![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাত নেহাতই কাঁচা তবু লিখতে ভালো লাগে
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ল্যাপটপের মাদারবোর্ড নষ্ট হল । সার্ভিস সেন্টার থেকে বলেছে আরথিং এর কারনে নাকি এমনটা হচ্ছে । ভেবে দেখলাম ভুল বলেনি লোকটা পুরানো বাড়িতে ভাড়া থাকি ইলেকট্রিক কানেকশন সেই মান্ধাতা আমলের , হলে হতেও পারে । তারপর ঠিক করলাম নূতন করেই আরথিং বসাই । যেমন ভাবা তেমন কাজ উঠেপড়ে লাগলাম আরথিং এর পেছনে , লাগার পর খেয়াল হল আরথিং কিভাবে বসায় সে পরেছিলাম কোন সে ছোটবেলায় এখন আর কিছুই মনে নেই । প্রথমে ভেবেছিলাম বাবাকে জিজ্ঞেস করি তারপর ভাবলাম তিনি উলটো আমার পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু করেন তাই সে চিন্তা থেকে বিরত থাকলাম । কি করব ভাবছি তখন মনে হল আমার এক বন্ধু অনেক দিন আগে বাড়িতে আরথিং বসিয়েছিল তাকেই জিজ্ঞেস করিনা কেন , সাথে সাথে ফোন দিলাম । জেনে নিলাম আরথিং এর মুল মন্ত্র । প্রথমে বেশ গভীর একটা গর্ত খুড়ে তার মধ্যে লবন তারপর কয়লা এই ভাবে কয়েক স্তর দিয়ে মাটিচাপা দিতে হবে , তারপর একটা লম্বা লোহার ডাণ্ডা বা রড একদম গর্তের ভেতর অব্দি ঢুকিয়ে দিতে হবে । বেশ খুশি খুশি মনে সেদিন ঘুমাতে গেলাম । পরদিন সকালে ৯টার বেরিয়ে পরলাম মিশন আরথিং এর কাজে । পাশের ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে একটা শাবল জোগাড় করে এনেই ঘরের পাশে খোঁড়াখুড়ি শুরু করেদিলাম । হাত দুই এর মতো খুঁড়ে ফেলেছি , হটাত একটা ভারি কিছুতে শাবলটা যেন ঠকোর খেলো , আরেকবার আঘাত করতেই, ঠাং !!!! ধাতুর তৈরি কিছুতে লেগেছে । প্রচণ্ড উৎসাহের সাথে সাবধানে মাটি সরাতে লাগলাম । সরাতে সরাতে দেখলাম একটা গোল ধাতব জিনিস একটু হলুদ আভা যুক্ত , মন তখন উত্তেজনায় টগবগ করছে মাটি সরানোর পর দেখলাম ঠিক যতটা আশা করেছিলাম ঠিক ততটা বড়ো নয় ঘটির থেকে সামান্য একটু বড়ো । ছোট বড়ো সে যাই হোক ব্যাপার না , ভেতরে কোনও মোহর টোহর আছে কিনা তার জন্য ঘটি টাকে পরিস্কার জায়গায় এনে ভেতরের জিনিস গুলো ঢেলে দেখলাম , কিন্তু ভাগ্য বিরূপ মাটি আর কয়েকটা কয়লার টুকরো ছাড়া আর কিছুই বেরোলনা । উৎসাহটা আগের থেকে অনেক কমে এলো , তবু ভাবলাম মোহর সে নাই বেরোল ঘটিটা তো সোনার হতে পারে । তাই শেষ চেষ্টা হিসেবে ঘটিটা নিয়ে গেলাম মায়ের কাছে , সোনা চেনার ব্যাপারে মেয়েরা কষ্টি পাথরকেও হার মানায় বলে শুনেছি । মা একটু সময় দেখে তারপর হেসে বললেন আরে বোকা এটাতো সোনার না , এটা তো কাঁসার তৈরি ঘটি ! বলে হাসতে লাগলেন । আমার মাথায় তখন যেন বাজ পড়লো , পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যেতে লাগলো, এতক্ষণের পরিশ্রম সব নষ্ট ????? আমি যেন মিইয়ে গেলাম । লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল । মাথাটা কাজ করছিল না , তাই হয়ত গুরুজনরা বলে গেছেন বেশী আশা করোনা পস্তাতে হবে । তারপর কোনোক্রমে আরথিং এর অধ্যায় শেষ করে স্নানে চলে গেলাম , সত্যি বলতে মুখ বাঁচাতে পালিয়ে এলাম । স্নানে বের হচ্ছিলাম এমন সময় পেছন থেকে কে যেন বলল , “ এইটারেই কয় কপালে ঘইট্টা “ ।
©somewhere in net ltd.