![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আর একটু কাল বেঁচেই থাকি .........বেঁচে থাকার আনন্দে ।
আসমানী
জসীম উদ্দীন
আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহিমুদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা-ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
একটুখানি হওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,
তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে।
পেটটি ভরে পায় না খেতে , বুকের ক'খান হাড়,
সাক্ষী দেছে অনাহারে কদিন গেছে তার।
মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ- রাশি
থাপড়েতে নিবিয়ে গেছে দারুণ অভাব আসি।
পরনে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস,
সোনালী তার গার বরণের করছে উপহাস।
ভোমর- কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতক - হাসি,
সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি।
বাঁশীর মত সুরটি গলায় ক্ষয় হল তাই কেঁদে।
হয়নি সুযোগ লয় যে সে-সুর গানের সুরে বেঁধে।
আসমানীদের বাড়ির ধারে পদ্ম -পুকুর ভরে
ব্যাঙের ছানা শ্যাওলা -পানা কিল-বিল-বিল করে।
ম্যালেরিয়ার মশক সেথা বিষ গুলিয়ে জলে ,
সেই জলেতে রান্না খাওয়া আসমানীদের চলে।
পেটটি তাহার দুলছে পিলেয় , নিতুই যে জ্বর তার,
বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি আর।
খোসমানী আর আসমানী যে রয় দুইটি দেশে,
কও তো যাদু ,কারে নেবে অধিক ভালবেসে ?
বি দ্র ঃ ছোট বেলার অবুজ মনের কান্না বিজড়িত স্বরে এ কবিতা মুখস্ত করা । এখনও যখন এ কবিতা গুলো পড়ি মনটা কেঁদে উঠে সেই ছোট বেলার মতও করে ।
©somewhere in net ltd.