![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবারো গুম অতঃপর খুন
নারায়ন গঞ্জে গত কিছুদিন আগে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হল মেধাবী মুখ ত্বকী।
খুবই ব্যাতীত হলাম কারন সে কোন রাজনৈতিক দলের ছিলনা। ছিলনা তার সাথে অরথ-বিত্ত ক্ষমতা নিয়ে কারো সাথে কোন কারাকারিও ছিলনা। তবে এই খুন? বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও টেলিভিশনের সম্পাদকীয় টক শো থেকে জানা গেল যে, তার সাথে খুনী বা গুম কারীদের কোন শত্রুতা ছিল না। শুধু মাত্র ঐ নারায়ানগঞ্জে প্রভাব বিস্তারের ও ত্রাস সৃষ্টি করতে এই হত্যাকাণ্ড। মানুষ মানুষকে হত্যা করতে পারে এই কথাটি ভাবতে গা শিউরে উঠে। এই মাত্র টিভি দেখতে বসে নিচের স্ক্রলে দেখতে পারলাম নারায়নগঞ্জ সিটির কাউন্সিলর নজরুল, তপন, আইনজীবী চন্দন সহ ৬জনকে শরীরের সাথে ৫-৭ টি করে ইট বেঁধে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে হত্যা করা। যেন আমরা সেই আইয়ামে জাহেলিয়া মানে সেই অন্ধকার যুগে বাস করছি। এটি দেখে এখন সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে যে তারাও যেকোন মুহূর্তে গুম বা হত্যা হতে পারে। যা কোন সাধারণ মানুষই কাম্য হতে পারে না। আমরা শিশুকালে স্কুলের বইয়ে পরতাম যে জীব হত্যা মহাপাপ। কিন্তু এই মহাপাপটি আমরা বর্তমানে অহরহ করছি তা হল একমাত্র তাকওয়ার অভাবে। যদি আমরা তাকওয়ার ব্যাপারে সচেতন হতাম তাহলে আমরা কখনো এই অপকর্মে লিপ্ত হতাম না। নিচে একটি তাকওয়ার বিশ্লেষন দিলাম একটু কষ্ট করে পড়ে জানুন।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) কতৃক এক রাখালের তাকওয়া একদা আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) মদীনায় উপকন্ঠে বের হলেন। তখন তার সাথে তার কিছু সাথীরাও ছিল। সাথীরা খাবারের জন্য দস্তরখানা বিছাল, তখনই ঐদিক দিয়ে এক রাখাল ওতিক্রম করছিল। ইবনে উমর (রাঃ) তাকে বললেন, হে রাখাল! এসো আমাদের সাথে বসে তুমিও কিছু খাও ও পান কর। রাখাল বলল, আমি রোজাদার। ইবনে উমর (রাঃ) বললেন এমন প্রচন্ড গরমের দিনে তুমি রোযা রাখলে। যখন আবহাওয়া অত্যন্ত গরম এবং এ পাহাড়ে তুমি বকরী চড়াচ্ছিল। রাখাল বলল, হ্যাঁ আমি ঐ শূন্য দিনের প্রস্তুতি নিচ্ছি যখন আমল করার সুযোগ থাকবেনা। তাই আমল করে নিচ্ছি।
ইবনে উমর (রাঃ) রাখালের আল্লাহ ভীতি পরীক্ষা করার জন্য তাকে বললেন, তুমি তোমার এই বকরীর পাল থেকে একটা বকরী বিক্রি করবে? আমরা নগদ মূল্যে তা কিনব এবং তোমার ইফতারের জন্য এখান থেকেও গোশতও দিব। রাখাল এ বকরীর পালতো আমার নয়, যে আমি তা থেকে বিক্রি করব। বরং তা আমার মালিকের তাই আমি এইখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবনা। হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) বললেন, তোমার মালিক যদি কোন বকরী কম পাই তাহলে বলবে একটি বকরী হারিয়ে গেছে। তখন সে (বকরী মালিক) কোন কিছু বলবেনা। কেননা পাল থেকে পাহাড়ে দুই-একটি বকরী হারিয়ে থাকে। এই কথা শোনা মাত্র রাখাল হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) এর নিকট থেকে বের হয়ে গেল, এবং স্বীয় আঙ্গুল আকাশের দিকে উঠিয়ে বলল, আল্লাহ কোথায়? যখন রাখাল চলে গেল তখন হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) এই বাক্যটি বারবার বলতে লাগলেন। আল্লাহ কোথায়? আল্লাহ কোথায়? আল্লাহ কোথায়? হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) মদিনায় ফিরত আসলেন। তখন রাখালের মালিকের নিকট নিজের লোক পাঠিয়ে তার কাছ থেকে ঐ বকরীর পাল সহ রাখাল্কে কিনিয়ে নিলেন। আর তাকে (রাখালকে) মুক্ত করে দিয়ে বকরীর পাল তাকে দান করলেন। ( সুনানে বায়হাকি হাদিসঃ ৫২৯১) উসুদুল গাবাহ হাদিসঃ ৩০৮৬।
নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত সে যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়াবান (সূরা আল হুজুরাত-১৩)
সম্মানিত পাঠক সমাজ আজ আমরা একের হক আরেকজন ভোগ করছি, চুরি-রাহাজানি-ডাকাতি-খুন করছি। এইগুলো সব আমাদের তাকওয়ার অভাবে। আসুন আমরা এই হাদিস থেকে তাকওয়ার শিক্ষা গ্রহন করি। দেখবেন এই সমাজটি আসলে বদলে যাবে। আর আমরা সাধারণ মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠ বিচার কামনা করছি। নয়তো একটি কথা মনে রাখবেন পরকালে আপনি সরকারকে আসল ঐ সরকার আল্লাহ পাক জিজ্ঞাসা করবেন আমিতো তোমাকে একটি দেশের প্রতিনিধি/ প্রধান করে নিয়োগ করেছি তুমি তোমার দেশের মানুষকে কিভাবে পরিচালিত করেছিলে? সেইদিন যদি জবাব দিতে না পারেন তবে আপনাকেও রাষ্ট্র প্রধান হিসাবে ছাড় দেওয়া হবে না। জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে অনন্তকাল, যে কালের শুরু আছে নেই কোন শেষ।
©somewhere in net ltd.