নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি প্রশ্নের উত্তরে কতকিছু জানা হলো.....

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৫

একটি প্রশ্নের উত্তরে কতকিছু জানা হলো.....

জ্ঞানী পণ্ডিত ব্যক্তিদের কাছে ছোট্ট একটা প্রশ্নের জবাবে কতোকিছুই জানা যায়- তার প্রমাণঃ-
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে একবার জানতে চাওয়া হয়েছিল, 'নিজের জন্য কেমন মৃত্যুদৃশ্য আপনার পছন্দ?'
উত্তরে সুনীল বলেছিলেন, "আমার স্বপ্নের মৃত্যুদৃশ্যটি অন্য এক কবি অনেক আগেই চুরি করে নিয়েছেন।

"কিছু প্রিয় সুখাদ্য, কিছু মহার্ঘ পানীয় আর কয়েকটি মনের মতো বই নিয়ে নিজস্ব নৌকোয় চড়ে মহাসমুদ্রে ভেসে যাওয়া। তারপর ঝড় আসবে। ভেঙেচুরে উলটে যাবে নৌকো। আহা, সে এক স্বপ্নের সলিল-সমাধি! সেই স্বর্গীয় মৃত্যুদৃশ্য বহুদিন আগে চুরি করে নিয়েছেন এক ইংরেজ তরুণ কবি।

সেই কবির নাম শেলি। অক্সফোর্ডের ছাত্র ছিলেন। নাস্তিকতা প্রচারের অপরাধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। সভ্যতার মহাশ্মশানে বসে এক সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন 'প্রমেথিউস আনবাউন্ডে'র মতো অলোকসামান্য কাব্য-নাটক। এই বইটি আমাকে প্রথম স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিল।

জল ছিল তাঁর অত্যন্ত প্রিয়। মাঝে মাঝেই ভেসে পড়তেন সমুদ্রের বুকে। কিছু বই, কিছু পানীয় আর সুখাদ্য নিয়ে। তাঁর প্রিয় সেই বোটের নাম ছিল 'ডন জুয়ান'। প্রিয় কবি বায়রনের কবিতার নামে নৌকোর নাম রেখেছিলেন তিনি।

১৮২২ সালের ৮ জুলাই এক ভয়ানক সামুদ্রিক ঝড়ে সেই 'ডন জুয়ান' ডুবে যায়। এক সপ্তাহ পরে কবির পচা গলা মৃতদেহ পাওয়া যায় সমুদ্রতীরে। তাঁর বয়স তখন তিরিশেরও কম। তাঁর সমাধিফলকে লেখা আছে Cor Cordium, যার অর্থ 'Soul out of my soul.

অত্যন্ত সুদর্শন শেলি ছিলেন বহু নারীর স্বপ্নের পুরুষ। ইংল্যান্ডের তরুণরাও শেলিকে অনুকরণ করে হাঁটা অভ্যেস করত। তাঁর মত করে কথা বলত, তাকিয়ে থাকত স্বপ্নময় চোখে।

দর্শন ও সাহিত্যে কৃতবিদ্য রূপবান শেলিকে মেয়েরা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ভালোবাসত। কিন্তু শেলি কি কখনও কাউকে ভালোবেসেছিলেন? নাকি মহাভারতের তৃতীয় পাণ্ডবের মতো মাত্র তিরিশ বছরের জীবনে বারংবার সরে গেছেন এক নারী থেকে অন্য নারীতে?

১৯ বছর বয়সে এক ধনী হোটেল মালিকের কন্যা হ্যারিয়েটকে বিয়ে করেন তিনি বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে। তিন বছর ঘুরে বেড়ালেন ওয়েলস, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডে। ১৮১৪ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। আয়ানথ ও চার্লসকে নিয়ে হ্যারিয়েটকে সরে যেতে হয় শেলির জীবন থেকে।

ততদিনে শেলির সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে দার্শনিক গডউইনের কন্যা মেরির। মেরি ও তার বোনকে নিয়ে সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যান তিনি। ১৮১৬ তে ফিরে আসেন। এরই মধ্যে মেরির অন্য এক বোন ফ্যানি ইমলে শেলিকে না পেয়ে আত্মহত্যা করে। আর ডিসেম্বর মাসে শার্পেনটাইনের জলে ভেসে ওঠে হ্যারিয়েটের মৃতদেহ। সেটাও আত্মহত্যা।

মেরিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে বাকিংহামশায়ারের মার্লোতে সংসার পাতেন তিনি। সেইসময় তাঁর যক্ষ্মারোগ ধরা পড়ে। মেরি ও শিশুপুত্র উইলিয়মকে সেখানে রেখে শেলি ইটালিতে গেলেন চিকিৎসার জন্য। সেখানে আলাপ হল কবি কিটসের সঙ্গে।

একই সময়ে পরিচয় ঘটল অসামান্য ইতালিয় সুন্দরী এমিলিয়ার সঙ্গে। আবেগপ্রবণ শেলি এমিলিয়াকে নিয়ে রচনা করলেন সেই আশ্চর্য শাশ্বত রোমান্টিক কবিতা Epipsychidion.. এর অর্থ: 'প্রাণের সঙ্গে প্রাণের মিলন'।

এমিলিয়াকে অমর করে রাখলেন তিনি, এই কবিতায় soul's sister নামে, যা থেকে জীবনানন্দ দাশ 'ক্যাম্পে' কবিতায় ব্যবহার করেছেন 'তাহাদের হৃদয়ের বোন' শব্দবন্ধটি।

ইতোমধ্যে এক বন্ধুপত্নী জেন উইলিয়মসকে নিয়ে চারটি বিখ্যাত কবিতা রচনা করেছেন তিনি : The Indian serenade, To Jane, The recollection, One word is too often Profancd..

জেন এমিলিয়ার মত সুন্দরী ছিলেন না। বরং শরীরী ছিলেন। অথচ সৌন্দর্যবোধই এই কবিতাগুলির প্রাণ।

শেলির অকালমৃত্যুর কথা যখন ভাবি, তখন আমার কেবলই মনে হয়, ভয়ংকর সামুদ্রিক ঝড়ে তাঁর নৌকো যখন টলোমলো, মৃত্যু যখন অনিবার্য, সেই মুহূর্তে কার মুখ ভেসে উঠেছিল কবির মনে?

তাঁকে ঘিরে একের পর এক নারীর মৃত্যু, হতাশা, আত্মহত্যা আর উন্মাদনাকে কী চোখে দেখতেন তিনি? কখনও কি আত্ম-অনুশোচনা কিংবা বিবেকদংশনে গোপনে দগ্ধ হননি তিনি? একজন সংবেদনশীল কবি কি কখনও এতখানি উদাসীন থাকতে পারেন একদা প্রিয় নারীদের দহন ও মৃত্যুতে? বিশ্বাস হয় না আমার। আমার ধারণা, তিনিও পুড়েছেন আজীবন, আমৃত্যু।"

আংশিক তথ্যসূত্রঃ পায়ের তলায় সর্ষে-(২য় পর্ব)– সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৭

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ৩টা লাইক আছে, অথো কোনো মন্তব্য নেই!!!!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৬

জুল ভার্ন বলেছেন: অ কা!

লাইক দিয়েছেন- অপু তানভীর
শেরজা তপন
গেঁয়ো ভূত
সাজিদ!

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:০৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: তাই আমিও দেখছি কোন মন্তব্য কেউ করলো না কেনো

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৭

জুল ভার্ন বলেছেন: মনের মন্তব্যটাই আসল! তাই মন্তব্য লেখার দরকার নাই! =p~

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৫২

শেরজা তপন বলেছেন: ভাল লাগার বিষয়টা মনের মধ্যে পুষে রেখেছে :)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৯

জুল ভার্ন বলেছেন: কবি এরিস্টটল বলেছেন-মনের মন্তব্যটাই আসল! B-)

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৫৪

বিটপি বলেছেন: কবি মানেই কি পরনারীতে আসক্তি?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৫৯

জুল ভার্ন বলেছেন: বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাই দেখা যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.