নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
শাদ্দাদের বেহেশত........
মরুভূমির ধুলিগর্ভে হারিয়ে যাওয়া এক অভূতপূর্ব নগরী ইরাম, যাকে ডাকা হয় মরুর আটলান্টিস। কথিত আছে, শাদ্দাদ বিন আদ নামের এক ব্যক্তি ছিল এ শহরের রাজা, তার নির্দেশেই নির্মিত হয় 'ভূস্বর্গ'। চলুন জেনেনি আজ ইরাম নগরীর যত গল্প।
কেবল উপকথাতেই নয়, ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনেও উল্লেখ আছে এ নগরীর, "তুমি কি ভেবে দেখনি তোমার প্রতিপালক আ'দ জাতির ইরামে কী করেছিলেন? তাদের ছিল সুউচ্চ সব স্তম্ভ, যেমনটি পৃথিবী কোনোদিন দেখেনি আগে।" (আল কোরআন, সুরা ফাজর, ৮৯:৬-৮)
কোরআনে 'ভেবে দেখনি' কথা থেকে ধরে নেয়াই যায় যে, আরবরা জানত ইরাম নগরীর কথা, সেটা উপকথাতেই হোক, আর ধ্বংসস্তূপ দেখেই হোক। আমরা খুঁজে বের করতে চেষ্টা করব, এ নগরী নিয়ে উপকথার ফাঁকে ফাঁকে হোক আর অন্যত্রই হোক- কী কী বলা রয়েছে। আর কী কাহিনীই বা জড়িত আছে এর সাথে?
কথিত আছে, হযরত নুহ (আঃ) এর পুত্র শামের ছেলেই আ'দ। তার পুত্র শাদ্দাদ আ'দ জাতির প্রতাপশালী রাজা ছিল, যার স্বপ্ন ছিল দুনিয়াতে স্বর্গ নির্মাণ করা। ইসলামি বর্ণনা অনুযায়ী, এ জাতির প্রতি পাঠানো হয় আরবীয় নবী হুদ (আ)-কে। কোরআনে তার নামে একটা সুরা রয়েছে। বাইবেল বিশারদগণ আবার তাকে বাইবেলের ইবার বা আবির বলে মনে করেন, যিনি ইসমাইল (আঃ) ও ইসহাক (আঃ) এর পূর্বপুরুষ ছিলেন। মজার ব্যাপার, এই ইবারের সাথে মিল পাওয়া যায় ইরামের অপর নামের, যেটি হল 'উবার'।
কোরআন বলছে, আ'দ জাতির ইরাম নগরীর অবস্থান ছিল 'আল-আহকাফ' এ। যার মানে 'ধুলিময় সমভূমি' কিংবা 'প্রচুর বাতাস বয়ে যাওয়া পাহাড়ের কোলের মরুঅঞ্চল'। বিশেষজ্ঞদের মতে, জায়াগাটি আরব উপদ্বীপের দক্ষিণে, ইয়েমেনের পূর্বাঞ্চল বা ওমানের পশ্চিমাঞ্চলে। আরবিতে এ শহরকে ডাকা হয় 'ইরাম যাত আল ইমাদ' নামে, অর্থ 'স্তম্ভের নগরী ইরাম' (Iram of the Pillars)। আশির দশকে সেই অঞ্চলে একটি ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, যাকে উবার নগরীই মনে করা হয়।
ইবনে কাসিরের আল বিদায়া গ্রন্থে আমরা জানতে পারি, আ'দ জাতি প্রতাপশালী ও ধনী ছিল, নির্মাণ করেছিল সুউচ্চ সব অট্টালিকা। তারা একসময় একেশ্বেরবাদ বর্জন করে এবং মূর্তিপূজা শুরু করে, যেমন সামদ, সামুদ এবং হারা ছিল তাদের তিন উপাস্য। হুদ (আঃ) অনেক দিন তাদের মাঝে একেশ্বরবাদ প্রচার করেন, আল্লাহ্র পথে ডাকেন। কিন্তু তারা না ফেরায় এক ঝড় তাদের ধ্বংস করে দেয়, আর সকাল বেলা জনশূন্য ইরাম পড়ে থাকে। (কোরআন, ৪৬:২৪-২৫)
তবে শাদ্দাদের উপকথা এ নগরী ধ্বংসের আগের ঘটনা। বলা হয়, শাদ্দাদ আর তার ভাই শাদ্দিদ পালা করে এক হাজার আ'দ গোত্রের ওপর রাজত্ব করত। পুরো আরব আর ইরাকের রাজা ছিল শাদ্দাদ। কিছু আরব লেখকদের মতে- শাদ্দাদের অভিযানের কারণে কানানের দেশান্তর হয়েছিল। শাদ্দাদের কাহিনী আলিফ লায়লা অর্থাৎ আরব্য রজনী গ্রন্থের ২৭৭ থেকে ২৭৯ তম রাতে বলা হয়।
উপকথা অনুযায়ী, হুদ (আঃ) শাদ্দাদকে পরকালের বেহেশতের প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু শাদ্দাদ বলল সে নিজে বেহেশত বানাবে দুনিয়াতেই, লাগবে না তার পরকালের বেহেশত। এরপর ইয়েমেনের আদানের কাছে এক বিশাল এলাকা জুড়ে শাদ্দাদের 'বেহেশত' নির্মাণ শুরু হয়। প্রাচীর দেয়ালগুলো ৭৫০ ফুট উঁচু ছিল, আর প্রস্থে ৩০ ফুট। চারদিকে চারটি ফটক। ভেতরে তিন লক্ষ প্রাসাদবাড়ির কথা বর্ণিত আছে। উপকথা অনুযায়ী যার নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৫০০ বছরে।
আল বায়যাওয়ি থেকে আব্দুল্লাহ ইবন কিলাবাহ এর বর্ণনা করা একটা ঘটনায় প্রকাশ, তিনি ইয়েমেনের আদানে এক আরবের দেখা পেয়েছিলেন, যিনি হাদ্রামুতের পশ্চিমে মরুভূমির গহীনে এক রহস্যময় শহরের দেখা পেয়েছিলেন, যা ইরাম নগরীর বর্ণনার সাথে মিলে যায়। অন্য বর্ণনায় আব্দুল্লাহ নিজেই সেই শহরে যান। সেখান থেকে জহরতও নিয়ে আসেন।
এ অভিযানের কথা তখনকার খলিফা মুয়াবিয়ার কানে পৌঁছায়। নিজের অভিযানের সত্যতা প্রমাণের জন্য তিনি খলিফাকে ইরামের কিছু মুক্তো দেখান, যেগুলো হলুদ রঙের। খলিফা তখন সাহাবী কাব আল আহবার (রা)-কে জিজ্ঞেস করেন এ শহরের কথা, তিনি তখন কাহিনীগুলো উপকথার কাহিনীগুলো বর্ণনা করেন। তবে কোরআন বা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর বর্ণনায় শাদ্দাদের বেহেশতের কোনো কাহিনী পাওয়া যায় না।
শাদিদ (বা শিদাদ) মারা যাবার পর শাদ্দাদ বেহেশতের বর্ণনা পড়ে নানা বইতে, কাহিনীর সেই সংস্করণে হুদ (আঃ) তাকে বলেননি বেহেশতের কথা। এবং সেই থেকে তার ইচ্ছে হয় বেহেশত বানাবার। 'কাসাসুল আম্বিয়া' গ্রন্থেও এ উপকথার কাহিনী উল্লেখ করা হয়েছে। সংক্ষেপে পুরো কাহিনী শুনে নেয়া যাকঃ-
রাজা আ'দের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে শাদিদ রাজা হয়, ৭০০ বছর পর্যন্ত চলে তার রাজত্ব।
একবার এক লোক প্রতিবেশীর নিকট থেকে জমি কিনে কৃষিকাজ করতে গিয়ে গুপ্তধন আবিষ্কার করল মাটির নিচে। সে সাথে সাথে গিয়ে প্রতিবেশীকে সে গুপ্তধন দিতে গেল, কিন্তু প্রতিবেশী নিল না। তার মতে, সে যখন জমি বিক্রি করেছে, সবকিছু সহই করেছে। যোগ্য ফয়সালার জন্য তখন প্রথমজন বাদশাহ শাদিদের কাছে যায়। শাদিদ তখন দু'পরিবারের পুত্র আর কন্যার মাঝে বিয়ে দিয়ে দেন, এবং সে গুপ্তধন ভাগ করে দেন দু'পরিবারের মাঝে।
হুদ (আঃ) চেষ্টা করেও অবশ্য পৌত্তলিক শাদিদকে আল্লাহর পথে আনতে পারেননি। তার মৃত্যুর পর উজির শাদ্দাদ রাজা হয় এরং ছোট ভাই উজির বা মন্ত্রী ছিল। রাজা হবার পর তার কাছেও হুদ (আঃ) গিয়ে বেহেশতের কথা বললেন। তখন শাদ্দাদ বললো, "তোমার প্রতিপালকের বেহেশতের কোনো দরকার আমার নেই। এরকম একটি বেহেশত আমি নিজেই বানিয়ে নেব।"
শাদ্দাদ তার ভাগ্নে জোহাক তাজীর কাছে দূত পাঠাল, জোহাকও এক বিশাল সাম্রাজ্যের রাজা। দূত মারফত শাদ্দাদ বললো, "ভাগ্নে! তোমার রাজ্যে যত সোনারূপা আর মূল্যবান জহরত আছে, সব সংগ্রহ করে আমার দরবারে পাঠিয়ে দেবে, যত মেশক আম্বর আর জাফরানাদি আছে সেগুলোও। আমি দুনিয়ায় এক বিশাল অনুপম বেহেশত তৈরি করতে চাই।"
আশপাশের অনুগত রাজাদেরও শাদ্দাদ একই নির্দেশ দিল। আর নিজের সকল প্রজার ক্ষেত্রেও একই নির্দেশ ছিল, কারো কাছে কোনো জহরত পাওয়া গেলে তার ভাগ্যে আছে কঠিন শাস্তি। তল্লাশিও চলত নিয়মিত।
একে একে জহরতে ভরে যেতে লাগলো শাদ্দাদের দরবার। বেহেশতের স্থান বাছাইয়ের জন্য অনেক লোক নিয়োগ করা হলো। অবশেষে ইয়েমেনের একটি স্থানকে পছন্দ করা হলো। আয়তন ছিল একশ চল্লিশ ক্রোশ। দেশ-বিদেশ থেকে আসা তিন হাজার সুদক্ষ কারিগর কাজ শুরু করল।
এক দরিদ্র বিধবা বৃদ্ধার নাবালিকা মেয়ের গলায় চার আনা রূপার একটি অলংকার ছিল। এক তালাশকারীর চোখে সেটা পড়ে যায়, সে ছিনিয়ে নেয় সেটি। দুঃখী মেয়েটি ধুলোয় গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে থাকে। সে দৃশ্য দেখে সে বৃদ্ধা দু'হাত তুলে ফরিয়াদ করে, "হে আমার প্রতিপালক, তুমি সবই অবগত। দুঃখিনীর প্রতি জালিম শাদ্দাদের অত্যাচারের দৃশ্য তোমার অদেখা নয়। তুমি ছাড়া আমাদের ফরিয়াদ শোনার কেউ নেই। তুমি শাদ্দাদকে ধ্বংস করে তোমার দুর্বল বান্দাকে রক্ষা কর।"
ওদিকে বেহেশত বানাবার কাজ চলছে পুরোদমে। চল্লিশ গজ নিচ থেকে মর্মর পাথর দিয়ে বেহেশতের প্রাসাদের ভিত্তি স্থাপন করা হলো। আর তার উপর সোনা-রুপানির্মিত ইট দিয়ে প্রাচীর বানানো হলো। বর্ণিত আছে, কৃত্রিম গাছও শাদ্দাদ বানায়, যার শাখা প্রশাখাগুলো ছিল ইয়াকুত পাথরের, আর পাতাগুলো নির্মিত হয়েছিল 'ছঙ্গে-জবরজদ' দিয়ে। আর ফল হিসেবে ঝুলছিল মণি মুক্তা আর হীরা জহরত। মেঝে ছিল চুন্নি পান্নার মতো মূল্যবান পাথরের, সাথে মেশকের ঘ্রাণ। স্থানে স্থানে ঝর্নাধারা ছিল দুধ, মদ আর মধুর। আর চেয়ার টেবিল ছিল লক্ষাধিক, সবই সোনার তৈরি। মোটকথা, এলাহি কাণ্ড, মনোহরী এক দৃশ্য।
নির্মাণকাজ শেষ হলে সে বেহেশতের ফটক দিয়ে ঢুকবার জন্য হাজার হাজার সেনা নিয়ে অগ্রসর হলো শাদ্দাদ। তিন হাজার গজ দূরে এসে তার বাহিনী অবস্থান নিল। এমন সময় অদ্ভুত এক হরিণের দিকে তার নজর পড়ল। দেখে মনে হচ্ছিল, হরিণের পাগুলো রূপার, শিং সোনার আর চোখ ইয়াকুত পাথরের। শাদ্দাদের শিকারের নেশা ছিল। বাহিনীকে থামতে বলে নিজেই রওনা দিল হরিণটি ধরবার জন্য।
কিন্তু হরিণের দেখা আর মেলেনি। এক বিকট অশ্বারোহী তার পথ রোধ করে দাঁড়ালো, যেই না শাদ্দাদ তার বাহিনীর কাছ থেকে সরে এলো। অশ্বারোহী বললেন, "এই সুরম্য প্রাসাদ কি তোমাকে নিরাপদ রাখবে?"
শাদ্দাদ জিজ্ঞেস করল, "তুমি কে?"
"আমি মালাকুল মাউত। মৃত্যুর ফেরেশতা।"
"এখানে কী চাও?"
"এখনো বোঝোনি? আমি তোমার জান কবজ করতে এসেছি।"
শাদ্দাদ নিষ্পলক চোখে রাকিয়ে রইল, তার স্বপ্ন পূরণ না করেই চলে যেতে হবে? "আমাকে অন্তত একবার আমার পরম সাধের বেহেশত দেখতে দাও?"
আযরাঈল (আঃ) বললেন, "আল্লাহর অনুমতি ছাড়া এক মুহূর্ত বাড়তি সময়ও তোমাকে দিতে পারি না। আমার উপর নির্দেশ এখুনি তোমার জান কবজ করা।"
"তাহলে ঘোড়া থেকে নামি আমি।"
"না, ঘোড়াতে থাকা অবস্থাতেই তোমার জান কবজ করতে হবে আমার।"
শাদ্দাদ এক পা মাটিতে পা রাখতে গেলো। কিন্তু সেটি মাটি স্পর্শ করবার আগেই আযরাঈল (আঃ) দেহপিঞ্জর থেকে আত্মা বের করে নিলেন। আর জিব্রাঈল (আঃ) এর প্রকাণ্ড এক শব্দ করলেন যাতে মারা গেল উপস্থিত সেনাবাহিনী, আর অসংখ্য ফেরেশতা এসে ধ্বংস করে দিয়ে গেল দুনিয়ার 'বেহেশত', পরে রইল ধ্বংসস্তূপ।
কাসাসুল আম্বিয়া গ্রন্থে বলা হয়েছে, শাদ্দাদের বেহেশত কেয়ামতের আগে কখনোই আত্মপ্রকাশ করবে না, অর্থাৎ খুঁজে পাওয়া যাবে না- উপকথায় তা-ই বলা হয়। আরো বলা আছে, কা'ব (রা) নাকি বলেছিলেন, তিনি রাসুল (সা) থেকে শুনেছিলেন, আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি শাদ্দাদের বেহেশতের কিছু নিদর্শন দেখতে পাবে। খলিফা মুয়াবিয়ার নিকট আসা সেই ব্যক্তির নাম ছিল আব্দুল্লাহ বিন কিলাবা। তবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাসুল (সা) এর সহিহ কোনো হাদিস এ ব্যাপারে পাওয়া যায় না।
তথ্যসূত্রঃ (১)জেমস রোলিন্স এর স্যান্ডস্টর্ম; (Source: Booktopia) (২) আলিফ লায়লা।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৩
শেরজা তপন বলেছেন: শাদ্দাদ না দেখতে পেলেও আমার দেখার বড় সাধ সেই মানুষ্য নির্মিত বেহেশত!
মানুষের ভাবনার সীমানা কতদুর পর্যন্ত যেতে পারে- সেজন্যই মুলত।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৪
জুল ভার্ন বলেছেন: তপন ভাই, সত্যিই মানুষের ভাবনার সীমানা সত্যিই সীমাহীন। শাদ্দাত যেমন বানিয়েছিলেন বেহেশত তেমনি নেবুচাদনেজার বানিয়েছিলেন ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান- যা বর্তমান ইরাকে অবস্থিত। শাদ্দাতের বেহেশত আমি দেখিনি। কিন্তু ১৯৮৭ সনে "বেবীলনের শুণ্য উদ্দ্যান" এর ভগ্নাংশ আমি দেখেছি।
প্রাচীন মেসোপটেমীয় সভ্যতার একটি শহর ব্যাবিলন। এই শহরের প্রধান আকর্ষণ ঝুলন্ত বাগান বা ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালে সম্রাট নেবুচাদনেজার তাঁর স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় এটি নির্মাণ করেন। নেবুচাদনেজারের স্ত্রী ছিলেন মিডিয়ান সম্রাটের কন্যা। মিডিয়ান সম্রাট নিনেভা রাজ্য দখল করতে নেবুচাদনেজারকে সহযোগিতা করেছিলেন। তখন মিডিয়ান রাজকন্যার সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে নেবুচাদনেজার তাঁকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সম্রাজ্ঞীর তেমন ভালো লাগত না, কারণ ব্যাবিলন হলো সমতল ভূমি আর মিডিয়ান ছিল সবুজ পাহাড়-পর্বতের দেশ। সম্রাট সম্রাজ্ঞীর মনের কষ্ট বুঝতে পেরে প্রাসাদের ওপরই তৈরি করলেন এক সুন্দর পুষ্প বাগান। প্রথমে নির্মাণ করা হয় ৮০০ বর্গফুটের বিশাল এক ভিত। ভিতটিকে স্থাপন করা হয় সম্রাটের খাস উপাসনালয়ের সুবিস্তৃত ছাদে। মাটি থেকে এর উচ্চতা দাঁড়ায় প্রায় ৮০ ফুট। এরপর চার হাজার শ্রমিক রাত-দিন পরিশ্রম করে তৈরি করে পুষ্প বাগান। বাগান পরিচর্যা করতে রাখা হয় আরো এক হাজার ৫০ জন মালি। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ-ছয় হাজার ধরনের গাছ এনে লাগানো হয় বাগানে। মোটা পেঁচানো নলের সাহায্যে বাগানের সুউচ্চ ধাপগুলোতে নদী থেকে পানি উঠানো হয়। ৫১৪ খ্রিস্টাব্দে পার্শ্ববর্তী পারস্য রাজ্যের সঙ্গে এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এই সুন্দর বাগানটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। উদ্যানটি প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যেরও একটি।
৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৩
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর গত রোজায় টিভিতে আদ সম্পর্কে কিছু দেখেছি দাদা সত্যই সৃষ্টিকর্তার মিলাভার
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমিও টিভিতে সেই অনুষ্ঠান দেখেছিলাম।
ধন্যবাদ।
৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৪
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ না চাইলে কিছুই টিকে থাকতে পারে না দুনিয়াতে
ধন্যবাদ
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৫০
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দূর্ভাগ্য এই চিরন্তন সত্যকে অনেক নাদানই বিশ্বাস করেনা!
৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:১১
অপু তানভীর বলেছেন: এই স্থানটি আমার নিজের বড় দেখার ইচ্ছে নিজ চোখে । সত্যিই কেমন দেখতে ছিল সেটি !
স্যান্ড স্টর্ম বইটি আমার পড়া । খুবই চমৎকার একটা বই !
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৩
জুল ভার্ন বলেছেন: স্যান্ড স্টর্ম যেহেতু পড়া হয়েছে- এখন আলিফ লায়লা বইটাও সময় পেলে পড়ে নিও। দুটো বইয়ের পাঠ প্রতিকৃয়ায় অনেক কিছু বোঝা যায়, উপলব্ধি করা সহজ হয়।
ধন্যবাদ।
৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৯
সোবুজ বলেছেন: সবই আল্লহ পাকের ইচ্ছা।আল্লাহর ইচ্ছায় মক্কা মদিনা কি সুন্দর মহিমায় টিকে আছে।কিন্তু ইহুদি খৃষ্টানদের কোন কিছু টিকে নাই।কোটি কোটি পর্যটক আসে এ সব দেখতে।হজের সময় হজ করতে সারা বছর ওমরাহ করতে।বর্তমান বাদশা পর্যটকদের সুবিধার জন্য অনেক অধুনিক ব্যবস্থা করছেন।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪৫
জুল ভার্ন বলেছেন: বর্তমান সৌদি সরকারের স্পেশালী যুবরাজ সালমান সৌদি আরব তথা মধ্যপ্রাচ্যের ভালো সব কিছু ধ্বংশ করে দিবে।
৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৪৫
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
এই কাহিনী পড়েছি কয়েকবার আর তখনই ভেবেছি ইস্ যদি দেখতে পেতাম সেই বেহেশত!
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৮:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার কখনও দেখার ইচ্ছা হয়নি।
৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:১৯
নতুন বলেছেন: প্রাচীর দেয়ালগুলো ৭৫০ ফুট উঁচু ছিল, আর প্রস্থে ৩০ ফুট। চারদিকে চারটি ফটক। ভেতরে তিন লক্ষ প্রাসাদবাড়ির কথা বর্ণিত আছে। উপকথা অনুযায়ী যার নির্মাণ কাজ শেষ হয় ৫০০ বছরে।
এমন দেয়াল কি বাস্তবে নিমান করা সম্ভব?
ওদিকে বেহেশত বানাবার কাজ চলছে পুরোদমে। চল্লিশ গজ নিচ থেকে মর্মর পাথর দিয়ে বেহেশতের প্রাসাদের ভিত্তি স্থাপন করা হলো। আর তার উপর সোনা-রুপানির্মিত ইট দিয়ে প্রাচীর বানানো হলো। বর্ণিত আছে, কৃত্রিম গাছও শাদ্দাদ বানায়, যার শাখা প্রশাখাগুলো ছিল ইয়াকুত পাথরের, আর পাতাগুলো নির্মিত হয়েছিল 'ছঙ্গে-জবরজদ' দিয়ে। আর ফল হিসেবে ঝুলছিল মণি মুক্তা আর হীরা জহরত। মেঝে ছিল চুন্নি পান্নার মতো মূল্যবান পাথরের, সাথে মেশকের ঘ্রাণ। স্থানে স্থানে ঝর্নাধারা ছিল দুধ, মদ আর মধুর। আর চেয়ার টেবিল ছিল লক্ষাধিক, সবই সোনার তৈরি। মোটকথা, এলাহি কাণ্ড, মনোহরী এক দৃশ্য।
ততকালিন প্রযুক্তিতে তারা কি আর বানাতে পেরেছিলো? এখনকার ৫ তারা হোটেলের পেন্টহাউজ এর চেয়ে বিলাশবহুল হয়ে থাকে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:০৯
জুল ভার্ন বলেছেন: প্রথমত এমন দেয়াল বানানো অসম্ভব হলেও সম্ভব- যদি আমরা পিরামিড নির্মাণের বিষয়টা মাথায় রাখি। পিরামিডের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৪৮১ ফুট। এবং আর্কিওলজিস্টদের মতে সেই উচ্চতায় যে প্রস্তরখন্ডে আছে সেটার সম্ভাব্য ওজন প্রায় তিন টন! সেই প্রস্তর যুগেই যদি শত টন থেকে তিন টন ওজনের প্রস্তরখন্ডের দিয়ে পিরামিড নির্মাণের মতো অসাধ্য সাধন করতে পারে তাহলে শাদ্দাদের বেহেশতের প্রাচীরও করা যেতে পারে।
আপনি আমাকে প্রশ্ন করেছেন, ততকালিন প্রযুক্তিতে তারা কি আর বানাতে পেরেছিলো?
উত্তরে বলতে চাই, আমি যা লিখেছি তার তথ্যসূত্র উল্লেখ করেছি, নিজে বানিয়ে কিছু লিখিনি।
ধন্যবাদ।
৯| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৮
নতুন বলেছেন: প্রাচীর দেয়ালগুলো ৭৫০ ফুট উঁচু ছিল, আর প্রস্থে ৩০ ফুট।
পিরামিড ৪৮১ ফুট উচু তার নিচে ভিক্তি কতটুকু চওড়া? ৭৫৫.৬ ফুট
আর ৭৫০ ফুট উচু দেয়াল আপনি ৩০ ফুট চওড়া বানানো সম্ভব বললে আমার মানতে সমস্যা নাই।
কল্প কাহিনিতে সবই সম্ভব।
আপনি বানিয়ে বললেন নাই সেটা জানি। কিন্তু এই সব যে কল্পকাহিনি সেটা বোঝার চেস্টা করছি।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৫
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
১০| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:২৩
জটিল ভাই বলেছেন:
শাদ্দাতেরই গড়া বেহেস্ত ভেঙ্গে তুমি করলে খানখান,
এখন কেনো কোনো পাপের করোন না আর প্রতিবিধান?
ঈমানের এই পরীক্ষাতে সইবো কতো অত্যাচার?
এ কেমন বিচার তোমার এ কেমন বিচার?
তথ্যপূর্ণ লিখা জটিল লাগলো প্রিয় ভাই
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:১৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার ছন্দ কবিতায় মন্তব্য খুব সুন্দর হয়েছে।
১১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৬
তারেক ফাহিম বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্ট।
জানা হলো।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:০৭
রানার ব্লগ বলেছেন: শাদ্দাতের বেহেস্তের কোন ঐতিহাসিক দলিল না থাকলেও পাড়ার মাহাফিলের জন্য গরম বিষয় মৌলোভীদের আসর গরম করে রুপকথা বলার।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: পাড়ার মাহাফিলে মৌলভীদের আসর গরম করা রুপকথা হলেও আলিফ লায়লা ও স্যান্ড স্টর্ম বইটি যিনি বা যারা লিখেছেন তারা কিন্তু ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিলেন না!
আলিফ লায়লা বা আরব্য রজনীর গ্রন্থের মূল লেখকের খোঁজ পাওয়া যায় না। কারণ কয়েকশ' বছর ধরে গল্পগুলো বিভিন্ন লেখকের কলম ও মানুষের মুখে মুখে ঘুরে অবশেষে মলাটবন্দি হয়েছে। আরব, পারস্য, মিসর, আফ্রিকা, চীনসহ নানান অঞ্চলের লোকগাথার সংমিশ্রণে গল্পগুলো রচিত হয়েছে। ১৭০৬ সালে আলিফ লায়লার ইংরেজি অনুবাদ অ্যারাবিয়ান নাইটস প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত নানান ভাষায় অনূদিত হয়েছে সাহিত্যের এই অমূল্য গ্রন্থটি। স্যার গাওয়েইন অ্যান্ড দ্য গ্রিন নাইট মিডল ইংলিশ এজের শ্নোকধর্মী আলোচিত প্রেম আখ্যান 'স্যার গাওয়েইন অ্যান্ড দ্য গ্রিন নাইট'। চতুর্দশ শতাব্দীর শেষাংশে রচিত এ অ্যাখানের জনক অজ্ঞাতনামা কোনো এক সাহিত্যিক। গাওয়েইন পোয়েট বা পার্ল পোয়েট হিসেবে এ লেখকের পরিচিতি থাকলেও তার আসল নাম জানা যায়নি আজ পর্যন্ত।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৩৩
জোভান আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ