নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
এই সেই মা.........
ছোট খাটো চেহারার এই অতি মেধাবী ছাত্রীটির ইচ্ছে ছিল বায়ো-টেকনোলজি নিয়ে উচ্চ শিক্ষার। কিন্তু ভারতের যে কলেজ সে পড়তো, সেই কলেজে তখন সেরকম কিছু পড়ানোই হতো না। অগত্যা "হোম সাইন্স" নিয়ে গ্রাজুয়েশন। বাবা-দাদা-রা মজা করে বলতেন "হোম সাইন্স" সাবজেক্টে আসলে শেখানো হয় বাসন মাজা"! মনে মনে দুঃখ পেলেও মেয়েটি চুপ করে শুনতো।
এরপর একটি পত্রিকাতে সে আবিষ্কার করে আমেরিকাতে বায়ো-টেকনোলজি পড়ানো হয়। কাউকে কিছু না জানিয়ে সে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য আবেদন পত্র পাঠিয়ে দেয়। কি আশ্চর্য! ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলে থেকে তার ডাক আসে। এরকম বিশ্ব-বিখ্যাত আমেরিকান ইউনিভার্সিটি তাকে ডাক পাঠিয়েছে শুনে অবাক হয়ে যান তার বাবা-দাদাও!
তাদের অতি রক্ষণশীল তামিল পরিবারে কেউ কখনো ভারতের বাইরে পা রাখেনি, তাই পরিবারের পক্ষ থেকে আসে প্রবল আপত্তি। কিন্তু বাবা মেয়ের পক্ষ নেন এবং বলেন যে তার কাছে যা টাকা-পয়সা আছে তা দিয়ে বড়ো জোর এক বছরের পড়াশুনোর খরচ চলবে, বাকিটা তিনি জানেন না। মেয়েটি বলে সেটাই যথেষ্ট। বাকি পড়ার খরচ তিনি পার্ট টাইম চাকরি করে জোগাড় করবেন।
১৯৫৯ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলের এডমিশনের লাইনে যে শাড়ি, হাওয়াই চটি পরা মাত্র ৫ ফুট উচ্চতার মেয়েটি দাঁড়িয়েছিল, তার একটু পিছনেই দাঁড়িয়েছিল আর একটি বিদেশী ছাত্র - ৬'-৬" উচ্চতার জ্যামাইকান এক কালো ছেলে, যার নাম ডোনাল্ড হ্যারিস। সে স্কলারশিপ পেয়ে অর্থনীতিতে পিএইচডি করতে এসেছে। আমেরিকার রাজনীতিতে সে এক ভীষণ টালমাটাল সময়। কালো মানুষদের অধিকারের জন্য সারা আমেরিকা জুড়ে শুরু হয়ে গেছে "সিভিল রাইটস মুভমেন্ট"।
১৯৬০ সালে একটি স্টুডেন্ট ফোরামে কালো মানুষদের অধিকারের সপক্ষে একটি অসাধারণ বক্তৃতা দেন ডোনাল্ড হ্যারিস। বক্তৃতার শেষে মুগ্ধ, সেই শাড়ি পরা মেয়েটি, ডোনাল্ড হ্যারিসের সঙ্গে নিজেই আলাপ করে। প্রথম আলাপেই প্রেম আর ১৯৬৩ সালে বিয়ে। ভারতীয় মেয়েটি বিয়ের পর শ্যামলা গোপালন থেকে হয়ে যান শ্যামলা হ্যারিস।
এর পর জন্মায় তাদের প্রথম সন্তান - মেয়েটির নাম রাখেন "কমলা দেবী" - মা লক্ষ্মীর নামে নাম মিলিয়ে! আমেরিকার সিভিল রাইটস মুভমেন্টে ভীষণ ভাবে জড়িয়ে পড়েন শ্যামলা ও ডোনাল্ড হ্যারিস। সেই প্রতিবাদ মিছিলের ভিড়ে, শিশু কন্যাটি পারাম্বুলেটরে বসে বসে দেখেছিলো তার বাবার বক্তৃতা, মায়ের আন্দোলন। পৃথিবীর ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সেই ঐতিহাসিক ঘটনা- ডক্টর মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের নেতৃত্বে আমেরিকাতে কালো মানুষদের অধিকারের লড়াই ও তাতে জয়লাভ।
সে লড়াই থামতে না থামতেই শুরু হয় শ্যামলা হ্যারিসের নিজের জীবনের লড়াই। ১৯৭০ সালে দুটি শিশু কন্যা নিয়ে ডিভোর্সড, সিঙ্গেল মাদারের সে লড়াইটা ছিল একা এবং ব্যক্তিগত। পিএইচডি শেষ করে শ্যামলা হ্যারিস শুরু করেন ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা। গবেষক হিসেবে তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরে সারা পৃথিবীতে। গবেষণার কাজে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী ঘুরে ফেলেন এই পাঁচ ফুট উচ্চতার ছোট্ট খাট্টো ডক্টর শ্যামলা হ্যারিস।
শিশু কন্যা দুটিকে কখনো ডে কেয়ার-এ রেখে, কখনো বন্ধুর বাড়িতে রেখে নিজের পড়াশুনো, গবেষণা, চাকরি চালিয়ে গেছেন শ্যামলা। একটু মানসিক শান্তির জন্য মেয়েদের নিয়ে গেছেন কখনো চার্চে, কখনো মন্দিরে। তাদের শিখিয়েছেন রান্না করতে, নিজেদের কাজ নিজে করতে। আর শিখিয়েছেন নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করতে।
পারাম্বুলেটরে বসে বসে যে মেয়েটি আমেরিকার সব চেয়ে বড় অধিকারের লড়াইটা দেখেছিলো, দেখেছিলো নিজের মায়ের ব্যক্তিগত জীবনের আপোষহীন লড়াই, সেই ছোট্ট মেয়েটাই আজ নামকরা আইনজীবী ও আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট - কমলা দেবী হ্যারিস !
অনেক কিছুতে-ই প্রথম কমলা দেবী হ্যারিস !
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্ট!
প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ!
প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত!
তিনি গড়লেন নতুন এক ইতিহাস।
এই ঐতিহাসিক জয়ের পর কমলা হ্যারিস তার মা সম্পর্কে বললেন, মা-ই তাকে শিখিয়েছেন "বাড়িতে বসে থেকে অভিযোগের পর অভিযোগ না করে বরং মাঠে নেমে লড়াই করো"।
কমলা হ্যারিসকে নিয়ে যখন আমেরিকাতে মাতামাতি (তার উইকিপিডিয়া পেজটি এর মধ্যে ৪৮০ বার এডিট হয়েছে) তখন ছোট কন্যা - মায়া হ্যারিস আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন:
"You can’t know who Kamala Harris is without knowing who our mother was.”
দুটি শিশু কন্যা কে নিয়ে একা এক ভারতীয় সিঙ্গেল মম, শ্যমলা গোপালন সেদিন ঘরের এবং বাইরের তীব্র লড়াইটা না লড়লে, আমেরিকানরা কি তাদের ইতিহাসে প্রথম মহিলা ভাইস প্রেসিডেন্টটিকে পেত?
ছবি:
১) শিশু কমলা-র সঙ্গে মা, ডক্টর শ্যামলা গোপালন হ্যারিস
২) জেষ্ঠ্যা কন্যা কমলা, মা শ্যামলা, কনিষ্ঠা কন্যা মায়া হ্যারিস
৩) কমলা দেবী হ্যারিস - আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট
সৌজন্যঃ দ্যা হিন্দুস্তান টাইমস থেকে নিজের মতো ভাবানুবাদ করে ২০২০ ফেব্রুয়ারী মাসে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও তাই বিশ্বাস করি।
২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:২০
রাফখাতা- অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশে হইলে, এই তার মা বাবার ডিভোর্স হয়ে গেছে, এইটা কত বড় একটা ইস্যু হইতো তা বলার অপেক্ষা রাখে না । আমেরিকা বলেই হয়তো তার অবদানের সাথে তার মায়ের সংগ্রামটা যুক্ত হচ্ছে পজেটিভ ভাবে কিন্তু আমাদের দেশে হলে এটাই কাল হয়ে দাড়াতো কমলা হ্যারিসের জন্য !
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩১
জুল ভার্ন বলেছেন: ১০০% সত্য।
৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩৭
মহিউদ্দিন হায়দার বলেছেন: নিজের জীবনের লক্ষ্য স্থীর করতে পেরেছিল বলে সেই লক্ষ্য পানে ছুটতে পেরেছিল। কে কি বলছে সেটা মাথায় রাখেনি। এবং সফলতা পেয়েছে। এটাই সংগ্রামী মানুষের কাজ।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: মা-মেয়ে দুজনেই নিজ নিজ যোগ্যতায়, মেধায়- পরিবেশ, পরিস্থিতি এবং সময়ের সদ্বব্যবহার করে সাফল্য অর্জন করেতে সক্ষম হয়েছেন।
৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৪৮
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: শ্যামলার সংগ্রামের ফসলই আজকের কমলা হ্যারিস। তথ্য বহুল পোস্টে+++++++
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ সরকার।
৫| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম
ধন্যবাদ ভাইয়া
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:২৩
কলাবাগান১ বলেছেন: এই ব্লগের ই এক ব্লগার কমলা হ্যারিস নির্বাচিত হওয়ায় বলেছিল যে হোয়াইট হাউসে নাকি এখন গোবর খাবার উৎসব হবে......কিছু মানুষ তার জীবনের সংগ্রাম টাকে দেখে না, দেখে তার নাম কি হিন্দু নাকি খ্রিস্টান, নাকি মুসলমান...
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৭
জুল ভার্ন বলেছেন: ধর্ম ব্যাবসায়ীরা সব কিছুতেই ধর্ম টেনে নিয়ে বিভাজন তৈরি করে ফায়দা হাসিলের ধান্ধা করে। আসলে ওরা শ্রেফ টাউট বাটপার।
৭| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম লেখা পড়তে আমার ভালো লাগে। মনে শান্তি পাই। ভরসা পাই।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার নিজেরও এইসব পড়তে, লিখতে ভালো লাগে। ধন্যবাদ।
৮| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:২৬
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: আপনি সংক্ষেপে অস্বাধারন লিখেছেন মা-মেয়ের সংগ্রামী সফল জীবন সম্পর্কে। অগ্রগামী অনেকের অনুপ্রেরনার উৎস তাদের জীবনী গল্প।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:২৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ফুয়াদের বাপ।
৯| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৪
প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: অলোকসামান্য অনুপ্রেরণার গল্প।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: গল্প নয়, সত্যি।
১০| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:০৪
নেওয়াজ আলি বলেছেন: তাৎপর্যময় ও অর্ধবোধক লেখা । বেশ
২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
১১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৭
জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: জানলাম অমলা হ্যারিসের জীবন ইতিহাস। সুন্দর পোস্ট, পড়ে ভাল লেগেছে।
শুভেচ্ছা।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৩৯
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার জন্যও শুভ কামনা।
১২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১০
নতুন নকিব বলেছেন:
সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। সংক্ষিপ্ত কিন্তু এমন অর্থবহ করে কোন বিষয়কে ফুটিয়ে তোলা আপনারই কাজ। কমলা হ্যারিসের বিষয়ে এতটা জানা ছিল না। তার মা শ্যামলা হ্যারিসের সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস অনেকের জন্য সত্যিই অনুপ্রেরণার। শ্যামলা হ্যারিসের বাবার সাহস, অনুপ্রেরণা আর প্রবল আত্মবিশ্বাসই ছিল এই ইতিহাসের মূল ভিত্তি।
অনেক ধন্যবাদ। +
২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
১৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:১৩
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: চমৎকার তথ্য। মা ভাল হলে সন্তান ভাল হবেই।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: আবার ভিন্ন চিত্রও আছে- ভালো মায়ের নোংরা মনের সন্তান চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি।
১৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৬
মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন: জুলভার্ন ভাই, ব্লগে ফিরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আপনার পোষ্ট সব সময়ই ভালো কিছু উপহার দেয়।
২৭ শে নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:০১
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রিয় ভাই আমার, লাভ য়্যু সো মাচ!
১৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩
মিরোরডডল বলেছেন:
মা মেয়ে দুজনের স্টোরিই ভীষণ ইন্সপায়ারিং ।
নট অনলি ফর উইমেন, ফর এনিওয়ান ।
হার্ডওয়ার্ক, ডিটার্মিনেশন আর লক্ষ্য স্থির থাকলে অনেকদুর যাওয়া যায় ।
সাফল্য আসবেই ।
The more you struggle, the more you achieve.
চমৎকার পোষ্টের জন্য থ্যাংকস জুলভার্ন ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় বোন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০২
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: সংগ্রাম ছাড়া বড় কিছু অর্জন হয় না।