![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[ইটালিক] পাঠকের উপর আস্থা শতভাগ। ফুলে সুরভি থাকলে কদরদানের অভাব হয় না, ভ্রমর আপনিই ছুটে আসবে!!! নিজেকে আবিষ্কারের চেষ্টা করছি। আমার ভিতরকার আমিটাকে জাগ্রত করার নিরন্তর প্রয়াস চালাচ্ছি। আর বদলে দেওয়ার স্বপ্ন দেখে চলছি প্রতিনিয়ত।[/ইটালিক] [link|http://www.somewhereinblog.net/avropathikblog| Af
সুখ। খুব ছোট একটি শব্দ কিন্তু বিস্তার মারাত্মক। আমরা আজ সুখে আছি এই কথা যেন বলতেই ভুলে গেছি। আমাদের সুখের ঘর জুড়ে প্রতিনিয়ত অসুখের বসতি। সবখানে একই হাহাকার সেই সুখ আর নাইরে ভাই। আসলে কোন সুখ কখনো থাকে না। সুখ যে ক্ষণস্থায়ী সে তো আমরা সবাই জানি। কিন্তু আমাদের জীবনে সুখের চেয়ে দু:খের উপস্থিতিটা অনেক বেশি বলেই আমাদের এতো হা পিত্যেস। অথচ ভাবতে অবাক লাগে এরপরও আমরা এই প্রিয় দেশটাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশে বলে পরিচিত করতে পেরেছি। এর কারণ কি? এর কারণ আমাদের দেশের মানুষের চাহিদা কম। মুষ্টিমেয় কিছু লোক ছাড়া বাকিরা অল্পতেই সন্তুষ্ট- মানসিকতা সম্পন্ন। তবে সে দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে চলেছে। সেও খুব স্বাভাবিক। পরিবর্তনই জীবনের ধর্ম। অনেক বাজে প্যাচাল হলো। এবার মূল গল্পটা বলি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে এসে হঠাৎ মনে হলো মেস জীবনটা কেমন একটু উপভোগ করা দরকার। ব্যাস অমনি বাসায় সাত-সতের বুঝিয়ে রাজি করিয়ে ফেললাম। ছয় বন্ধু মিলে চার রুমের এক বাসা ভাড়া করলাম। শুরু হলো নতুন জীবন। এই সময়টার প্রতিটি দিনই আমার কাছে বৈচিত্র্যময় এবং এখনো অনন্য মনে হয়। সে সময়ের একটা ছোট ঘটনা বলাই এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্যে। আমার একটা সমস্যা হলো মানিব্যাগে ভাংতি পয়সা থাকাটা আমার কাছে একরকম উৎপাত মনে হয়। ব্যাগ খুললাম দেখা গেলো একটা কয়েন গড়াতে শুরু করলো। অনেক সময় গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ে যায় ম্যানহোলে আবার কখনো কোন রূপসীর (রূপসী বলেই ধরে নিচ্ছি, নাহলে আপনারা ইন্টারেস্ট হারাবেন) পায়ের কাছে গিয়ে। দেখুন তো কি বিপত্তি। যদি পাঁচ টাকার কয়েন ম্যানহোলে পড়ে মেজাজ কেমন বেখাপ্পা হয়ে যায় বলুন! আর কোন মহিলার পায়ের কাছ থেকে কয়েন কুড়ানো কম ঝক্কি নয়, মহিলা কি না কি ভেবে বসেন . . . .। সে যাক। এই ভাংতি পয়সার জ্বালা থেকে বাঁচার জন্য আমি বাসায় ফিরেই সেগুলো ডেস্কে জমা রাখতাম। কিন্তু কয়েকদিন পরে ডেস্ক যথেষ্ঠ ভরাট হয়ে উঠলো আর আমার জিনিসপত্র খুঁজতে দারুন বেগ পেতে হলো। তাই সেগুলো অন্য কোথাও সরানো জরুরী মনে হলো। আমার মেসের আরেক ফ্রেন্ড বাবু , ওর একটা মাটির ব্যাঙ্ক ছিলো। আমি ভাংতি পয়সাগুলো নিয়ে সব ওর মাটির ব্যাঙ্কে ঢুকিয়ে দিলাম। সে সময় রুমে ছিলো আরেক ফ্রেন্ড আতিক। সে আমাকে বললো, এতোগুলো পয়সা ওখানে রাখার মানে হয় না। বাবুর দরকার হলে ওগুলো দিয়ে 'বাংলা' খাবে। আমাদের ছয়জনের মধ্যে একমাত্র বাবুর পানাভ্যাস (বাকিদের কেউ সিগারেট অব্দি খেতো না) ছিলো। মাঝে মাঝে পুরো সপ্তাহ সে হাওয়া হয়ে যেতো। খুব বিচিত্র স্বভাব হলেও অসম্ভব উদার ছিলো সে। অন্যের কষ্টে নিজের সব দিয়ে দিতে পারে এমন। তো আমি আতিককে বললাম, যায় যদি যাবে, আমার কোন দাবী নেই। আমি ভাংতি পয়সার উৎপাত থেকে মুক্তি চাই। এরপর থেকে সব ভাংতি পয়সা আমি বাবুর মাটির ব্যাঙ্কেই ফেলে রাখতাম।
অনেক দিন পরের কথা। একদিন বাসায় ফিরে বাবুর রুমে যাই। উদ্দেশ্যে ভাংতি পয়সা ব্যাঙ্কে ফেলা। কিন্তু ব্যাঙ্ক নেই। বাবু শুয়েছিলো। তাকে জিজ্ঞেস করলাম ব্যাঙ্ক কোথায়? সে বললো ভেঙ্গে ফেলেছি। কারণ জিজ্ঞেস করে জানলাম, সে তার এক বন্ধুকে দেখে হাসপাতাল থেকে ফিরছিলো। আসার সময় দেখে বাইরে মেঝেতে এক বয়স্ক মহিলা লাশ নিয়ে কান্নাকাটি করছে। বাড়িতে নিয়ে যাওয়া আর দাফন করার টাকা নাই তার কাছে। প্রায় হাজারখানেক টাকা লাগবে। বাবু বাসায় এসে ব্যাঙ্ক ভেঙ্গে টাকাগুলো বের করে। বাকি বন্ধুরাও নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে এক হাজার টাকা পুরো করে। সেই টাকা দিয়ে ভদ্রমহিলাকে লাশ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়ে এসেছে সে। আমার তখন কি যে ভালো লাগছিল ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছিলো বন্ধু তোদের জন্য আমার গর্ব হয়, ভীষণ গর্ব হয় রে। সাথে একটা কষ্টও ছিলো। আমি যদি সেসময় থাকতাম তবে কিছু টাকা দিতে পারতাম। আমার বিড়ম্বনা মনে হওয়া সেই ভাংতি পয়সাগুলো আমাকে সেদিন উপহার দিয়েছিলো এক অনির্বচনীয় সুখ যার আনন্দময় স্মৃতি আমি আজো রোমন্থন করি। আমি আরো জানলাম যেখানে প্রত্যাশা নেই সেখানেই লুকিয়ে থাকে মধুর প্রাপ্তির সম্ভাবনা।
২| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ ভোর ৫:৫৩
অতিথি বলেছেন: প্রত্যাশা না থাকার আরেক নাম হলো: An Attitude of Surrender... এবং সেটা যে মনে প্রশান্তি (শান্তির উঁচু স্তরটা) এনে দেয়, তাতে কোন সন্দেহ নাই। মধুর প্রাপ্তি ঘটেই। সম্ভাবনা নয়।
সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ।
৩| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ ভোর ৫:৫৮
অতিথি বলেছেন: লেখা পড়লাম। ভালোই লেগেছে। আপনার লেখা গুলোতো ভালো হচ্ছে। চালিয়ে যান........................................................আমি আছি
৪| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ ভোর ৬:০০
কালপুরুষ বলেছেন: পৃথিবীতে কোন কিছুই তুচ্ছ নয়। একটা পিঁপড়াও সময়ে অনেক বড় অবদান রাখতে পারে। আবার একটা ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়া মানুষের জীবনও কেড়ে নিতে পারে ।
৫| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ সকাল ৭:২৪
অতিথি বলেছেন: চমৎকার! শিক্ষণীয়।
৬| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ সকাল ৮:৩৬
অতিথি বলেছেন: অনেকদিন পর দেশের ভাংতি পয়সাগুলো দেখলাম।
এক ধরনের সাহায্য হিসেবেই আসে এগুলো আমার জীবনেও, গত মাসের শেষে স্যান্ডউইচ খাবো কিন্তু ব্যাগ খালি। ফিরেই চলছিলাম বাসার দিকে, হঠাৎ ইচ্ছে হলো মানিব্যাগটা নেড়ে চেড়ে দেখি। বাহ! বেরিয়ে এলো আমার অজানা থেকেই পঞ্চাশ রিয়ালের নোট ।
দারুন শিক্ষণীয় ঝরা পাতা।
৭| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ সকাল ৮:৪১
হযবরল বলেছেন: ভাল লাগল ঝর ঝর করে ঝরে গেলাম স্মৃতির আয়নায়।
৮| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ সকাল ৯:০২
অতিথি বলেছেন: খুব ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ,দারুণ লেখাটার জন্য
৯| ২৭ শে জুলাই, ২০০৬ সকাল ১১:৫৯
ঝরা পাতা বলেছেন: আস্তমেয়ে,
কয়েকদিন ধরে আমার লেখার প্রথম মন্তব্যটা আপনার দেখতে পাচ্ছি। সম্ভবত, আমি যখন লেখা পোস্ট করে ঘুমোতে যাই তখন আপনি ব্লগে আসেন। লেখাটা ভালো লাগলো বলে ধন্যবাদ।
সাদিক ভাই,
আজ কি আপনি প্রথম এলেন গরীবের ঘরে? খুব খুশি হলাম আমার প্রিয় একজন মানুষকে আঙিনায় দেখে।
সাকিব,
আমি লেখার চেষ্টা করি। নিজের স্বপ্ন, কষ্ট, অভিজ্ঞতা অন্যের সাথে শেয়ার করতে চাই। তাতে কারো যদি এতটুকু ভালো লাগে সেটাই সবচে বড় প্রাপ্তি।
কালের পুরুষ,
আপনার মতো সুন্দর করে যদি আমিও বলতে পারতাম। বড় বেশি সাধ হয়।
জলিল ভাই,
আমিও ওই ঘটনা থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম।
ফজলে এলাহি ভাই,
ধন্যবাদ আপনাকে। একটু সময়ের জন্য হলেও মানিব্যাগটা নাড়াচড়া করাতে পারলাম।
হযু ভাই,
ছোট ছোট সুখ প্রাপ্তির খাতায় গড়ে তোলে বিশাল সম্ভার।
স্পন্দন,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো লাগার কিছু মুহুর্ত এনে দিতে পেরেছি বলে আমারো ভালো লাগছে খুব।
১০| ১১ ই আগস্ট, ২০০৬ বিকাল ৪:০২
অতিথি বলেছেন: খুব ভালো লাগলো..লেখার টাইটেল দেখে আক্বরষ্ট হইছিলাম-আপনি নিরাশ করেন নাই..
১১| ২৩ শে আগস্ট, ২০০৬ দুপুর ১:০০
ঝরা পাতা বলেছেন: চামেলী ভাই,
ভালো লাগার জন্য কৃতজ্ঞতা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে জুলাই, ২০০৬ ভোর ৪:০৭
অতিথি বলেছেন: যেখানে প্রত্যাশা নেই সেখানেই থাকে মধুর প্রাপ্তির সম্ভাবনা... মুখস্ত হয়ে গেছে লাইনটা। খুব ভাল লাগা নিয়ে কয়েকবার পড়েছি তাই