নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখনও ঘুম

হন্টক২৮

পড়তে খুবই ভালবাসি :)

হন্টক২৮ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাহসী হও বন্ধু: চার্লি চ্যাপলিন

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৭:০৫

চার্লিকে একবার একজন প্রশ্ন করেছিলেন- আপনার ছবির ছবির হাসি-কান্না দুটোরই সংমিশ্রণ থাকার কারণ কী?



চ্যাপলিন তখন বললেন, ‘আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে রোজ দলে দলে ভেড়া নিয়ে যায় কসাইখানায়। একদিন কেমন করে একটা ভেড়া দলছুট হয়ে রাস্তায় গিয়ে পড়ে। এই না দেখে হৈ চৈ। লোকজন দাঁড়িয়ে গেছে মজা দেখতে। ভেড়ার মালিকেরা চেষ্টা করছে ভেড়াটাকে ধরতে। কিন্তু কিছুতেই ভেড়া ধরা দেবে না। ছুটোছুটি। এই সব কান্ডকারখানা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছিল। অবশেষে ভেড়া ধরা পড়লো। পড়তেই হবে। ভেড়া তো ভেড়াই। মানুষের চালাকি কি তার বোঝার ক্ষমতা আছে!! বোকা ভেড়াটাকে কাঁধে নিয়ে একজন কসাইখানার দিকে চলল। ভেড়ার পরিণতি ভেবে হঠাৎ আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। তাই-তো! একটু আগে যে ভেড়ার ছুটোছুটি দেখে আমি হাসছিলাম, তার পরিণতি এখনই মৃত্যু। আর থাকতে পারলাম না। ছুটে ভেতরে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লাম। মাকে বললাম, মাগো, ওমা ওরা ভেড়াটাকে মেরে ফেলবে।

তিনি একবার জীবন সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘জীবন মানেই দ্বন্দ্বের সমন্বয়। এটা শিখতে আমাকে বই পড়তে হয়নি।

চার্লির চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেছেন প্রায় ৫০ বছরেরও অধিক। সে হিসেবে তাঁকে বলা হয় প্রকৃতির বরপুত্র। বাল্যকাল কেটেছে অত্যন্ত দরিদ্রতার মধ্যে দিয়ে। ফুটপাথে রাত কাটানো এমনকি পচা খাবার কুড়িয়েও খেতে হয়েছে চার্লিকে। বাল্যকালেই বুঝে গেছেন এই পৃথিবী বড় নিষ্ঠুর ও নির্মম। বাল্যকাল থেকেই জীবন যুদ্ধ শুরু করেছেন করেছেন বলেই চার্লি চ্যাপলিন হয়ে উঠেছেন। তিনি একবার জীবন সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘জীবন মানেই দ্বন্দ্বের সমন্বয়। এটা শিখতে আমাকে বই পড়তে হয়নি। ’

চার্লির ছবিগুলো আজও মানুষকে মুগ্ধ করে ফেলে। মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগায়। তেমনই একটি ছবি ‘দি গ্রেট ডিকটেটর’। এটি চ্যাপলিনের সাতাত্তরতম ছবি। ছবিটি তিনি হিটলারকে নিয়ে বানিয়েছেন। এই ছবিটিতে চার্লির দেয়া একটি ভাষণ আছে। ছবিটি প্রদর্শিত হয় ১৯৪০ সালে। কিন্তু ছবির সেই ভাষণটি এখনও বর্তমানের প্রেক্ষিতের সাথে মিশে যায়।



ভাষণটি তাহলে পড়ে ফেলা যাক :



আমি দুঃখিত, আমি সম্রাট হতে চাই না। সম্রাট হওয়ার ব্যবসা আমার না। আমি শাসনও করতে চাই না। আমি দেশ দখলও করতে চাই না। আমি সবাইকে সাহায্য করতে চাই। সে ইহুদী-খ্রীষ্টান, সাদা-কালো যাই হোক না কেন। কিন্তু আমাদের লোভ আমাদের হৃদয়কে বিষাক্ত করে দিয়েছে, পৃথিবীটা ঘৃণায় ছেয়ে গেছে। আমরা যন্ত্রসভ্যতার অভিশাপ চাই না, আমরা চাই মানবিকতা। যন্ত্র আমাদের নির্মম ও কঠোর করে তুলেছে। আমরা অনেক কিছু ভাবি কিন্তু অনুভব করি কম।



অ্যারোপ্লেন কিংবা রেডিও বিশ্ববাসীকে কাছাকাছি এনে দিয়েছে, পৃথিবীকে ছোট করে দিয়েছে। এসব আবিষ্কারের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানবকল্যাণ, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধ, সবার মধ্যে ঐক্যের বন্ধন। এসব আবিষ্কারের ফলেই এ মুহূর্তে আমার কণ্ঠও পৌঁছে যাচ্ছে সারা বিশ্বের লাখ লাখ নারী-পুরুষ, নিপীড়িত মানুষের কাছে। আমার কণ্ঠ যে শুনতে পাচ্ছে- তাকেই বলছি, হাল ছেড়ো না।



মানুষ মানুষে ঘৃণা একদিন দূর হবেই। স্বৈরাচারী শাসকদের মৃত্যু হবেই। জনগণের কাছ থেকে ওরা যে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে সে ক্ষমতা একদিন আবার জনগণ ফেরত পাবে।



হে সৈনিক ভাইয়েরা, তোমরা ওই সব ক্ষমতালোভী শয়তানের ডাকে সাড়া দিও না। ওরা তোমাদের দাস করে রেখেছে, তোমাদের স্বাধীন চিন্তাকে নষ্ট করে তোমাদের বুদ্ধিহীন পশুতে পরিণত করছে। প্রিয় সৈনিকভাইয়েরা, দাসত্বের জন্য যুদ্ধ করো না, যুদ্ধ করো স্বাধীনতার জন্য। আসুন, আমরা গণতন্ত্রের নামে ঐক্যবদ্ধ হই। একটা সুন্দর সুস্থ পৃথিবীর জন্য আমরা একতাবদ্ধ হই। আর এই গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে স্বৈরাচারীরা মানুষকে মিথ্যা কথা বলে ক্ষমতা দখল করেছে। মনে রেখো স্বৈরাচারী শাসক সব সময় নিজেকে মুক্ত রেখে সবাইকে দাসে পরিণত করে। এসো, আমরা যুদ্ধ করি একটি নতুন পৃথিবীর জন্য। যেখানে বিজ্ঞান ও প্রগতি একসঙ্গে বন্ধুর মতো এগিয়ে যাবে এবং পৃথিবী সুখের স্বপ্নের দিকে অগ্রসর হবে।



মনে রেখো, মেঘ একসময় কেটে যায়, সূর্য আলো ছড়ায়। আমরাও তেমনই অন্ধকারের জাল ছিঁড়ে আলোর মুখোমুখি হব। আমরা এক নতুন পৃথিবী গড়ব। আমরা এমন এক সুন্দর উজ্জ্বল পৃথিবী গড়ব, যেখানে মানুষ তার লোভ, নিষ্ঠুরতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে, ছাড়িয়ে যাবে নিজেকে। মানুষ উড়ে যাবে রংধনুর দিকে, আশার আলোর দিকে, উজ্জল ভবিষ্যতের দিকে। এমনই অসীম ক্ষমতাধর আত্মা বিরাজ করে তোমার, আমার, আমাদের সবার মাঝে। তাই হতাশ না হয়ে সাহসী হও বন্ধু।



সংগ্রহীত।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:২৪

বটের ফল বলেছেন: চার্লি চাপলিনকে অনেক ভালো লাগে। তাঁর ছবিগুলো এতবার দেখেছি, তবুও দেখতে মন চায়।

ধন্যবাদ আপনাকে প্রিয় এই মানুষটিকে নিয়ে বলার জন্য।

‘দি গ্রেট ডিকটেটর’ দেখা হয়নি। দেখতে হবে।

২| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

রাজা খায় গাজা বলেছেন: ভাল লাগলো...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.