নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বোকা মানুষের কথায় কিই বা আসে যায়

বোকা মানুষ বলতে চায়

আমি একজন বোকা মানব, সবাই বলে আমার মাথায় কোন ঘিলু নাই। আমি কিছু বলতে নিলেই সবাই থামিয়ে দিয়ে বলে, এই গাধা চুপ কর! তাই আমি ব্লগের সাহায্যে কিছু বলতে চাই। সামু পরিবারে আমার রোল নাম্বারঃ ১৩৩৩৮১

বোকা মানুষ বলতে চায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

দত্তপাড়া জমিদার বাড়ীর খোঁজে - ("বাংলার জমিদার বাড়ী" - পর্ব ৯ )

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৫৫





কাল রাতে প্ল্যান চেঞ্জ করলাম, শুক্রবারের ডে-আউট করা হচ্ছে না। সকালবেলা মেহদী ভাই ফোন দিলেন, নয়টা নাগাদ, ‘আপনি কোথায়?’ আমি বললাম, ‘বাসায়’। ওপাশ থেকে উনি অবাক, ‘কেন বিরুলিয়া যান নাই?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘নাহ! শেষ মুহূর্তে কাউকে সঙ্গী করতে না পেরে প্ল্যান বাদ দিলাম’। ওপাশ থেকে উনি বললেন, ‘আপনি কতক্ষণে রেডি হতে পারবেন?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘সাড়ে দশটা নাগাদ’, ব্যাস, সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মোটরবাইকে করে বের হয়ে পড়লাম দু’জনে। আমি মেহেদী ভাইকে বললাম, ভাই, প্রথমে চলেন যাই টঙ্গী, ওখানে একটা জমিদার বাড়ী আছে শুনলাম, দত্তপাড়া জমিদার বাড়ী। চলেন আগে ওখানে যাই। শুরু হল আজকের ‘দত্তপাড়া জমিদার বাড়ী’ অনুসন্ধান।



শুরুতেই ‘স্টার কাবাব’ ধানমণ্ডি-২ এ নান রুটি, সবজি, সল্টেড লাচ্ছি আর চা দিয়ে ভরপেট নাশতা করে নিলাম, কারণ লাঞ্চ কখন করবো জানি না। এরপর মেহদী ভাই ছোটালেন তার পাগলা ঘোড়া, মানে মোটর সাইকেল। মিনিট চল্লিশের মধ্যে পৌঁছলাম টঙ্গীর চেরাগ আলী বাস স্ট্যান্ড। গুগল ম্যাপে দেখেছি এখান থেকে ডানে যে রাস্তা গেছে সেটা দিয়ে এগিয়ে গেলে দত্তপাড়া। দুইজনকে জিজ্ঞাসা করে ঢুকে পড়লাম ঐ রাস্তা দিয়ে, কিছুদূর যাওয়ার পর দত্তপাড়া খুঁজে পেলাম। কিন্তু বিধিবাম। যাকেই জিজ্ঞাসা করি, কেউই কখনো কোন জমিদার বাড়ীর নাম শুনে নাই সেখানে। প্রায় আধ ঘণ্টা ঘুরতে ঘুরতে শেষে এক প্রবীণ ভদ্রলোক চিনতে পারলেন, বললেন ঐটা পাশের এলাকায়, এরশাদ নগর। পথ দেখিয়ে দিলেন, আমরা সেই পথ ধরে এগিয়ে গেলাম। মেহেদী ভাই হেসে বললেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায়ই বোধহয় একটা করে এরশাদ নগর আছে, নিদেনপক্ষে এরশাদ কলোনি’।



যাই হোক চেরাগ আলী বাস স্ট্যান্ড পার হয়ে যে ফুটওভার ব্রিজ আছে তার ডানদিকের রাস্তাটাই এরশাদ নগরের রাস্তা। সেখানে গিয়ে যাকেই বলি, সবাই বলে নাহ এখানে কোন জমিদার বাড়ী নাই। একজন তো মজার কথা বলল, ‘এইখানে সবাই বস্তির মত থাকেতো, তাই বাস কন্ডাক্টাররা মজা কইরা এইটারে দত্তপাড়া জমিদার বাড়ী নামে ডাকে’। আমি হাসবো না কাঁদবো? কিন্তু আমি শিওর এখানে কোন জমিদার বাড়ী ছিল, কেননা গাজীপুর জেলা পরিষদের ওয়েব সাইটে এটার উল্লেখ আছে।



এবার সবাইকে aroaroজিজ্ঞাসা করতে আরম্ভ করলাম, এখানে কোন পুরাতন, আগের দিনের বাড়ী আছে কি না। এভাবে আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করতে একজন বলল, আছে একটা, দোতালা বাড়ী, হাসপাতাল। হাসপাতাল!!! উফ! কি করি, রওনা হলাম হাসপাতালের দিকেই। এবার আর খুঁজে পেতে অসুবিধা হল না, হাসপাতাল বলতে যে কেউই দেখিয়ে দিল পথ। কিন্তু জায়গামত পৌঁছে মাথা খারাপ, একি? ইহা জমিদার বাড়ী? ছিল?



দোতলা ডার্ক পিংক কালারের পলেস্তরা করা একটি স্থাপনা, যার সামনে আবার লোহার বিমের উপর প্লাস্টিকের টিনের ছাউনি। যাই হোক, দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলাম। দুজন কেয়ার টেকারের দেখা পেলাম, ছবি তুলতে মন চাইলো না, কোন স্থাপনার। তাদের সাথে কথা বলতে এগিয়ে গেলাম। কথা বলে বেশী কিছু জানা গেল না। এইটুকু জানতে পারলাম, এই দত্ত সাহেব ছিলেন গাজীপুরের ভাওয়াল রাজার নাতি এবং চৌষট্টি’র রায়টের পর তিনি তার প্রায় দুইশত একর জমিদারী জমি কোন এক মুসলমান ব্যাবসায়ি’র সাথে বিনিময় করে ভারতে চলে যান। বর্তমানে জমিদার বাড়ীটি একটি এনজিও লিজ নিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছে, পাশে একটি প্রাইমারী স্কুল টাইপের ছাউনিও দেখতে পেলাম। তবে ঐ কেয়ারটেকার বললেন, ঐ হাসপাতালের পেছন দিকে একটি দীঘি আছে, ওখানে গেলে স্থানীয় পুরাতন কোন অধিবাসী আরও তথ্য দিতে পারে। এবার সেই দীঘির খোঁজে বের হলাম।

বিশাল বাউন্ডারি দেয়া এলাকার অর্ধেক মাঠ, অর্ধেক একটি দীঘি, দীঘি ঘেঁষে একটি স্কুল বিল্ডিং। দীঘি দেখে মেহেদী ভাই গোসল করতে ইচ্ছা পোষণ করলেন, যে গরম পড়েছে। আমাকে মোটর সাইকেল আর জামা কাপড় পাহারা দিতে রেখে উনি নেমে গেলেন পানিতে। পানি থেকে উঠে এসে আমাকে জানালেন গোসলের ফাঁকে ফাঁকে স্থানীয় একজনের সাথে কথা হল তার। উনার কাছ থেকে কিছু তথ্য নিয়ে এলেন। আগে পুরো এলাকাজুড়ে ছিল দীঘিটি, দীঘির পাড় ঘেঁষে ছিল প্রাচীন সব বৃক্ষসমূহ, যেগুলোর বেধ ছিল খুব বেশী। একটা কড়ই গাছ ছিল যা প্রায় বিঘা’খানেক এলাকা ছায়াময় করে রাখতো। কিছু প্রভাবশালী’র ছত্রছায়ায় সব জমি দখল হয়ে গেছে। শুধু দীঘিটি এখনো সরকারী লিজে আছে।



হায়রে আমার জমিদার বাড়ীর খোঁজ! বুঝতে পারলাম পুরো জনপদটি গড়ে উঠেছে দত্তসাহেবের ফেলে যাওয়া জায়গায় অবৈধ দখলে। কেননা এলাকাটা প্রায় বস্তি এলাকার মত (বস্তি শব্দটি ব্যাবহারের জন্য দুঃখিত), দেখে বোঝা যায় অবৈধ দখল করে যে যার মত আবাস গড়ে তুলেছে। যাই হোক ভগ্ন হৃদয় নিয়ে দীঘির কাছেই এক মসজিদে জুম্মা নামাজ সেরে নিয়ে যাত্রা করলাম বিরুলিয়া’র দিকে।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৩

এহসান সাবির বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ এহসান ভাই।

২| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৬

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম ,

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৩| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:২৮

ফারদীন নিশ্চিন্ত বলেছেন: জমিদারী পোস্ট

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: হু, জমিদারী পোস্ট। পুরো জমিদার বাড়ীর সিরিজ লেখা পড়তে আমার ব্লগের "বাংলার জমিদার বাড়ী" বিভাগ দেখতে পারেন।

৪| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৪

দি সুফি বলেছেন: কিছু প্রভাবশালী’র ছত্রছায়ায় সব জমি দখল হয়ে গেছে।
এটা মুটামুটি পুরো বাংলাদেশেরই চিত্র।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৪

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: জী ভাই, পুরোটা দেখে মন খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

২১ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৮

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ অভি। এই সিরিজের সাথে থাকবেন সবসময় আশা করি।

৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৭

মাদিহা মৌ বলেছেন: আমিও ছবি দেখে অবাক! এটা জমিদার বাড়ি?

বর্ণনা পড়ে কাহিনি বুঝলাম!

২১ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:০১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: আমার অবস্থা চিন্তা করেন, অনেক খুঁজে যখন এই ভবনের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, কি পরিমান ধাক্কা খেয়েছিলাম। :(

অনিচ্ছাকৃত বিলম্ব প্রতিত্তরের জন্য দুঃখিত। বেশ কয়েকমাস ধরে ব্লগে অনুপস্থিত আছি বলে।

ভাল থাকুন সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.