নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

[email protected]

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

জেমসবন্ড

।জ্ঞানের প্রতি বিপুল আগ্রহ । সংগ্রাম মুখর আমার জীবন ।

জেমসবন্ড › বিস্তারিত পোস্টঃ

চেপে রাখা ভারতবর্ষের ইতিহাস !! - ১

১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১০:৫৪

আমাদের দেশে বিকৃত ইতিহাস পরিবেশনের জন্য ইংরেজদের দোষ দেওয়া হলেও তাঁদের কূটনৈতিক জ্ঞান ও সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারার কথা অস্বীকার করা যায় না । তাঁরা বুঝেছিলেন, ইতিহাসে ভেজাল দিয়েই ভারতবাসীকে অন্ধকারে রাখা সম্ভব, এবং এই ইতিহাসের মাধ্যমেই হিন্দু-মুসলমানের বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে । সেই উদ্দেশ্যে ইতিহাস-স্রষ্টা মুসলিম জাতির অক্লান্ত পরিশ্রমের রচনা-সম্ভার আরবী, ফারসী ও উর্দু ইতিহাস বইগুলোর প্রায় প্রত্যেকটি অধ্যয়ন, গবেষণা ও অনুবাদ করতে তাঁরা যে অধ্যবসায় ও পরিশ্রমশীলতার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা অনস্বীকার্য এবং উল্লেখযোগ্য ।



উদাহরণ হিসেবে কয়েকটা উল্লেখ করা হলোঃ



১. আবুল ফজলের আকবর নামার তৃতীয় খন্ডের অনুবাদ করেছেন মিঃ হেনরী বেভারীজ ।

২. আইন-ই-আকবরীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ডের অনুবাদ করেছেন মিঃ এইচ এস জারেট এবং প্রথম খন্ড অনুবাদ করেছেন মিঃ এইচ ব্লকম্যান ।

৩. আল-বেরুনীর কিতাবুল হিন্দ অনুবাদ করেছেন মিঃ ই.সি সাচান ।

৪. মুসলিম মহিলা ঐতিহাসিক গুলবদন বেগম লিখিত হুমায়ুন নামার ইংরেজী অনুবাদ করেছেন মিসেস বেভারিজ ।

৫. জনাব মির্জা হায়দারের লেখা রশীদীর ইংরেজী করেছেন মিঃ ই.ডি রস ।

৬. পর্যটক ইবেনে বতুতার পর্যটনের কাহিনী লিখিত গ্রন্হের ইংরেজী অনুবাদ করেছেন মিঃ এইচ. এ. আর. গিবন

- প্রভৃতি । খুব অল্প কয়েকটি নাম উল্লেখ করা হলো ।



মূল তথ্যের সঙ্গে কোন কায়দায় কোন ভেজাল কিভাবে সংমিশ্রণ করতে হয় এ বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনুবাদকগণ নিপূণ শিল্পীর পরিচয় দিয়েছেন । কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো- মূল গ্রন্হের ভাষা আরবী, উর্দু, ফারসী না জানার জন্য ইংরেজীতে অনূদিত বিভিন্ন পুস্তকের সহায়তা নিয়েই এবং শুধু সেগুলোকে কেন্দ্র করেই ভারতের অধিকাংশ সরকারী ইতিহাস রচিত হয়েছে বা হচ্ছে ।



এ প্রসঙ্গে ভারতের ইতিহাসের দিকপাল শ্রীমতি রোমিলা থাপার বলেনঃ

'স্কুল কলেজের পাঠ্য ইতিহাসের বই সত্যিই সেকেলে এবং অজস্র ভূল তত্ত্ব ও তথ্যে ভরা । কিন্তু পাঠ্যপুস্তকের অনুমোদন সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার কিংবা শিক্ষা পর্ষদের এখতিয়ার । অথচ ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইতিহাসের লোক নন- হয় আমলা, নয় রাজনীতিবিদ; যাঁরা কখনও ইতিহাস পড়েন নি অথবা ৬০/৭০ বছর আগেকার দু একটা বই নামোঃ নামোঃ করে পড়েছেন । রাজনীতিবিদদের ইতিহাস-চেতনার কথা আর নাই বললাম ; ইতিহাসের মধ্যে নিজের দল, গোষ্ঠীর বা সম্প্রদায়ের স্বার্থ খোঁজাই এদের কাজ ।"



মনীষী রবীন্দ্রনাথ বলেছেনঃ "ভারতবর্ষের যে ইতিহাস আমরা পড়ি এবং মুখস্হ করিয়া পরীক্ষা দেই, তাহা ভারতবর্ষের ইতিহাসের এক দুঃস্বপ্নের কাহিনীমাত্র ।"



সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, আমাদের দেশের প্রচলিত ইতিহাসকে সর্বাংশে সঠিক বলে মনে করা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছু নয় ।



ভারতবর্ষের ক্যানসারের মত সবচেয়ে বড় ব্যাধি হলো সাম্প্রদায়িকতা । আর এই সাম্প্রদায়িকতার তিক্ততা অন্যান্য সম্প্রদায়ের চেয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বেশি প্রকট । এটাকে নির্মূল করতে হলে, আমাদের ধারণায়, সর্বাগ্রে সঠিক ইতিহাস পরিবেশন অবশ্য কর্তব্য । তাছাড়া এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক জানাজানির , আদান-প্রদানেরও বিশেষ প্রয়োজন আছে ।



তবে সঠিক ইতিহাস পরিবেশনের পূর্বাহ্নে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার উচ্ছেদ সাধনে ইসলাম , কুরআন ও মুসলমান সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়া আবশ্যক ।



ইসলাম, কুরআন ও মুসলমানঃ



আদি মানব হযরত আদম (আঃ) ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক । এই ইসলাম একটি ধর্ম ও ইজম -এর নাম । যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই ইসলাম আরো পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত হয়ে পরিপূর্ণতা লাভ করে হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) এর সময় । তাঁর ৫৭০ খ্রীষ্টাব্দে বিশ্বাগমন এবং ৬৩২ খ্রীষ্টাব্দে হয় পরলোকগমন । কুরআন হলো মহানবী (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব, যা আজো বিশুদ্ধ ও অবিকৃত রয়েছে । আর শেষ নবীর বাণী, কাজ এবং সমর্থিত মতামতগুলো হাদীসের মধ্যে গণ্য । যারা কুরআন ও হাদীসের উপর বিশ্বাস রাখেন তারাই মুসলমান ।



পরিতাপের বিষয়, নানা পুস্তক, প্রবন্ধ, নাটক প্রভৃতির মাধ্যমে ভারত জনমানসে দেখানো হয়েছে এই মুসলমান জাতি বিদেশী, বাকি সব স্বদেশী; অতএব তারা আমাদের মিত্র নয় । সারা ভারতবাসীই যে এ চক্রান্তের শিকার হয়েছে তা অবশ্যই নয় । সর্ষের মত একটি বটের বীজের মধ্যে লুকিয়ে থাকে যেমন বিশাল বপু বৃহৎ একটি বট গাছ, তেমনি এই ভেদটুকুর ভেতর লুকিয়ে আছে বিরাট অকল্যাণ । এর সংক্ষেপ সমাধান হচ্ছে , মুসলমান স্বদেশী না বিদেশী এই নিয়ে বিষমন্হন না করে মনে রাখা ভালো, ভারতে মুসলমান আগমন এবং আর্য আগমন অভিন্নভাবে বিচার্য ।



(চলবে )



সূত্রঃ-চেপে রাখা ইতিহাস, গোলাম আহমদ মোর্তজা । মদীনা পাবলিকেশন্স ।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-২

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১০:৫৮

দিগন্ত বলেছেন: আগের দিনে মানুষ অনেক বেশী সাম্প্রদায়িক ছিল এটা আমরা চেপে রাখি :)

১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১১:০৩

জেমসবন্ড বলেছেন:

.......সত্য কথা । এখনও কম নয় । তবে সেটা দূর করা আগের থেকে সহজ ।

২| ১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১১:০৫

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: এখনকার যুগে কি আর চেপে রাখা সম্ভব ? তবে এসব ইতিহাস না জানার পেছনে অন্যকে দোষ না দিয়ে নিজের দিকে তাকানোই ভালো। আমাদের মধ্যে জ্ঞান চর্চ প্রায় নাই বলা চলে।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত স্থান হল পাঠাগারগুলো। সদস্য সংখ্যা যেমন কম তেমনি বইয়ের সংখ্যাও কম। মানুষের জ্ঞানচর্চা করার অভ্যস সৃষ্টি না হলে সে তো পিছিয়ে থাকবেই।

১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১১:০৮

জেমসবন্ড বলেছেন:

..........মূল সত্যটা চেপে আছে ভাষা না জানার কারণে । আরবী থেকে কয়জনে অনুবাদ করেন । বরং ইংরেজীটা সহজ বিধায় তা থেকে নিয়ে নেয় কিন্তু এটা যে ভেজাল তা খেয়াল করা হয় না বা হলেও তেমন মূল্য দেয়া হয় না ।

৩| ১৩ ই মে, ২০০৯ সকাল ১১:৪৬

রাগিব বলেছেন: :) এ নিয়ে উইকিতে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী ট্রোলদের সাথে যুদ্ধ করেছি এক সময়ে ... রোমিলা থাপার আবার ওসব ট্রোলদের দু চোখের বিষ।

মজার ব্যাপার হলো, মোগল বাদশাহেরা যে হারে স্থানীয় রাজকন্যাদের বিয়ে করেছে, তাতে করে বংশ পরম্পরায় শেষের দিকের মোগল বাদশারা জেনেটিকভাবেও প্রায় পুরোই স্থানীয়দের মতো হয়ে গিয়েছিলো। আওরঙ্গজেব আর শিবাজীর মধ্যে রক্তের পার্থক্য সামান্যই।

আর বাংলাদেশের কথা আর বলার কিছুই নেই, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই জেনেটিকভাবে একই রকমের, ধর্ম নির্বিশেষে। আর্য কিংবা আরব সংমিশ্রণ কমই ঘটেছে, অনেকে তাদের পূর্ব পুরুষ আরব থেকে এসেছে বলে দাবী করলেও অধিকাংশ বাঙালিই কয়েক হাজার বছর ধরে এই বঙ্গে বাস করে আসা জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি।

হিন্দুত্ববাদীদের আরেকটা দাবী হলো, আর্যরা নাকি বাইরে থেকে ভারতবর্ষে আসেনি, সেটা তারা অস্বীকার করে। অন্যান্য ইতিহাসবিদের মতে আর্যরা ককেশাস কিংবা ইউক্রেনের কাছের এক জায়গা থেকে ঘোড়া/গরু পালনের সংস্কৃতি নিয়ে সেই হাজার তিনেক বছর আগে আস্তে আস্তে ইরান, মধ্য এশিয়া এসব হয়ে ভারত বর্ষে আসে। স্থানীয় দ্রাবিড়দের মেরে হটিয়ে দেয়, দ্রাবিড়দের স্থান হয় কেবল দক্ষিণ ভারতে। মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনীটাতে রূপকের মাধ্যমে অনেক কিছু জানা যায়, খেয়াল করবেন ওখানে কিন্তু ম্লেচ্ছ, রাক্ষস, এসব বলা হয়েছে, স্থানীয় দ্রাবিড় বংশীয়দের কিংবা আদিবাসীদের সাথে মিলে যায়। রামায়ণের রাবণের বর্ণনা তো একেবারে দক্ষিণ ভারতীয় বা সিংহলীদের চেহারার সাথে মেলে। কাজেই আর্যদের আগমনের সাথে সাথে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ, তাদের পরাজয় এসব ঘটতে থাকে। এই কথাটাই হিন্দুত্ববাদীদের অপছন্দ -- তারা দাবী করে আর্যরা উলটা দিকে অর্থাৎ ভারত থেকে ইউরোপে গেছে। :)

১৩ ই মে, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৩

জেমসবন্ড বলেছেন:

....হুমম, আপনার সুন্দর মন্তেব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

৪| ১৩ ই মে, ২০০৯ দুপুর ১:৩০

নূহান বলেছেন: আপনার লিংক বিভাগে ছাগুরামের লিংক রাখার জন্য মাইনাস :)

৫| ১৩ ই মে, ২০০৯ দুপুর ১:৫২

খািল িপডাইেত ইচ্ছা করে বলেছেন:
আদি মানব হযরত আদম (আঃ) ছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক ।
কুরআন হলো মহানবী (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব, যা আজো বিশুদ্ধ ও অবিকৃত রয়েছে ।

maInas.

৬| ২৫ শে মে, ২০০৯ দুপুর ১:৪২

হিটলারের সাগরেদ বলেছেন: চালিয়ে যান

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.