়। বলা
চলে তাদের এই হেয়ালীপনার
কারণেই ডুবেছে টাইটানিক।
দুর্ঘটনায় পড়া:
নিস্তব্দ আটলান্টিকের বুকে
সবেমাত্র প্রবেশ করেছে
টাইটানিক। আটলান্টিকের
তাপমাত্রা তখন শূন্য ডিগ্রীর
কাছাকাছি নেমে যায়। আকাশ
পরিষ্কার থাকলেও আকাশে চাঁদ
দেখা যাচ্ছিল না। টাইটানিক
যখন দুর্ঘটনা স্থলের প্রায়
কাছাকাছি চলে আসে। তখনই
জাহাজের ক্যাপ্টেন সামনে
আইসবার্গ এর সংকেত পান।
আইসবার্গ হল সাগরের বুকে
ভাসতে থাকা বিশাল বিশাল সব
বরফখণ্ড। এগুলোর সবচেয়ে ভয়ংকর
ব্যাপার হলো, এগুলোর মাত্রই আট
ভাগের এক ভাগ পানির উপরে
থাকে। মানে, এর বড়ো অংশটাই
দেখা যায় না। তখন তিনি
জাহাজের গতি সামান্য দক্ষিণ
দিকে ফিরিয়ে নেন। সে সময়
টাইটানিকের পথ পর্যবেক্ষন
কারীরা সরাসরি টাইটানিকের
সামনে সেই আইসবার্গটি দেখতে
পায় কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে
গেছে। টাইটানিকের ফার্স্ট
অফিসার মুর্ডক আকস্মিকভাবে
বামে মোড় নেওয়ার অর্ডার দেন
এবং জাহাজটিকে সম্পূর্ণ
উল্টাদিকে চালনা করতে বা বন্ধ
করে দিতে বলেন। টাইটানিককে
আর বাঁচানো সম্ভব হয় নি। এর
ডানদিক আইসবার্গের সাথে
প্রচন্ড ঘষা খেয়ে চলতে থাকে।
ফলে টাইটানিকের প্রায় ৯০
মিটার অংশ জুড়ে চিড় দেখা
দেয়। টাইটানিক জাহাজটি যেই
স্থানে ডুবেছিল সেই স্থানের
নাম হলো ‘গ্রেট ব্যাংকস অফ
নিউফাউন্ডল্যান্ড’।
টাইটানিক সর্বোচ্চ চারটি
পানিপূর্ণ কম্পার্টমেন্ট নিয়ে
ভেসে থাকতে পারতো। কিন্তু
পানিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল ৫টি
কম্পার্টমেন্ট। অনেকের মধ্যে এই
কম্পার্টমেন্ট নিয়ে কিছুটা খটকা
থাকতে পারে। তাদের উদ্দেশ্যে
বলছি। ধরুন আপনি একটি জাহাজ
তৈরি করেছেন। তার তলদেশ
চারটি ভাগে বিভক্ত। এই চারটি
ভাগের মধ্যে একটি ভাগ দুর্ঘটনায়
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেটি
দিয়ে জাহাজের মধ্যে পানি
প্রবেশ করেছে। এই অবস্থায় আপনি
যদি সেই অংশ বন্ধ করে দেন
তাহলে জাহাজে ঢোকা পানি
শুধুমাত্র এই একটি কম্পাটমেন্টকেই
পানিপূর্ণ করতে পারবে। বাকি
তিনটি কম্পার্টমেন্ট অক্ষত অবস্থায়
জাহাজটিকে ভাসিয়ে রাখবে।
এছাড়া পানি প্রতিরোধ এর জন্য
১২টি গেট ছিল। ভাগ্যের নির্মম
পরিহাসে এমন জায়গায়
জাহাজটির ধাক্কা লাগে যে,
সবগুলো গেটের পানি প্রতিরোধ
বিকল হয়ে যায়। পানির ভারে
আস্তে আস্তে পানিতে তলিয়ে
যেতে থাকে টাইটানিক।
ক্যাপ্টেন স্মিথ সহ জাহাজ
চালনায় দায়িত্তপ্রাপ্ত সবাই
বুঝতে পারে যে, টাইটানিকে
আর বাঁচানও যাবে না। ক্যাপ্টেন
স্মিথ মূল নিয়ন্ত্রন কেন্দ্রে আসেন
এবং জাহাজটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ
করে দেন। রাত ১২ টার পর
লাইফবোটগুলো নামানো শুরু হয়।
প্রত্যেক যাত্রীই আপন প্রান
বাঁচানোর জন্য লাইফ বোটে
উঠতে যায়। কিন্তু লাইফ বোট ছিল
মাত্র ১৬টি। তাই ক্যাপ্টেন
নির্দেশ দিলেন- মহিলা ও
শিশুদের আগে নামতে দিন। আপন
জনকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ছেড়ে
যাওয়ার সেই দৃশ্য ছিল ভয়ংকর।
ভাগ্যের বড়ই নির্মম পরিহাস
টাইটানিকের নিয়ন্ত্রনকেন্দ্র
হতে দূরবর্তী একটি জাহজের আলো
দেখা যাচ্ছিল যার পরিচয় এখনো
রহস্যে ঘেরা। কেউ কেউ বলে
সেটি ছিল Californian আবার কেউ
কেউ বলে সেটি ছিল Sampson ।
টাইটানিক থেকে ওয়ারলেস
মাধ্যমে যোগাযোগে কোন
সাড়া না পেয়ে পরবর্তিতে মর্স
ল্যাম্প এবং শেষে জরুরী রকেট
ছোড়ার মাধ্যমেও জাহাজটির
সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা
হয় কিন্তু জাহাজটি একবারও
সাড়া দেয়নি। এছাড়া
টাইটানিক থেকে সাহায্য চেয়ে
যে বার্তা পাঠানো হয়েছিল
তাতেও সঠিকসময়ে কেউ সাড়া
দিতে পারে নি। কেননা
নিকটবর্তী স্থানে কেউ ছিলো
না। টাইটানিকের সবচেয়ে
নিকটে ছিল ‘দি কারপাথিয়া’
জাহাজটি। তবে তারা যে দূরত্বে
ছিল সেখান থেকে
টাইটানিকের কাছে আসতে সময়
লাগবে ৪ ঘন্টা।
সম্পূর্ণ অংশ তলিয়ে যাওয়া
রাত ২ টা থেকে ২ টা ২০
মিনিটের মধ্যে টাইটানিকের
সম্পূর্ণ অংশ আটলান্তিকের বুকে
তলিয়ে যায়। ডুবে যাওয়ার শেষ
মুহূর্তে জাহাজের বৈদ্যুতিক
সংযোগ বিকল হয়ে যায়। যার
কারণে সেই পরিবেশটি আরও হৃদয়
বিদারক হয়ে ওঠে। টাইটানিক যখন
সমুদ্রের বুকে তলিয়ে যায় ঠিক
তার এক ঘন্টা ৪০ মিনিট পর রাত ৪
টা ১০ মিনিটে সেখানে আসে
‘দি কারপাথিয়া’ নামের একটি
জাহাজ। যারা সমুদ্রের বুকে
ভেসে বেড়াচ্ছিলেন তাদেরকে
উদ্ধার করে সকাল সাড়ে আটটার
দিকে নিউইয়র্কে চলে যায়।
অযৌক্তিক কারণ:
অনেকেরই ধারনা ছিল টাইটানিক
জাহাজে কোন অভিশাপ ছিল। এ
যুক্তি প্রমান করার অন্যতম একটি
কারন হিসেবে তারা
দেখিয়েছিল টাইটানিকের নম্বর
৩৯০৯০৪। পানিতে এর
প্রতিবিম্বের পাশ পরিবর্তন করলে
হয় no pope। এছাড়া
প্রাথমিকভাবে ও সর্বাধিক
মতানুসারে আইসবার্গের সঙ্গে
ধাক্কা লাগার ফলেই এ দুর্ঘটনা
ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু
এর বাইরেও অনেক কাহিনী
প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে
আলোচিত কাহিনীটি জানায়
১৯৯৮ সালের ১৯ অক্টোবরে টাইমস।
সে অনুসারে টাইটানিক
জাহাজে নাকি ছিল মিসরীয় এক
রাজকুমারীর অভিশপ্ত মমি। বলা
হয়, মমির অভিশাপের কারণেই
ভাসমান বরফদ্বীপের সঙ্গে
ধাক্কা খেয়েছিল টাইটানিক।
ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া:
দীর্ঘ ৭৩ বছর পর ১৯৮৫ সালে
যন্ত্রচালিত অনুসন্ধান শুরু করে একদল
বিজ্ঞানী। যেই স্থানটিতে
টাইটানিক জাহাজটি ডুবেছিল
সেই স্থানের ১৩,০০০ মিটার
পানির নিচে সন্ধান পান
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের।
রবার্ট বালার্ড নামক ফরাসি এই
বিজ্ঞানীর ছোটবেলা থেকেই
ইচ্ছে ছিল টাইটানিককে খুঁজে
বের করবেন। বড়ো হয়ে তিনি সেই
কাজেই নামলেন। সন্ধান পেলেও
এর রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয় নি।
কিংবদন্তীর টাইটানিক জাহাজ
ডুবি বিষয়ে ইংরেজ কবি শেলি
তার ওজিম্যানডিয়াস কবিতায় মত
প্রকাশ করেছেন এভাবে – “সমুদ্রের
নীচে বালি, পলি, আর প্রবালের
মৃতদেহের পাশে ছড়িয়ে আছে
বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান ও
প্রকৃতির অহমিকার শেষ চিহ্ন।”
বিতর্ক:
এদিকে টাইটানিক ও অলিম্পিক
এই দুটি জাহাজকে নিয়ে রয়েছে
বিতর্ক। আসলে সেদিন দুর্ঘটনায়
কোন জাহাজটি ডুবেছিল। ১৯৯৯
সালে ৬৪ বছর বয়স্ক আক্সফোর্ডের
“রবিন গার্ডনার” (Robin Gardiner)
তার লেখা বই “Titanic: The Ship that
Never Sank?” এ দাবি করেন যে
টাইটানিক কখনই ডুবে নাই। আর
তার দাবি অনেকটাই মিলে যায়
কথিত টাইটানিক এর বেঁচে
যাওয়া যাত্রীদের দেওয়া
সাক্ষ্যের সাথে। বেঁচে যাওয়া
যাত্রীদের মতে ডুবে যাওয়া
টাইটানিকের লোগো (Logo) ছিল
অন্যরকম। তা কোন মতেই
টাইটানিকের সাথে মিলে না।
রবিন গার্ডনার এর মতে ১৫ই এপ্রিল
১৯১২ সালে যে জাহাজট ডুবেছিল
সেটি ছিল “অলিম্পিক” (Olympic)
নামের আরেকটি জাহাজ।
তাহলে এখানে প্রশ্ন থাকে
তাহলে আসল টাইটানিকের সেই
২২০০ যাত্রী কোথায়? এছাড়া
আরও বিতর্ক রয়েছে যে,
অসাবধানতা বশত নয়, নাবিকের
ভুলের কারণে ডুবেছে
টাইটানিক। গোপন বৈঠকের
সিদ্ধান্ত অনুসারে বিশ্ববাসীর
কাছে আসল ঘটনা চেপে গেছেন
টাইটানিকের সেকেন্ড অফিসার।
এই সেকেন্ড অফিসারের
আত্মীয়ের লেখা এই বইটিতে
তিনি দাবি করেছেন, এতোদিন
পর্যন্ত এটি ফ্যামিলি সিক্রেট
হিসেবেই সবার মাঝে গোপন
ছিল। বিবিসির বরাতে জানা
গেছে, টাইটানিকের সেকেন্ড
অফিসার চার্লস লাইটোলারের
নাতনি ঔপন্যাসিক লুইস প্যাটার্ন
তার নতুন এই বইয়ে জানিয়েছেন,
একজন অফিসার টাইটানিককে
আইসবার্গ বা বরফখন্ড থেকে দূরে
নেয়ার বদলে উল্টো সেদিকেই
মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।
আবার আলোচনায় ফিরে আসা:
টাইটানিকের প্রতি বরাবরই
মানুষের আগ্রহ ছিল।
নির্মাণকালীন শুরু থেকে এখন
পর্যন্ত সারা বিশ্বের মানুষের
আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে
এই টাইটানিক। টাইটানিক
ডোবার পর এর উপর ভিত্তি করে
অনেক প্রতিবেদন ও চলচ্চিত্র
নির্মাণ করা হয়েছিল। সেগুলো
কোনোটিই টাইটানিক
পিপাসুদের পিপাসা নিবারণ
করতে পারেনি। ১৯৯৭ সালে
চলচ্চিত্র পরিচালক জেমস
ক্যামেরুন তৈরি করেন
‘টাইটানিক’ মুভিটি। এই মুভিটি
তৈরি করতে সে সময় খরচ হয়েছিল
২০০ মিলিয়নেরও বেশি টাকা।
অনেকে জেমস ক্যামেরুনকে
বোকা ভেবেছিল। কারণ এতো
টাকা কোনোদিনই তোলা সম্ভব
নয়। কিন্তু যেখানে কালজয়ী
টাইটানিক সেখানে এই টাকা
তো সামান্যই বটে। সমালোচকদের
সেই ভবিষ্যতবাণী মিথ্যা
প্রমাণিত করে জেমস ক্যামেরুনের
সেই ‘টাইটানিক’ মুভিটি আয়
করেছিল প্রায় ১.৮৩৫ বিলিয়ন
(১৮৩৫ মিলিয়ন) ডলার আয় করে
এবং পূর্বের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে
দিয়ে ১১টি অস্কারসহ আরো
অন্যান্য ৭৬টি পুরস্কার জিতে
নেয়।
আসছে নতুন টাইটানিক
২০১৬ সালে আবারও সমুদ্রে
ভাসবে নতুন টাইটানিক। ভেতরে-
বাইরে মূল টাইটানিকের আদলে
তৈরি করা হবে নতুন জাহাজটি।
অস্ট্রেলিয়ার ধনাঢ্য এক ব্যবসায়ী
দ্বিতীয় এ টাইটানিক তৈরির
পরিকল্পনা করেছেন। চীনের এক
জাহাজ নির্মাতা কম্পানির
সঙ্গে এরই মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তিও
হয়েছে তাঁর। অস্ট্রেলিয়ার
কুইন্সল্যান্ডের আবাসন ও কয়লা
ব্যবসায়ী ক্লাইভ পালমার প্রথম
টাইটানিকের মতো একই
চেহারার কিন্তু অত্যাধুনিক
প্রযুক্তির দ্বিতীয় টাইটানিক
তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। নতুন
জাহাজটি তৈরির জন্য ব্লু স্টার
লাইন নামের নতুন একটি জাহাজ
কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন
তিনি। পরিকল্পিত নতুন
জাহাজের নাম রাখা হয়েছে
‘টাইটানিক টু’ বা দ্বিতীয়
টাইটানিক। নতুন এ প্রমোদতরীর
ব্যাপারে মানুষের মধ্যে এতটাই
আগ্রহ তৈরি হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র,
ব্রিটেন, এশিয়া ও দক্ষিণ
আমেরিকা থেকে কয়েক ডজন
লোক দ্বিতীয় টাইটানিকের প্রথম
যাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আগাম
যোগাযোগ শুরু করেছে। ১০ লাখ
ডলারেরও বেশি অর্থ দেওয়ার
প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁদের
কয়েকজন। প্রথমটির মতোই ৯টি তলা
এবং ৮৪০টি কক্ষ রাখা হচ্ছে নতুন
জাহাজে। ডিজেল-চালিত
ইঞ্জিনের ধোঁয়া নির্গমণের জন্য
প্রথমটির মতোই চারটি চিমনি
রাখা হচ্ছে দ্বিতীয়টিতে। তবে
এর ইঞ্জিন হবে আরো আধুনিক।
জাহাজের নিচের অংশেও কিছু
পরিবর্তন থাকছে। পর্যটকদের
আকর্ষণের জন্য একটি প্রদর্শনী কক্ষ
রাখা হচ্ছে। প্রথম টাইটানিকের
মতো দ্বিতীয় টাইটানিক যাতে
কোনো দুর্ঘটনার শিকার না হয়,
তার জন্য চীনের নৌবাহিনীর
একটি বহর এর সঙ্গে থাকবে।
প্রথমটির মতো দ্বিতীয়
টাইটানিকও প্রথম যাত্রায় লন্ডন
থেকে নিউ ইয়র্কে পথে রওনা
দেবে।
collectedt...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪৪

মনু+অ বলেছেন: পর্যবেক্ষন মুলক পোষ্ট ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.