![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
সম্রাট জাহাঙ্গীরের তরবারি.....
ষোড়শ-সপ্তদশ শতাব্দীর ভারতের অন্যতম শাসক ছিলেন মোগল সম্রাটরা। মোগল সম্রাট আকবরের পুত্র জাহাঙ্গীর। মোঘল রাজা-বাদশার কথা বললে সুরম্য রাজপ্রাসাদ, বিলাসব্যসন, সুরা-নর্তকী, যুদ্ধবিগ্রহ, সাম্রাজ্য বিস্তার ইত্যাদি ব্যাপারগুলোই আমাদের কাছে পরিচিত। সবক্ষেত্রে কিন্তু তা নয়। অনেকের মধ্যে থাকে আলাদা ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভা। এমনই এক সম্রাট ছিলেন জাহাঙ্গীর। অত্যধিক সুরাসক্তির জন্য দুর্ণাম ও বেগম নূরজাহানের প্রতি সীমাহীন আসক্তির জন্য অনেকে তাঁকে পছন্দ না করলেও কবিসুলভ মন, প্রকৃতির প্রতি গভীর অনুরাগ-প্রেম, বিজ্ঞানমনস্কতা, অনুসন্ধিৎসা ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে নৈসর্গিক ঘটনা পর্যবেক্ষণে আগ্রহ তাঁর চরিত্র ও ব্যক্তিত্বকে এক অসাধারণ মাত্রা দিয়েছিল। অদ্ভুত সব প্রাণী, নানারকম পাখি, গাছ-পালা ও ফুলের সৌন্দর্য ইত্যাদির এক উত্তম পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি, যার পরিচয় পাওয়া যায় স্বরচিত আত্মস্মৃতি 'তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী'(জাহাঙ্গীর নামা)-তে। তিনি জ্যোতিষ শাস্ত্রে আগ্রহী ছিলেন। গ্রহের বিচরণ, রাশিচক্রে অবস্থান বুঝতেন। তাঁর রাশি চিত্র সম্বলিত মুদ্রা এক অবিস্মরণীয় কীর্তি।
'তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী'-তে অনেক ঘটনার বর্ণনা পাওয়া যায়, যেগুলির মধ্যে অন্যতম - এক বিরল উল্কাপাতের ঘটনা। তাঁর নিজের কথায়, "তখনকার একটি অদ্ভূত ঘটনা হচ্ছে, ১৬২১খ্রি. ৩০শে ফরওয়ার্দিন জলন্ধর পরগনার (পাঞ্জাবে) এক গ্রামে প্রাতঃকালে পূর্ব দিকে এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। শব্দ এতটাই ভয়ংকর যে তথাকার বাসিন্দারা সেই আতঙ্কসৃষ্টিকারী আওয়াজ শুনে অনেকেই অচৈতন্য হয়ে পড়েছিল। শব্দ ও কোলাহলের মধ্যে হঠাৎ আকাশ থেকে মাটিতে একটি আলোর পিন্ড পড়লো। খানিকক্ষণ পরে মানুষের আতঙ্ক ও ভীত-বিহ্বলতার ভাব কেটে গেল এবং তখন তারা ওখানকার প্রশাসক মহম্মদ সৈয়দের কাছে দ্রুত ঘটনাটা জানালেন। তিনি তখুনি ঘোড়া ছুটিয়ে স্থানটি দেখতে গেলেন। দৈর্ঘ্য প্রস্থে দশ-বারো গজ জায়গা পুড়ে সেখানে কোন সবুজ ঘাসের চিহ্ন ছিল না। তখনও আগুনের উত্তাপ অনুভব করা গিয়েছিল। তিনি জায়গাটিকে খনন করার হুকুম দিলেন। খুঁড়তে খুঁড়তে এক জায়গাতে একখন্ড তপ্ত লৌহ পাওয়া গেল। তা এত গরম ছিল যে মনে হল যে তখুনি বোধ হয় চুল্লি থেকে তোলা হয়েছে। আস্তে-ধীরে তা ঠান্ডা হলে তিনি সেটিকে স্বগৃহে নিয়ে একটি আবরণে মুড়ে সীল করে দরবারে নিয়ে আসেন। আমার সামনেই ওটাকে ওজন করতে বললাম। ওজন হয়েছিল ১৬০ তোলা (প্রায় ২ কেজি)। লোহার কারিগর ওস্তাদ দাউদকে হুকুম দিলাম তা দিয়ে একটি করে তলোয়ার, ছুরি/ছোরা তৈরী করতে। অন্য লোহার সঙ্গে মিশিয়ে এর গুনাগুন পরীক্ষা করা হল। ইয়ামানী ও দক্ষিণী চমৎকার সব তলোয়ারের মতো একে বাকা ও সোজাও করা যায়। উৎকৃষ্ট তলোয়ারের মতোই এটিকে দিয়ে ভালো কাটা যায়। আমি একটির নাম দিলাম 'সমসীর-ই-কাতি'(ধারালো তলোয়ার); আর দ্বিতীয়টির নাম দেওয়া হোল 'বর্ক-শিরিস্ত'(বিদ্যুতের মতো)। রাজকবি বিবাদল খান এদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে একটি কবিতা রচনা করেন। তিনি সেটি আবৃত্তি করেছিলেনঃ-
"জাহাঙ্গীরশাহ দ্বারা পৃথিবী নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে,
তাঁর রাজত্বকালে কাঁচা লোহা বিদ্যুৎ থেকে
ভূপতিত হয়েছে।
তাঁর বিশ্ববন্দিত আদেশে সেই লৌহদ্বারা
নির্মিত হয়েছে
একটি ছোরা, ছুরিকা ও দুখানি খড়্গ।
তাতে রাজকীয় বিদ্যুৎ যেন ঝলকায়।'
তারিখ উৎকীর্ণ হয়েছিল হিজরী ১০৩০(১৬২০-২১ খ্রি.)।"
ছবি ও তথ্যসূত্রঃ তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী(জাহাঙ্গীর নামা)
উল্কাপাত ও জাহাঙ্গীরের ঐতিহাসিক ছোরা।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৩২
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: তথ্যটুকু জানা হলো।
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: ছোরা আর তরবারি কি একই জিনিস?
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: না, সহজ ভাবে বললেঃ- ছোরা হচ্ছে ছোট সাইজের অস্র যা গুপ্ত অস্ত্র হিসেবেই বেশী ব্যবহৃত হয়। আর তরবারি বড় অস্ত্র যা পরস্পর সম্মুখ যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়।
৪| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সম্রাট জাহাঙ্গীর ৪২ বছর বয়সে তার ২০তম স্ত্রী মেহেরুন্নেসাকে বিয়ে করেন। পরে মেহেরুন্নেসার নাম হয় সম্রাজ্ঞী নুরজাহান। তখন নুরজাহান এর বয়স ৩৪। প্রথম দেখার ২৬বছর পর তাদের বিয়ে হয়। ততদিনে রাজনৈতিক কারণে সম্রাট জাহাঙ্গীর ১৯টা বিয়ে করেছেন এবং সামাজিক কারণে মেহেরুন্নেসা আলী কুলি নামের এক সৈনিককে বিয়ে করেন। আলী কুলির সাথে মেহেরুন্নেসার বিয়েটা হয় সম্রাট আকবরের মধ্যস্থতায়। যদিও তখন সাম্রাজ্যের অধিপতি আকবর এবং সম্রাজ্ঞী রুকাইয়া শাহজাদা সেলিম (সম্রাট জাহাঙ্গীর) এর প্রেম সম্পর্কে অবগত ছিলেন। সম্রাজ্ঞী নুরজাহান (মেহেরুন্নেসা) ছিলেন সম্রাট শাহজাহান এর প্রিয়তম স্ত্রী সম্রাজ্ঞী মমতাজ এর আপন ফুপু।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকাত ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরেছেন। অ্যালেক্স রাদারফোর্ড এর এম্পায়ার অফ দ্য মোগলস সিরিজের বইয়ে খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। অন্যদিকে ইতিহাস পিপাসু হিসেবে এই ঘটনাগুলো খুব মনযোগ দিয়ে পড়েছি। সেইসব ইতিহাস মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
৫| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৩৭
ইসিয়াক বলেছেন: জানা ছিল না এ সম্পর্কে। ভালো লাগলো প্রিয় ব্লগার।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ইসিয়াক।
৬| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৪১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: জানতাম না। ভালো একটা বিষয় শেয়ার করেছেন ভাইজান।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: এই ইতিহাস আরো ভালো করে জানার জন্য অ্যালেক্স রাদারফোর্ড এর এম্পায়ার অফ দ্য মোগলস সিরিজের সকল বই পড়তে পারেন।
৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৮
বিটপি বলেছেন: সম্রাট জাহাঙ্গীর মাত্র এক কেজি ওজনের তরবারী নিয়ে যুদ্ধ করতেন? এই জন্যই তো তাঁর সাম্রাজ্যের এরকম করুণ অবস্থা।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৫
জুল ভার্ন বলেছেন: সম্রাট জাহাংগীর এক কেজি ওজনের ছোরা দিয়ে যুদ্ধ করেননি। উল্কা খণ্ড থেকে এক কেজি ওজনের ছোরা বানিয়ে সম্রাটকে স্বারক উপহার দেয়া হয়েছিলো।
৮| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৮
ইলি বলেছেন: জানা ছিল না এ সম্পর্কে। ভালো লাগলো
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১২
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বেশ জানলাম দাদা ভাল থাকবেন-----------