নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন সুখী মানুষ। বেঁচে থাকাকে অনুভব করি। সুখ খুজে পাই নিত্য নতুন জায়গাতে ভ্রমন করতে আমার প্রিয় মটর বাইক নিয়ে। আমার ভ্রমন ব্লগঃ http://www.hassantanvir.wordpress.com

হাসান মাহমুদ তানভির

একপলক নীল আকাশ

হাসান মাহমুদ তানভির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুরে এলাম মেঘের দেশ দার্জিলিং - ১ম পর্ব

০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৮:০৪



ঘুরে এলাম সেই শহরে ঘুরে এলাম - যেখানে বৃষ্টি ও মেয়েদের কোন ভরসা নেই।

সেই শহর পাহাড়ি চুড়ায় ৬৯৮০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত - হিমালয়ের পাদদেশে মেঘের চাদরে আবৃত এক স্বপ্নময় এক শহর। প্রতিবেশী হলো নেপাল, সিকিম ও ভুটান। তাই সংমিশ্রণ বেশ প্রবল।

আমি একটু ভ্রমণ পিয়াসু মানুষ। সুযোগ পেলেই ছুটে যাই দুরে কোথাও। এবারে আমার গন্তব্য ভারতের দার্জিলিং।

ভিসা নেয়াই ছিলো। গত মার্চে যাওয়ার কথা থাকলেও যেতে পারিনি।

কয়েকদিন থেকেই বেশ ঘাটাঘাটি করছিলাম। মোটামুটি পি এইচ ডি মার্কা গবেষণা যাকে বলে। আমি ঠিক করতে পারছিলাম না সান্দাকফু যাবো নাকি দার্জিলিং। পরে ঠিক করে ২ টার খবর নিয়ে যাই - পরে যেখানে সুবিধা হবে কাট মারবো।

ব্রিটিশ-ভারতের রাজধানী যখন কলকাতায়, তখনকার ব্রিটিশগুলা গরমকালটা কাটিয়ে দিতে খুঁজে বের করেছিলো হিমালয়ের কোলে পাহাড়কন্যা দার্জিলিং। অসাধারণ সৌন্দর্যের মেঘের দেশ ।



প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, প্রাচুর্যেভরা আর পশুপাখি, অপরূপ পাহাড়ি অঞ্চল চা বাগান, পুঞ্জীভূত মেঘের কণা ভেদ করে অাঁকাবাঁকা পথের ধারে পুরো দার্জিলিং, অপরূপ সৌন্দর্যের একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক লীলাভূমি- সব কিছুতেই মুগ্ধতা, এ যেন পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ।

সব ঠিক। আগের দিন ট্রেনের টিকেট কেটে ফেলি ঢাকার। ট্রাভেল ট্যাক্স দেই ৫০০ টাকা সোনালি ব্যাংকে। কারন আমি বর্ডারে দেরি করতে চাই না। ব্যাগ গুছিয়ে ফেলি।

১য় দিন
২৯ জুলাই, ২০১৫ - বুধবার

সকাল ৭ টার ট্রেনে চড়ে বসি। ঢাকায় পৌঁছে যাই ২ টার দিকে। আরে বাপ। সেকি জ্যাম। শাহবাগ আসতে আসতে ৬ টা বাজে। আমি বাস থেকে নেমে হেটে ফার্ম গেট যাই। ওখান থেকে রিকশা ধরে কল্যাণপুর। বুড়িমারির বাস ছাড়বে সাড়ে ৮ টায়। ঠিক সময়ে বাসে উঠে পড়ি। হানিফ বাস ছাড়ে ঠিক সময়ে। সময় বাচানোর জন্য এই বাসে উঠে পরে শ্যামলী তে না চড়ে।

২য় দিন
৩০ জুলাই, ২০১৫ - ব্রহস্পতি বার

বাস পৌঁছে যায় বুড়িমারি বর্ডারে সকাল সাড়ে সাতটায়। এ আমার দ্বিতীয় বিদেশ ভ্রমণ। প্রথমবার যাই নেপাল। এখানে আমার নেপাল ভ্রমন কাহিনী দেখতে পারেন। view this link ২য় বার হলেও আমি কিছুটা উত্তেজিত। সপ্নের দার্জিলিং! আর আমার আছে চায়ের নেশা।

তো অবশেষে প্রায় ইন্ডিয়া ঢোকার পথে। বাংলাদেশ বর্ডার এ কার্জক্রম সারতে ১ ঘন্টা লাগলো। দালাল আছে। কিন্তু আমি নিজেই সব কাজ করলাম। আপনি চাইলে যেই বাসে যাবেন সেই বাসের লোক সব করে দেবে - আপনাকে কিছুই করতে হবে না। আমি এক্স পেরিয়েন্স এর জন্য নিজেই করেছি। তেমন ঝামেলার কিছুই নেই। বুড়িমারি ইমিগ্রাশন অফিসে একটা নির্দিস্ট রুম এ গেলাম। ২/৩ জনের লাইন। এটা তো অফ সিজন - তাই অত মানুষ ছিলো না। সিজনের সময় (মার্চ - এপ্ল্রিল বা অক্টবর - ডিসেম্বর) এ অনেক মানুষ হয়। যাই হোক আমার পাসপোর্ট নিয়ে জিজ্ঞসা করলো কি করি, কেনো যাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি ইত্যাদি। পরে প্রাইভেট সার্ভিস শুনে NOC চাইলো। দিলাম।

আপনি অবশ্যই কয়েক কপি ছবি, আপনার পাস পোর্ট এর ভিসা পেজ সহ কয়েক কপি, আর NOC নিয়ে যাবেন।
এখানে একটা বহির্গমন কার্ড দিলো ফিলাপ করার জন্য। করলাম। এরপর আরেক রুম এ গেলাম। ট্রাভেল ট্যাক্স দেয়াই ছিলো। এখানে দিলাম বন্দর ট্যাক্স + ১০০ টাকা। (১০০ টাকা এই সাইডে, ইন্ডিয়ার সাইডেও আরো ১০০ দিতে হবে) এরপর আবার প্রথম রুম এ।



এখান থেকে বের হয়ে সাইন নেয়ার জন্য গেলাম বর্ডারে একটা ছাউনি তে। নিয়ে ফিরলাম। আবার সেই প্রথম রুম। সিল ছাপ্পর মেরে ব্যাস এদিকের কাজ শেষ। নাস্তা করে নিলাম। এবার ১৫০ ফুট দুরেই ইন্ডিয়ার কাস্টমস এ গেলাম। এখানেই পাস পোর্ট জমা নিয়ে জিজ্ঞাসা বাদ করলো।



ফি নিলো ১০০ টাকা। এরপর এক টা রুমে ছবি তুলল। ব্যাগ চেকিং করলো। অবশেষে সব সারতে আরো এক ঘন্টা। এখান থেকে বাংলা টাকা ১০০০ টাকার কম রেখে (১০০০ টাকা লিমিট) বাকি ডলার গুলো ভাঙ্গিয়ে রুপি করে নিলাম। ৬৩ রপি করে পেলাম প্রতি ডলার।



১০ টার দিকে শ্যামলী বাসের ঠিক করা একটি ইন্ডিয়ান এসি বাসে উঠে পড়লাম। এখানে পরিচয় হলো হাসান নামে একটি ছেলের সাথে। সেও একা ঘুরতে যাচ্ছে। ২ জন জোট বেধে ফেললাম।

বাস একটু পরেই ছেড়ে দিলো।



আহ। অবশেষে ইন্ডিয়া। প্রায় দের ঘন্টা পর বাস পৌঁছে গেলো শিলিগুড়ি। ওখানে নেমে এদিক সেদিকে হাটছিলাম। হালকা নাস্তা করলাম। চা খেলাম।



পরে ২ টা ছেলের পরামর্শ মত শিলিগুড়ি জংশন চলে আসলাম। কাছেই। ২০ টাকা রিকশা ভাড়া। এসে টিকেট কাটলাম শেয়ার জিপ এর - এটা নিয়ে যাবে আমাদের দার্জিলিং। ১০ জন হয়ে গেলেই ছেড়ে দিলো।


আর তারপর তো রুপকথার মত গল্প। এত সুন্দর রাস্তা গুলো। কি পরিষ্কার আর ২ পাশ জুড়ে গাছ পালা। বুঝিনি আরো দারুন চমক অপেক্ষা করছিলো। শিলিগুড়ি থেকে আধা ঘন্টা পরেই আমরা দার্জিলিং এর পাহাড়ি পথে প্রবেশ করি - আর একটু পরেই আমাদের মাথা নষ্ট হতে থাকে ভীষণ মস্রিন রাস্তা, রাস্তার পাশে ঝ্রনা আর দুরের দ্রিশ্যাবলি দেখে। ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। এত সুন্দর।


মাঝে মাঝে ছোট ছোট ঝর্না চোখে পড়ছিল। পাহাড়ের গায়ে ছোট ছোট বাড়ি। বাড়ির আঙ্গিনা গুলো ফুলে ভরা। এরা এত ফুল প্রেমী।






দার্জিলিং বাসিরা আসলে গোর্খা জাতি। স্কুলের বাচ্চাদের দেখতে পেলাম। এখানে অনেক স্কলে বাংলাদেশ থেকেও পড়তে আসে। একটা জায়গায় ১০ মিনিট বিরতি দিলো। আমরা খেলাম ভেজ পুরি?, মম, ভাত ইত্যাদি। আবার সপ্নের মত পথ ধরে যাত্রা শুরু।

প্রায় ঘন্টা ২ পরে আমরা পৌঁছে গেলাম। হালকা ঝিরঝির বৃষ্টি শুরু হয়েছে।



জিপ ড্রাইভার আমাদের নিয়ে গেলো একটা হোটেলে। পছন্দ হলে নেবো। দেখে পরে আরো ২ টা হোটেল দেখে উঠে পড়লাম একটাতে। ক্লান্ত ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা ইসলামিয়া হোটেল খুজে বের করলাম। মসজিদের পাশেই হালাল হোটেল। ওখানে নিয়ে গপাগপ কিছু খেয়ে নিলাম। পরে গেলাম মল চত্তর এ বা "ম্যাল" এ।



দার্জিলিং এর একদম মাঝখানে একটা উদ্যান বলা চলে। একপাশে কিছু দোকান। দুরে সারি সারি পাহাড় - এখানে একটা ভিউ পয়েন্ট থেকে কাঞ্ছন জঙ্ঘা নাকি দেখা যায়। ঘন মেঘের ভেলা ঠিক আমাদের পাশে দিয়ে উড়ে যাচ্ছিলো। ২ পাশে বেঞ্চ আছে। প্রচুর মানুষ বসে আসে। এখানে বসলাম কিছুক্ষণ। উপভোগ করলাম এখানের পরিবেশ। সিড়ির ধাপ অনেক গুলো পরে সামনে মঞ্চ মত। ওখানে বড় পর্দায় গান ছাড়া হচ্ছিলো। সব মিলিয়ে দারুন জায়গাটা।




কিছু দোকান ঘুরলাম এখান থেকে। হালকা কেনাকাটা। পরে ফিরে এলাম। ক্লান্ত থাকার কারনে রাত বেশি না জেগে দিলাম ঘুম






দার্জিলিং ভ্রমন - ২য় পর্ব >>


মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:১০

চাঁদগাজী বলেছেন:


রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছি মেঘহীন দেশ আরব থেকে

০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:২১

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: দেশ উন্নত হচ্ছে ভাই :) বরকতের দেশ কিন্তু।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৭

ইমরান আশফাক বলেছেন: ভাল লেগেছে, চালিয়ে যান।

১২ ই আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১০

প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ

১৫ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:০০

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:০১

সুমন কর বলেছেন: চমৎকার ভ্রমণ পোস্ট। প্রিয়তে নিয়ে গেলাম, কাজের সময় ব্যবহার করা যাবে।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১৭

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৫১

তুষার কাব্য বলেছেন: এই বর্ষায় গেলেন ! বৃষ্টি তো খুব ভুগিয়েছে নিশ্চয়ই। আমি এজন্য গরমে যাই । আরাম করে খুব ঘোরা যায় ।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১৬

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: এটা নিয়ে আমার চিন্তা ছিলো। কিন্তু একদম ই বৃষ্টি হয়নি ভাগ্য ক্রমে। লাভের লাভ হল সব খুব কম খরচে পেয়েছি আর ভিড় ভাট্টা থেকেও বেচেছি।

৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: অনুগ্রহ করে ব্যক্তিগত সাইট দেখার লিংকটি সরিয়ে নিন।

১২ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:২৯

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: সরিয়ে দিলাম।

৭| ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪১

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: দারুন ! পুরনো দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেন ! :)

৮| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৪

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৯| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৫:২৬

ক্রেইজি বালক বলেছেন: ভাল লাগলো।

০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ৮:৪৮

হাসান মাহমুদ তানভির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.