নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ সত্য বাকী সব মিথ্যা

মোঃ শওকত হোসেন বিপু

আমি মনের আনন্দে লিখি তাতে কেহ খুশি হতে পারে আবার নাও হতে পারেন তাতে এই অধমের কিছু আসে যায়না।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষ, মানবিকতা, মহানুভবতা, উদারতা এগুলো সমার্থক শব্দ, বিপরীত শব্দ নয়।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

সকল ধর্মের উদ্দেশ্য হলো মানুষের ভিতর লুকিয়ে থাকা বা জেগে ওঠা অন্যায়, অভিচার, পাপ থেকে রক্ষা করে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট নিজেকে সমর্পন করা বা তাঁর নির্দেশিত পথে চলে পরবর্তী জীবনে সফলকাম হওয়া। সাথে সাথে মানুষের নিজেদের ভিতর লুকিয়ে থাকা প্রভুত্বকে বিসর্জন দিয়ে এক প্রভুর বা সৃষ্টিকর্তার প্রভুত্ব মেনে নেয়া বা স্বীকার করা এবং তদানুযায়ী অন্য মানুষের ক্ষতি-সাধন না করে নিজের কাজকর্ম করা। আমি যতটুকু বুঝি বা মেনে চলার চেষ্টা করি - এটাই ইসলাম ধর্মের মূলকথা।

ইসলাম ধর্মের বিশ্নাসীদের আর একটা বড় বৈশিষ্ট্য হলো - এই ধর্মের মানুষেরা যেটা বিশ্বাস করে সেটা পালন করার চেষ্টা করে তাতে যদি তার জীবন বিপন্নও হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মুসলমানরা নির্যাতিত, নিপীড়িত, লাঞ্জিত কিন্তু যেখানে যে পরিস্থিতি হোক না কেন তারা চেষ্টা করে সেখানে টিকে থাকতে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা আজকের বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠি হিসেবে পরিচিত। একই ভাষা বা সংস্কৃতি এবং চেহারার সাদৃশ্য থাকা সত্বেও একমাত্র ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী বলে এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে মিয়ানমার সরকার তাদের দেশের নাগরিক হিসেবে গ্রহন করেনা। পত্র-পত্রিকায় বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্যাতনের যে ছবি দেখি বা শুনি তা বিশ্বাস করাই খুব কঠিন এবং বেদনাদায়ক। অথচ এই অসভ্য দেশের, না কোন রাজনৈতিক দল বা না কোন মানবাধিকার সংস্থা এই ব্যাপারে কোন জোরালো প্রতিবাদ করে বা নিদেনপক্ষে বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়।

এখন সবার কাছে আমার প্রশ্ন- বাংলাদেশে আমরা যারা শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারী হিসেবে মুসলমান তারা মিয়ানমারের জনগনের মতো অসভ্য হবো???, নাকি ইসলামের আসল শিক্ষা শুধু মুখে না বলে অন্তরে তা ধারন করবো এবং বাস্তবেও তার প্রতিফলন ঘটাবো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে??

ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসিরনগর উপজেলার রসুরাজ দাস (৩০) নামক এক হিন্দু যুবকের সামাজিক যোগাযোগ পেইজে পবিত্র মক্কা শরীফ নিয়ে একটি আপত্তিকর ছবি পোস্ট নিয়ে ব্রাহ্মনবাড়ীয়ার নাসিরনগর, সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রায় ১৫টি মন্দির ও শতাধিক হিন্দু বাড়ীঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারনে দুই ধরনের ছবিই আমি দেখতে পেয়েছি গতকাল। আমার দৃষ্টিতে দুইটাই অপরাধ, কোনটা কম বা কোনটা বেশী। কারো ধর্ম বিশ্বাসে অাঘাত করা যেমন অন্যায় ঠিক তেমনি এটার উপর ভিত্তি করে কোন সম্প্রদায়ের উপর প্রতিশোধ নেয়া বা নেয়ার ইচ্ছা করাটাও অন্যায়।

আমার ধর্ম বিশ্বাস বা আবেগের জায়গায় কেহ যদি আঘাত করে, তাহলে আমি কি তার পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন বা একই ধর্মের বা জাতের সবার উপর আক্রমন করি বা ধ্বংসের উন্মাদনায় মাতবো? আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব, প্রয়োজনে মিছিল-মিটিং করবো, গ্রেফতারের দাবী জানাব এবং দেশের আইন অনুযায়ী বিচার চাইব। আবার এর প্রতি উত্তরে পুলিশ অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজার লোকের নামে মামলা দেয়ার কারনে যদি সাধারন মানুষ হয়রানির স্বীকার হতে হয়, এটাও কোন মতে সমর্থনযোগ্য নয়।

বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বলে এখানে বিভিন্ন ধর্ম বা সংস্কৃতির লোকজন পাশাপাশি দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছে এবং আমাদের ঐতিহ্যই হচ্ছে পারস্পরিক সহমর্মিতার সাথে বসবাস করা। এক একজনের ধর্ম বিশ্বাস এক একরকম হতে পারে কিন্তু আমরা যখন ক্রিকেট খেলার আনন্দ বা কোন কনসার্টের আনন্দ বা কোন উৎসবের আনন্দ উদযাপন করি বা উপভোগ করি তখন আমরা সবাই এক, এক আমাদের দেশ, নাম তার বাংলাদেশ। আর ইসলাম ধর্ম শুধু এই দেশেই নয় বরং সারাবিশ্বে প্রসারিত হয়েছে এর উদার মানবিকতা আর মানুষে মানুষে কোন ব্যবধান নাই -এই সাম্যের মহাবানীর কারনে।

মনে রাখবেন আজ যার মসজিদ বা মন্দির ভাঙ্গছেন সে ভিন কোন দেশের লোক না, সে আপনারই ভাই বা আপনারই প্রতিবেশী। তার সাথে কথায়, চেতনায়, বিশ্বাসে, দর্শনে ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু মনের উপর যে আঘাত করছেন তা সহজে পূরন হবার নয়। আর কোন ধর্মই কাউকে আঘাত করে বা কারো উপসানালয় ধ্বংস করে এগুতে পারেনা, ইসলাম ধর্ম তো নয়ই। কারন কাউকে কষ্ট দিয়ে হয়ত সাময়িক নিজের পশুত্বের উল্লাসই প্রকাশিত হয় কিন্তু মানবতা বা মহানুভবতার পরাজয়ই ঘটে। আসুন আমরা সবাই যেন ইসলামের মূল শিক্ষা নিজে গ্রহন করতে পারি আর সে অনুযায়ী শান্তির সুবাতাস চারদিকে ছড়িয়ে দিতে পারি। সবাইকে ধন্যবাদ।

মোঃ শওকত হোসেন বিপু
৩১.১০.২০১৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.