নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
আমাদের বৃহত্তর যৌথ পরিবারে প্রায় সবাই দাবা খেলার ভক্ত। পরিবারের অনেকেই দাবা খেলায় স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্লাবে সুনাম করেছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে আমিও দাবায় ভালো করেছিলাম স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। আমাদের নাতনী সারাহ'র বয়স এখন পাঁচ বছর প্লাস। ইদানীং সেও দাবা খেলা শিখতে চায়। অবসরপ্রাপ্ত আমিও সারাহকে দাবা খেলার তালিম দিচ্ছিঃ
দাবা খেলার নিয়ম কানুন ও সূত্রঃ
প্রথমেই বলে নেই- দাবা হচ্ছে ভালো মানুষদের খেলা। আপনার মাথায় যদি দুষ্ট বুদ্ধি থাকে বা আপনার মন যদি অশান্ত থাকে তাহলে আপনি দাবাড়ু হতে পারবেন না। অর্থাৎ দাবায় ভালো করতে হলে সবার আগে দরকার একটি প্রশান্ত আত্মা। দাবা খেলার প্রথম সূত্রটা হচ্ছে আপনাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে।
দাবা এমন একটি খেলা যার জন্মের ইতিহাসের সাথে আমাদের এই বঙ্গ দেশের নাম জড়িয়ে আছে। দাবার আদি নাম হচ্ছে চতুরঙ্গ। যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে ঘোড়া। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদে চতুরঙ্গ নামক খেলার উল্লেখ পাওয়া যায়। চর্যাপদের রচনাকাল বিবেচনায়, পৃথিবীর কোথাও এর আগে দাবা বা চতুরঙ্গ খেলার উল্লেখ পাওয়া যায় না। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায় আমাদের এই বাংলা ভাষাভাষি অঞ্চলেই দাবা খেলার জন্ম হয়েছে।
১৭৫৭ সালের পলাশির যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের মধ্য দিয়ে আমাদের এই অঞ্চলে ইংরেজ শাসনের সূচনা ঘটে। তখনকার সময় অঞ্চলভেদে দাবার নিয়মকানুনে কিছুটা পার্থক্য ছিল। ইংরেজদের মাধ্যমে দাবার নিয়ম কানুনে কিছু পরিবর্তন ঘটে। দাবার পরিমার্জিত এই সংস্করণটি ইংরেজদের মাধ্যমে ইউরোপসহ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। উপরোক্ত কারণে দাবার আন্তর্জাতিক নিয়মের সাথে আমাদের ভারতীয় দাবার নিয়মে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।
দাবা খেলার সর্বোচ্চ সংস্থা ফিদের (FIDE) নির্ধারন করে দেওয়া নিয়ম কানুনগুলোকে আমি আন্তর্জাতিক নিয়ম হিসেবে এখানে উল্লেখ করব। আপনি একজন শিক্ষানবিশ হলে এবং দাবার প্রচলিত নিয়মগুলো আপনার জানা থাকলেও এই লেখাটি আপনার পড়া উচিত হবে। কারণ এখানে এমন অনেক আন্তর্জাতিক নিয়মের উল্লেখ করা হয়েছে যা প্রচলিত দাবায় নেই।
দাবার বোর্ডঃ
দাবা খেলার বোর্ডে মোট ৬৪ টি ঘর থাকে। ৮ টি সারি এবং ৮ টি কলাম মিলে ৮*৮=৬৪ টি ঘর। প্রতিটি ঘর সাদা এবং কালো রং দিয়ে আলাদা করা থাকে। অর্থাৎ ৩২ টি সাদা ঘর এবং ৩২ টি কালো ঘর থাকে।
বোর্ড বসানোর নিয়মঃ
ভারতীয় দাবায় বোর্ড বসানোর কোন নিয়ম না থাকলেও দাবার আন্তর্জাতিক নিয়মে বোর্ড বসানোর একটি নিয়ম রয়েছে। সেটি হচ্ছে বোর্ড বসানোর সময় ডানদিকে সর্বদা সাদা রং এর ঘর থাকতে হবে।
দাবার গুটিঃ
দাবা খেলায় দুই রঙের ঘুটি থাকে। ১৬ টি সাদা ঘুটি এবং ১৬ টি কালো ঘুটি; মোট ৩২ টি ঘুটি থাকে। সাদা এবং কালো রঙ মূলত দুই পক্ষের ঘুটিকে আলাদা করার জন্যে ব্যবহৃত হয়। উভয় পক্ষের ১৬ টি ঘুটির মধ্যে একটি রাজা (King), একটি মন্ত্রী (Queen), দুটি হাতি (Bishop), দুটি ঘোড়া (Knight), দুটি নৌকা (Rook) এবং আটটি করে বড়ে (Pawn) থাকে। উল্লেখ্য যে, ইংরেজি অক্ষরে লেখা নামগুলো ফিদে কর্তৃক নির্ধারণ করে দেওয়া ঘুটি গুলোর নাম আন্তর্জাতিক দাবায় ব্যবহৃত হয়।
গুটি বসানোর নিয়মঃ
বোর্ডের একপাশে সাদা গুটি এবং অন্য পাশে কালো ঘুটি সাজাতে হবে।
প্রথম সারিতে উভয় কোণায় একটি করে নৌকা বসাতে হবে।
এরপর উভয় নৌকার পাশে একটি করে ঘোড়া বসাতে হবে।
এরপর উভয় ঘোড়ার পাশে একটি করে হাতি বসাতে হবে।
মধ্যবর্তী দুটি ঘরের মধ্যে কালো মন্ত্রীকে কালো ঘরে বসাতে হবে এবং সাদা মন্ত্রীকে সাদা ঘরে বসাতে হবে।
অবশিষ্ট ঘরে রাজাকে বসাতে হবে।
দ্বিতীয় সারিতে প্রতি ঘরে একটি করে বড়ে বসাতে হবে।
গুটি চালার নিয়মঃ
রাজার চাল
১. রাজা (King) যে কোন দিকে (সোজা অথবা কোণাকুণি) এক ঘর যেতে পারে।
মন্ত্রী চালার নিয়মঃ
২. মন্ত্রী (Queen) যে কোন দিকে (সোজা অথবা কোণাকুণি) যত ঘর ইচ্ছা যেতে পারে।
হাতি চালার নিয়মঃ
৩. হাতি (Bishop) শুধুমাত্র কোণাকুণি যত ঘর ইচ্ছা যেতে পারে।
নৌকা চালার নিয়মঃ
৪. নৌকা (Rook) শুধুমাত্র সোজা যত ঘর ইচ্ছা যেতে পারে।
ঘোড়া চালার নিয়মঃ
৫. ঘোড়া (Knight) ইংরেজি L অক্ষরের মত যে কোন দিকে প্রথমে সোজা দুই ঘর এবং পরে যেকোন একদিকে এক ঘর যেতে পারে। ভারতীয় দাবায় যাকে আড়াই ঘর বলা হয়।
বড়ে চালার নিয়মঃ
৬. বড়ে (Pawn) প্রথম চালে এক ঘর অথবা দুই ঘর যেতে পারে এবং পরবর্তী চালগুলোতে একঘর করে যেতে পারে। তবে গুটি কাটার সময় কোণাকুণি একঘর চলে।
৭. কোন ঘুটি এমন কোন ঘরে যেতে পারবে না যেখানে আগে থেকে নিজের রঙের অন্য কোন ঘুটি অবস্থান করছে।
৮. ঘোড়া ব্যাতীত অন্য কোন ঘুটি যে ঘরগুলো অতিক্রম করবে সেই ঘরগুলো ফাঁকা থাকতে হবে। মধ্যবর্তী ঘরে কোন ঘুটি থাকলে তাকে টপকে যেতে পারবে না। তবে ঘোড়া এক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম। ঘোড়া নিজের কিংবা প্রতিপক্ষের যে কোন ঘুটিকে টপকে যেতে পারবে।
রাজা এবং নৌকার বিশেষ চালঃ
রাজা এবং নৌকার একটি বিশেষ চাল রয়েছে। যাকে ইংরেজিতে ক্যাসলিং বা বাংলায় দুর্গ গড়া বলা হয়। এই চালে রাজা নৌকার দিকে দুই ঘর অতিক্রম করবে এবং নৌকা রাজাকে ডিঙ্গিয়ে বা টপকে তার বিপরীত পাশের ঘরে বসবে। অর্থাৎ রাজার বর্তমান ঘর ও ক্যাসলিং পরবর্তী ঘরের মধ্যবর্তী ঘরে নৌকা বসবে।
দাবা খেলায় ক্যাসলিং করার সূত্রঃ
এই বিশেষ চালের কিছু শর্ত রয়েছে। এই শর্তগুলো পূরণ হলেই কেবল এই চাল দেওয়া যাবে। শর্তগুলো হচ্ছেঃ
এটি রাজা এবং নৌকা উভয়ের প্রথম চাল হতে হবে।
নৌকা এবং রাজার মধ্যবর্তী ঘরগুলো ফাকা থাকতে হবে। অর্থাৎ এই ঘরগুলোতে নিজের বা প্রতিপক্ষের কোন ঘুটি থাকা যাবে না।
রাজা প্রতিপক্ষের কোন ঘুটি দ্বারা আক্রান্ত অবস্থায় অর্থাৎ চেক থাকা অবস্থায় ক্যাসলিং করা যাবে না।
যে দুটি ঘর রাজা অতিক্রম করবে সেই ঘরগুলো প্রতিপক্ষের কোন ঘুটি দ্বারা আক্রান্ত থাকা যাবে না।
ঘুটি কাটার নিয়মঃ
আগেই বলেছি, যেকোন ঘুটি এমন কোন ঘরে যেতে পারবে না যেখানে নিজের রঙের ঘুটি থাকবে। তবে যেই ঘরে যাবে সেই ঘরে প্রতিপক্ষের ঘুটি থাকলে তাকে সরিয়ে নিজে বসতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের ঘুটিটি বোর্ডের বাহিরে চলে যাবে এবং ঘুটিটি কাটা (Capture) হয়েছে বলা হবে।
দাবা খেলায় গুটি কাটার নিয়মঃ
তবে এক্ষেত্রে বড়ে দিয়ে প্রতিপক্ষের ঘুটি কাটার নিয়মটি একটু ভিন্ন। বড়ে তার সুজাসুজি সামনে থাকা ঘুটিকে কাটতে পারে না। বড়ের সামনের ঘরে অন্য কোন ঘুটি থাকলে বড়ে আর সামনে এগোতে পারে না। ঘুটি কাটার সময় বড়ে কোণাকুণি একঘর চলাচল করে থাকে। অর্থাৎ বড়ের এক ঘর সামনে যদি কোণাকুণি কোন ঘুটি থাকে তাহলে তাকে কাটতে পারে।
বড়ের বিশেষ চালঃ
বড়ের দুটি বিশেষ চাল রয়েছে। সেগুলো হলঃ
১. এন প্যাসান্ট (EN PASSANT) বা পাশ কাটানো বড়ে কাটাঃ
পাশ কাটানো বড়ে খাওয়া এন প্যাসান্ট
বড়ে দিয়ে বড়ে কাটার একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে। সেটি হচ্ছে এন প্যাসান্ট (EN PASSANT) বা পাশ কাটিয়ে যাওয়া। এটি মূলত একটি ফরাশি শব্দ যা আন্তর্জাতিক দাবায় ব্যবহৃত হয়। যে কোন বড়ে পঞ্চম সারিতে থাকা অবস্থায় প্রতিপক্ষের দ্বিতীয় সারিতে কোণাকুণি অবস্থানে থাকা কোন ঘুটি যদি তাকে পাশ কাটিয়ে দুই ঘর অতিক্রম করে তাহলে প্রথম ঘুটিটি পরবর্তী চালে দ্বিতীয় ঘুটিটিকে একঘর পেছনে নিয়ে গিয়ে কাটতে পারে। এই নিয়মটিই এন প্যাসান্ট নামে পরিচিত। তবে প্রতিপক্ষের বড়েটি পরবর্তী চালেই কাটতে হবে। এক চাল পার হলে এভাবে আর কাটা যাবে না। উল্লেখ্য যে, ভারতীয় দাবায় এই নিয়মের প্রচলন ছিল না।
২. বড়ের পদোন্নতিঃ
বড়ে একমাত্র ঘুটি যা পেছনের দিকে যেতে পারে না। বড়ে সামনের দিকে যেতে যেতে যদি শেষ সারিতে গিয়ে উপস্থিত হয় তখন বড়েকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বড়ে শেষ সারিতে যাওয়ার পর সাথে সাথেই রাজা ছাড়া অন্য যে কোন ঘুটি দ্বারা পরিবর্তন করা যাবে। অর্থাৎ আটটি বড়ে শেষ সারিতে গিয়ে পৌছলে আটটি মন্ত্রীই উঠানো যাবে।
**************
(এক্ষেত্রে ভারতীয় দাবায় অঞ্চলভেদে কিছু নিয়মের প্রচলন ছিল বা এখনো কিছু প্রচলন আছে। যেমনঃ বড়ে শেষ ঘরে গেলে মন্ত্রী হবে কিংবা মন্ত্রী বোর্ডে থাকলে অন্য ঘুটি উঠাতে হবে, শেষ ঘরে গিয়ে এক চাল বসতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে দাবার আন্তর্জাতিক নিয়মে এই ধরণের কিছু নেই। আপনি বড়ের বদলে আপনার ইচ্ছামতো রাজা ছাড়া যে কোন ঘুটি নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, বড়ে শেষ ঘরে পৌছার পর, তার পরিবর্তে অন্য ঘুটি বসানোর পর আপনার চালটি সমাপ্ত হবে)।
খেলা শুরু করার নিয়মঃ
খেলার শুরুতে কোন খেলোয়াড় সাদা গুটি নিবে বা কোন খেলোয়াড় কালো গুটি নিবে তা টস করে নির্ধারণ করে নিতে হবে। টুর্ণামেন্টের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই কোন বৈধ উপায়ে সাদা কালো নির্ধারণ করে রাখে। তবে যাই হোক, সাদা পক্ষ সবসময় আগে চাল দিবে এবং কালো পক্ষ পরে চাল দিবে। প্রথম চালে যে কোন বৈধ চাল দেওয়া যাবে। যেমন বড়ে এক ঘর বা দুই ঘর চালা যাবে। অথবা ঘোড়া চালা যাবে। তবে প্রতিবার একটি চালই দেওয়া যাবে। উল্ল্যেখ্য যে, ভারতীয় দাবায় প্রথম চালে দুটি বড়ে এক ঘর করে চালার প্রচলন ছিল। আন্তর্জাতিক দাবায় এ ধরণের কোন নিয়ম নেই। অর্থাৎ প্রতি চালে কেবল একটি গুটিই চালা যাবে।
দাবার গুটির পয়েন্ট বা মানঃ
দাবা খেলায় মোট ছয় ধরণের ঘুটি রয়েছে। এদের চালের প্রকৃতি ভেদে বোর্ডে এদের প্রভাব বা ক্ষমতা ভিন্ন ভিন্ন। নতুন দাবাড়ুদের ক্ষেত্রে এই পয়েন্ট গুলো জানা থাকলে ঘুটি কাটা কাটি কখন করা যাবে তা বুঝতে সুবিধা হয়। নিচে পয়েন্টগুলো দেখানো হলোঃ
বড়ে (Pawn) ১ পয়েন্ট
হাতি (Bishop) ৩.২৫ পয়েন্ট
ঘোড়া (Knight) ৩.২৫ পয়েন্ট
নৌকা (Rook) ৫ পয়েন্ট
মন্ত্রী (Queen) ৯ পয়েন্ট
রাজা (King) অসীম
এটি মূলত গুটির পয়েন্ট বা মান বুঝার জন্যে প্রাথমিক ধারণা। যেমনঃ একটি ঘোড়াকে আরেকটি ঘোড়া বা হাতির সাথে কাটাকাটি করলে সমান সমান হবে। তবে বোর্ডের অবস্থা ভেদে গুটির মান বিশেষ অবস্থায় বেড়ে যেতে পারে বা কমে যেতে পারে। যেমন খোলা বোর্ডে দুটি হাতি প্রতিপক্ষের মন্ত্রীর সাথে পাল্লা দিতে পারে, যদিও তাদের পয়েন্টের ব্যাবধান অনেক বেশি। বদ্ধ বোর্ডে হাতির চেয়ে ঘোড়া ভালো কাজ করে। আবার খোলা বোর্ডে ঘোড়ার চেয়ে হাতি বেশি শক্তিশালী। বিশেষ অবস্থায় একটি বড়ে খেলার জয় পরাজয় নির্ধারণ করতে পারে।
দাবা খেলার ফলাফল নির্ধারণের নিয়ম কানুনঃ
দাবা খেলায় দুই ধরণের ফলাফল আসতে পারে। প্রথমত জয় পরাজয় এবং দ্বিতীয়ত ড্রো। উভয় ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে।
১. জয় পরাজয় নির্ধারণের নিয়মঃ
দাবা খেলার মূল উদ্দেশ্য হলো রাজাকে বন্দী করা বা কিস্তি মাত (Check Mate) করা। রাজার উপর চেক পড়লে বা প্রতিপক্ষের ঘুটি দ্বারা আক্রান্ত হলে তিনিটি উপায়ে রাজা নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
প্রথমত প্রতিপক্ষের আক্রমণকারী ঘুটিকে নিজের কোন ঘুটি দ্বারা কেটে
দ্বিতীয়ত মধ্যবর্তী স্থানে নিজের কোন ঘুটি বসিয়ে বাধার সৃষ্টি করে
তৃতীয়ত আক্রান্ত ঘর থেকে নিজেকে সরিয়ে।
দাবা খেলায় কিস্তি মাতের কৌশল
এই তিনিটি উপায়ের যে কোন একটি ব্যবহার করেও যদি রাজা নিজেকে রক্ষা করতে না পারে তাহলে তাকে কিস্তিমাত বা চেক মেইট বলে। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষকে বিজয়ী বলা হবে। এখানে লক্ষণীয় যে, কিস্তি মাতের দুইটি শর্ত। প্রথমত রাজার উপর চেক থাকতে হবে এবং দ্বিতীয়ত চেক থেকে বাঁচার কোন উপায় থাকবে না।
২. খেলা ড্রো হওয়ার নিয়মঃ
খেলা ড্রো হওয়ার কয়েকটি নিয়ম আছে। নিচে পর্যায়ক্রমে তা দেওয়া হলঃ
ক. উভয় পক্ষের সম্মতিঃ
খেলার যে কোন পর্যায়ে উভয় পক্ষ ড্রো এর ব্যাপারে সম্মত হলে ফলাফল ড্রো হবে। তবে এক্ষেত্রে যার চাল থাকবে তাকে ড্রো এর প্রস্তাব দিতে হবে এবং প্রতিপক্ষ তা মেনে নিলে ফলাফল চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
খ. কিস্তি মাত করার মতো ঘুটি বোর্ডে না থাকলেঃ
ফাঁকা বোর্ডে রাজাকে বন্দী করতে হলে নূন্যতম কিছু ঘুটি থাকতে হয়। উদাহরণ সরুপঃ
একটি মন্ত্রী বা
একটি নৌকা বা
ভিন্ন ঘরের দুইটি হাতি বা
একটি হাতি ও একটি ঘোড়া বা
একটি বড়ে (পদোন্নতির সম্ভাবনা থাকলে)।
উপরোক্ত ঘুটি বোর্ডে না থাকলে কিস্তিমাতের কোন সম্ভাবনা থাকে না। যেমনঃ দুটি ঘোড়া থাকলেও কিস্তি মাতের সম্ভাবনা থাকে না। অথবা একটি হাতি বা একই ঘরের দুটি হাতি থাকলেও কিস্তিমাত হয় না। এ অবস্থায় খেলার ফলাফল ড্রো হবে।
গ. পারপিচুয়াল চেক বা একই অবস্থার পুনরাবৃত্তিঃ
দাবার বোর্ডে একই অবস্থা তিনবার বা তার বেশি পুনঃপুনঃ আসলে খেলার ফলাফল ড্রো হবে। রাজাকে বারবার চেক দেওয়ার মাধ্যমে এই অবস্থা হতে পারে অথবা অন্য যে কোন চাল বার বার পুনরাবৃত্তি করার কারনে এই অবস্থা হতে পারে। এক্ষেত্রে যে কোন এক পক্ষ দাবি করলেই খেলার ফলাফল ড্রো হবে। লক্ষণীয় যে, পরপর তিনবার চেক দিলেই খেলা ড্রো হবেনা, বরং একই অবস্থার তিনবার পুনরাবৃত্তি হতে হবে।
ঘ. Stalemate বা খেলার অচল অবস্থাঃ
দাবা খেলার সূত্র
এই অবস্থায় সাদার চাল হলে খেলা ড্রো হবে
খেলার মধ্যে যদি এমন কোন অবস্থা আসে যখন রাজার উপর কোন চেক না থাকা অবস্থায় কোন বৈধ চাল নেই তখন সেটি ড্রো হবে। এই ধরণের অবস্থা বেশিরভাগ সময় প্রতিপক্ষের ভূলের কারণে হয়ে থাকে। উপরের চিত্রে এমন একটি অবস্থা দেখানো হয়েছে।
ঙ. পঞ্চাশ চালের নিয়মঃ
দাবা খেলার কৌশল
এই অবস্থায় সাদার কিস্তিমাত করার মতো গুটি থাকা সত্যেও কালো ভূল না করলে খেলা ড্রো হবে
দাবার বোর্ডে এমন অবস্থা হতে পারে যে, উভয় পক্ষ চাল দিচ্ছে কিন্তু কিস্তিমাত করার মতো ঘুটি থাকা সত্তেও কিস্তিমাত হচ্ছে না। এমন অবস্থায় কোন বড়ের চাল অথবা কোন ঘুটি কাটাকাটি ছাড়া যদি পঞ্চাশ চাল বা তার বেশি অতিক্রান্ত হয় তাহলে খেলাটি ড্রো হবে। এই নিয়মটি বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক টুর্ণামেন্টেই মানা হয়।
এখানে উল্লেখ্য যে, ভারতীয় দাবায় ১৬ চালের নিয়ম বা রাজা শেষ ঘরে যেতে পারলে ড্রো হওয়া ইত্যাদি নিয়মের প্রচলন ছিল বা এখনো কোথাও কোথাও আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক দাবায় এ ধরনের কোন নিয়ম নেই।
দাবার ঘড়ি এবং সময় এর নিয়মঃ
দাবা খেলায় একটি বিশেষ ধরণের ঘড়ি ব্যবহার করা হয়। একে টুইন ঘড়ি বা জোড়া ঘড়ি বলা হয়। দুইটি ঘড়ি পাশাপাশি এমনভাবে থাকে যেন একটি বন্ধ করলে আরেকটি চালু হয়ে যায়। খেলার শুরুতে কালো পক্ষ সাদার ঘড়িটি চালু করবে। সাদার চাল শেষ হলে নিজের ঘড়ি বন্ধ করবে এবং সাথে সাথে কালোর ঘড়ি চালু হয়ে যাবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকে।
প্রতিটি খেলায় উভয় পক্ষের সময় নির্ধারিত থাকে। সাধারণত ক্লাসিক্যাল রেটিং দাবায় উভয় পক্ষকে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট করে মোট ৩ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়। প্রতি চাল দেওয়ার সাথে সাথে নিজের ঘড়িতে ৩০ সেকেন্ড করে যোগ হয়। ব্লিটজ বা র্যাপিড দাবায় সময় আরো অনেক কম থাকে। কোন পক্ষের সময় শেষ হয়ে গেলে সে পরাজিত বলে গণ্য হবে।
স্পর্শ চাল (Touch & Move) এর নিয়মঃ
দাবার টুর্ণামেন্টগুলোতে স্পর্শ চাল বা Touch & Move নিয়মটি খুবই কঠোরভাবে মানা হয়। নিয়মটি হচ্ছে আপনি যে গুটি আগে স্পর্শ করবেন সেটি চালতে হবে এবং প্রতিপক্ষের কোন গুটি স্পর্শ করলে সেটি নিজের কোন গুটি দিয়ে কাটা গেলে অবশ্যই কাটতে হবে। কোন গুটি সরে গেলে ঠিক করার প্রয়োজন হলে প্রতিপক্ষের সম্মতি নিয়ে ঠিক করতে হবে অথবা আরবিটর (বিচারক) এর সাহায্য নিতে হবে। আমরা অনেকেই বৈঠকি দাবায় অনেক সময় চাল ফেরৎ নেই অথবা এক গুটি স্পর্শ করে অন্য গুটির চাল দেই। এগুলো ঠিক নয়। নিজেরা প্রেকটিস করার সময় এই নিয়মটি মেনে চললে টুর্ণামেন্টের সময় ভূল করে গুটি স্পর্শ করার সম্ভাবনা থাকে না।
বীজগাণিতিক লিখন পদ্ধতিঃ
আন্তর্জাতিক দাবায় উভয় পক্ষের চাল লেখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অর্থাৎ চাল দেওয়ার সাথে সাথে তা স্কোর শিটে লিখতে হবে। এক্ষেত্রে চাল লেখার একটি বিশেষ নিয়ম রয়েছে, যা বিজগাণিতিক লিখন (Algebraic Notation) পদ্ধতি নামে পরিচিত।
দাবার টুর্ণামেন্টের পদ্ধতিঃ
দাবার টুর্ণামেন্ট গুলো সাধারণত দুই পদ্ধতিতে হয়ে থাকে। প্রথমত রাউন্ড রবিন পদ্ধতি এবং দ্বিতীয়ত সুইস লীগ পদ্ধতি।
রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে প্রত্যেক খেলোয়াড় প্রত্যেকের সাথে খেলার সুযোগ পায়। সাধারণত খেলোয়ার সংখ্যা কম থাকলে এটি ব্যাবহার করা হয়। সেরা খেলোয়ার নির্বাচন করার এটিই সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি।
খেলোয়াড় সংখ্যা বেশি হলে কম সময়ে টুর্ণামেন্ট শেষ করার জন্যে সুইস লীগ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে সমান পয়েন্ট প্রাপ্ত খেলোয়াড়েরা পরস্পরের সাথে খেলে এবং এভাবে চলতে থাকে। এ পদ্ধতিতে ১০০ জন খেলোয়াড়ের একটি টুর্ণামেন্ট ৭-৯ রাউন্ডে শেষ করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে আরো কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। তবে বর্তমানে ফেডারেশন গুলোতে ফিশ্চার করার জন্যে কম্পিউটার সফটওয়ার ব্যবহার করা হয়।
উভয় পদ্ধতিতেই প্রত্যেক খেলোয়াড় জয়ী হলে ১.০০ পয়েন্ট, ড্রো হলে ০.৫০ পয়েন্ট এবং পরাজিত হলে কোন পয়েন্ট পাবে না। টুর্ণামেন্ট শেষে যার পয়েন্ট বেশি হবে সেই চ্যাম্পিয়ন হবে।
শিক্ষানবিশদের জন্যে পরামর্শঃ
দাবা খেলায় ভালো করার প্রথম নিয়ম হচ্ছে আপনাকে একজন ভালো মানুষ হতে হবে এবং মানষিকভাবে শান্ত ও দুশ্চিন্তামুক্ত থেকে খেলতে হবে। আর এখন বলব শেষ নিয়মটির কথা। দাবায় ভালো করতে হলে শেষ নিয়মটি হছে প্রচুর পড়াশুনা করা এবং প্রাকটিস করা। আপনি যদি একজন ভালো খেলোয়াড় হতে চান তাহলে প্রচুর পড়াশুনার করুন এবং পাশাপাশি প্রাকটিস করুন। এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন বই এবং সফটওয়ার এর সহযোগিতা নিতে পারেন।
শেষ কথাঃ
আমার এই লেখাটির উদ্দেশ্য ছিল দাবার খেলার প্রাথমিক নিয়মগুলো পাঠকদের সাথে শেয়ার করা এবং নবিশ দাবাড়ুদের আন্তর্জাতিক দাবার নিয়মের সাথে পরিচয় করানো। লেখাটি কিছুটা বড় হওয়ার জন্যে দুঃখিত। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি সংক্ষেপে নিয়মগুলো উপস্থাপন করতে। কারো কোন পরামর্শ বা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমি যথাসাধ্য উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। লেখাটি শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। উল্লেখ্য, আমার এই লেখাটি প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়েছিলো দুই বছর আগে।
০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: জ্বি আমিই লিখেছিলাম।
ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২১
বিটপি বলেছেন: সৈন্য যদি প্রতিপক্ষের শেষ ঘরে চলে যায়, তখন কি
১। ইচ্ছেমত ঘুঁটি তোলা যাবে,
২। নাকি যে ঘরের যে ঘুঁটি, সেইটাই তুলতে হবে
যদি উত্তর ২ হয়, তবে রাজার ঘরে ঘুঁটি গেলে কি তোলা যাবে? হাতি, ঘোড়া, নৌকা যদি দুইটাই বর্তমান থাকে, এবং সৈন্য যদি সেই ঘরে যায়, তাহলে কি তোলা যাবে?
দাবার ঘুঁটিগুলো দেখতে বিশপ, নাইট এবং ক্যাসেলের মত, তাই এই নামগউলোই এপ্রপ্রিয়েট লাগে। এগুলোর নাম যথাক্রমে হাতি, ঘোড়া, নৌকা কিভাবে হল? পশ্চিমা জগতে রাণীকে এত খমতাধর মনে করার কারণ কি? মন্ত্রী হলে না বেশি মানায়।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রশ্নের উত্তর দুই, যে ঘরের যে ঘুঁটি- সেইটাই তুলতে হবে।
রাজার ঘরে ঘুঁটি গেলে কি তোলা যাবে।
হাতি, ঘোড়া, নৌকা যদি দুইটাই বর্তমান থাকে এবং সৈন্য যদি সেই ঘরে যায়, তাহলেও রাজা ছাড়া যেকোনো পাওয়ার তোলা যাবে।
হাতি, ঘোড়া, নৌকা, বরে নামগুলো উপমহাদেশ থেকেই হয়েছে। আধুনিক নাম ইউরোপে হয়েছে।
রাণীকে ক্ষমতাধর করার পিছনে হয়তো এই খেলা প্রচলণের একটা ভূমিকা থাকবে। শুরুতে এই খেলা শুধু ঘরের মধ্যেই সীমিত ছিল-যার জন্য গৃহকর্তা গৃহকর্তীকে প্রলুব্ধ করতে তাকে বেশী ক্ষমতা দিয়ে থাকবে(এটা আমার ধারণা)।
৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩১
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সেকালে দাবা খেলতাম, একালে আর দাবা খেলা হয় না।
০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও এখন আর দাবা খেলিনা। সময়ের অপচয়।
৪| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩২
দয়িতা সরকার বলেছেন: আমার ছোট ভাই দাবা খেলায় ভাল ছিল। ছোট বেলায় আমি আমার ছোট ভাইয়ের সাথে দাবা খেলতাম। দাদুর সাথে আমিও দু' এক বার খেলেছি। দাদু আমার সাথে বাঘ-ছাগল, ষোল গুটি বেশি খেলতেন।
৫| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০০
মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: সেকালে ষোলগুটিও খেলতাম। একালে দ্রব্য মূল্য নিয়ে নাকাল অবস্থা। আয় না বেড়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়াতে দিন-কাল ভাল যাচ্ছে না।
০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: একই অবস্থা আমারও।
৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটা পোষ্ট দিয়েছেন।
দাবা আমার প্রিয় খেলা। আমি নিজেও দাবা খেলতে পছন্দ করি। আমার পরিবারের কেউ দাবা খেলে না।
কিন্তু আমি যার সাথেই দাবা খেলি বারবার হেরে যাই। রাগে আমি আর দাবা খেলি না।
০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: দাবা খেলায় প্রাথমিক কিছু ছবক আছে-যা ফলো করলে সহজে হারবেন না। আমি দাবা খেলার অনেক খুটিনাটি জানলেও এখন দাবা খেলায় সময় নষ্ট করার কাজে নাই।
৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৩৫
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট!
ছোটবেলা থেকেই দাবা খেলতাম, এখন আর সময় সুযোগ পাই না!
ধন্যবাদ আপনাকে।।
০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: কষ্ট করে পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
৮| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৬
তই তই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নীচের নিয়মগুলি জানা ছিল না-
১। হাতি আর ঘোড়ার মান জানতাম ৩
২। পঞ্চাশ চালের নিয়ম।
৩। দাবার ঘড়ি ও সময়ের নিয়ম। (সময়ের নিয়ম জানলেও বিস্তারিত জানতাম না।)
৪। দাবার টুর্নামেন্টের পদ্ধতি।
এন পাসেনট নিয়মটা অনেকেই জানে না। একাধিক মন্ত্রি তোলা যায় এটাও অনেকে জানে না।
ছোটবেলায় ভারতীয় নিয়মে দুইটা বোরে একসাথে চালতাম। অনেক বোকাকে চার/ পাঁচ চালে হারিয়েছি। আসলে অসতর্কতার জন্য এই পরাজয় ঘটে থাকে।
রানী হামিদের দাবার বইটা আমার মনে হয় শিক্ষানবিসদের জন্য অনেক উপকারী ছিল। দাবার জয় পরাজয় নির্ভর করে শুরুর চালগুলির উপরে। কিছু প্রতিষ্ঠিত চাল আছে। আবার এই চালের জবাব দেয়ারও কিছু নিয়ম আছে। শুরুতে ভুল করলে দাবায় জেতা অনেক কঠিন।
আমার এক কাজিন বহু আগে একটা ইংরেজি বই দিয়েছিল যেখানে ৩০০ টা এন্ড গেম সিচুএশন ও তার সমাধান ছিল। বইটা উনি নীলখেত থেকে কিনেছিলেন। এগুলি চর্চা করতাম। তবে সবগুলির সমাধান মনে হয় করি নাই।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: দাবা খেলায় সহজ হারজিত নিতান্তই অমনোযোগিতার জন্য হয়ে থাকে।
দাবার প্রাথমিক নিয়ম কানুণ শেখার জন্য সিরাজুল ইসলাম সাহেবের এসো দাবা শিখি বইটি শিশু কিশোরদের জন্য খুব ভালো বই।
১০| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: দাবা খেললে একাগ্রতা বাড়ে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৫
জুল ভার্ন বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
১১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৯
সোহানী বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট।
আমার পরিবারে মারাত্বক দাবার নেশা ছিল। সবাই বলতে গেলে খেলতো। তবে কেউ ভালো কে খারাপ খেলতো। সে কারনে একটা নিয়ম ছিল বাসায় খেলার। সেটা এরকম, আমরা যারা খারাপ খেলতাম তারা নিজেদের মাঝে খেলে যে জিতবে সে মেঝ বোনের সাথে খেলবে। কারন সে আমাদের চেয়ে ভালো খেলে। তার পরের স্টেজ ছোট ভাইয়ের সাথে। যে জিতবে সে সেজো কাকার সাথে। সেখানে যে জিতবে সে বাবার সাথে খেলার চান্স পাবে। বাবা হচ্ছেন সুপ্রিম প্লেয়ার..........। এ পর্যন্ত ভাই ও কাকা দু একটায় জিতেছিল কিন্তু আর বাকি আমরা কেউই পারিনি জিততে বাবার সাথে।
এখন আমার বাচ্চাদের সাথে খেলার চেস্টা করি কিন্তু তারা হেরে যায় বলে খেলতে চায় না। অনেকবার ভেবেছি ওদেরকে জিতিয়ে দিবো কিন্তু খেলতে বসলে আর সেটা হয় না..........হাহাহা। আমার বাসায় মনে হয় ৮ সেট দাবার বোর্ড আছে!!
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: দাবা খেলায় আপনার পারিবারিক নিয়মটা খুবই ভালো।
ধন্যবাদ।
১২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: ধৈর্য্য ধরে এত নিয়ম লিখেছেন। ভালো হয়েছে।
আমাদের বাড়ি খেলাধূলার আড্ডাখানা ছিল। একটা পে্াষ্ট দিয়েছিলাম এক সময়।
এক সময় প্রচুর খেলতাম এখন প্লেনে খেলি সময় কাটানোর জন্য দুই একবার হারিয়েছি তখন বেশ ভালো লেগেছে।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০০
জুল ভার্ন বলেছেন: একসময় দাবায় এতটাই মজে ছিলাম যে, কোথাও কয়েকজন মানুষ বসলেই আমি মনে মনে ঘোড়ার চাল দিয়ে এক একজনকে খেয়ে ফেলতাম। কোনাকুনি যে বসতো তাকে হাতীর চাল দিয়ে খেয়ে ফেলতাম-মানে আমার মনোজগতের সবকিছুই দাবার নিয়মে চলতো। আসলে দাবা নিয়ে আমি একরকম মানসিক অসুস্থ্য হয়ে পরেছিলাম-যা থেকে বেড়িয়ে আসতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেই আমি এখন দাবা দেখা ভুলেই গিয়েছি।
১৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি যে ভাবে লিখেছেন- সেভাবে দাবা খেলা সম্ভব না। এত হিসাব নিকাশ করে কি খেলা যায়? সম্ভব?
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: একজন ভালো দাবারু, আদর্শ দাবারু হতে হলে এইসব নিয়ম কানুনের বিকল্প নাই।
১৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০১
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এক সময় বেশ ভালো খেলতাম । অনেক বছর খেলা হয়না। ++++++
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: এতো ব্যস্ত জীবনাচারে দাবা খেলার সময় কোথায়!
১৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৪
রানার ব্লগ বলেছেন: আহ !!! অনেক দিন পর দাবার কথা মনে করিয়ে দিএলন, স্কুলে থাকতে আব্বার সাথে খেলতাম আর হারতাম। ভদ্রলোক তার অফিস চ্যাম্পিয়ান ছিলেন।
০৮ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:১৬
নূর আলম হিরণ বলেছেন: দাবা খেলা ইসলামে সুনির্দিষ্ট ভাবে হারাম করা হয়েছে।
২০ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪৭
জুল ভার্ন বলেছেন: এই হারাম কাজ কোটি কোটি মুসলিম করছে........
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এইটা আপনার নিজের লেখা!!!
শেষ কবে দাবা খেলেছি মনেও নেই। স্কুলে পড়ার সময় আমার বাসার ছাদে প্রতিদিন বিকেলে দাবা খেলা হতো।