নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
জ্যাক মা উইকি.........
চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট আলীবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা'র প্রথম জীবনে কেএফসির ওয়েটারের চাকুরী না হাওয়ার গল্পটা হয়ত অনেকেই জানেন। কেএফসি রেস্টুরেন্টে সেবার ওয়েটার নেওয়ার জন্যে ২৪ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ২৩ জনেরই চাকুরী হয়েছে, শুধু বাদ পড়লেন জ্যাক মা। শুধু কেএফসির ওয়েটারের চাকুরীই নয়, জ্যাক মা'র এমন আরো ৩১টি খুব সাধারণ চাকুরীর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়। পরবর্তী জীবনে এ গল্প বহুবার করেছেন তিনি।
তবে খুব ছোট বেলা থেকেই তাঁর ইংরেজি ভাষার প্রতি আগ্রহ ছিল। নিজের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা ঝালাই করার জন্য বিদেশী পর্যটকদের গাইডও হয়েছেন বিনে পয়সায়। পরে ইংরেজি ভাষায় এই আগ্রহ ও শিক্ষার কারণেই শেষ পর্যন্ত ইংরেজি শিক্ষক হবার সুযোগ পান জ্যাক মা, যদিও তখন তাঁর মাসিক বেতন ছিল মাত্র ১২ ডলার। পরবর্তীতে এই ইংরেজি শিক্ষকের চাকুরীর সুবাদেই আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ হয়ে যায় তাঁর।
আমেরিকা গিয়ে জ্যাক মা দেখলেন সেখানে ইন্টারনেট নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। কৌতুহলবশত "বিয়ার" লিখে সার্চ দিয়ে নিজ দেশ চীনের কোন সাইট না দেখে খুব অবাক হলেন। শুধু বিয়ারই নয়, ইন্টারনেটে চীনের কোন সাইটই পেলেন না জ্যাক মা। তিনি বুঝতে পারলেন পশ্চিম বিশ্বের এই ইন্টারনেট জগতে চীনের যেন কোন নিজস্ব অস্তিত্বই নেই। দেশে এসেই জ্যাক মা যেন তেন একটি ওয়েব সাইট তৈরি করালেন, যেখানে চীন সম্পর্কিত নানা তথ্য পাওয়া যেত।
সাইটটি তিনি লাউঞ্চ করলেন সকাল ৯.৪০ মিনিটে, ঠিক সেদিনই মাত্র তিন ঘন্টার কম সময়ের মধ্যে এক ইনভেস্টর থেকে ইমেইল পেলেন, যিনি নতুন এই উদ্যোগ সম্পর্কে আরও জানাতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
জ্যাক মা'র তখন বোঝার বাকী রইল না, ইন্টারনেট কী অপার সম্ভাবনা নিয়ে আসছে। পরবর্তীতে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৯৯ সালে শুরু করেন ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠান আলীবাবা।
সাধারণত দু'জন কিংবা তিনজন সহ প্রতিষ্ঠাতা দিয়ে নতুন প্রযুক্তি ষ্টার্টাপ শুরু হয়, জ্যাক মা শুরু করলেন ১৭ জন নিয়ে, যাদের কেউ কেউ একসময়ের বন্ধু, সহকর্মী কিংবা ছাত্র। নিজের এক বেড রুমের এপার্টমেন্টে জ্যাক মা একদিন জড় করলেন সেই ১৭ জনকে।
জ্যাক মা তাদের বললেন, তাদের নতুন এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য শুধু চীনে প্রতিযোগিতা করা নয়, বরং বিশ্বব্যাপী বড় আকারে ব্যবসা করা। আমেরিকানরা হার্ডওয়্যারে এগিয়ে আছে, তবে সফটওয়্যারে চীন থেকেও তারা বড় কিছু করতে পারে প্রযুক্তি বিশ্বে। কারণ এরজন্য দরকার মেধা ও দক্ষতা, যেটা তাদের আছে। আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো তাঁরাও কঠিন পরিশ্রম আর মেধা দিয়েই এগিয়ে যেতে পারবেন।
এক অক্ষর প্রোগ্রামিং না জানা জ্যাক মার কথায় এমন কিছু ছিল যেটার কারণে সেদিনের সেই ছোট একটি কক্ষেই বড় বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন সেই ১৭ জন। নিজেদের শ্রম ও সামর্থ অনুযায়ী অর্থ বিনিয়োগ করে ঝাঁপিয়ে পড়লেন প্রতিষ্ঠানটির কাজে, যেটি খুব অল্প সময়েই প্রতিষ্ঠানটির ভিত্তি দাঁড় করিয়ে দেয়।
শুধু সেই ১৭ জন সহ প্রতিষ্ঠাতাই নয়, জ্যাক মা'র ওপর আস্থা ছিল প্রতিষ্ঠানটির পরবর্তীকালের অন্যান্য সদস্য ও কর্মীদেরও।
জুডি টং ছিলেন আলীবাবার শুরুর দিকের একজন কর্মী। বড় কোন জটিল কাজ নয়, তার দায়িত্ব ছিল ফ্রন্ট ডেস্ক রিসেপশনিস্টের।
প্রতিষ্ঠানের শুরুর দিকে খুব বেশী বেতন দেওয়ার সুযোগ থাকেনা বলে জ্যাক মা আলীবাবা কোম্পানির শেয়ারের অতি ক্ষুদ্র অংশের শেয়ার দেন রিসেপশনিস্ট জুডিকে। আর বলেন, অন্য কোথাও না গিয়ে ঠিক ঠাক মতো কাজ করতে। কোন একদিন আলীবাবার শেয়ার পাবলিক হলে জুডিকে দেয়া আলীবাবা কোম্পানির সেই ০.০২ শতাংশের শেয়ারের দামও কয়েকশ' মিলিয়ন ডলারে ঠেকবে।
জ্যাক মা'র কথা শুনে জুডি দিন গুনতে থাকে। কল্পনায় শুধু বিভোরই থাকেন না, কাজেও মন দেন, লেগে থাকেন নিজের সাধ্যমতো, আলীবাবা প্রতিষ্ঠানটি একদিন বড় মাপের সফল হবে এই আশায়। এর মাঝে কোম্পানী হিসেবে আলীবাবা নানা চড়াই উৎরাইয়ের ভেতর যেতে থাকে।
মাঝে মাঝেই জ্যাক মা'কে দেখলে রিসেপশনিস্ট জুডি জিজ্ঞেস করেন আলীবাবার শেয়ার কবে স্টক মার্কেটে উঠবে।
মৃদু হেসে জ্যাক মা আশ্বাস দেন, সুদিনের আর বেশী বাকী নেই, জুডিকে কাজ করে যেতে বলেন।
অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হয়। প্রতিষ্ঠানে জুডির যোগ দেওয়ার প্রায় দশ বছর পর ২০১৪ সালে আলীবাবা নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে পাবলিক হয়, প্রতিষ্ঠানের সব শেয়ারের মূল্যমান দাঁড়ায় ২৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপর।
কিছুদিনের ভেতর জুডির শেয়ার দাম ছাড়িয়ে যায় ৩২০ মিলিয়ন ডলার। আর এক সময়ের রিসেপশনিস্ট জুডি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের কারণে পদন্নোতি পেয়ে হয়ে ওঠেন আলীবাবার ভাইস প্রেসিডেন্ট।
আলীবাবার সেই ১৭ জন কো-ফাউন্ডার প্রত্যেকেই বিলিয়নিয়ার ক্লাবে যোগ দেন, যাদের বেশীর ভাগই এখনো প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে কাজ করে যাচ্ছেন। গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুকের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানপগুলোর প্রতিষ্ঠাতাদের মতো জ্যাক মা'র প্রোগ্রামিং বা অন্য কোন প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট দক্ষতা ছিল না।
তবে শুধু বড় আকারের দক্ষতা বা মেধার তকমা নয়, জ্যাক মা'র সাফল্য প্রমাণ করে, মানুষের পথ চলাতে সাথের মানুষদের বিশ্বাস ও আস্থাও তৈরী করতে পারে শূন্য থেকে আকাশ ছোঁওয়ার গল্প। আর সেটা তখনই সম্ভব যখন নিজের ওপর আস্থা থাকে, আর সাথে থাকে ইতিবাচক মানসিকতার কিছু মানুষ।
(জ্যাক মা উইকিপিডিয়া থেকে আমার ভাবানুবাদ)
০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে ওনাদের হাসি কান্না, ইমোশন, এক্সপ্রেশণ সবই অভিনয়! ওনারা যাকিছু করেন তা দেখে আমরা মুগ্ধ হই, বিব্রত হই, হাসি-কাঁদি, এর সব কিছুতেই ওনাদের প্রচার প্রসারিত হয়।
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। এ এক অনন্য, উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
পোস্ট পড়ে অনুপ্রাণিত হ'লাম।
০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ভাই।
৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: জ্বলন্ত উদাহরন।
০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫০
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
লেখা চমৎকার হয়েছে।
ওয়েটার শব্দটি প্রথম প্যারায় দুইবার ওয়াটার লেখা হয়েছে।
০১ লা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ বানান ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য। টাইপ করার সময় ল্যাপীতে অটোমেটিক যে শব্দগুলো চলে আসে-সেগুলো চেক করে দেখা হয়নি বলেই এমন বানান বিভ্রাট।
৫| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪৪
মিরোরডডল বলেছেন:
টেকনিক্যাল প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা না থাকলেও নিঃসন্দেহে অনেক মেধাবী ।
সাথে সেলফ কনফিডেন্স, পারিপার্শ্বিক সাপোর্ট , অভিজ্ঞ টিম, হার্ডওয়ার্ক সবকিছু মিলিয়েই এই প্রাপ্তি ।
চমৎকার এই সাফল্যের স্টোরিটা শেয়ার করার জন্য থ্যাংকস ।
০১ লা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: মেধা, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং লক্ষ্যস্থীর থাকলে সাফল্য আসবেই।
পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
৬| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: একজন গ্রেট ম্যান।
০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: রাইট।
৭| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১১
শেরজা তপন বলেছেন: চমৎকার- অনুপ্রাণিত হলাম
০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:৪৩
অগ্নিবেশ বলেছেন: বিশ্বাসীদের জন্য আল্লার ইচ্ছাই সব। ইহ জগতের এই সব অর্জন টর্জন কি শেষ বিচারে কোনো কাজে লাগবে?? জাহান্নামীদের কাছ থেকে অনুপ্রান পাওয়ার কিছুই নেই।
০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
ধন্যবাদ।
৯| ০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:১৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ইচ্ছা যদি দৃড় হয় এবং সেই সাথে যোগ হয় পরিশ্রম তবেই সফলতার দেখা পাওয়া যায়।আমাদের অনেকেরই ইচ্ছা আছে কিন্তু সেটা দৃড় না।আমারটাতো একে বারেই না।তা না হলে দুই লাইন লিখতে আধা ঘন্টা লাগে।
০২ রা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: আসলে সব মানুষের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা আছে, কিন্তু কেউ প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগের অভাবে কিছুই করতে পারেনা। তাছাড়া ভাগ্যও সবার সহায় হয়না।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৩
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
কিছুদিন আগে দেখলাম, জ্যাক মা ও ইলনের বিতর্কে জ্যাক মা বাচ্চাদের মত" লজিক ব্যবহার করেছে ; যা ইলনের এক্সপ্রেশনে ভালোমতই ফুটে উঠেছিলো।