নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাখীবন্ধন......

৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:১৩

রাখীবন্ধন......



রাখি বন্ধন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি উৎসব, তবে সর্বভারতীয় উৎসব নয়। ভারতের স্থানভেদে বিভিন্ন ধরনের রাখি উৎসব পালন করা হয়। বাংলাদেশে এবং প্রতিবেশী পশ্চিম বংগে অর্ধশতক আগেও 'ভাইফোঁটা' উৎসব নামে সমধিক পরিচিত থাকলেও এখন বড়ো সমারোহে রাখীবন্ধন উৎসব পালন করে। এই রক্ষাবন্ধন প্রতি বছর শ্রাবন মাসের পূর্ণিমার দিন পালন করা হয়। বোনেরা তাদের ভাইদের হাতে পবিত্র সূতা বেঁধে দেয় যা ‘নিরাপত্তা ও রক্ষাবন্ধন’ চিহ্ন। তারা তাদের ভাইদের মঙ্গল কামনা করে এবং ভাইয়েরা বোনদের রক্ষার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। ঐ দিন পরিবারের সকলে একত্রে মিলিত হয়, বিশেষ খাবার দাবার ও উপহার বিনিময় করা হয়। এই বিশেষ দিনে “যম” তত্ত্ব থেকে ভাইয়ের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রাখি বন্ধনের ফলে দূর হয়ে যায়।

মহাভারতে রাখি বন্ধনের নেপথ্যের ইতিহাসঃ
*************************************
সুভদ্রা কৃষ্ণের ছোট বোন, কৃষ্ণ সুভদ্রাকে অত্যন্ত ভালবাসতেন। তবে আপন বোন না হয়েও দ্রৌপদী ছিলেন কৃষ্ণের অতীব স্নেহভাজন। একদিন সুভদ্রা কিছুটা অভিমান ভরে কৃষ্ণকে প্রশ্ন করলেন এর কারন। উত্তরে কৃষ্ণ বললেন যথা সময়ে এর কারন তুমি বুঝতে পারবে।
একদিন শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে রক্ত পড়ছিল, তা দেখে সুভদ্রা রক্ত বন্ধের জন্য কাপড় খুঁজছিলেন, কিন্তু সাধারন কাপড় পাচ্ছিলেন না। এমন সময় দ্রৌপদী এসে রক্তাক্ত ভাইকে দেখামাত্র নিজের মুল্যবান রেশম শাড়ি ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাত বেধে দিলেন। রক্তপাত বন্ধ হল। তখন শ্রীকৃষ্ণ বোন সুভদ্রাকে বললেন- এখন বুঝতে পেরেছ কেন আমি দ্রৌপদীকে এত স্নেহ করি? সুভদ্রা বুঝতে পারল ভক্তি ও পবিত্র ভালবাসা, শ্রদ্ধা কি জিনিস! দাদা কৃষ্ণের চেয়ে মুল্যবান বস্ত্র নিজের কাছে বেশি প্রিয় এটা ভেবে সুভদ্রা দারুন লজ্জিত হলেন। কোন বোন তার ভাইয়ের কোনোরূপ কষ্ট, অমঙ্গল সহ্য করতে পারে না। ভাইয়ের কষ্ট দুরের জন্য সে সর্বত্তম চেষ্টা করে। অন্যদিকে ভাই ও তার বোনকে পৃথিবীতে সর্বাধিক স্নেহ করে, সারাজীবন তাকে রক্ষা করে, যেরকম শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রাজসভায় চরম কলঙ্ক থেকে রক্ষা করেছিলেন।

ইতিহাসে রাখীবন্ধন এবং .......
**************************
"বাহাদুর শাহ্ আসছে ধেয়ে
করতে চিতোর জয়
চিতোর রাণী কর্ণাবতীর
তাই জেগেছে ভয়
রাজপুতানা আতংকে টলমল
অনেক ভেবে হুমায়ূনের ঠাঁই লিখল রাণী লিপি সে একখানা
আজ হতে বীর তুমি হলে আমার রাখী ভাই
শীঘ্র এসে বাঁচাও বোনের প্রাণ"। 'রাখী ভাই'- কবি গোলাম মোস্তফা। আমাদের ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে এই কবিতাটা ছিল।
ষোড়শ শতকের গল্প।
সম্রাট বাবরের অকস্মাৎ মৃত্যুর পর পুত্র হুমায়ুন দিল্লির সিংহাসনে। হুমায়ুনের তখনও কৈশোর পেরোয়নি। ফলে দিল্লির তখতে টালমাটাল অবস্থা। অন্যদিকে মেবারের রাজা রানা প্রতাপ সিংহের মৃত্যুর সুযোগ নিয়ে গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহ মেবার রাজ্যের চিতোর দুর্গ আক্রমণ করলেন। চিতোর রানী কর্ণাবতী ছিলেন রাণা প্রতাপের দাদী। তিনি মোগল বাদশা হুমায়ুনকে ভাই ডেকে একটা রাখি পাঠিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি যেন তার রাজপুত বোনকে রক্ষা করেন।
এই রাখির সূত্রেই হুমায়ুন রানীকে বোন জেনেছেন।
হুমায়ুন তখন বাচ্চা ছেলে, এসব হিন্দু- মুসলিম, রাজপুত- মোগল বুঝতেন না। বাহাদুর শাহের হাত থেকে এই বোনকে বাঁচাতে সম্রাট হুমায়ুন চিতোরের দুর্গ রক্ষা করতে ছুটে গিয়েছিলেন।
কিন্তু ‘বড় দেরী করে ফেলেছেন ভাই!’
মোগল সৈন্যরা পৌঁছানোর আগেই বাহাদুর শাহ্‌ চিতোরের দুর্গ দখল করে নেয়। রাজপুত রানী সম্ভ্রম রক্ষার জন্য তার সঙ্গের প্রায় পাঁচ হাজার নারীদের নিয়ে বারুদ ভর্তি ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে জহরব্রত (আত্মাহুতি) দিয়েছিলেন। ইতিহাসবিদদের মতে এটা চিতোর গড়ের দ্বিতীয় জহরব্রত।

হুমায়ুনের সৈন্যরা সম্রাটের এই বোনকে রক্ষা করতে পারেনি বটে, কিন্তু বাহাদুর শাহ্‌কে পরাজিত করেছিল ঠিকই।
২০০২ সনে চিতোর বেড়াতে গিয়ে গাইডের মুখে শুনেছিলাম- রাণী পদ্মাবতী ও তের হাজার রাজপুত রমণী ১৩০৫ সালে প্রথম জহরব্রতর ঘটনা ঘটেছিলো। যখন আলাউদ্দিন খিলজী চিতোর আক্রমণ করেছিলেন পদ্মিনীর প্রেমে পড়ে। পদ্মিনী রাজস্থানী বীরগাথার রূপক, যিনি শেষ পর্যন্ত প্রিয় দেবতার কাছে আগুনে বিলীন হয়ে আধুনিক রাজপুত মননকে মধ্যযুগীয় আবেশে রাখার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে ফেলেন। বস্তুত রাজপুতদের কপালই মন্দ! ইতিহাস স্বাক্ষী, একটাও যুদ্ধ জেতেনি, শুধু সাহস বীরত্ব দেশপ্রেম এসবের লম্বা চওড়া গল্প আছে আর সেগুলোকেই উপজীব্য করে কয়েক হাজার বছর ধরে চালিয়ে আসছে।
ভারতের হিন্দু, শিখ, জৈন এরা সবাই এই উৎসব পালন করে। তবে বাঙালীর না আছে পদ্মিনী না কর্ণাবতী, তবুও রাখী নিয়ে পশ্চিম বংগে আদিখ্যেতার কমতি নেই!

বাংলাদেশেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অনেকেই ভাইফোঁটা থেকে কয়েক বছর যাবত রাখীবন্ধন উজ্জ্বাপণ করে। আমার বাল্যবন্ধু দেবুদের বাড়িতে বেশ ঘটা করেই এই অনুষ্ঠান পালন করে। আমার প্রতিবেশী একটি পরিবারও এই উৎসব ঘরোয়া ভাবে পালন করে। এই দুই পরিবার থেকে আমার বাসায় রাখীর সাথে মিষ্টি সহ অনেক মুখরোচক খাবার পাঠায়।

কৃত্রিমতা, যান্ত্রিকতার এই বর্তমান যুগে ভাই বোনের মাঝে ভালবাসা ও শ্রদ্ধার বড় অভাব। সেখানে সনাতন ধর্মে বড় বোন/দিদিকে মাতৃস্থানীয় এবং বড় ভাইকে পিতৃস্থানীয় সম্মান ও ভালবাসা দেয়ার কথা বলা আছে- যা আনুষ্ঠানিকতা হলেও বিষয়টা আমার ভালো লাগে।

(কিছু তথ্য নিয়েছি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'রাজ কাহিনী' উপন্যাস থেকে)

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভাইকে দিলাম ভাই ফোঁটা
যমের দুয়ারে পড়লো কাঁটা
এই কাব্য পড়তে পড়তে সিনেমায় দেখি রাখি বান্দে আর ফোঁটা দেয়

৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:৩২

জুল ভার্ন বলেছেন: ফলাফল যা ই হোক, রাখীবন্ধন আমার কাছে অত্যন্ত মর্যাদাবান মনে হয়।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৩৯

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:

কোথাকার জল কোথায় গড়ায়......................এখন ইতিহাস খোজ করেনা কেউ, উৎসবটাই বড় করে দেখে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৩০

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ। আমরা এখন পড়াশোনার মধ্যে নাই!

৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: খুবই সুন্দর একটা পোষ্ট দিয়েছেন।
কবিতার চেয়ে এরকম পোষ্ট বেশি ভালো লাগে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৪:৩২

জুল ভার্ন বলেছেন: যতই সুন্দর হোক ব্যক্তিগত যোগাযোগ না থাকলে পোস্টে লাইক কমেন্ট নাই!

৪| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:৫৭

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: গল্প উপন্যাস পত্র পত্রিকার মাধ্যমে এ উৎসবের সাথে পরিচয়। সরাসরি আমাদের এলাকায় দেখিনি।

০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১১

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আমাদের মাঝে ভাই বোনের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় সম্পদের ভাগাভাগা নিয়ে।হিন্দুদের এই সমস্যা নেই কারন হিন্দু নারীরা পিতার সম্পদের কোন অংশই পায় না,এটা দুঃখ জনক।
রাজপুতরা বার বার চেষ্টা করেছে এটা প্রসংশনীয়।

০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৩

জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের মাঝে ভাই বোনের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায় সম্পদের ভাগাভাগা নিয়- কথাটা সত্য।

তবে সদ্য হাইকোর্টের রায়ে হিন্দু কণ্যা সন্তানও উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির মালিক হবেন- বলেই রায় দিয়েছে।

৬| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৩৪

পুকু বলেছেন: at@নুরুলইসলা০৬০৪।নেটওয়াক্‌ আপডেট করেন।টুজিতেই পড়ে আছেন।ফোরজি তে আপডেট করেন।কোনো কিছু পুরো না জেনে কমেন্ট না করাই ভাল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.